দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে ন্যাটো বাহিনীর ১৫টি তেল ট্যাঙ্কারে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। পাকিস্তানের পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা বেলুচিস্তান প্রদেশের হুব এলাকায় রকেট হামলা চালিয়ে ন্যাটো বাহিনীর ওই ১৫টি তেল ট্যাঙ্কার জ্বালিয়ে দিয়েছে। এ হামলার ফলে কোয়েটা থেকে করাচিগামী মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে গত শুক্রবারও অজ্ঞাত পরিচয় সশস্ত্র ব্যক্তিরা ন্যাটোর তেলবাহী ১২টি ট্যাঙ্কারে আগুন ধরিয়ে দেয়। বেলুচিস্তান প্রদেশের ‘গোলাত’ এলাকায় ওই হামলা চালানো হয়েছিল এবং এতে অন্তত একজন চালক নিহত এবং অপর দু’জন আহত হয়। গত কয়েক বছরে পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তান অভিমুখে ন্যাটোর রসদ, অস্ত্রশস্ত্র ও তেলবাহী ট্যাঙ্কারের ওপর বহুবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলা থেকে আফগানিস্তানে ন্যাটো ও মার্কিন বাহিনীর দখলদারিত্ব এবং ন্যাটোকে ইসলামাবাদের অব্যাহত সহযোগিতার প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। এ নিয়ে ন্যাটো সামরিক জোটের সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। কারণ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ন্যাটোর রসদবাহী গাড়ির নিরাপত্তা বিধানে আরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে ন্যাটো জোট আশা করছে। এদিকে, ন্যাটোকে সহযোগিতা করার কারণে পাকিস্তানের জনগণের কাছেও দেশটির সেনাবাহিনীর ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ন্যাটোর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে ওঠায় সেনাবাহিনীও পাকিস্তানের ওপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া ন্যাটোর গাড়ি বহরের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা বজায় রেখেছে। বলা হচ্ছে, সন্ত্রাসীদের দমনের অজুহাতে এবং বেলুচিস্তান, পাখতুন খাসহ অন্যান্য প্রদেশের নিরাপত্তা রক্ষার কথা বলে ওইসব এলাকায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে মোতায়েন রাখা হয়েছে। অথচ ন্যাটোর রসদ বহরের নিরাপত্তা দেয়াই এসব এলাকায় পাক সেনা মোতায়েন রাখার প্রধান উদ্দেশ্য বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় ন্যাটোর তেল ট্যাঙ্কারের ওপর হামলার ঘটনা থেকে বোঝা যায়, ন্যাটো জোটের সঙ্গে পাকিস্তানের সরকার ও সেনাবাহিনীর অব্যাহত সহযোগিতার বিরোধিতা অব্যাহত রয়েছে এবং তারা বেশ সক্রিয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের জনগণের দাবিকে উপেক্ষা করে আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে পাক সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকায় দেশটির জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। কারণ ন্যাটো ও মার্কিন বাহিনী অসংখ্যবার পাকিস্তানের উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় হামলা চালিয়ে বহু লোককে হত্যা করেছে। এসব ঘটনা পাকিস্তানের জনগণের ন্যাটো ও মার্কিনবিরোধী হয়ে ওঠার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনী জনগণের এসব বিরোধিতা উপেক্ষা করে বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এ থেকে বোঝা যায়, পাকিস্তানের জনগণের জান-মালের কোনো মূল্য বিদেশি বাহিনীর কাছে নেই এবং তারা দেশটির জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে চলেছে। যাহোক, ন্যাটো ও মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের সহযোগিতার ব্যাপারে সে দেশটির জনগণের বিরোধিতা অব্যাহত রয়েছে এবং তারা এটাকে বিদেশি আগ্রাসন ও পাকিস্তানের জন্য অবমাননাকর বলে মনে করে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


