রূপকথার গল্পে পড়েছিলাম কোনো এক রাজ্যে ভয়ঙ্কর এক মানুষখেকো রাক্ষস আক্রমণ করেছিলো!রাজ্য রক্ষার জন্য রাজার সাথে রাক্ষুসের এক চুক্তি হয়!চুক্তি অনুযায়ী রাক্ষসকে সন্তুস্ট করতে রাজা প্রতিদিন একজন করে প্রজা পাঠাবেন রাক্ষসের গুহায়,রাক্ষসের আহারের জন্য!এক দিন খাবার না পাঠালেই সর্বনাশ!গোটা রাজ্যের সবাইকে একসাথে হত্যা করবে রাক্ষস!তাই প্রতিদিনই প্রজারা আতংকের প্রহর গুনতো এই বুঝি তার পালা আসলো,এই বুঝি রাক্ষসের পেটে যাবার সময় হলো!
একটু চিন্তা করে দেখুনতো আমরাও কি সেই রূপকথার রাজ্যের আতঙ্কিত প্রজাদের অবস্থায় নই?সারা দেশের কথা বাদই দিলাম।রাজধানী ঢাকা এখন কি আতংকের শহর নয়?একজন মানুষ হয়তো প্রতিদিন বিপদে পড়েনা তাই হয়তো গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি ভাবেনা!কিন্তুু ভেবেছেন কি,সারাজীবনে একবার বিপদে পড়লেও হয়তো
তা সারাজীবনের জন্য ট্রাজেডি হয়ে যেতে পারে?আপনি কি জানেন আপনার কস্টার্জিত সম্পদ ছিনিয়ে নিতে গোটা শহরেই ফাঁদ পেতে অপেক্ষা করছে কেউ? যে কোনো এক অসতর্ক মুহুর্তেই হতে পারেন সর্বশান্ত। এমনকি খুইয়ে বসতে পারেন প্রাণটাও!
গতকাল একটা পোস্ট লিখেছিলাম বিকাশ কর্মীদের কাছ থেকে অর্থ ছিনতাইয়ের সঙ্ঘবদ্ধ চক্র সম্পর্কে! Click This Link
আজ একটি খবর পড়ে আরেকটি সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের কথা মনে পড়লো!এদের টার্গেট হলো গার্মেন্টস কোম্পানির শ্রমিকদের বেতন!গার্মেন্টসের কোনো উর্ধ্বতন কর্মকর্তা যখন শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের জন্য ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে ফ্যাক্টরির পথে রওয়ানা হন তখনই মাইক্রোবাসে করে ফলো করে শসস্ত্র এ চক্র! এরপর মাঝপথেই আক্রমণ করে টাকা ছিনিয়ে চম্পট দেয়!আর বাধা দিতে গেলেই আপনার জীবনের সংশয়!বিশ্বাস না হলে গতো কয়েক মাসের পত্রিকা পড়ুন!এরকম অসংখ্য ঘটনাই দেখতে পাবেন পত্রিকার পাতায়!এমনকি আজও এর ব্যাতিক্রম ঘটেনি!সমকাল পত্রিকার আজকের ঘটনাটি পড়ুন!
" সাভারে তৈরি পোশাক কারখানার এক কর্মকর্তাকে গুলি করে শ্রমিকদের বেতনের প্রায় ১৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বাধা দেওয়ায় সন্ত্রাসীরা তার পায়ে গুলি করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। শওকত আলী নামের ওই কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সোমবার বিকেলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বলিয়াপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শওকত আলী (৩৫) হেমায়েতপুর নতুনপাড়া এলাকার হ্যাভেন ফ্যাশন কারখানার
পরিচালক।
হ্যাভেন ফ্যাশন কারখানার ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম জানান,রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরে ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে শ্রমিকদের
বেতনের জন্য ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন
করেন কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ গফুর। তিনি দুই পরিচালক ইসাহাক আলী ও শওকত আলীকে সঙ্গে নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে সাভারে কারখানায়
আসছিলেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বলিয়াপুর এলাকায় পৌঁছলে একটি মাইক্রোবাস তাদের গাড়ির
গতিরোধ করে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন সশস্ত্র ছিনতাইকারী নেমে তার কাছে থাকা ১২ লাখ ৫২ হাজার টাকার একটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে
যায়। গাড়িতে থাকা পরিচালকরা বাধা দিলে দুর্বৃত্তরা পরিচালক শওকত আলীর পায়ে গুলি করে। তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে ছিনতাইকারীরা কয়েক রাউন্ড
ফাঁকা গুলি ছুড়ে মাইক্রোবাসে করে
পালিয়ে যায়।
রেজাউল করিম জানান, ২৫ লাখ টাকার মধ্যে বাকি টাকা অন্য একটি ব্যাগে থাকায় ছিনতাইকারীরা ওই টাকা নিতে পারেনি। ধারণা করা হচ্ছে, ব্যাংক থেকে টাকা
উত্তোলনের পর থেকে ছিনতাইকারীরা তদের অনুসরণ করছিল।
সাভার মডেল থানার ওসি এসএম কামরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে
ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি সাভার বাজার রোডে প্রাইমারি স্কুলের সামনে থেকে নামাবাজারের ডাল ব্যবসায়ী
মিঠুন চক্রবর্তীর কাছ থেকে ২৮ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার কিংবা টাকা উদ্ধার
করতে পারেনি।"
প্রশ্ন হলো সরকারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তার সহায়তা এবং রাজনৈতিক ছত্রছায়া ছাড়া এমন সঙ্ঘবদ্ধ শসস্ত্র চক্র টিকে থাকা সম্ভব?এদের কাছে বখরার টাকা খাচ্ছে কারা? কারা এদের মদদদাতা?
এমন মরণফাঁদ থেকে রাজধানী ঢাকা এবং পাশ্ববর্তী এলাকাকে মুক্ত করা না হলে সত্যিই তা সেই রূপকার রাজ্যের মতোই থেকে যাবে!