somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমিয়াকুম, নাফাকুম আর তিন্দু (পর্ব-১)

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আবারো পাহাড় আর মেঘের আবদার পূর্ণ করতে তাদের দর্শন দিতে চলে গেলাম বান্দরবান। এক বিশাল স্বর্গরাজ্য দেখার জন্য মন আকুল হয়ে ছিলো। তাই পাহাড়ী মানুষ পাহাড়েই ফিরে গেলাম থানচি
-> পদ্মমুখ ঝিরি
-> তিমির ঝর্ণা
-> চিংড়ি ঝর্ণা
-> আমিয়াকুম
-> ভেলাকুম
-> নাইক্ষ্যাং ঝর্ণা
-> নাফাকুম
-> রেমাক্রী ফলস
-> কুমারী ঝর্ণা
-> লিলুক ঝর্ণা
-> বড়পাথর, রাজাপাথর ইত্যাদি
-> তিন্দু
সাথে নাম না জানা ঝর্ণা, পাহাড়ী ঝিরি আর পাড়াগুলো তো আছেই। অনেক ঘুরে দেখেছি সবকিছু। অনেক মিষ্টি অভিজ্ঞতায় পূর্ণ করলাম ঝুলি। গল্পগুলো নিয়ে লিখব এখানে কয়েক পর্বে।
প্রথম পর্বঃ
প্রথম রাতের ধামাকা বাস জার্নি শেষে বান্দরবানে পৌছাই খুব ভোরে। রাত ১১.৩০ এ বাস ঢাকা ছেড়ে ভোর ৫.৩০ এ বান্দরবান নামিয়ে দেয়। সারা রাত N1 এ HINO 1j ইঞ্জিনের টানে মেজাজ পুরাই ফুরফুরা ছিলো। তার উপর বান্দরবানে নেমে সকালটা দেখে মন আরো চাঙ্গা হয়ে গেলো :D


ছবিঃ শুভ সকাল বান্দরবান।
বাস থেকে নেমে একটা হোটেলে উঠে ফ্রেশ হয়ে আমরা সকালের নাস্তা করে নেই। এরপর চান্দের গাড়ী আসতে লেট হওয়াতে ৭.৩০টায় আমরা রওনা দেই #থানচি'র উদ্দেশ্যে। উল্লেখ্য #বান্দরবান থেকে #থানচি ৭৭.৫ কিলো পথ। রাস্তা অনেক উঁচু আর পুরোটা যাবো মেঘ খেতে খেতে। কিছুদূর যেতেই আমরা সবাই গাড়িতে দাঁড়িয়ে যাই। মেঘের মাঝে দিয়ে আমরা #শৈলপ্রপাত, #চিম্বুক আর #নীলগিড়ি অতিক্রম করে চলতে থাকি আমাদের লক্ষ্যে। প্রায় ৪ঘন্টা জার্ণী করে দুপুর ১১.৩০টা নাগাদ আমরা পৌছায় থানচি। তখনও জানিনা সামনে কি অপেক্ষা করছে।


ছবিঃ বান্দরবান থেকে থানচি যাবার পথে মেঘের হাতছানি আর ভীষণ পাহাড়ী বাঁক।


ছবিঃ থানচিতে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়ে পুলকিত :)
#থানচিতে দুপুরের খাবার সেরে নৌকায় করে রওনা দেই #পদ্মমুখের উদ্দেশ্যে।


ছবিঃ থানচি-তে সাঙ্গু নদীর কোলে নৌকা ঘাট।
পাহাড়ের বাঁক কেটে কেটে সাঙ্গু নদীতে কাঠের নৌকাগুলো চলতে থাকে। মাত্র ২০ মিনিটেই পৌছে যাই #পদ্মমুখ। বাকি নৌকাগুলো আসলে দুপুর ১টায় আমাদের ট্রেকিং শুরু হয় #পদ্মমুখ_ঝিরি থেকে। গন্তব্য #থুইসা_পাড়া।


ছবিঃ পদ্মমুখ, এখানে থেকে হন্টন শুরু…
উঁচুনিচু পাহাড় আর অনেক ঝিরি পার হয়ে আমরা শুধু চলতেই থাকি। এই গন্তব্যের যেনো শেষ নেই। পথিমধ্যে ক্লান্ত হলে জিরিয়ে নেই। বৃষ্টি আসলে পলথিন এ ব্যাগ ভরে হাঁটি, গরমে ভিজে আবার রৌদ্রের মধ্যে হাঁটি। এই রৌদ্র, এই বৃষ্টি। কিন্তু হাঁটার শেষ নেই। দুপুর ৩.৩০টা নাগাদ আমরা পৌছাই #রোনাজন_পাড়া। এরপর আবার হেটে সন্ধ্যা ৬.৩০ এ পৌছাই হরিশচন্দ্র পাড়া।


ছবিঃ #হরিশচন্দ্র পাড়া। এখানেই সন্ধ্যা নামে, তাই এইদিনে আর ছবি তোলা হয়নি।
গাইডকে যখনই জিজ্ঞাসা করি -" আর কতক্ষন?" , উনার একটাই উত্তর - "আর ১ঘন্টা" এই ১ঘন্টা আর শেষ হয়না। ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত আমাদের অবস্থা খারাপ একদম। সবাই ঝর্ণার পানি নিয়ে গ্লুকোজ/স্যালাইন মিশিয়ে পান করছি আর যার যা আছে খাচ্ছি।


ছবিঃ পাহাড়ী ঝিরিপথ ও হন্টন পথ।
১২০০/১৮০০/২২০০ ফুট পাহাড়গুলোর কিনারা দিয়ে পিচ্ছিল পথ পাড়ি দিয়ে সামান্য টর্চের আলোয় পথ চলতে থাকি। একটু এদিক সেদিক হলেই একদম শেষ। এভাবেই রাত ৯.৩০ এ আমরা পৌছাই #নতুন_পাড়া। ওখানে আবার বিশ্রাম নিয়ে হাঁটা শুরু করি। এরপর আর গাইড কে জিজ্ঞাসা করিনি, রোবটের মতো খাড়া পাহাড়গুলোর কিনারা দিয়ে টর্চের আলো ধরে সবাই এক লাইনে অসংখ্য পাহাড় পাড়ি দিয়ে ১২টায় #রোমাক্রী_খালের দেখা পাই। খালে প্রচুর পানি আর স্রোত থাকায় দড়ি বেধে আমরা খাল পার হই। সারাদিন ট্রেক করে সেই খালে গোসল করে রাত ১টায় আমরা কাংক্ষিত #থুইসা_পাড়া পৌছাই। খালের ২পাশে উঁচু পাহাড় আর উপরে চাঁদের আলো। সারা পথের ক্লান্তি যেনো একেবারেই দূর করে দেয়ার মতো পরিবেশ। ভুলবো না সেদিনের অভিজ্ঞতা আর হাঁটার যন্ত্রণা :(
এভাবেই প্রথম দিন ১২ঘন্টা ট্রেকিং করে আমরা #থুইসা_পাড়া যেয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।
সকালে উঠে যে হাঁটতে হবে আবার .... যাবো আমিয়াকুম.....
- ধন্যবাদ এতদূর পড়ার জন্য :)
২য় পর্ব পাবেন এখানেঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৪
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×