আজ প্রায় দিন পনের হয়ে এলো, ভাবছি কিছু লিখবো। শুধু ভাবাই হচ্ছে, হচ্ছে না কিছু লেখা। জড়তা কাজ করে, মূলত। কী লিখবো, কীভাবে লিখবো সাত পাঁচ ভেবেই সময় শেষ। সারাদিনে তো একশো একটা ভাবনা মনে মনে ভেবে বসে থাকি, দোষ কী লিখে রাখতে! তো আজ ধরেই ফেললাম লেখা; ছাড়বার নিয়ত নেই।
বাবার মত ডাইরি লেখা হবে না আমাকে দিয়ে। তারচেয়ে এই কিবোর্ড সম্বল করে যদি মনের কথা লিখে রাখা যায়, মন্দ কী। কেও কখনো এ লেখা পড়বে এটা ভেবে লিখছি না। লিখছি, মনের কথা লিখতে ইচ্ছে করছে তাই আরকি। আমার আবার বহুরূপী মন বলে কথা; কখন কী করতে ইচ্ছে করে বোঝা মুশকিল। এইতো, এখন আর লিখতে ইচ্ছে করছে না, মনে হচ্ছে ইউটিউবে ঘুরাঘুরি করি কিছুক্ষণ। কাল আবার ফাইনাল পরীক্ষা, পড়াশুনাটাও জরুরী।
মজার ব্যাপার হল বেশ লাগে উলটাপালটা লিখতে, বেশ খোলাসা হচ্ছে হাত। কত কত কথা লেখা বাকী, কতকী ঘটে গেছে লিখে রাখবার মত। সব মানুষ কে নিয়ে তো আর জীবনী লেখা হয় না। আমাকে নিয়েও হবে না, এটা ভাবতে আমাকে চিন্তাবিদ হতে হবে না। ছোট বেলা থেকেই মাথায় 'স্পেশাল' হবার পোকা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে অতি যত্নে।
আমি যে স্পেশাল নই বুঝতে অনেক দিন লেগেছে। মূলত সব মানুষই স্বতন্ত্র, তার পরেও গোশঠিগত মিল থাকে। যেমন, সবার মত আমারও ক্ষুধা লাগে। সবার মত বলাটা ঠিক হচ্ছে না, বলা উচিত অনেকের মত। অনেকে থাকে না, যারা অসময়ে খেতে-ঘুমাতে ভালোবাসে; আমি তাদের একজন। রাত ৩ টা প্রায়, আশেপাশের সবাই ঘুমে কাদা আর আমার তো কেবল দিনের শুরু। কতদিন হবে! প্রায় বছর দশেক... রোজ নিয়ম করে ভোর বেলা ঘুমাচ্ছি, ক্লাস আর কাজ থাকলে সকালে, আর কোন কাজ না থাকলে নিয়ম করে দুপুরে উঠছি। কতদিন চলবে এভাবে? জানিনা। আজকাল মাথায় ভুত চেপেছে, চাকুরী চাই। তাও আবার নাইট শিফট্ এর। কে দেবে আমার সে চাকুরী! কল সেন্টার আছে কিছু তাও আবার বিদেশি। আংরেজীতে কথা না জানলে সেখানে পাত্তা পাওয়া যাবে না বলে তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে রেখেছে। আমি আংরেজী জানিনা, সেরকম না; দৌড় আমার বেশ ভালোই। তবে মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত। আংরেজী তে কথা বলতে গেলেই গলার ভেতর আস্ত একটা কোলা ব্যাঙ এর অস্তিত্ব অনুভব করতে থাকি, পেটের ভিতর কথা কালি-পটকার মত পটাপট ফুটতে থাকে কিন্তু সেটা ধ্বনিতে রূপলাভ করতে পারে না।
আজ আর লিখতে ইচ্ছে করছে না। তবে আবার লিখবো, থামা যাবে না।