ছবি - ANADOLU AGENCY
১ম পর্বের লিংক - Click This Link
১ম পর্বের পর -
লুজান চুক্তির মূল বিষয় সমুহ বা ফলাফল -
১। লুজান চুক্তিতেই আধুনিক তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের সার্বভৌমত্ব আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয় এবং তুরস্কের নতুন সীমানা চিহ্নিত ও স্বীকৃতি দেয়া হয়।
২। তুরস্ককে সাইপ্রাস, লিবিয়া, মিসর এবং সিরিয়ায় অবস্থিত আদানা ও গাজিয়ানতেপ সহ কয়েকটি লেভান্ট শহরের ওপর তার সার্বভৌমত্ব ত্যাগ করতে হয়।
৩। মিত্র শক্তির সেভ্রেস চুক্তির অংশ হিসেবে পৃথক কুর্দি অঞ্চল প্রতিষ্ঠার যে দাবি ছিল সেটি থেকে সরে আসে এবং গ্রীসের সংগে সীমানা নির্ধারন করা হয়।
৪। এ চুক্তির পর সিরিয়া ও লেবানন ফরাসিদের দখলে চলে যায়। মিসর, সুদান এবং ইরাক আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ দখলের অংশ হয়ে ওঠে। ফিলিস্তিন ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের অধীনে আসে যা পরে এটিকে ব্রিটিশরা ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে তাদের কাছে হস্তান্তর করে।
৫। তুরস্কে বসবাসরত অমুসলিমদেরকে তুরস্কের নাগরিকত্ব দেয়া হয় এবং ফ্রান্স-ইটালি-বৃটেন তাদের দখলকৃত তুরস্কের ভূমি ছেড়ে দেয়।
৬। উসমানীয় খেলাফতের ঋন শুধু তুরস্কের উপর না চাপিয়ে দিয়ে উসমানীয় খেলাফত থেকে জন্ম নেয়া সকল দেশের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়।
৭। এজিয়ান সাগরের দ্বীপগুলোর মালিকানা তুরস্ক হারায় এবং চুক্তি অনুযায়ী সেগুলো সাইপ্রাসের হয়ে যায়।
৮।এ চুক্তি অনুযায়ী বসফরাস ও দার্দেনালিস প্রণালী দিয়ে জাহাজ চলাচলের কর্তৃত্ব তুরস্ক থেকে কেড়ে নেয়া হয় এবং তুরস্ককে দুর্বল করতে ইজিয়ান সাগর এবং কৃষ্ণসাগরের মধ্যবর্তী তুর্কি প্রণালীকে সব ধরনের শিপিং ও বেসামরিক যাতায়াতের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করা হয় এবং এ এলাকাকে অস্ত্র মুক্ত রাখার ঘোষনা দেয়া হয়।
৯। এ চুক্তির মাধ্যমে অটোমানরা আর্মেনিয়া গণহত্যা সহ ১৯১৪ থেকে ১৯২২ সংগঠিত সকল অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।
এ ছাড়াও তুরস্কের ওপর অলিখিত আরো কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, যার আওতায় তেল ও গ্যাসের জন্য দেশটিকে খনন করা থেকে বিরত থাকতে হয়।
লুজান চুক্তির মেয়াদকাল
লুজান চুক্তি স্বাক্ষরের সময় এতে চুক্তির কোনো মেয়াদের উল্লেখ ছিল না তবে যেকোনো আন্তর্জাতিক চুক্তির কার্যকারিতার মেয়াদকাল ধরা হয় ১০০ বছর। এই হিসাবে অনেকের মতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এর কার্যকারিতা রয়েছে। অবশ্য তার মানে এ নয় যে, চুক্তির ১০০ বছর পর তুরস্কের অবস্থা ঠিক ১০০ বছর আগে ফিরে যাবে বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে।
বর্তমান (শতবর্ষের) প্রেক্ষাপটে লুজান চুক্তির কৌশলগত সমীকরণ
লুজান চুক্তির অনেক সীমাবদ্ধতার পরও এটিকে একটি কুটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখেছিলেন তুর্কি সেকুলাররা। কারণ, এটি অপমানকর সেভ্রেস চুক্তি বাতিল করেছিল যা তুরস্ককে ইউরোপ থেকে সরিয়ে এবং মধ্য ও উত্তর আনাতালিয়ায় তুরস্কের ভূখণ্ডকে একটি ছোট অংশে সঙ্কুচিত করেছিল। তবে এরদোগানের নেতৃত্বে তুর্কি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লুজান চুক্তির গুরুত্বকে প্রত্যাখ্যান করে এর সীমাবদ্ধতার বিষয়গুলো অ্যাড্রেস করার প্রতি মনোনিবেশ করেছে।
নিও-অটোমানিজমের উত্থান প্রাথমিকভাবে তুরস্কের সাবেক রাষ্ট্রপতি তুরগুত ওজালের (১৯৮৯-৯৩) সময় হয়। এ সময় লুজান চুক্তি প্রত্যাখ্যানের পক্ষে বিবৃতি দেয়া হয়। উসমানীয় গৌরবের আকর্ষণীয় প্রকাশ, বলকান থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা পর্যন্ত তুর্কি সার্বভৌমত্ব বিস্তারকারী অটোমান সাম্রাজ্যের মানচিত্র লুজান মানচিত্রকে ছাপিয়ে যায়। নভেম্বর ২০১৫ সালে এরদোগানের একেপি ও জাতীয়তাবাদী এমএইচপির মধ্যে রাজনৈতিক জোট গঠনের পর থেকে, এরদোগানের তুর্কি পুনর্জাগরণ প্রবণতা তুর্কি জাতীয়তাবাদের সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে জুলাই ২০১৬ এ ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পরে, এই সংশ্লেষণ জনসাধারণকে সংগঠিত করতে এরদোগানকে সাহায্য করে।
তুরস্কের রাজনৈতিক ইতিহাসে তুর্কি প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের পরে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান সবচেয়ে ক্যারিসম্যাটিক এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসাবে আর্বিভূত হয়েছেন। ক্ষমতায় কামাল আতাতুর্কের ১৮ বছরের রেকর্ড (১৯২০-১৯৩৮) ভেঙেছেন তিনি। প্রাথমিকভাবে, আতাতুর্কের ধর্মনিরপেক্ষ সংস্কৃতি চর্চার বিপরীতে বর্তমানে এরদোগান নব্য-অটোমান ও ইসলামী মূল্যবোধের দ্বারা চালিত সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চান এবং তুর্কি বৈদেশিক নীতিও এরদোগানের আদর্শবাদে কিছুটা প্রভাবিত।
২০২৩ এর নির্বাচনে তুরস্কে এরদোগানের প্রতিপক্ষকে সমর্থন করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের খোলামেলা আহ্বান সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ তুরস্কের সাথে সর্তক সম্পর্ক বজায় রাখছে এবং নির্বাচনে জয়ের পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টে। এরদোগানকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি দেশটির সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে একমত হয়েছেন জো বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়ায় কুর্দি পিওয়াইডি-ওয়াইপিজিকে সমর্থন এবং এরদোগানকে উৎখাতের ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিবেচিত ফতেউল্লাহ গুলেনকে আশ্রয় দেয়া আর সে সাথে তুরস্ক ও তুর্কি সাইপ্রিয়টদের বিরুদ্ধে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে গ্রিস ও সাইপ্রাসকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিঃশর্ত সমর্থন দেয়ার প্রভাব একেপি সরকারের নীতিতে দৃশ্যমান হয়। তুর্কি জনসাধারণের বৃহৎ অংশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ উভয়কেই সন্দেহের চোখে দেখে।
এরদোগানের তৎপরতা
২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, প্রথমবারের মতো এরদোগান লুজান চুক্তিকে পরাজয় বলে অভিহিত করে বলেন যে, "এটি তুর্কি উপকূলের কাছাকাছি অবস্থিত কাস্তেলোরিজোর মতো দ্বীপপুঞ্জের নিয়ন্ত্রণ সুরক্ষিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এরদোগান লুজান চুক্তিকে ঘৃণ্য সেভ্রেস চুক্তির একটি সামান্য আপগ্রেড সংস্করণ হিসেবে চিত্রিত করেন"। এরদোগান ডিসেম্বর ২০১৭ সালে এথেন্স সফরের সময় তার গ্রিক প্রতিপক্ষ প্রোকোপিস পাভলোপোলোসকে লুসান চুক্তি সংশোধন করতে বলেছিলেন। তুর্কি রাষ্ট্রপতি তার গ্রিক প্রতিপক্ষকে ইজিয়ান সাগর মহাদেশীয় শেলফ সমস্যার একটি ‘ন্যায্য’ সমাধান খুঁজে বের করতে বলেছিলেন, যার লক্ষ্য ছিল তুর্কি এবং গ্রিক মূল ভূখণ্ডের মধ্যে একটি মধ্যম রেখা আঁকা কিন্তু এরদোগানের সব অনুরোধ এথেন্স প্রত্যাখ্যান করে।
এরদোগানের আমলে তুরস্ক তার সামরিক শক্তিকে সংহত করার চেষ্টাও করে এবং করছে। গত এক দশকে, তুরস্কের সামরিক ব্যয় ৮৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জিডিপির অনুপাতে প্রতিরক্ষা ব্যয় ২.৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ২.৮ শতাংশ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তুর্কি প্রতিরক্ষা নীতিকে প্রভাবিত করে। ২০১৬ সালে আইসিস দুই তুর্কি সৈন্যকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে এবং ২০২১ সালে পিকেকে যুদ্ধবন্দী হিসেবে ১৩ জন তুর্কি সৈন্যকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তুর্কি সৈন্যদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরে, তুরস্ক এ ব্যাপারে কৌশলগত প্রতিশোধের ওপর জোর দেয়।
এরদোগান উত্তর সিরিয়ায় পিকেকে-পিওয়াইডি’র বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের জন্য একটি জাতীয় ঐক্যমত অর্জন করেন, যদিও তিনি সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে তুরস্কের হস্তক্ষেপের জন্য অনুরূপ সমর্থন পেতে ব্যর্থ হন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন বালিউনে সিরিয়ার বিমান হামলায় ৩৪ জন তুর্কি সৈন্য নিহত হয়, তখন একটি জনবিক্ষোভ সরকারের পাবলিক অ্যাপ্রুভাল রেটিংকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তবে ঠিক পরেই একেপি সরকার রাশিয়ান হুমকিকে উপেক্ষা করে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে অপারেশন স্প্রিং শিল্ড শুরু করে। এরদোগান সরকার আবারও তুর্কি জাতীয়তাবাদী মনোভাবকে বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হয়।
আগামী ২৩ শে জুলাই কি ঘটবে বা ঘটতে পারে লুজান চুক্তির মেয়াদ শেষে
যদিও এরদোয়ান সমর্থকেরা মনে করেন,"লুজান চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে চুক্তিটির নাগপাশ থেকে তুরস্ক মুক্তি পাবে"। তবে তুরস্ক চাইলেই হয়তো লুজান চুক্তি থেকে সম্পূর্ণ বেরিয়ে এসে পুরনো অটোমান সাম্রাজ্যের অঞ্চলগুলোকে নিজেদের বলে দাবি করতে পারবে না কিন্তু চুক্তির সংস্কারের দাবী অবশ্যই তুলতে পারবে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সম্প্রতি তার বিভিন্ন বক্তব্যে এ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। তিনি মনে করেন, লুজান চুক্তিতে পরিবর্তন আনা এখন সময়ের দাবী।
পশ্চিমা ও মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকদের মধ্যেও বর্তমানে বিশেষভাবে আলোচিত বিষয় হলো, ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই লুজান চুক্তির শতবর্ষ পরে কী হবে। সাধারণভাবে ধারণা করা হয় যে, লুজান চুক্তির শত বছর পরে তুরস্ক তেলের জন্য অনুসন্ধান শুরু করবে। কৃষ্ণসাগর এবং মারমারা সমুদ্রের সাথে সংযোগকারী একটি নতুন চ্যানেল স্থাপন করবে, যেখান দিয়ে জাহাজের পারাপার থেকে ফি সংগ্রহ করবে আঙ্কারা।
ইতিমধ্যেই তুরস্ক তেল গ্যাস অনুসন্ধান কাজ শুরু করেছে এবং ইস্তাম্বুল খাল ( আমার লেখা " ইস্তাম্বুল খাল " - সুলতান সুলায়মানের স্বপ্নের প্রকল্প, যার বাস্তবায়ন শুরু হল এরদোগানের হাত ধরে) - লিংক - Click This Link নামে নতুন চ্যানেল প্রকল্পের কাজও শুরু হয়েছে। যা তুরস্ককে বিশ্বশক্তি হিসাবে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। দেশের বেশীরভাগ মানুষ ও ইসলামপন্থীরা মনে করেন, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ট কিলিচদারওলু প্রেসিডেন্ট হলে কখনোই তিনি পশ্চিমাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যাওয়া এই কাজগুলো করবেন না। এটি এরদোয়ানের পক্ষেই করা সম্ভব আর তাই তুরস্কের জনগণ আবারো এরদোয়ানকে তাদের নেতা নির্বাচন করেছেন ২০২৩ সালে ভোটের মাধ্যমে।
ছবি - ANADOLU AGENCY
এরদোয়ান কি আসলেই "তুর্কির সুলতান" হতে চান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সাম্প্রতিক কার্যকলাপে পশ্চিমা ও তাদের সমর্থনপুষ্ট অনেকেই অভিযোগ করেন যে, "এরদোয়ানের উচচাভিলাস কিংবা তার কাজ-কর্মে প্রমাণিত হয় যে সে তুর্কির সুলতান হতে চায়" যদিও তা সঠিক নয়। এরদোয়ান উচচাকাংখী,বিশ্ব
রাজনীতিতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে চায় এবং মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী নেতা হিসাবে আর্বিভূত হতে সারা বিশ্বের মুসলিমদের সমস্যায় সোচচার হতেও দেখা তবে তার মানে এই নয় যে সে তুরস্ককে মুসলিম সালতানাত হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ও নিজেকে তার বাদশাহ বা সুলতান বানাতে চায়। একবিংশ শতকে এসে যে সালতানাত যে আর প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয় তা সে ভালভাবেই জানে। তবে তারপরেও এরদোয়ান সবসময়ই চায় বিশ্ব রাজনীতিতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে, চায় মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী নেতা হিসাবে আর্বিভূত হতে এবং তুর্কী জাতিকে মাথা উচু করে দাড় করাতে। তার অনেক কাজ-কর্মেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন -
১। হায়া সোফিয়া -
২০২০ সালের ২৪ জুলাই ইস্তাম্বুলের ঐতিহাসিক স্থাপনা হায়া সোফিয়াকে এরদোয়ান প্রায় ৮৬ বছর পর মসজিদ হিসেবে যেদিন উন্মুক্ত করেছিলেন, সেদিনই তিনি তাঁর চূড়ান্ত অভিপ্রায় সম্পর্কে বিশ্বকে একটি বার্তা দিয়েছিলেন। সেদিন তাঁর ধর্মমন্ত্রী ডঃ আলি এরবাস হায়া সোফিয়ায় উসমানীয় আমলের তরবারি হাতে খুতবা পড়েছিলেন।এর মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বোঝাচ্ছিলেন,"একসময় তাঁদের এক মহাপরাক্রমশালী সালতানাত ছিল এবং সেই হৃত মর্যাদা ফিরিয়ে আনার স্বপ্নই তাঁদের দেখতে হবে"।
এখানে লক্ষণীয় একটা বিষয় ছিল - হায়া সোফিয়াকে মসজিদ হিসেবে উন্মুক্ত করতে ২৪ জুলাই তারিখটিকে বেছে নেওয়া। ওই দিনকে বেছে নেওয়া হলো,ঐ দিন থেকে প্রায় এক শ বছর আগে ১৯২৩ সালের ২৪ জুলাই তারিখে লুজান চুক্তি নামের একটি দাসখত তুর্কি জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। চলতি বছরের ২৪ জুলাই সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। ওই দিন পশ্চিমাদের সব শর্তের শিকল ছিঁড়ে যাবে।
২। পূর্ব ভূমধ্যসাগরের গ্যাস ইস্যু -
সম্প্রতি ইতালি-সাইপ্রাস এবং ইসরাইলের সাথে গ্রিস পূর্ব ভূমধ্যসাগর থেকে ইউরোপে জ্বালানি স্থানান্তর করার জন্য একটি গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষর করে যা তুরস্কের ইউরোপে জ্বালানি সেতু হওয়ার পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করতে পারে বা চায়।তখন তুরস্ক "ব্লু হোমল্যান্ড" নামে একটি নতুন নৌ মতবাদের ওপর ভিত্তি করে একটি ব্রিঙ্কম্যানশিপ নীতি গ্রহণ করেন। নভেম্বর ২০১৯ সালে ব্লু হোমল্যান্ড মতবাদটি লিবিয়ার জিএনএ সরকারের সাথে এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন নিয়ে একটি সামুদ্রিক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। এই সাহসী পদক্ষেপটি এথেন্স এবং নিকোসিয়ার মধ্যে সামুদ্রিক সংলগ্নতাকে বিচ্ছিন্ন করে এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগর থেকে ইউরোপে পরিকল্পিত গ্যাস পাইপলাইন ব্লক করার তুর্কি ক্ষমতা সৃষ্টি করে। এরদোগান এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন, তার দেশ একটি "নতুন নৌ সেভরেস"এর কাছে মাথা নত করবে না?
পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ইসরাইল ও তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা আংশিকভাবে ইসরাইল, সাইপ্রাস এবং মিসরের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক গ্যাস আবিষ্কারের ফলাফল। ইসরাইল ও গ্রিসের অর্থনৈতিক স্বার্থ ইউরোপে গ্যাস রফতানি করতে আগ্রহী দেশগুলোর একটি রাজনৈতিক ব্লক গঠনের বিষয় সামনে নিয়ে আসে। তুরস্কের পাইপলাইন ব্যবহার না করে ইউরোপে জ্বালানি রফতানির প্রচেষ্টা পশ্চিমের কাছে একটি শক্তি সেতু হিসেবে দেশটির ভূমিকা পালনকে চ্যালেঞ্জ করে।
এখন পর্যন্ত মাভি মারমারা ফ্লোটিলার ঘটনা ব্যতীত ইসরাইল ও তুরস্কের মধ্যে কোনো সামরিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। তবে ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯-এ তুর্কি নৌ জাহাজগুলি গ্রিক সাইপ্রিয়ট বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (ইইজেড) বাইরে ইসরাইলি গবেষণা জাহাজ ‘ব্যাট গালিম’কে বাধা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। ইসরাইলি জাহাজের প্রতি তুর্কি প্রতিক্রিয়া তার নীল হোমল্যান্ড মতবাদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, যার দ্বারা তুরস্ক গ্রিস ও সাইপ্রাসের দখল থেকে তার ন্যায্য ইইজেড মুক্ত করতে চায়। এটি করে, আঙ্কারা এথেন্স এবং নিকোসিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করে।
এরপর কী হবে?
২০২৩ সাল তুরস্কের জন্য এমনিতেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। গত দুই দশকে তুরস্ককে এক নতুন অবস্থান ও গন্তব্যে নিয়ে এসেছেন রজব তৈয়ব এরদোগান এবং এই বছরের মাঝামাঝি দেশটিতে প্রেসিডেন্ট ও সংসদ নির্বাচনে তিনি ও তার দল একেপি এই যুগসন্ধিক্ষণের নির্বাচনে পুনর্নির্বাচিত হয়ে তুরস্ককে নতুন এক পর্বে পা রাখার সম্ভাবনাকে আরো জোরালোভাবে জাগিয়ে তুলেছেন যা পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ট কিলিচদারওলু প্রেসিডেন্ট হলে পাথর চাপা পরে যেত এবং তুরস্ককের গন্তব্যের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ত।
রজব তৈয়ব এরদোগান ২০২৩ সালের মধ্যে তুরস্কের অর্জনের জন্য অনেক লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। এর মধ্যে তুরস্কের বিদেশ-নীতির লক্ষ্য এবং দৃষ্টিভঙ্গি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ , যার মধ্যে রয়েছে -
১। তুরস্ক ইইউ সদস্যপদ পাওয়ার সব শর্ত অর্জন করবে এবং ২০২৩ সালের মধ্যে ইইউর প্রভাবশালী একটি সদস্য দেশ হওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে।
২। তুরস্ক আঞ্চলিক সঙ্ঘাত নিরসনে কার্যকর ভূমিকা নিবে।
৩। তুরস্ক বৈশ্বিক অঙ্গনে সব ক্ষেত্রে জোরালোভাবে অংশ নেবে।
৪। তুরস্ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে একটি নির্ধারক ভুমিকা পালন করবে এবং বিশ্বের শীর্ষ দশ বৃহত্তম অর্থনীতির একটিতে পরিণত হবে।
৫। নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে আঞ্চলিক সংহতকরণে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
তবে ২০২৩ সালের অর্ধেকের বেশী সময় অতিবাহিত হওয়ার পর এ কথা বলা যায় যে,প্রথম লক্ষ্য অর্জনে দেশটি কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। বাকি নির্ধারিত লক্ষ্য গুলি অর্জনের পথে তুরস্ক অনেকখানি অগ্রসর হয়েছে। একসময় সামরিক অভ্যুত্থান ঘটার একটি ব্যাধি ছিল তুরস্কের। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর এ ধরনের প্রবণতা অনেকখানি কমে এসেছে বলে ধারণা করা হয়। তুরস্ক এমন এক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে পেরেছে যেখানে প্রকৃতই জনসমর্থনের প্রতিফলন ঘটে। ক্ষমতাসীন একেপির অধীনে হওয়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দেশটির সবচেয়ে বড় তিন সিটির নির্বাচনে শাসক দল পরাজিত হয়েছে। দেশটির গণতন্ত্র চর্চা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোতে নানা ধরনের সমলোচনা সত্ত্বেও সেখানে ঐতিহ্য ও মূল্যবোধের সাথে ধর্মনিরপেক্ষতার একধরনের সমন্বয় ঘটেছে। অনেকে তুর্কি শাসনব্যবস্থাকে ইসলামী মূল্যবোধ ও ধ্যানধারণা আর পাশ্চাত্যের উদার গণতন্ত্রের একটি সমন্বিত মডেল হিসেবে বিবেচনা করেন। মধ্যপ্রাচ্যের একনায়কতান্ত্রিক মনোভাবের এ অঞ্চলে তুরস্ককে গণতান্ত্রিক সরকারগুলোর পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে।
অনেক সমালোচক মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যে তুরস্ক উসমানীয় খেলাফতের পুরনো সাম্রাজ্যকে ফিরিয়ে আনতে চাইছে। এই অভিযোগ এনে মধ্যপ্রাচ্যে মিসর-সৌদি আরব-বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সমন্বয়ে একটি অক্ষও তৈরি করা হয়েছে যার সাথে ইসরাইলের রয়েছে ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র। তুরস্ক সেই সমীকরণ পাল্টে দেয়ার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরাইলের সাথে বৈরী সম্পর্ক অনেকখানি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে তুরস্কের এবং আর্মেনিয়ার সাথেও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা নিয়েছে আঙ্কারা।
এ কথা সত্যি যে, লুজান চুক্তির মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে তুরস্ককে সঙ্কুচিত এক দেশে পরিণত করা হয়েছে। এমনকি মসুল-ইদলিব-আফরিন- রাক্কার মতো তুর্কি ঐতিহ্যের শহরকেগুলোকেও তুরস্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। লুজান চুক্তির অবসানের পর এসব এলাকাকে তুরস্ক তার মানচিত্রভুক্ত করতে পারে বলেও অনেকে সংশয় প্রকাশ করেন। ইজিয়ান সাগরের তুর্কি দ্বীপ যেগুলো গ্রিসকে স্থানান্তর করা হয়েছে সেগুলো আবার তুরস্ক নিজ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে বলে মনে করা হয়। সাইপ্রাসের ব্যাপারে তুরস্ক আবার আগ্রাসী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে বলেও মনে করা হয়।
এসব জল্পনা অনেকখানি তুরস্ক এবং এর প্রভাবকে তার সংকীর্ণ ভূখণ্ডে আটকে রাখতে করা হয় বলে মনে হয়। এরদোগান সব সময় একজন স্বপ্নচারী রাষ্ট্রনায়ক হলেও তাকে তার দীর্ঘ শাসনামলে এখন পর্যন্ত কোন অবাস্তব-উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। তিনি এমন কোনো অপরিণামদর্শী নীতি বা পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে মনে হয় না যার ফলে পুরো পাশ্চাত্যের মুখোমুখি হয়ে পড়ে তুরস্ক। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর নেয়া তুর্কি নীতি পশ্চিমারা পুরোপুরি গ্রহণ করেনি তবে এর বাস্তবতাকেও অস্বীকার করতে পারেনি। আজ পাশ্চাত্য এবং ইসরাইলি ডিপ স্টেটের অনেকে তুরস্কে শাসন পরিবর্তনের যে ভাবনা ভাবেন সে সম্পর্কে এরদোগান ওয়াকিবহাল রয়েছেন। এরদোগানকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিরীয় শরণার্থী সঙ্কটের একটি সমাধানে পৌঁছাতে হবে। নতুন বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বৃহৎ শক্তিগুলোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি এই বিষয়টি এরদোগানের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।
অন্যদিকে , ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহের বিকল্প রোড সৃষ্টিতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন তুরস্কের জন্য সমস্যা ও সম্ভাবনা দুটোই নিয়ে আসতে পারে। ইউরোপের এ ক্ষেত্রে তুরস্কের প্রতি একধরনের নির্ভরতা তৈরি হবে তবে মস্কো এটিকে ইতিবাচকভাবে নিবে বলে মনে হয়না। অন্য কোনো স্বার্থ দিয়ে ক্রেমলিনকে সমঝোতায় আনতে পারলে এটি হবে এরদোগানের কৌশলগত বিজয়। সে সাথে তুর্কি রাষ্ট্রের অখণ্ডতা অগ্রগতি এবং বিদ্যমান রূপকল্পকে সামনে রেখে এগোতে পারলে অদূরভবিষ্যতে তুরস্ক আবার পরিণত হতে পারে একটি অন্যতম বিশ্বশক্তিতে। আর তাই ২০২৩ সাল হতে পারে নিঃসন্দেহে এই ক্ষেত্রে একটি বিরাট মাইলফলক।
লুজান চুক্তি নিয়ে কিছু ভূল ধারণা
১। এই চুক্তি ১০০ বছর পরে শেষ হয়ে যাবে।
প্রকৃত ঘটনা - এই চুক্তিপত্রে এমন কোনো ধারা নেই যেখানে লেখা আছে লুজান চুক্তি ১০০ বছর পরে শেষ যাবে। এমনকি গোপন কোন ধারাও নেই। এনিয়ে তুরস্কের সব বিখ্যাত ইতিহাসবিদরাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে লুজান চুক্তি ১০০ বছর পরে শেষ হওয়া নিয়ে কোথাও কিছু লেখা নেই। এগুলো সব মনগড়া, বানোয়াট এবং গুজব।
২। এই চুক্তির কারণে তুর্কিরা তাদের খনিজ সম্পদ উত্তোলন করতে পারছে না।
প্রকৃত ঘটনা - লুজান চুক্তির কোথাও তুর্কিদের খনিজ সম্পদ নিয়ে কোনও কিছু লেখা নেই। আর তুর্কিদের খনিজ সম্পদ উত্তোলনের ওপরে কোনও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাও নেই। তুর্কিরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খনিজ সম্পদ উত্তোলন করছে। এর মধ্যে আছে স্বর্ণ, তেল, গ্যাস, বোরন ও কয়লা।
৩। এই চুক্তির কারণে তুর্কিরা বসফরাস এবং চানাক্কালে প্রণালীর টোল আদায় করতে পারছে না।
প্রকৃত ঘটনা - এই চুক্তির কয়েক বছর পরে মন্ট্রেক্স চুক্তি নামে আরেকটি চুক্তি হয়েছিল সেটির কারণে টোল আদায় করতে পারছে না এবং সেই চুক্তিটিও কমপক্ষে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত বলবত থাকবে। সুতরাং ততদিন পর্যন্ত টোল আদায়ের বিষয়টির কোনও সুরহা হবে না।
৪। এই চুক্তি শেষ হলে তুরস্ক সিরিয়ার রাক্কা এবং আলেপ্পো শহরগুলো দখল করে নেবে।
প্রকৃত ঘটনা - যেহেতু চুক্তি শেষ হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই। তাই সিরিয়ার এই শহরগুলো দখলেরও কোন বিষয় নেই। আর তুরস্ক ইতিমধ্যেই সিরিয়ায় সামরিক অভিযান চালিয়ে দেশটির অনেকখানি অঞ্চল তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে।
৫। এই চুক্তি শেষ হলে ইরাকের মসুল শহর তার দখলে নিয়ে নেবে তুরস্ক।
প্রকৃত ঘটনা - না, তুরস্কের দ্বারা মসুল শহর দখলের কোন সম্ভাবনা নেই। তবে, ইরাকের উত্তরাঞ্চলে ঘাঁটি গেড়ে থাকা পিকেকে সন্ত্রাসী সংগঠনটির বিরুদ্ধে তুরস্ক কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন সময় সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে। কিছুদিন আগে সে অভিযান আরও ব্যাপকভাবে শুরু করছে কিন্তু তা মসুল শহর থেকে অনেক দূরে। আর এ বিষয় নিয়ে ইরাক সরকারের সঙ্গেও ভালো যোগাযোগ আছে আঙ্কারার।
৬। ২০২৩ সালে তুরস্কে খিলাফত ফিরে আসবে।
প্রকৃত ঘটনা - এ বিষয়টিও আসলে এখনও পর্যন্ত গুজব এবং তুরস্ক-বিদ্বেষীদের পশ্চিমা বিশ্বে এবং সেক্যুলারদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করার জন্য রটিত কিছু কাল্পনিক থিওরি। যে খিলাফত চলে গেছে সে আর ফিরে আসবেনা এমনকি এ নিয়ে তুরস্কের ক্ষমতাসীনদের মধ্যে কোনও চিন্তা ভাবনাও আছে বলে মনে হয়না।
৭। আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো এমনিতেই ১০০ বছর পরে শেষ হয়ে যায় , এটি একটি প্রচলিত রীতি।
প্রকৃত ঘটনা - একথাটিও সঠিক না। কারণ, বিশ্বে এখনও অনেক আন্তর্জাতিক চুক্তি আছে যেগুলো একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বলবৎ আছে।
এত সব আলোচনার পরে এ কথা আমরা বলতে পারি যে, লুজান চুক্তি ২০২৩ সালের জুলাই মাসে হয়ত শেষ হচ্ছে না।অন্যদিকে, লুজান চুক্তি নিয়ে মুখরোচক আলোচনার অনেক কথাই সঠিক না বা এখনো সঠিক বলে প্রমাণিত হয়নি। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে,লুজান চুক্তিটি একটি শান্তি চুক্তি আর শান্তি চুক্তি শেষ হয় কেবল যুদ্ধ শুরু হলে।
শেষ
তুরস্ক নিয়ে আরো দুটি লেখা -
২। ইস্তাম্বুল খাল - শেষ পর্ব - লিংক Click This Link
১। ইস্তাম্বুল খাল - সুলতান সুলায়মানের স্বপ্নের প্রকল্প, যার বাস্তবায়ন শুরু হল এরদোগানের হাত ধরে - ১ ম পর্ব ।
লিংক - Click This Link
===================
তথ্যসূত্র ও সহযোগীতায় -
১। লুজান চুক্তির শতবর্ষ পর তুরস্ক - https://www.dailynayadiganta.com/sub-editorial/
২। লুজান চুক্তি - https://bn.wikipedia.org/wiki/
৩। লুজান চুক্তি: অটোমান সাম্রাজ্যের কফিনে শেষ পেরেক - Click This Link
৪। তুরস্কের লুজান শান্তি চুক্তি নিয়ে যতসব ভ্রান্ত ধারণা - https://www.jugantor.com/international/399319/
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:০২