somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

আমাদের আদব লেহাজ শিক্ষা B-))

১৭ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের অনেক সমস্যার মাঝে একটা হলো, কোথায় কখন থামতে হবে আমরা জানি না। কোথায় দাঁড়ি, কোথায় কমা, কোথায় কোন প্রশ্নটা করতে হবে আমরা জানি না। কিংবা কোনটা ফান আর কোনটা ফাজলামো আমরা আসলে ঠিক বুঝি না।

যেমন, মা বলে দিয়েছিল শশুড় বাড়ি যেয়ে আদব লেহাজ সহ প্রশ্ন করবি। তো শশুড়কে জামাই বাবাজি আদবের সাথে জিজ্ঞেসা করে, আব্বাজান আপনি কি বিবাহ করিয়াছেন?? :P

অফিসে একটা ট্রেনিং চলছিল। এ ট্রেনিংটা একটু আপ লেবেলের। যাদের মোটামুটি সে বিষয়ে জ্ঞান আছে শুধু তারাই অংশগ্রহন করতে বলা হয়েছে। তো, ট্রেনিং শুরুর এক পর্যায়ে একজন এমন প্রশ্ন শুরু করলো যে ট্রেইনার ট্রেনিং শুরুই করতে পারছিল না। ট্রেইনার বেচারা অসীম ধৈর্য্য নিয়ে অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর দেবার পর এক সময় বলেই বসলো, এটাতো দ্বিতীয় লেভেলের ট্রেইনিং। বেসিক নলেজ ছাড়াতো এ ট্রেনিং এ অংশ নেবার কথা না। কিন্তু কে শোনে কার কথা, সে বলেই যাচ্ছে, বলেই যাচ্ছে। আর বাকি ৩৯ জন কিছুই বলছে না। কানাডায় সবাই এতোটাই ভদ্র যে কারো মুখের উপর কিছু বলার চেস্টা কাউকে করতে দেখিনি। শেষ পর্যন্ত আমার ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙ্গার পর (যেহেতু আমি পুরাপুরি কানাডিয়ান না B:-/ ), আমি অত্যন্ত বিরক্তি নিয়ে মোটামুটি ধমক লাগায়ে বললাম, আমি বুঝতে পারছি আপনার বেসিক নলেজের বেশ ঘাটটি আছে। আপাতত: ট্রেইনারকে ট্রেনিং টা নিতে দিন। তারপর ট্রেনিং শেষে আপনার সাথে আমি বসবো। বলা বাহুল্য, সে ভদ্রলোক ছিল আমাদের দেশীয় ভাই। :((

আবার ধরেন, কোনটা ফান বা আনন্দ, কোনটা উপহাস বা অপমান, এখনো আমরা অনেকেই ঠিক বুঝি না। যেমন, আপনি গেস্ট এর জন্য সারাদিন রান্নাবান্না করে সুন্দর করে সাজিয়ে খাবার পরিবেশন করলেন। এক ভাই বললো, এমা মুরগীর রোস্ট এতো ঝাল, আমার বাচ্চারা এটা খেতেই পারবে না। কিংবা ফিরনিটা মুখে দিয়েই এক ভাবী বলেই বসলো, এতো মিস্টি দিয়েছেন মুখেইতো দেয়া যাচ্ছে না। B:-/

অথবা, আপনার স্বামী হয়তো অতিথি আপ্যায়নে আপনাকে সাহায্য করছে, অমনি কেউ টিপ্পনি কাটলো, বুঝলাম, ভাবী ভাইকে দিয়ে ভালোই খাটায়। হয়তো এ নিয়ে ভাই মহলে কিংবা ভাবী মহলে একচোট হাসাহাসি হয়ে গেল। দেখলা, অমুক ভাইতো থালাবাটি মাজে! আরেকজন বললো, আরে ভাইতো ভাবীর শাড়ি পেটিকোটও ধুয়ে দেয়!! =p~

একবার এক অফিস কলিগ অসুস্থ বলে তাকে দেখতে গেলাম বেশ ক'জন। তো, সে কলিগের স্বামী আমাদেরকে দেখে মশারীর পেরেক দেয়ালে ঠুকা শুরু করলো। আমরা যতক্ষন ছিলাম, ভদ্রমহিলা কতবার অনুনয় বিননয় করলো কিন্তু স্বামীজি একবারের জন্যও আমাদের সামনে আসলো না। দেয়ালে মশারীর পেরেক ঠুকেই যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল আজকে দেয়ালে পেরেক না ঠুকলে পৃথিবী উল্টাপাল্টা হয়ে যাবে। B-)

অথবা, ধরেন আপনি কারো জন্য কিছু গিফট নিয়ে গেলেন। তো, গ্রহিতা তাহা দেখিয়া অত্যন্ত বিরক্তির সহিত কহিল, এইসবতো আমি পড়ি না বা আমরা কেউ খাই না। একবার, শশুড়বাড়ির একজনের জন্য বেশ দাম দিয়ে দুটো শার্ট কেটস্ আই থেকে কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম। মনে মনে আমি আটখানা এই ভেবে যে এমন দামী গিফট পেয়ে ভদ্রলোক নিশ্চয় খুশী হবে। হায় আমার কপাল, গিফট দেয়া মাত্রই ভদ্রলোক উঠলো, এইটা কি ফুটপাথ থেকে কিনেছেন ভাবী? আমি ব্রেন্ডের শার্ট ছাড়া পড়ি না। পূনষ্চ, এ লোক কেটস্ আই ই চিনে না তো কেমন ব্রেন্ডের শার্ট পড়ে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। B-))

কানাডায় আসার পরপরই পরিচিত এক ভাইয়ের বাসায় গেলাম দেখা করতে। ভদ্রলোকের স্ত্রীর সাথে এই প্রথম দেখা। তো মহিলা এমন ভাব দেখানো শুরু করলো যেন আমি কোন রিফুউজি ক্যাটাগরিতে কানাডায় আসছি। আর এখনি তার কাছে ভিক্ষার থালা তুলে ধরবো। দেশীয় ভদ্রতায় আমি যাওয়ার সময় কয়েক প্রকার আইসক্রিম নিয়ে গেছিলা, আর ভদ্রমহিলা, এক কাপ চা ও অফার করে নাই। /:)

যেহেতু নতুন, তখন গাড়ি ছিল না। তাই আসার সময় ভদ্রলোক দয়া করে উনার গাড়িতে লিফ্ট দিলেন। আমার ছেলেটা একটু সিক ছিল বলে গাড়ি থেকে বের হয়ে ঠিকভাবে গাড়ির দরজা বন্ধ করেনি, তাই তিনি আমাকে উপদেশ দিলেন, ছেলেকে ম্যানারর্স শেখাবেন নতুবা ক্যানাডায় চলতে পারবে না। আর কানাডা না, বলবেন ক্যান্যাডা, বলুন ক্যা-ন্যা-ডা.......... ক্যা-ন্যা-ডা....... ক্যা-ন্যা-ডা। ;)

আমার বকর বকর শেষ। সবাই ভালো থাকেন।

সোহানী
জুলাই ২০২৩
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:২২
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:০৭




মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…
১. প্রথমে বলেছেন মৃতদের পেটে কাটাছেড়ার ডাহা মিথ্যা। পরে স্বীকার করেছেন দাগ থাকে।
২. আশ্রমে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হয় না। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×