somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

একজন আহমেদ ছফা ও আমার ভাবনা

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আহমেদ ছফার লিখা যে আগে পড়িনি তা নয় কিন্তু তরুন বয়সে অপরিপক্ক ভাবনায় সে লিখা উপলব্ধি করার মতো যথেষ্ট জ্ঞান ছিল না। যাহোক, আমার অসম্ভব পছন্দের তারেক মাসুদ আর ক্যাথরিনকে নিয়ে পড়তে যেয়ে আহমেদ ছফার কিছু মন্তব্য দেখে তাঁর লিখা পড়তে আবারো আগ্রহী হলাম। তাই একে একে পড়ে ফেললাম ওঙ্কার, হারানো লেখা, যদ্যপি আমার গুরু, গাভী বৃত্তান্ত, বুদ্ধি বৃত্তির নতুন বিন্যাস, বাঙ্গালী মুসলমানের মন ও অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী।

একজন ছফাকে বিশ্লেষন করার মতো যথেস্ট জ্ঞান আমার নেই। শুধুমাত্র পাঠক হিসেবে নিজের ভাবনাটুকু শেয়ার করতে পারি। যদি পলিটিকেল লিখার বিশ্লেষন করি তাহলে বলবো, সমসাময়িক যেকোন পলিটিকেল ঘটনা নিজের আঙ্গিকে বিশ্লেষন করেছেন তিনি। এখন যদি বলি উনার আঙ্গিকটা কি? তাহলে উত্তরে বলবো, যখন উনার মন যেদিকে ধাবিত হতো। তবে যদি আরো গভীরে যাই তাহলে বলবো, প্রায় সব লিখায়ই উনার ব্যাক্তিগত বায়াসের উর্ধ্বে ছিল না। নিজস্ব চিন্তাধারায় উনি যেকোন কিছুর ব্যাখ্যা দিতেন। এর বাইরে যে কোন চিন্তা বা ব্যাখ্যা থাকতে পারে তা নিয়ে তেমন বিশ্লেষন করেননি।

আহমেদ ছফার পুরো জীবনেই কেটেছে বলতে গেলে অভাব অনটনে। তার প্রভাব দেখা যায় প্রায় প্রতিটি লিখায়। সারা জীবন লিখালিখি করে, সবার উপকার করে, আড্ডা, আন্দোলন করে কাটিয়েছেন। বৈষয়িক ছিলেন না বলে অর্থ সম্পদ তাঁর কাছে ধরা দেয়নি। উনি এটাকে অহংকার হিসেবে হয়তো নিতেন। নিজের পেটের ভাতের খোঁজ না করে অন্যের পাতের ভাত জোগাড় করতে যেয়ে উনি পদে পদে ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন। তবে যাদের জন্য করেছেন তা তিনি কোন না কোনভাবে উল্লেখ করেছেন উনার লিখায়।

আহমেদ ছফার ব্যাক্তি জীবনের প্রেম নিয়ে লিখা অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী পড়ে আমি সবচেয়ে বেশী কষ্ট পেয়েছি। দু'জন নারী, শামীম শিকদার ও সুরাইয়া খানমের মতো প্রতিভাবাময় দু'জন নারীর প্রেমে ব্যার্থ হয়ে উনাদের বিরুদ্ধে সে অপমানের প্রতিশোধ নিয়েছেন এ বইটিতে। এ উপন্যাসের প্রতি পদে পদে হেনেস্থা করে ছেড়েছেন এ দু'জন নারীকে। তাদের ব্যাক্তিজীবনের কষ্টকর মূহুর্তগুলো জনসম্মুখে এনেছেন অত্যন্ত আপত্তিকর ভাষায়। এমন কি শামীম শিকদার এর ব্রেস্টে হাত দিয়ে তার সাইজও জানিয়েছেন এ বইটিতে। সবচেয়ে অপমান করেছেন সুরাইয়া খানমকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ইংরেজী শিক্ষককে উনি যেভাবে চিত্রায়ন করেছেন তা দু:খজনক। সুরাইয়া খানম আমেরিকায় চলে গেছেন বলে উনি অভিযোগ করেছেন, যারা আমেরিকা যায় তারা শুধু সেখানে হোটলে বেয়ারা বা ড্রাইভার আর মেয়েরা ডেকেয়ারে কাজ করে, এর বাইরে নয়।

একজন শামীম শিকদার কে চিনে না এমন কেউ নেই্। একজন ভাস্কর্য্য শিল্পী হিসেবে অত্যন্ত সমাদৃত। আর অপর দিকে সুরাইয়া খানম শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকই ছিলেন না একজন কবিও ছিলেন, নাট্যশিল্পী ছিলেন এবং অসম্ভব আধুনিক মনের মানুষ ছিলেন। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ঢাবিতে শিক্ষকতা করে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব অ্যরিজোনাতে পিএইচডি ডিগ্রি নেন সুরাইয়া। পিএইচডি শেষ করে অ্যরিজোনার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। এমন দু'জন স্কলারের চরিত্র হনন আমার কোনভাবেই ভালো লাগেনি।

অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী পড়ার পরই আমি সুরাইয়াকে নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠি। তার একমাত্র কবিতার বইটি ডাউনলোড করি। কি অদ্ভুত সে লিখা, সে ভাবনা, সে প্রতিবাদী স্বর..........। সেখান থেকে একটি কবিতা শেয়ার করলাম,

আত্মলীনা কবিতায়—

সত্যের গোপন ঘ্রাণ রাখো বক্ষে
রাখো ঐ আত্মার অনল উষ্ণ
তেজস্বী মনন-মনস্বীতা,
নিজের দহনে এত দুঃখিত হয়ো না।

লিখাটা লিখলাম কারন ক'দিন ধরে আহমেদ ছফা মাথায় ঘুরছে। তাই লিখে মাথা থেকে ঝেঁড়ে ফেললাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২১
২৭টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×