somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

আসেন একটু কঠিন বিষয় নিয়া আলাপ আলোচনা করি.....

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বলেন তো, এই মূহুর্তে দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা কি? একটু ভেবে বলুনতো?

দূর্নীতি? বিচারহীনতা? দ্রব্যমূল্য? জনসংখ্যা? বেকারত্ব?

না হয়নি, উপরের কোনটাই দেশের বর্তমান সময়ের প্রধান সমস্যা নয় আমার মতে। তাহলে? হাঁ, এই মূহুর্তে দেশের প্রধান সমস্যা হলো সঠিক শিক্ষা। তার মানে কি?? কিভাবে? আসুন তাহলে জেনে নেই একটু!

একটি সন্তান জন্মানের পরপরই মুখের কথার প্রথম বোল ফুটতেই বাবা মায়ের টেনশান শুরু হয় স্কুলে নিয়ে। কোথায় পড়বে, কোন স্কুলে চান্স পাবে। তারপর স্কুলে ভর্তি নামক যাঁতাকলে তাকে ঢুকানো হয়। মুখে বোল ফোটার আগেই এ বি সি ডি শিখতে শুরু করে। ইংরেজী বাংলা ছড়ার মুখস্থ করা সহ, যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ, ইতিহাস, ভুগোল, বিজ্ঞান, সাধারন জ্ঞান......... এমন কোন বিদ্যা নেই তাকে শেখানোর প্রতিযোগীতা শুরু করা হয় না। তারপর?

একটু আদটু হাটাচলা করে পিঠে বইয়ের বোঝা কাধেঁ নিয়ে স্কুলে ঢুকতে না ঢুকতেই ভর্তি করানো হয় কোচিং সেন্টার নামক টর্চার সেলে। বিশাল বিশাল অংক ইংরেজী বিজ্ঞান তাকে মুখস্থ করানো হয় দিনের পর দিন। খেলা কি জিনিস, শৈশব কি জিনিস, আনন্দ কি জিনিস শিশুটি জানে না।

এরপর? যদি ভাগ্যক্রমে কোন কাংখিত স্কুলে টিকে যায় তাহলে এক টর্চার সেল থেকে নতুন টর্চার সেলে ট্রান্সার হয়। আর যদি কোন স্কুলে না টিকে তাহলে কোন কোন বাব-মা দূর্নীতির আশ্রয় নেন ভর্তির করানোর জন্য। এ কোমলমতি শিশুটির মস্তিষ্কে প্রথম দূর্নীতির বিজটি বোপন হয়ে যায়। তারপর?

স্কুল নামক এ জেলখানায় শিশুটি দিন কাটায় যেখানে নাই কোন আনন্দ, নাই কোন ভালোলাগা, আর আছে কঠিন মুখের কিছু শিক্ষক শিক্ষিকা। যারা নিজেদের পরিবার পরিবেশ নিয়ে অসহনীয় অবস্থায় নিরানন্দ জীবন কাটায়। তাই এই নিরানন্দ জীবন থেকে কোন আনন্দ শিশুদের সাথে ভাগ করতে পারে না। তাদের জীবনেই কোন আনন্দ নেই সেখানে অন্যের জীবনে আনন্দ দিবে কিভাবে?

আর এভাবে শিশুটি এরকম নিরানান্দ পরিবেশে বেড়ে উঠে যেখানে মায়া, মমতা, ভালোবাসা বলে কোন কিছুই বলতে গেলে নেই। আরো আছে, পরিবারে? না সেখানে ও কোন আনন্দ নেই। কারন শিশুকাল থেকেই সে দেখে আসছে এ কঠিন বাস্তবতায়। বাবা মা যদি সৎ হয় তাহলে সে অভাব অনটনের রুপ দেখে দেখে বড় হবে। আর বড় হয়ে দস্যু বনহুর বা রবিনহুড হয়ে সকলের সম্পদ কেড়ে নেবার কথা ভাববে। আদর্শ, ভালোবাসা, স্নেহ, ন্যায়, সৎ... এসব শিক্ষা সে খুব কমই পাবে।

আর বাবা মা যদি অসৎ তাহলে শিশুটি জানবে এটাই নিয়ম। অন্যের সম্পদ কেড়ে নেয়াই ন্যায় নীতি, সেটাই সত্য......... মানবতা বলে কোন শব্দ সে শিখবে না। ক্ষমতার অপব্যববহার, হিংস্রতা, দূর্নীতিই সে শিখবে।

আচ্ছা বলুনতো, স্কুলে কি এখন সে বিদ্যাসাগরের আদর্শলিপি শিক্ষা দেয়া হয়? সেই যে আমরা ছোটবেলায় পড়তাম, সদা সত্য কথা বলবে, মিথা বলা মহা পাপ, গুরুজনে করোনতি, সৎ চরিত্র মূল্যবান সম্পদ। ...... শুনিনি যে কোথাও তা শেখানো হয়।

এখন বলুন, একটি বাচ্চাকে আপনি কোন শিক্ষা দিবেন না, কোন আনন্দা দিবেন না, ন্যায়-অন্যায় শেখাবেন না তাহলে কি সে সব কিছু ইউটিউব ঘেটে আদর্শমালা শিখবে নাকি ইশ্বর তাকে অটো শেখাবে!!! "যা বাছা তুই সব শিখে যা...."।

না তা হবার নয়, কোনভাবেই হবার নয়। আর সে কারনেইতো আজকের তরুন সমাজ এতো হিংস্র হয়ে উঠেছে। তারা জানে না মানবতা কি? ন্যায় কি? তারা শুধু জানে, জীবনকে ভোগ করতে লাগবে টাকা আর টাকা আসতে হবে যেকোন উপায়ে। আর সে কারনেই নিজের বন্ধুকে মেরে ফেলতে তাদের একটুও হাত কাপেঁ না। রড দিয়ে পিটানোতে তারা আরো গর্ববোধ করে। কারন তাদের মধ্যে মনুষত্ব পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। তারা মানুষ নামের দানবে পরিনত হয়েছে। শুধু একটি জায়গায়ই নয়, সবখানেই এ চিত্র।

এখনো সময় আছে, আমাদের সন্তানদের বাচাঁতে হবে। ওরাই আমাদের ভবিষ্যত, দেশকে পরিচালনা করবে, দেশের অর্থনীতির ভীত গড়বে, ভবিষ্যত নোবেল বিজয়ী হবে...........ওরাই সব কিছু।

উন্নত দেশের সাথে কোনভাবেই তুলনা করতে চাই না, কিন্তু উদাহরনগুলো কিছুটা হলেও দরকার বোঝার জন্য। ইউরোপ আমেরিকার মতো দেশে শিশুদেরকে কখনই কোন বই দেয়া হয় না। ওরা বাস্তব জীবন থেকে শিখে। ওদেরকে নিয়ে টিচার বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়ায়, প্রকৃতি শেখায়, ট্রেনে বাসে চড়ে শহর ঘুরে বেড়ায় আর যেতে যেতে অংক শেখায়, ভুগোল শেখায়, বিজ্ঞান শেখায়। বিভিন্ন সামাজিক কাজে অংশগ্রহন করে মানবতা শেখায়। একটা পোকা ও মারতে দেয় না, একটা ফুল ও ছিঁড়তে দেয় না। কোনটা ন্যায়, কোনটা অন্যায়, সত্য বলা, অপরকে সন্মান করা............। এসব নীতির শিক্ষা দেয়া হয়। ওরা বলে আগে মনুষত্ব তৈরী করতে হবে তারপর বই এর পড়া এমনিতেই শিখবে।

আবারো বলি, আমি কোনভাবেই দেশের সাথে তুলনা করি না। সে সম্পদ আমাদের নেই। কিন্তু স্কুল পাঠ্যক্রম থেকে মানুষ হবার সে মন্ত্রগুলো কেন দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে? কেন আমরা শিশুদের অমানুষ তৈরী পথে ঠেলে দিচ্ছি?

সকলে ভালো থাকুন। সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠুন।


পুরোনো একটা লিখা শেয়ার দিলাম।
একটি বিজ্ঞান বক্স, শিশু শিক্ষার সেতুবন্ধন- স্বদেশ এবং বিদেশ

ছবি: গুগল মামা।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৫:১৫
৪৭টি মন্তব্য ৪৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×