somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নবীদের (আ.) ইস্‌মাহ বা পাপশূন্যতা সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত। (আক্বিদা বিশ্বাস পর্ব)

০২ রা মার্চ, ২০১০ বিকাল ৫:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




১২৪,০০০ মতান্তরে ২২৪,০০০ আম্বিয়ায়ে কেরামদের (আ.) উপর বিশ্বাস আনা প্রত্যেক মুসলমানদের কর্তব্য। কিন্তু এই নবীদের (আ.) ইস্‌মাহ ও পাপশূন্যতা নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিশেষ করে আহলে সুন্নাতের অনুসারীদের মধ্যে বিভিন্ন রকম দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়। এই দৃষ্টিভঙ্গিসমূহকে এক সাথে মূল চারটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। আর এদের প্রত্যেকটিতেই ওলামায়ে কেরামদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। অনেকেই এই মতামতের ব্যাপারে ইজমার দাবী করলেও এগুলোর বেশীর ভাগ অনির্ভরযোগ্য এবং তাতে যুক্তি প্রমানের ঘাটতি রয়েছে। এই চার প্রকার দৃষ্টিভঙ্গিসমূহ নিম্নরূপ:
১। আক্বিদা বিশ্বাস সম্পর্কে।
২। ইবলাগ ও তবলিগ (প্রচার কার্য) সম্পর্কে।
৩। ইফতাহ (ফতোওয়া দান) সম্পর্কে।
৪। নবীদের (আ.) অবস্থা ও কার্য কলাপ সম্পর্কে।
আমরা একের পর এক এসব নিয়ে আলোচনা করবো।

১। আক্বিদা বিশ্বাস সম্পর্কে: ওলামায়ে কেরামদের মধ্যে এ বিষয়ে যেসব আলোচনা হয়ে থাকে তা সাধারণত এই যে, নবীরা (আ.) কি দ্বীনি আক্বিদার দিক থেকে পাক ও পবিত্র রয়েছেন? নাকি তারা এমন সব কাজও করতে পারবেন যা ইসলামের আক্বিদা বিরোধী। উদাহরণস্বরূপ তারা কুফর ও শির্‌ককে উল্লেখ করেন। অর্থাৎ নবীরা (আ.) কি কাফের ও মুশরিক হতে পারেন?
ফাখরে রাযি ইজমার দাবী করে বলেন যে মুসলিম উম্মতের সবাই এ বিষয়ে একমত যে আম্বিয়ায়ে কেরাম (আ.) কুফর ও গুমরাহ্‌ হতে সম্পূর্ণভাবে পাপমুক্ত।(ফাখরে রাযি, ইসমাতুল আন্বিয়া, পৃষ্ঠা: ৬)।

কিন্তু খাওয়ারেজদের এযারেক্বা ফেরকা (মতান্তরে ফুজাইলিয়্যা) এই ইজমার বিরোধী মত পোষণ করে। তারা বলে: আম্বিয়ার পক্ষে কুফরি কাজ করা জায়েজ। (ফাখরে রাযি, ইস্‌মাতুল আন্বিয়া, পৃষ্ঠা: ৭; কাজি ওযুদুদ্দিন আল ইজি, শরহুল মওয়াকিফ, পৃষ্ঠা: ২৬৪)।

তাদের মতে সাধারণ গুনাহ বা পাপ হচ্ছে কুফরি কাজ আর কোরানের আয়াত মতে নবী রাসুলরা (আ.) পাপ করে থাকেন। তাছাড়া ইবনে আবিল হাদীদের মতে: “আল্লাহ এমন লোককে নবী করে পাঠাতে পারেন যে পূর্বে কাফের ছিল”।
অথবা “খোদা এমন লোককে নবী করে পাঠাতে পারেন যার সম্পর্কে তিনি জানেন যে নবুয়্যাতের পর সে কাফের হয়ে যাবে”। (কাজি ওযুদুদ্দিন আল ইজি, শরহুল মওয়াকিফ, পৃষ্ঠা: ২৬৪)।
ইবনে আবিল হাদীদের কথায় আশা’এরা হতে ইবনে ফাউরাক, ও বাক্বেলানি এবং আহলে হাদীস হতে হাশাউইয়্যার মতে: “হযরত মোহাম্মদ (সা.) বে’সতের (নবুয়্যাত প্রাপ্তির) পূর্বে কাফের ছিলেন”। প্রমাণস্বরূপ এ আয়াতটি উল্লেখ করে থাকে “وَوَجَدَكَ ضَالًّا فَهَدَى” আর তিনি তোমাকে দিশাহারা পান অতঃপর পথ প্রদর্শন করেন। সুরা দুহা:০৭।
আর নাজ্জারিয়্যার বরগুসের মতে: “নবী করিম (সা.) বে’সতের পূর্বে খোদার উপর ঈমান রাখতেন না”। প্রমাণস্বরূপ এ আয়াতটি উল্লেখ করেছে “مَا كُنْتَ تَدْرِی مَا الْكِتَابُ وَلَا الْإِیمَانُ” তুমি জানতে না কিতাব কি আর ঈমানকি? সুরা শুরা:৫২।
ইবনে আবিল হদীদের মতে এই সুরা আশ্‌ শরহের ২ নং আয়াতে “َوَضَعْنَا عَنْكَ وِزْرَكَ” উইয্‌র শব্দের অর্থ হল শির্‌ক।
মুসলমানদের অনেকের মতে: যা দুই ফেরেস্তার মাধ্যমে রাসুলের (সা.) বক্ষ চিরে পরিস্কার করা হয়েছে।
কার্রামিয়্যার অনেকের মতে: “إِذْ قَالَ لَهُ رَبُّهُ أَسْلِمْ قَالَ أَسْلَمْتُ” এই আয়াতে হযরত ইব্রাহীম নবীকে (আ.) মুসলমান হতে বলা হলে তিনি বলেন ইসলাম প্রহণ করলাম। সুরা বাকারা: ১৩১।
এখন কথা হল যার প্রতি ঈমান এনেই কোন ব্যক্তি মুসলমান হবে, সেই যদি হয় কাফের তাহলে মুসলমানের ঈমানের অবস্থা কি হতে পারে। তাছাড়া রাসুল (সা.) যদি পাপ কাজ করেন তাহলে উত্তম নমুনা হন কিভাবে? এ বিষয়ে বিস্তারীত আলোচনা আমরা পরবর্তীতে করব।


৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×