somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি!

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার একজন বান্ধবী অস্ট্রেলিয়া থেকে পিএইচডি করে দেশে ফিরে আসে। আমি খুব তাজ্জব হয়ে ওর কাছে জানতে চাইলাম তুই কি মনে করে দেশে যেখানে সবাই বিদেশে চলে যায়। সে আমাকে অবাক করে দিয়ে বললো, দোস্ত আমার কেন যেন দেশে জ্যাম ধুলা বালি ভিড়াভিড়ি ভাল্লাগে। শুনশান রাস্তা দিয়ে চললে আমার কাছে কেমুন কেমুন যেন লাগে:P । এখন আমার অবস্থা হয়েছো ও তাই। দেশ থেকে ফেরার পর সবাই শুধু দেশের জ্যাম ধুলা বালি ভিড়াভিড়ির মাঝে কিভাবে সার্ভাইব করলাম তা জানতে চায়। এবং এখন আমি অপ্রত্যাশিতভাবে উত্তর দেই যে আমার দেশে জ্যাম ধুলা বালি ভিড়াভিড়ি ভাল্লাগে। দেশে গেলাম আর রাস্তা পাইলাম কানাডার ৪০১ এর রাস্তার মতো ...... এইটা কিছু হইলো!!! তাইলে ঢাকার বৈশিষ্ট্ হইলো কেমনে। ঢাকা মানেই ধাক্কাধাক্কি, ঢাকা মানেই জ্যামে ঘন্টার পর ঘন্টা, ঢাকা মানেই ধুলা বালিতে ভরা রাস্তায় রাস্তায় ময়লা। এর ভীতরেই এক ধরনের চার্ম আছে সেটা বুঝে নিতে হবে B:-/

তবে এবার দেশে যেয়ে চারপাশে বিভিন্ন রাস্তায় ব্রিজ এ কাজ ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন হয়তো কিছুটা এলোমেলো আছে কিন্তু এগুলোর কাজ শেষ হলে সবাই কিছুটা স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলবে নিশ্চয়। তবে এয়ারপোর্ট থেকে বা ঢাকার বাইরের হাইওয়ের উন্নয়ন ছিল চােখে পড়ার মতো। কোথাও তেমন জ্যামে বসে থাকতে হয়নি। নির্ধারিত সময়ের মাঝেই পৈাছাতে পেরেছি সবখানে।

আরো ভালো লেগেছে এয়ারপোর্টের ভীতরের পরিবেশ। আগে যখন এয়ারপোর্টে নামতাম ইমিগ্রেশান পার হলেই দালাল শ্রেনীর লোকজন ঘিরে ধরতো। বেল্ট থেকে ব্যাগ নামানো এক দু:সাধ্য ব্যাপার ছিল। কারন অপ্রয়াজনীয় লোকজনের ভীড় লেগেই থাকতো সেখানে। তারপর চারপাশে সাহায্যের নামে হয়রানী চলতেই থাকতো। কিন্তু এবার এসব কোন ঝামেলায় পড়তে হয়নি। কোন বাধাঁ ছা্ড়াই এয়ারপোর্ট থেকে বের হতে পেরেছি। আরেকটি বিষয় ছিল, আগে বিভিন্ন দেয়ালে দেয়ালে গরীব দু:খী মানুষের ছবি দেয়া ছিল। সাথে নোংরা, ভাঙ্গা চেয়ার, বাথরুমের অবস্থা যেনতেন ছিল। কিন্তু এবার বেশ ঝকঝকে চেহারা, চমৎকার সব ছবি ও যথাযথ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ছাপ ছিল সর্বত্র।

তবে এতা সব উন্নয়নের মাঝে সবকিছু ছাড়িয়ে আমার কাছে খটকা লেগেছে সব কিছুর এতো এতো দাম ...... সবাই কিভাবে বেচেঁ আছে? সরকারী আমলারা ঠিক আছে, বেতন ভাতা যা পায় তা দিয়ে চলার কথা। কিন্তু গরীব কেরানী বা গার্মেন্টস্ কর্মীরা কিভাবে এ সামান্য টাকায় সংসার চালাচ্ছে। সামান্য কিছু বাজার করে বিল দিতেই আঁতকে উঠতে হয়, ৫/১০ হাজারের নীচে কোন বিলই শোধ করা যায় না। ছেলের জন্য একটা পান্জাবী আর একটা কটি কিনে বিল দিতে দেখি এগারো হাজার টাকা। আগে দেখতাম ২ হাজার টাকায় ভালো ড্রেস পাওয়া যেতো আড়ং বা অন্যান্য ভালো মানের দোকানে। আর এখন ৫ হাজারে কাপড় কিনে একবার ধোয়ার পর দেখি রং ছড়ায়ে কাপড়ই শেষ :( । কিভাবে সংসার চালাচ্ছে বিশেষ করে মধ্যবিত্ব শ্রেণী, কতটা কম্প্রোমাইজ করছে তারা জীবনের সাথে??

পাশাপাশি বিলাশী জীবনের ছোয়া সবখানে। লেটেস্ট স্যামসাং বা আইফোনের ছড়াছড়ি। অনেকের হাতে দেখি ড্রোন ও আছে!! দামী যেকোন গ্যাজেটই দেখি পরিচিতরা অবহেলায় ইউজ করছে চারপাশে। দামী ব্যান্ডের সব আইটেমই দেখলাম এখানে ইউজ করে সবাই। এমন কি যে কসমেটিক্ বা যে চকলেট আমরা এখানে কিনতেও একটু দ্বিধা করি সেগুলোও সবাই কিনছে দেদারছে একই বা তারচেয়ে বেশী দাম দিয়ে। এখনতো মনে হচ্ছে দেশের বাইরের থেকে এসে আমরাই দেখি নিতান্ত গরীব :(

তবে যেটা মনে হলো সবকিছুকে ছাড়িয়ে কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ফেইসবুক। একই রংয়ের ড্রেস পরে ছবি, কোথাও বেড়াতে যাবার ছবি, কোথাও খাবারের ছবি, নামী দামী কাপড় পড়ে পোজ দেয়া ছবি......... ছবি ছবি আর ছবি। সব অনুষ্ঠান, আয়োজন সব কিছুই ফেইসবুক কেন্দ্রিক। শুধু ছবি তুলবে বলে হাজার হাজার টাকার দামী ড্রেস কেনা হয়, পার্লারে সাজা হয়। হাজারের নীচে কোন পার্লারের বিল নেই, কয়েক হাজারের নীচে কোন ভালো শাড়ি নেই। সবস্তানে সব অনুষ্ঠানেই সবার আলোচনার বিশেষ অংশ জুড়েই যেন ফেইসবুক, কেমন ছবি হলো, কেমন সাজ হলো, কাকে কেমন লাগছে............ সব কিছুই যেন ফেইসবুকের মাঝে সীমাবদ্ধ।

হয়তো অল্প সময়ে ছিলাম বলে অনেক কিছুই আমার কাছে খটকা লেগেছে। কিংবা সব কিছুই ঠিকভাবেই চলছে আমি শুধুই দেখছি আধো ঘুমে আধো জাগরণে জেটল্যাগের কারনে ;)

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।

ছবি: গুগল মামা!
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:২৫
৩২টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×