somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার স্মৃতিকাতরতা

১৩ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ একটা বই পড়লাম, হুমায়ুন আহমেদের-“নীল মানুষ”, সেখানে ফরহাদ সাহেব ঝুম বৃষ্টিতে ভিজেন। পড়ে দেশে থাকতে বৃষ্টিতে ভেজার কথা মনে পড়ে গেল, সেই সাথে আরো কত স্মৃতি।।/:)

মনে পড়ে, প্রতি বছর কীভাবে কীভাবে যেন বছরের প্রথম বৃষ্টিতে ভেজা হতই। কিভাবে সেটা হত সেটা ভাবতে আশ্চর্যই লাগে এখন। আর এখন বৃষ্টিতে ভেজার আগে চিন্তা করতে হয় ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। শেষ কবে ঝুম বৃষ্টিতে ভিজেছি সেটা ভুলেই গেছি।হায়রে সময়!!! কিন্তু যখন চিন্তা করি, কেন এমন হয় তখন নিজেকে প্রবোধ দেই এই বলে যে এখানে বৃষ্টির পানি বেশি ঠান্ডা…:D

ক্লাস নাইন/টেনে(সঠিক ক্লাসটা মনে নাই মন খারাপ:| ) থাকতে একবার ইংরেজী প্রাইভেট পড়ে সব বন্ধুরা যখন স্কুলে যাচ্ছিলাম, তখন নামলো প্রচন্ড বৃষ্টি, এক্কেবার কুত্তাবিলাই বৃষ্টি যাকে বলে। তো আমাদের কারো সাথেই ছাতা ছিল না, থাকলেও হয়তো সেটা ব্যবহৃত হতো বলে মনে হয় না। আমরা স্কুলে গেলাম একবারে কাক ভেজা হয়ে।।সেরকম ভেজা কি আর কখনো হবে??? মনে হয় না…

গত ডিসেম্বরে আমার স্ত্রী ওর শহর হতে আমার এখানে বেড়াতে আসে। দেশ থেকে আসার পর থেকে সমুদ্র দেখা হয় নাই। ওর ওখানে সমুদ্র কেন, একটা বড় নদী পর্যন্ত নেই। তো যাবো সমুদ্র দেখতে কিন্তু আমার শহরের কাছের সমুদ্র দেখে মনে হল এর চেয়ে পদ্মা পাঁড়ে গেলেও মনে হয় আরো বেশী দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি দেখা যেত। এখানে দুইপাশেই পাঁড় দেখা যায়, আর একে ওরা বলে সমুদ্র (এটা আসলে ইনলেট)। কেউ একজন বলেছিল যে ভিক্টোরিয়াতে খোলা সমুদ্র দেখা যায়, কারণ সেটা একটা দ্বীপ। গেলাম সেখানে কিন্তু কিসের কি।। মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেছিল। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে যে, দুই-তিনবার এইসব বড় নদীর মত সমুদ্রের কাছাকাছি গিয়েও পানিতে নামাতো দূরের থাক, পা-ও ভিজাইনি। অথচ যেবার কক্সবাজার গেলাম, টানা কয়েক ঘন্টা শুধু পানিতেই দাপাদাপি করেছিলাম। প্রতেকবার সী-বীচে গেলেই মনে হয় আমরা কত ভাগ্যবান যে আমাদের এরকম উত্তাল, জীবন্ত একটা সমুদ্রতীর আছে; যেখানে চাইলেই দেশের মানুষ কত সহজে যেতে পারে। অবশ্য যখন পত্রিকায় দেখি যে আমরা আমাদের সেই সমুদ্রসৈকতকে কি অবলীলায়ই না নষ্ট করছি, তখন ভবিষ্যত প্রজম্মের জন্য মনটা খারাপ হয়ে যায়/:)। এই দূরদেশে থেকে আজ আমার সেই সমুদ্রটাকে খুব বেশি মনে পড়ছে।। কবে যে দেশে যাবো…

স্মৃতিগুলো বড্ড বেয়াড়া। একটা মনে পড়লে সাথে আরো কয়েকটাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসে। ইউনিভার্সিটিতে প্রথম টার্মের মাঝামাঝি রোজা পড়লো। তখন নতুন নতুন কলব্রীজ খেলা শিখেছি। প্রতিদিন সকাল ১১টার দিকে এক বন্ধুর বাসায় যেতাম কার্ড খেলতে। সারাদিন খেলে শুধু ইফতারীর সময় বাসায় আসতাম ইফতারী করতে। এরপর তারাবীহর নামাজের কথা বলে আবার গিয়ে মোনাজাতে বসে যেতাম;), চলতো সেটা দশটা-সাড়ে দশটা পর্যন্ত। বাসায় বলতাম যে নামায শেষে একটু আড্ডা দিছি।। কি মজাই না ছিল দিনগুলা:)।। আর কি আসবে সেই দিন??? মনে হয় না…

দেশ থেকে চলে আসার পরে প্রথম দিকে তেমন কিছু মনে হতো না, মাঝেমাঝে খারাপ লাগতো মা-বাবা-ভাইয়ের জন্য। কিন্ত এখন আর খারাপ লাগাটা শুধু ফ্যামিলির জন্য সীমাবদ্ধ নাই। এখন দেশের একটা খারাপ খবর পড়লেও খারাপ লাগে। এখন ফেলে আসা বন্ধুদের জন্য খারাপ লাগে, খারাপ লাগে ইউনিভার্সিটির জীবনটা শেষ হয়ে গেছে বলে। এমনকি মাঝে মাঝে স্যারদের ও মিস করি, মিস করি তাদের ক্লাসকেও।। জীবন বড়ই বিচিত্র...
(সচলায়তনে পূর্ব প্রকাশিত)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×