বইয়ের নাম - মাধুকরী
লেখক - বুদ্ধদেব গুহ
উৎসর্গ - একবিংশ শতকের নারী-পুরুষদের জন্য।
মোট পৃষ্ঠা - ৬৩১
মূল্য - ২০০ (ভারতীয় রুপী) বাংলাদেশে তা অনেক বেশী হতে পারে অথবা http://www.amarbooks.com বা Click This Link ওয়েব সাইডে পড়তে পারেন।
লেখকের অন্যান্য বই : লেখকের পাঠকপ্রিয় অনেক বই আছে।তার মাঝে সবিনয় নিবেদন,সমুদ্র মেখলা,সাঝবেলাতে,সুখের কাছে, বাবলি,শ্রেষ্ঠ গল্প,চারপাশ,ধুলোবালি,পামরি,কোয়েলের কাছে,কোজাগর,খেলা যখন,একটু উষ্ণতার জন্য,দূরের দুপুর,চাপরা,বিন্যাস এবং অভিলাস উল্লেখযোগ্য।আর এসব গল্প-উপন্যাস এর মাঝে আমার মনে হয় বাবলি এবং মাধুকরী শ্রেষ্ঠ ।
“বুদ্ধদেব গুহ”- ভারতীয় বাঙালী লেখক। তিনি মূলত বন, অরণ্য এবং প্রকৃতি বিষয়ক লেখার জন্য পরিচিত। বহু বিচিত্রতায় ভরপুর এবং অভিজ্ঞতাময় তার জীবন। ইংল্যান্ড, ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশ, কানাডা, আমেরিকা, হাওয়াই, জাপান, থাইল্যান্ড ও পূর্বআফ্রিকা তার দেখা। পূর্বভারতের বন-জঙ্গল, পশুপাখি ও বনের মানুষের সঙ্গেও তার সুদীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরংগ পরিচয়। সাহিত্য-রচনায় মস্তিষ্কের তুলনায় হৃদয়ের ভূমিকা বড়- এই মতে তিনি বিশ্বাসী।
আমাদের আলোচ্য বইয়ের নামকরন কেন মাধুকরী ? - মাধুকরী স্ত্রীলিঙ্গ শব্দ ।এর পুরুষ লিঙ্গ মধুকর বা মৌমাছি। মৌমাছি যেমন ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করে তেমনি আমাদের সমাজের কিছু মানব-মানবী নানা জনের দ্বারে দ্বারে প্রেম ভিক্ষা বা মধুকরের মত বৃত্তির চেষ্টা চালায় যেখানে স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের প্রতি অনুগত বা বিশ্বস্ত না থেকে বহু স্থান হতে অল্প অল্প পরিমাণে ভালবাসা সংগ্রহ করে বা করতে চেষ্টা করে। এখানে মাধুকরী বলতে লেখক দেখাতে চেয়েছেন,গল্পের নায়ক-নায়িকা তথা অনেকেই প্রেম-ভালবাসার জন্য কিভাবে স্বামী / স্ত্রী একে অন্যকে ছেড়ে নানা জন এবং নানা জায়গায় মধুকরের মত ঘুরে ঘুরে প্রেম-ভালবাসার চেষ্টা চালায় এবং পরিশেষে এ অসামাজিক কাজের কি পরিনতি ঘটে।
মাধুকরী উপন্যাসে কেন্দ্রীয় চরিত্র পৃথু ঘোষ যাকে সবাই আড়ালে ‘পাগলা ঘোষসা’ বলে। কারণ তিনি কখন কি করেন না করেন, কার সাথে চলেন কার সাথে চলেন না এসব কিছুরই ঠিক নেই । বিলেত ফেরত ইঞ্জিনিয়ার ,উচচ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং ভাল রোজগারও করেন যাতে করে সে হতে পারত সমাজের এলিট শ্রেণীর প্রতিনিধি । কিন্তু সে সমাজের এলিট শ্রেণীর তথাকথিত জীবন যাপন পছন্দ করেনা ।সে ভালোবাসতো কবিতা লিখতে,গান শুনতে আর বনে জঙ্গলে ঘুরতে।আর মিশত সমাজের উচু-নীচু সবার সাথে তথা ভুচু (মোটর মেকানিক),শামিম (ঘড়ি সারাই মিস্ত্রী),কুর্চি (নিমু কাকার মেয়ে/প্রাক্তন প্রেমিকা ),সাবির মিয়া (মুসলমান বন্ধু ),দিগা পাড়ে (সংসার বিবাগী ),ঠুঠা বাইগা (কাজের লোক),গিরিসদা (অবিবাহিত ,অবসরপ্রাপ্ত একজন)এবং বিজলি (বাঈজী) ।সে সমাজের তথাকথিত পার্টিতে অংশগ্রহন বা ক্যারিয়ার-সংসার নিয়ে চিন্তা কোনটাই করা তার পছন্দ নয়।
পৃথু ঘোষ প্রথম জীবনে ভালবাসত তার নিমু কাকার মেয়ে কুর্চিকে।কিন্তু তার বাবার মৃত্যুর পর তার কাকা তার বিয়ে দিয়ে দেন রুষার সাথে।বিয়ের দীর্ঘদিন পরও এবং ছেলে-মেয়ে সহ পরিপূর্ণ পরিবার থাকা সত্ত্বেও তিনি ছুটতেন কুর্চি তথা প্রাক্তন প্রেমিকার কাছে একটু ভালবাসা পাওয়ার আশায় এবং বউয়ের কাছে প্রত্যাখাত হয়ে ছুটে গিয়েছেন বাঈজী বিজলীর কাছে।বউয়ের সাথে মিলমিশ না থাকা, মানসিক দূরত্ব , ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্বের কারনে এবং বউ থাকার পরেও একটু ভালবাসার আশায় বার বার ছুটে গিয়েছেন কুর্চি, বাঈজী বিজলীর কাছে এবং তাদের সাথে স্থাপন করেছেন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক।
পৃথু ঘোষ বাঁচতে চেয়েছিল বড় বাঘের মতো।বড় বাঘ যেমন কারোর উপর নির্ভরশীল নয় ঠিক তেমনি সে সেভাবেই বাঁচতে চেয়েছিল না নারী,না সংসার , না গৃহ না সমাজের জন্য ।পৃথু বিশ্বাস করত এই পৃথিবীতে এক নতুন ধর্ম আসবে যেখানে সকল নারী-পুরুষ সমান মান-মর্যাদায় ও সুখ-স্বাধীনতায় বাঁচবে।পৃথু বিশ্বাস করত,এক জীবনে মানুষকে বাঁচতে মত বাঁচতে হবে শুধু বেচে থাকা নয়।কিন্তু সে বুঝতে চাইত না যে , মানুষ চাইলেই বড় বাঘের মত বাঁচতে পারেনা।কারন,মানুষ হিসাবে মানুষকে অনেক কিছু মেনে চলতে হয় সমাজে।আর তাইত তার কাংখিত সুখ তার জীবনে রয়ে গেছে অধরা। ভাগ্যের পরিহাসে পৃথু অঙ্গ (ডান পা) হারানোর পর বুঝতে পারে ভালবাসা এবং নিজের সুখের পিছনে ছুটতে ছুটতে তিনি কতো দূর চলে গেছেন তার পরিবার,ছেলে-মেয়ে,সমাজ থেকে যেখান থেকে ফিরে আসা আর সম্ভব না তার পক্ষে।
অপরদিকে তার স্ত্রী রুষা ইংরেজী শিক্ষায় শিক্ষিত ,সুন্দরী ,চাকুরীজীবি, বাহিরের সবার সাথে মিশুক মহিলা (society girl ) এবং সুখের পিছে ছোটা এক নারী যাকে ঘর থেকে বাহির ই বেশী টানে এবং যার নিকট স্বামীর প্রেম তথা স্বামীর ইচছা-অনিচছা থেকে বাহিরের পুরুষদের ইচছা-অনিচছার মূল্য বেশী।বিবাহিত জীবনে স্বামীর সাথে মানসিক দ্বন্দ্বের জেরে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলে ভিনোদ ইদুরকার ( সফল ব্যবসায়ী ও রুষার প্রেমিক) এর সাথে।দিনে-রাতে যখনই সুযোগ পেত দৈহিক ভাবে মিলিত হত ইদুরকার এর সাথে ।তা তার ঘর বা ইদুরকার এর ঘর যেখানেই হোকনা কেন। সাথে সাথে দৈহিক সুখের আশায় আরও অনেকের সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলে।আর এসব ভুল করে স্বামীর কাছ থেকে অনেক দূরে চলে গেছে। সুখের পিছে ছুটে ঘরের সুখকে পা দিয়ে পিষে ফেলেছে। ভাগ্যের পরিহাসে পৃথু ঘোষ অঙ্গ হারানোর পরে সে পৃথুকে ত্যাগ করে চলে গিয়েছে ছেলে মেয়ে নিয়ে ভিনোদ ইদুরকার এর ঘরে।তারপর ইদুরকারের নিখোজের পরে সে ঝুকে পড়েছে ভুচুর দিকে।রুষা এমন এক মহিলা যাকে বলা চলে অবিশ্বস্ত নারী তথা পুরুষ ঘাতক।যার কাছে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের চেয়ে বাইরের এবং শারিরীক-মানষিক পবিত্রতার চেয়ে আসামাজিক কার্যকলাপই জীবনের লক্ষ্য বলে ধরে নেয়।আর সে সুযোগ পেলেই সর্বদা স্বামী ছাড়াও আরও একাধিক পুরুষের সাথে দৈহিক মিলনে মিলিত হয় বা হতে চায়।যার কাছে দৈহিক পবিত্রতার কোন মূল্য নেই।
এছারাও অন্যান চরিত্র ইদুরকার ,কুর্চি, বিজলী, ভুচু, শামীম, সাবির, দিগা পাড়ে, ঠুঠা বাইগা, গিরিসদা ,ডাকু মগনলাল ,উধাম সিং তাদের নিয়েও অনেক ছোট-বড় ঘটনা জড়িয়ে রয়েছে উপন্যাসে।
যে কারনে নর-নারী প্রত্যেকেরই একবার হলেও উপন্যাসটি পড়া উচিত -
লেখকরা সমাজের দর্পন। তারা সমাজের অতীত অবস্থার সাথে বর্তমানের তুলনা করে ভবিষ্যতের একটি ছবি তুলে ধরতে চেষ্টা করেন।লেখক তার বইটি একুশ শতকের নর-নারী কে উৎসর্গ করেছেন কিন্তু কেন?
লেখক দেখিয়েছেন যে ,বর্তমানে মানুষ তার ব্যক্তি স্বাধীনতার,ধর্মনিরপেক্ষতা বা ধর্মহীনতা এবং নারী স্বাধীনতার নামে যে লাগামহীন জীবন যাপন করছে তার ভবিষ্যত পরিণতি কি হবে বা হতে যাচছে।ব্যক্তি স্বাধীনতাএবং নারী স্বাধীনতার নামে নর-নারী নির্বিশেষে সবাই যে জীবন যাপন করছে তার ফলে সামাজিক শৃংখলা নষ্ঠ হয়ে যাচছে। ঘরে ঘরে অশান্তি,মানষিক দূরত্ব তৈরী হচছে । ব্যক্তি স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে স্বামী / স্ত্রী জড়িয়ে পড়ছে বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কে ।আর তার প্রভাব পড়ছে ছেলে-মেয়েদের ও উপর।তাইত পৃথু -রুষার মেয়ে মিলি তার মায়ের পরকীয়া প্রেমিকের সাথে জড়িয়ে যায় এক নিষিদ্ধ সম্পর্কে যেখানে মেয়ে মায়ের প্রতিযোগী।আর মা-বাবা নিজেরা যত খারাপ হোক না কেন তাদের বাচ্চারা যেন এই রকম ভূল না করে তার জন্য একটা সময় সচেষ্ট হয় কিন্তু তখন আর কিছু করার সুযোগ থাকেনা করোর পক্ষে কারোর জন্য।
উপন্যাসটি পড়ার শুরু করার পর থেকেই ভাল লাগবে কারণ প্রত্যেকটা চরিত্র খুব আকর্ষণীয়,জীবন্ত ভাবে ফুটে উঠবে। তার সাথে জঙ্গলের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার বর্ণনা, নানান রকম পাখি – গাছ – পশু-পাখির বর্ণনা, দল নিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে শিকার করা, ডাকাত দলের সাথে লড়াই সব কিছুই যেনো চোখের সামনে ভাসবে লেখকের লেখার সাবলিলতায়। চরিত্র গুলো যেনো সবার চোখের সামনেই কথা বলছে, খাচ্ছে ,হাঁটছে, হাসছে , অভিমান করছে এমন অনুভব হবে কারণ লেখক কতটুকু পরিশ্রম করে লিখেছেন তা বইটি পড়ার সময় বুঝা যায়। আর একটা বিষয় হচ্ছে এই উপন্যাসে অনেক লেখক-কবিদের নিয়ে এবং বাংলা সাহিত্য নিয়ে ‘বুদ্ধদেব গুহ’ অনেক আলোচনা করেছেন। বইটি পড়ে প্রায় মাঝামাঝি আসার পর থেকে খারাপ লাগবে কারণ উত্থানের পর এমন নির্মম পতন মেনে নেয়া যায় না তেমনি পৃথু ঘোষের অংগ হানী এবং রুষার স্বামী সংসার ত্যাগ এগুলি মেনে নেয়া ও কষ্টদায়ক । পড়তে পড়তে চরিত্রের অনুভূতি গুলো অনুভব করতে করতে হারিয়ে যেতে হয় লেখকের লেখার মাঝে।পাঠকের জন্য এ এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা হবে।
লেখক এই উপন্যাসে বোঝাতে চেয়েছেন- মানুষ মাত্রই প্রকৃতির অংশ, মানুষ সামাজিক জীব তাই একা বেঁচে থাকা কখনোই সম্ভব না, জীব জন্তু পাখি তাদেরও অনুভূতি আছে, মানুষ হয়ে আমরা শুধু প্রকৃতির ক্ষতিই করছি, নিজের সুখকে বড় করে দেখলে বা নিজের সুখ খোঁজার জন্য দ্রুত বেগে ছুটে চললে জীবনে সব কিছু হারাতে হয়।বর্তমানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের মাঝেই অধিক সুখ,বৈচিএ তথা বৈবাহিক বর্হিভূত সম্পর্ক তথা পরকীয়া মহামারীর আকার ধারন করেছে।আর বৈবাহিক বর্হিভূত সম্পর্ক তথা পরকীয়ার শেষ পরিণতি কি হয় তা লেখক চমতকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তার লেখনির মাধ্যমে।
সব কিছুর শেষে লেখক এটাই প্রমান করেছেন যে - সংসার জীবনে যাই হোক না কেন, পরিবার- সংসার-সন্তানের মধ্যেই স্বামী- স্ত্রীর আসল সুখ লুকানো থাকে একে অন্যকে শুধু একটু সময় দিয়ে ,মন দিয়ে,আবেগ-ভালবাসা দিয়ে সেই সুখকে খুঁজে নিতে হয়। আর এর জন্য স্বামী স্ত্রীর মাঝে সুন্দর সম্পর্ক ধরে রাখা উচিৎ এবং কখনো তাদের সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় কারো প্রবেশাধিকার দেয়া উচিত নয়। কারন সেই তৃতীয় জনই সুখের ঘরের বেড়া নিজেদের অগোচরেই কেটে ফেলে ইদুরের মত।আর যখন তারা তা বুঝতে পারে তখন আর সেই ধ্বংসের পথ থেকে বেরিয়ে আসা যায়না।
"মাধুকরী" এই শতকের মানুষের জীবনের যাবতীয় অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আগামী প্রজন্মের মানুষের সার্থকভাবে বেচে থাকার ঠিকানা।এই কারনেই বুঝি এই উপন্যাস উৎসর্গ করা হয়েছে "একবিংশ শতকের নারী-পুরুষদের"হাতে।সাধারন পাঠকের মন ও বুদ্ধিমান পাঠকের মনন -দু জনেরই একসংগে ঝংকার তোলার উপন্যাস মাধুকরী।এর কাহিনী,ভাষা, স্টাইল,জীবনদর্শন,শ্লীলতা-অশ্লীলতার সীমারেখা -সবই নতুন।জীবনের প্রতি আসক্তি ও আসক্তির মাঝে লুকিয়ে থাকা বিতৃষ্ণাকে যে চমকপ্রদ ভংগিতে ছড়িয়ে দিয়েছেন ,যে নৈপুণ্যে বর্ণনায় এনেছেন সুক্ষতা ,যে কুশলতায় চোট-বড় প্রতিটি চরিত্রকে দেখিয়েছেন চিরে-চিরে ,যে দক্ষতায় দেশী-বিদেশী অজস্র কবিতার ব্যাবহার করেছেন সে সবই পাঠককে এক অনাস্বাদিত অভিজ্ঞতার স্বাদ দিবে । আর তাই একথা নিঃসন্দেহ বলা যায় , বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য সংযোজন মাধুকরী
এক কথায় বলতে গেলে – মাধুকরী হচ্ছে সামাজিক জীবনে মানুষের জীবনধারার অভিধান স্বরূপ যাতে মানুষ সমস্যাসংকুল পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে চলার পথের দিকনির্দেশনা পেতে পারে ।আমাদের সমাজের অনেকেরই ধর্মীয় বিধি-বিধানের প্রতি অনীহা আছে বা ধর্মীয় বিধি-বিধান মেনে চলতে ইচছুক নন তাদের জন্যও মাধুকরী হতে পারে অনুকরনীয়।কারন আমরা ব্যক্তি স্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতা বা ধর্মহীনতা এবং নারী স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে যা কিছু করছি বা করছে তার পরিণতি কি হতে পারে তা লেখক চমতকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন মাধুকরী তে।
বইটা পড়ার পর থেকেই এ সম্পর্ক কিছু লিখার ইচছা ছিল।তারপরে আরও কয়েকবার পড়তে পড়তে উপন্যাসের অনুভূতি গুলো এমন ভাবে মনে দাগ কেটেছে যে এতো সব ঘটনা, চরিত্র মিলিয়ে গুছিয়ে লিখতে হিমশিম খাচছি , কোনটা ছেড়ে কোনটা লিখব। আমার মত অল্প জানা মানুষের পক্ষে এত বড় বইয়ের রিভিউ লেখা সম্ভব না ।তারপরেও চেষ্টা করেছি মাধুকরী সম্পর্কে সামগ্রিকভাবে একটা ধারনা দিতে । অনেকের কাছে হয়ত মনে হতে পারে, একটা বই সম্পর্কে আমি অনেক বেশি বলছি । কিন্তু আমার পুরো বিশ্বাস আছে যে, আপনি যখন পড়বেন তখন আপনি ও বুঝতে পারবেন আমি একটুও বাড়িয়ে বলিনি । তাই আবারও বলছি আপনারা একটু কষ্ট করে বুদ্ধদেব গুহ -মাধুকরী উপন্যাসটা পড়ুন ।আশা করি এটা পড়ে আপনারাও এক অন্যরকম অনুভূতি ও ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা পাবেন যা আপনাকে দিবে সমাজে-পরিবারে চলার পথের দিকনির্দেশনা ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৯