আসসালামু আলাইকুম
আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন। সারা পৃথিবী এক ভয়াবহ ও দুর্বিষহ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই আসুন আমরা সবাই আরও একটু সচেতন হই, অন্যকেও সচেতন হবার পরামর্শ দেই। মহান আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে ভালো রাখুন - আমীন।
যাই হোক এবার শুরু করা যাক। আমরা সবাই আমাদের সঙ্গি নিয়ে অনেক আলোচনা পর্যালোচনা করি মনের অজান্তেই। তাই এইখানে আমি সেই আলোচনা বা পর্যালোচনা করতে চাই না। আমি শুধু আমার সঙ্গিকে নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করতে চাই।
আমাদের প্রথম দেখা হয় ১৪ই অগাস্ট, ২০১৫ তে। সেই দেখাটা কিন্তু হয়েছিল পরিবারের সম্মতিতে। আচ্ছা তার একটা নাম দেই - নিলিমা। নিলিমার সাথে যেদিন প্রথম দেখা হয়েছিল সেইদিন তার সাথে তার মা ও বাবা এসেছিলেন। আসলে দেখাটা হয়েছিল ঘটকের মাধ্যমে। এখন নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন আমি কোন দেখার কথা বলছিলাম। সেইদিন আমার মা কিছুটা শারীরিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন তাই আমার সাথে আমার মা ও বাবা ছিলেন না। আমি একাই সাহস করে পাত্রি দেখতে গিয়েছিলাম। সেইদিন ছিল শুক্রবার। জুম্মার নামাজ পরবো বলে সকাল সকাল দেখা করতে গিয়েছিলাম। আপনারা হইত বলতে পারেন তাহলে বিকালে নয় কেন? আমি আসলে আমার পরিচিত একজন মানুষের সাথে দেখা করব বলে কথা দিয়েছিলাম। তাই দেখা সাক্ষাৎ টা আগে ভাগেই সেরে নিতে চেয়েছিলাম।
আমার সাথে আমার গাড়ি ছিল, তাই আমি নিজেই ড্রাইভ করে কাঁটাবন মোড়ের একটু সামনে একটা ফাস্ট ফুড বা রেস্টুরেন্ট যাই। যেটা কিনা আগেই নির্ধারণ করা ছিল। প্রথমে যে রেস্টুরেন্টটা সিলেক্ট করা ছিল, সেটাতে বসার মত কোন পরিবেশ ছিল না। তাই উপায়েন্তর না দেখে পাশের আরেকটা রেস্টুরেন্টে আমার জন্য অপেক্ষায় ছিল নিলিমা ও তার পরিবার। আমি প্রথমে সেই রেস্টুরেন্টেই যাই যেটা কিনা পূর্ব নির্ধারিত ছিল। কাউকে না দেখে আমি আবার বাইরে চলে আসি, বাইরে আসার পরেই আমি আমাদের ঘটক সাহেবকে দেখতে পাই। প্রথমে একটু রাগ হয়েছিলাম। যাই হোক, পরের রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করার দরজা খুলার সাথে সাথে আমি একটু দূরে একটি মেয়েকে দেখতে পাই। মেয়েটিকে দেখেই আমার ভালো লেগেছিল। তাই মনে মনে আল্লাহের কাছে দোয়া করি যেন সেই মেয়েটি হয়। আল্লাহপাক আমার মনের কথে শুনলেন। আমাকে আমার ঘটক সাহেব সেই দিকে নিয়ে গিয়ে একটি সোফায় বসতে বললেন। মেয়েটিকে তখন সরাসরি দেখতে পারছিলাম না - কারন তখন খুব লজ্জা লাগছিল। তাই পাশে একটা আয়না ছিল, সবার নজর এড়িয়ে মেয়েটিকে সেই আয়না দিয়ে দেখছিলাম। নাহ বার বার মেয়েটি মেয়েটি বলতে ভালো লাগছে না। নিলিমাকে দেখতে খুবই সাধারণ লাগছিল কিন্তু আমার কাছে অসাধারন দেখতে লাগছিল।
এবার শুরু হল আমার ইন্টারভিউ দেওয়ার পালা। মানে আমি কি করি, কোথায় থাকি, আমার ফ্যামিলিয়ে কে কে আছে এই সব আরকি। আমি প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার মাঝে মাঝে নিলিমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছিলাম। কি এক ভাল লাগা কাজ করছিল তখন। আমরা মোটামুটি ৩০ থেকে ৪০ মিনিট কথা বলেছিলাম। আমাকে যত প্রশ্ন সবই নিলিমার মা (অ্যান্টি) করেছিলেন। তারপর অ্যান্টির কথা যখন শেষ হয়েছিল তখন আমাকে বলা হল আমি কি নিলিমার সাথে একা কথা বলতে চাই কিনা। আমি তখন লজ্জায় না বলেছিলাম। কিন্তু মনে মনে খুব ইচ্ছে করছিল নিলিমার সাথে একা কথা বলতে। আমাদের কথা যখন শেষ তখন সবাই রেস্টুরেন্ট থেকে বের হচ্ছি তখনই ঘটক সাহেব আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, মেয়েটিকে কি আমার পছন্দ হয়েছে কিনা? আমি তখন কোন উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করছিলাম যে, আপনি খোঁজ নেন যে আমাকে কি তারা পছন্দ করেছে কিনা? এইখানে বলে রাখা ভাল - প্রথম দেখাতে কিন্তু নিলিমাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। যখন আমরা একে অপরের কাছ থেকে বিদায় জানাচ্ছি তখন নিলিমা আমার দিকে একবার ফিরে তাকিয়ে কি যেন বলার চেষ্টা করছিল কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, আমি কিছুই বুজতে পারি নাই। সবার সাথে বিদায় নিয়ে একে অপরের কাছ থেকে যে যার মত বাড়ি ফিরে গেলাম।
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৫