বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় বাঙালি কবি কাজী নজরুল ইসলাম, যিনি বাংলা সাহিত্যে অগ্রগামী ভৃমিকা পালন করেন। তিনি বাংলা সাহিত্যের বাংলাভাষাকে আরো সমৃদ্ধ করেছেন এবং বাংলা সাহিত্যে তাঁর গুরুত্ব অরিসীম। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ দুই বাংলাতেই তাঁর জনপ্রিয়তা সমান ভাবে। একাধারে তিনি কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক ও সম্পাদক।
ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে ফিরে এসে কাজী নজরুল সাংবাদিকতাকে পেশা হিসাবে বেছে নেন। তখন তিনি কলকাতার ৩২ নং স্ট্রিটে বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির অফিসের কর্মকর্তা মুজাফ্ফর আহমদের সাথে বসবাস শুরু করেন। এখান থেকেই তাঁর সাংবাদিকতা করতে শুরু করেন। প্রথম দিকে তাঁর মোসলেম ভারত, বঙ্গীয় মুসলমান সহিত্য পত্রিকা, উপাসনাসহ আরো কিছু পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়। লেখাগুলোর মধ্যে মোসলেম ভারত পত্রিকায় তাঁর খেয়া-পারের তরণী ও বাদল প্রাতের শরার কবিতা দুটির প্রশংসা করে কবি ও সমালোচক মোহিত লাল মজুমদার ঐ পত্রিকায় একটি সমালোচনা প্রবন্ধ লিখেন। এর পর থেকেই নজরুলের সাথে বিশিষ্ট সাহিত্যিকদের সাথে ঘনিষ্ট পরিচয় হতে শুরু করেন। বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির অফিসে থাকার সুবাদে কাজী মোতাহার হোসেন, মোজ্জাম্মেল হক, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, আফজালুল হক প্রমুথের সাথে পরিচয় হন। তৎকালীন কলকাতার দুটি জনপ্রিয় সাহিত্য আসর গজেনদার আড্ডা ভারতীয় আড্ডায় অংশগ্রহনের কারণে আরো ঘনিষ্ট হয়ে ওঠেন অতুলপ্রসাদ সেন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, শিশির ভাদুড়ী, নিরেমলন্দু লাহড়ী, দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ওস্তাদ করমতুল্লাহ খাঁ প্রমুখের সাথে।
১৯২০ সালের ১২ জুলাই থেকে অসহযোগ ও খেলাফত আন্দলনের প্রেক্ষপটে নবযুগ নামে একটি সান্ধ্য দৈনিক প্রকাশিত হওয়া শুরু করে। শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক ঐ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। এই পত্রিকার মাধ্যমে কাজী নজরুল ইসলাম নিয়মিত সাংবাদিকতা শুরু করেন। ঐ বছরই নবযুগ পত্রিকায় “মুহাজিরীন হত্যার জর্ন দায়ী কে?” শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেন। এর পর থেকে নজরুলের উপর পুলিশের নজরদারী শুরু হয় এবং ঐ পত্রিকার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। সাংবাদিকতার মাধ্যমে তৎকালিন কলকাতার বিভিন্ন সামাজিক অবস্থা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমিতিতে যোগদানের মাধমে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করার সুযোগ পান। তখনও তিনি গান লিখে সুর দিতে শুরু করেননি। শুধুমাত্র ছোট ছোট অনুষ্ঠানে কবিতা ও সংগীত চর্চা করছিলেন। এর মধ্যে মোহনী সেন গুপ্তা তার কয়েকটি কবিতার সুরদিয়ে স্বরলিপিসহ পত্রিকায় প্রকাশ করেছিলেন। তার কয়েকটি গানের মধ্যে হলো- হয়তো তোমার দেখা পাবে।
১৩২৭ সনে সওগাত পত্রিকায় বৈশাখ সংখায় তার প্রথম গান ‘বাজাও প্রভু বাজাও ঘন’ প্রকাশিত হয়। ১৯২১ সালে এপ্রিল-জুনের দিকে নজরুল মুসলিম সাহিত্য সমিতির গ্রন্থ প্রকাশক আলী আকবরে সাথে পরিচিত হন।তার সাথেই তিনি প্রথম কুমিল্লা যান এবং সেখান বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়ীতে আসেন। আর এখানেই পরিচিত হন প্রমিলা দেবীর সাথে। তিনি ব্রিটিশদের বিরোদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। প্রকাশ করেন বিদ্রোহী এবং ভাঙার গান ও ধুমকেতুর মতো সাময়িকী। জেলে বন্দি হবার পর লিখেন রাজবন্দীর জবানবন্দী। তাঁর সাহিত্য কর্ম ছিল মূলত ভালবাসা, মুক্তি ও বিদ্রহ। ধর্মীয় লিঙ্গভেদের বিরুদ্ধে নিয়েও তিনি লিখেছেন। বাংলা সাহিত্যে তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। তার মধ্যে হলো একটি ইসলামী সংগীত বা গজল। এছাড়া তিনি শ্যামাসংঘীত ও হিন্দু ভক্তিগীতি রচনা করেন। তিনি পিক্স ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে আজীবনের জন্য সাহিত্যকর্ম থেকে বিাছন্ন হয়ে পড়েন। ১৯৭২ সালের ২৪ মে ভারত সরকারের অনুমতি ক্রমে কবি কাজী নজরুলকে বাংলাদেশে আনা হয়। বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্টপতি শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর প্রতি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মান সূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৭৬ সালে কবিকে বাংলাদেশের নাগরিত্ব প্রদান করা হয় এবং ঐ বছর ২১ শে ফেব্র“য়রিতে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৬ সালে ২৯ আগষ্ট তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
কাজী নজরূল ইসলামকে বাংরাদেশের জাতীয় কবি হিসাবে স্বীকৃত দেয়া হয়। ‘চল চল চল/ উর্ধগগনে বাজে মাদল’ বাংলাদেশের রণ সংগীত। কবির স্মৃতি বিজিড়িত ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালে ২০০৫ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করা হয়। পশ্চিম বঙ্গে কবির জন্ম স্থানে চুরুলিয়া নজরুল একাডেমি ও বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় নজরুল একাডেমি ও বুলবুল ললিতকলা একাডেমি স্থাপন করা হয়।
সহায়তাঃ উইকিপিডিয়া, ইন্টারনেট।
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।