
আবারো পাহাড় আর মেঘের আবদার পূর্ণ করতে তাদের দর্শন দিতে চলে গেলাম বান্দরবান। এক বিশাল স্বর্গরাজ্য দেখার জন্য মন আকুল হয়ে ছিলো। তাই পাহাড়ী মানুষ পাহাড়েই ফিরে গেলাম থানচি
-> পদ্মমুখ ঝিরি
-> তিমির ঝর্ণা
-> চিংড়ি ঝর্ণা
-> আমিয়াকুম
-> ভেলাকুম
-> নাইক্ষ্যাং ঝর্ণা
-> নাফাকুম
-> রেমাক্রী ফলস
-> কুমারী ঝর্ণা
-> লিলুক ঝর্ণা
-> বড়পাথর, রাজাপাথর ইত্যাদি
-> তিন্দু
সাথে নাম না জানা ঝর্ণা, পাহাড়ী ঝিরি আর পাড়াগুলো তো আছেই। অনেক ঘুরে দেখেছি সবকিছু। অনেক মিষ্টি অভিজ্ঞতায় পূর্ণ করলাম ঝুলি। গল্পগুলো নিয়ে লিখব এখানে কয়েক পর্বে।
প্রথম পর্বঃ
প্রথম রাতের ধামাকা বাস জার্নি শেষে বান্দরবানে পৌছাই খুব ভোরে। রাত ১১.৩০ এ বাস ঢাকা ছেড়ে ভোর ৫.৩০ এ বান্দরবান নামিয়ে দেয়। সারা রাত N1 এ HINO 1j ইঞ্জিনের টানে মেজাজ পুরাই ফুরফুরা ছিলো। তার উপর বান্দরবানে নেমে সকালটা দেখে মন আরো চাঙ্গা হয়ে গেলো

ছবিঃ শুভ সকাল বান্দরবান।
বাস থেকে নেমে একটা হোটেলে উঠে ফ্রেশ হয়ে আমরা সকালের নাস্তা করে নেই। এরপর চান্দের গাড়ী আসতে লেট হওয়াতে ৭.৩০টায় আমরা রওনা দেই #থানচি'র উদ্দেশ্যে। উল্লেখ্য #বান্দরবান থেকে #থানচি ৭৭.৫ কিলো পথ। রাস্তা অনেক উঁচু আর পুরোটা যাবো মেঘ খেতে খেতে। কিছুদূর যেতেই আমরা সবাই গাড়িতে দাঁড়িয়ে যাই। মেঘের মাঝে দিয়ে আমরা #শৈলপ্রপাত, #চিম্বুক আর #নীলগিড়ি অতিক্রম করে চলতে থাকি আমাদের লক্ষ্যে। প্রায় ৪ঘন্টা জার্ণী করে দুপুর ১১.৩০টা নাগাদ আমরা পৌছায় থানচি। তখনও জানিনা সামনে কি অপেক্ষা করছে।


ছবিঃ বান্দরবান থেকে থানচি যাবার পথে মেঘের হাতছানি আর ভীষণ পাহাড়ী বাঁক।

ছবিঃ থানচিতে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়ে পুলকিত
#থানচিতে দুপুরের খাবার সেরে নৌকায় করে রওনা দেই #পদ্মমুখের উদ্দেশ্যে।

ছবিঃ থানচি-তে সাঙ্গু নদীর কোলে নৌকা ঘাট।
পাহাড়ের বাঁক কেটে কেটে সাঙ্গু নদীতে কাঠের নৌকাগুলো চলতে থাকে। মাত্র ২০ মিনিটেই পৌছে যাই #পদ্মমুখ। বাকি নৌকাগুলো আসলে দুপুর ১টায় আমাদের ট্রেকিং শুরু হয় #পদ্মমুখ_ঝিরি থেকে। গন্তব্য #থুইসা_পাড়া।

ছবিঃ পদ্মমুখ, এখানে থেকে হন্টন শুরু…
উঁচুনিচু পাহাড় আর অনেক ঝিরি পার হয়ে আমরা শুধু চলতেই থাকি। এই গন্তব্যের যেনো শেষ নেই। পথিমধ্যে ক্লান্ত হলে জিরিয়ে নেই। বৃষ্টি আসলে পলথিন এ ব্যাগ ভরে হাঁটি, গরমে ভিজে আবার রৌদ্রের মধ্যে হাঁটি। এই রৌদ্র, এই বৃষ্টি। কিন্তু হাঁটার শেষ নেই। দুপুর ৩.৩০টা নাগাদ আমরা পৌছাই #রোনাজন_পাড়া। এরপর আবার হেটে সন্ধ্যা ৬.৩০ এ পৌছাই হরিশচন্দ্র পাড়া।

ছবিঃ #হরিশচন্দ্র পাড়া। এখানেই সন্ধ্যা নামে, তাই এইদিনে আর ছবি তোলা হয়নি।
গাইডকে যখনই জিজ্ঞাসা করি -" আর কতক্ষন?" , উনার একটাই উত্তর - "আর ১ঘন্টা" এই ১ঘন্টা আর শেষ হয়না। ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত আমাদের অবস্থা খারাপ একদম। সবাই ঝর্ণার পানি নিয়ে গ্লুকোজ/স্যালাইন মিশিয়ে পান করছি আর যার যা আছে খাচ্ছি।


ছবিঃ পাহাড়ী ঝিরিপথ ও হন্টন পথ।
১২০০/১৮০০/২২০০ ফুট পাহাড়গুলোর কিনারা দিয়ে পিচ্ছিল পথ পাড়ি দিয়ে সামান্য টর্চের আলোয় পথ চলতে থাকি। একটু এদিক সেদিক হলেই একদম শেষ। এভাবেই রাত ৯.৩০ এ আমরা পৌছাই #নতুন_পাড়া। ওখানে আবার বিশ্রাম নিয়ে হাঁটা শুরু করি। এরপর আর গাইড কে জিজ্ঞাসা করিনি, রোবটের মতো খাড়া পাহাড়গুলোর কিনারা দিয়ে টর্চের আলো ধরে সবাই এক লাইনে অসংখ্য পাহাড় পাড়ি দিয়ে ১২টায় #রোমাক্রী_খালের দেখা পাই। খালে প্রচুর পানি আর স্রোত থাকায় দড়ি বেধে আমরা খাল পার হই। সারাদিন ট্রেক করে সেই খালে গোসল করে রাত ১টায় আমরা কাংক্ষিত #থুইসা_পাড়া পৌছাই। খালের ২পাশে উঁচু পাহাড় আর উপরে চাঁদের আলো। সারা পথের ক্লান্তি যেনো একেবারেই দূর করে দেয়ার মতো পরিবেশ। ভুলবো না সেদিনের অভিজ্ঞতা আর হাঁটার যন্ত্রণা
এভাবেই প্রথম দিন ১২ঘন্টা ট্রেকিং করে আমরা #থুইসা_পাড়া যেয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।
সকালে উঠে যে হাঁটতে হবে আবার .... যাবো আমিয়াকুম.....
- ধন্যবাদ এতদূর পড়ার জন্য
২য় পর্ব পাবেন এখানেঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





