somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আনহ্যাপী ভ্যালেনটাইনস্‌ ডে-০৬

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পূর্ব প্রকাশিতের পর (আনহ্যাপী ভ্যালেনটাইনস্‌ ডে-০১ , আনহ্যাপী ভ্যালেনটাইনস্‌ ডে-০২, আনহ্যাপী ভ্যালেনটাইনস্‌ ডে-০৩, আনহ্যাপী ভ্যালেনটাইনস্‌ ডে-০৪, আনহ্যাপী ভ্যালেনটাইনস্‌ ডে-০৫)

একটা সময় আমার দেয়া তুচ্ছ জিনিসও তোমার কাছে অতীব মূল্যবান ছিলো। আমার চিঠি তোমার কাছে এতটাই মূল্যবান ছিল যে ছিড়ে ফেলতে বললে তুমি তা করতে না। আমার এরকম একটা অনুরোধের প্রত্যুত্তরে তুমি লিখেছিলে, “তুমি বলেছিলে চিঠিটা ছিড়ে ফেলতে। কিন্তু আমার উদ্দেশ্যে তুমি এতো সুন্দর করে চিঠি লিখেছো তা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ছিড়তে পারিনি। তাই আমার এ চিঠি আমি তোমার কাছেই ‘আমানত’ হিসেবে রেখে দিলাম। দেখো, আবার আমানতের খেয়ানত করোনা।” না আমি তোমার আমানতের খেয়ানত করিনি। সেই চিঠিটি সহ তোমার উদ্দেশ্যে আমার লিখা অনেক চিঠিই আমার কাছে পড়ে রয়েছে, সযতনে আমি সেগুলি তুলি রেখেছি এবং মাঝে মাঝে সেগুলি পড়ে স্মৃতির সাগরে ডুব দেই। আর চিঠিগুলি সংগ্রহে রাখার আরেকটি উদ্দেশ্য হল, সময়কে চিঠির মাধ্যমে ধরে রাখা। ২৩ জুনের পরবর্তী সময়ে আমি আমার মনের দুঃখ, ক্ষোভ উজাড় করে তোমার কাছে কয়েকখানা চিঠি লিখেছিলাম। কিন্তু আমার সে চিঠিগুলি তুমি ছিড়ে ফেলেছো। যা আমাকে দুঃখ দিয়েছে। কারণ সে চিঠি গুলিতে ফুটে উঠেছিলো আমার তখনকার মানসিক চিত্র। কিন্তু সে চিঠি তোমার পছন্দ হয়নি বলেই তুমি ছিড়ে ফেলেছো, এমনটিই আমার ধারণা। তাই এখন আমি কম্পিউটারের আশ্রয় নিয়েছি যাতে তোমায় লিখা চিঠির একটি কপি অন্তত আমার কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে জমা থাকে।

আমাদের দেখা করার সুযোগ ছিল সীমিত। কিন্তু তথাপি দাদাকে বিরক্ত করে আমরা অনেকবার দেখা করেছিলাম, আর আমাদের দেখা করার মাঝে ধীরে ধীরে আমাদের আকাঙ্খিত উপহারগুলো জায়গা করে নিতে লাগলো বেশী সময় জুড়ে। উপহার যে শুধু আমি পেতাম তা নয়, আমিও তোমাকে উপহারে উপহারে রাঙিয়ে দিতাম। আর সেটা ছিল সেই মুহুর্তে দু’জনেরই কাঙ্খিত প্রাপ্তি। আর সেটা বুঝা যায় তোমার পরবর্তী লিখা থেকে, “কালকের দিনটির জন্য তোমার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। সত্যি বলতে কি, মিঠুর বাসায় এভাবে আসতে রাজী হওয়াকে তুমি কিভাবে নিচ্ছ সে ভেবে আমি খুব শঙ্কিত ছিলাম। তোমার সাথে পরীক্ষার পূর্ব পর্যন্ত দেখা হচ্ছে না ভেবে মনটাও খারাপ ছিল। কিন্তু তুমি যখন আমাকে ক্রমাগত আদর করতে লাগলে,কি এক অপূর্ব ভাল লাগায় মনটা ছেয়ে গেল। তোমাকে কত কিছু বলব ভেবেছিলাম, কিন্তু তখন তোমার আদরের আমি এতোই কাঙাল ছিলাম যে কিছুই বলতে ইচ্ছা করল না।” আমি শতভাগ নিশ্চিত যে, আজ যখন আমি তোমাকে তোমার সেই পুরোনো দিনগুলিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, তুমি মনে মনে সেই দিনগুলোর জন্য পরিতাপ করছো এই ভেবে যে তখন যা কিছু ঘটেছে, তা না ঘটলেই ভাল ছিল। কারণ তুমি অনেক বদলে গেছ, তোমার চিন্তাভাবনাও অনেক বদলে গেছে। যদি তুমি পারতে, তবে তুমি তোমার জীবন থেকে সেই দিনগুলো মুছে দিতে বলেই আমার বদ্ধমূল ধারণা।

আমাদের সে উপহারগুলো ধরনটা কেমন ছিল মনে আছে কি তোমার? তুমি লিখেছিলে, “শুনো প্রিয়, এবার তোমায় আমার ভালবাসার কথা বলি। তোমার যেমন একটি স্বপ্ন ছিল আমার স্কন্ধে চুমু দ্বারা চুমায়িত করা, আমারও তেমন একটি ইচ্ছে ছিল তোমার গলায় মুখ গুঁজে থাকা। সেদিন তুমি যখন আমাকে হাত দিয়ে প্রথমে জড়িয়ে ধরলে তখনই আমি মনে মনে ঠিক করলাম আমার সেই ইচ্ছেটা পূরণ করে নিব। যখন তোমাকে জড়িয়ে ধরে তোমার গলায় মুখ গুঁজলাম, তখন মনে মনে আল্লাহর কাছে বললাম তিনি যেন সারাজীবন এভাবে আমাকে মুখ গুঁজে থাকতে পারার ভাগ্য দেন। নিজেকে হয়তো সংযত করতে পারতাম। কিন্তু; প্রিয় আমি যে সে চেষ্টা করিনি। এখনও আমি রাতে ঘুমুতে যাবার সময়/ঘুম ভাঙার পরে মনে মনে কল্পনা করি আমার প্রিয়কে জড়িয়ে ধরে তার গলায় মুখ গুঁজে আমি শুয়ে আছি। সে ভাবনাটা আমাকে কি পরিমাণ আন্দোলিত করে তা হয়তো তোমাকে কোনদিনও বুঝাতে পারবো না।” হ্যাঁ তুমি কেমন আন্দোলিত হতে তা আমি ঠিকই বুঝতাম। কেননা আমিও যে একই রোগের রোগী ছিলাম। কিন্তু আজ এই মুহুর্তে খুব জানতে ইচ্ছে করছে বিগত ৮ মাসে কখনও কি তুমি ঘুমুতে যাবার সময় কিংবা ঘুম ভাঙার পরে মনে মনে এই ধরনের কল্পনা করেছো? আমি খুব স্পষ্ট ভাবেই জানি যে, এর উত্তর হচ্ছে ‘না’। কেননা তোমার চিন্তাভাবনা এখন অনেকটা রক্ষণশীল। আগে যা যা কিছু ঘটেছে, তার জন্য তুমি মনঃপীড়ায় ভুগছ বলেই আমার ধারণা।

(চলবে......)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১০:৫৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×