টিকটকার মামুন, হিরো আলমদেরকে দেখে এতোদিন একটা নেগেটিভ ধারনা ছিল এ তরুন প্রজন্মকে ঘিরে। সবাই তাদেরকে টিকটক প্রজন্ম বলেই ভাবতো। কিন্তু কি অদ্ভুতভাবে সবার সব হিসেব নিকেশ পাল্টে গেল মূহুর্তেই। যা আমরা করতে পারিনি, যা এতো বছর বড় বড় দলগুলো করতে পারেনি তা ক'দিনেই করে দেখিয়ে দিয়েছে এ বাচ্চাগুলো।
সিনেমার কোন স্যুটিং নয়, সত্যিকারের বুলেটের সামনে তারা দাঁড়িয়ে বুক পেতে দিলো। মরতে লাগলো একের পর এক কিন্তু কোনভাবেই তাদেরকে দমাতে পারলো না লীগের গুন্ডাবাহিনী, পুলিশ, বিডিআর, র্যাব। অস্ত্রের মুখে খালি হাতে কিংবা কিছু লাঠি বা ইটের টুকরো নিয়ে প্রতিহত করতে লাগলো এ বাচ্চাগুলো। চারপাশ থেকে ছুটে এসে পাশে দাঁড়ায় বাবা-মা, দাদু-দিদা....। কেউ খাবার নিয়ে, কেউ পানি নিয়ে, কেউ ভিজে টাওয়াল হাতে নিয়ে ছুটে যায় বাচ্চাগুলোর পাশে। এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য, এমন দৃশ্য শুধু আমার দেশেই দেখা যায়।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি | সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি।
তারপর দাম্ভিক স্বৈরাচার হঠাৎ করেই পালিয়ে বাঁচলো কিন্তু পিছনে রেখে গেল তার গুন্ডা বাহিনী। ক্ষমতার পালা বদলের সুযোগে হয়তো পুরোনো গুন্ডা বাহিনী বা সুযোগ সন্ধানী বাহিনী নেমে পড়লো ধ্বংসযজ্ঞে। জ্বালাও, পোড়াও কিংবা ডাকাতির মাধ্যমে দেশকে অস্থির করার চেস্টা শুরু করলো। আর এর সাথে প্রতিবেশী দেশ একচ্ছত্র অধিকার হারানোর শোকে শুরু করলো প্রপাগান্ডা। হিন্দু পরিবার বা মন্দির আক্রমন হচ্ছে বলে দাঙ্গা লাগানোর ব্যার্থ চেষ্টা করে যেতে লাগলো তারা।
পুলিশ বা অন্য বাহিনী কর্মবিরতিতে, সরকার প্রধান এখনো ক্ষমতায় নেই, তারপরও সব বিশৃঙ্খলা সামাল দিতে আবারো মাঠে নেমে পড়লো বাচ্চাগুলো লাঠি, বাঁশি হাতে। দিনের ট্রাফিক সামলাচ্ছে, বাজার দেখভাল করছে, রাস্তা পরিস্কার করছে আর রাতের ডাকাত দলকে তাড়া করছে তারা। প্রানপন চেষ্টা করে যাচ্ছে তারা ৫৩ বছরের জন্জাল পরিস্কার করতে।
কি অভূতপূর্ব দৃশ্য চারপাশে। এরাই আমাদের ছেলে, এরাই আমাদের ভবিষ্যত। হাঁ ওরাই পারবে, ওদের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। যা আমরা পারিনি এ ৫৩ বছরে আজ তারা জেগেছে, অবশ্যই তারা পারবে।
আর অতীতের সকল গুন্ডা ও ব্যার্থ বাহিনী ও তাদের সুবিধাভোগীদের উদ্দেশ্যে বলছি, ৫৩ টা বছর দেশকে লুটেপুটে খেয়েছেন। ধ্বংস করেছেন দেশকে। দূর্নীতি, চুরি, বিদেশে টাকা পাচার, বিচার বর্হিভুত হত্যা, গুম ............... অনেক কিছুই করেছেন এ ৫৩টা বছরে। যথেস্ট করছেন ও বয়স হইছে আপনাদের। এবার অবসরে যান। আপনাদেরকে ছাড়াই দেশটা চালাক এ নতুন প্রজন্ম।
আর যারা ক্ষমতা হারিয়ে পাগলপ্রায়, তাদেরকে বলছি: তরুনদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে যাচ্ছেন তা বন্ধ করেন। আম্রিকা/চীনার ষড়যন্ত্র বলে যে চিল্লাপাল্লা করছেন তা বন্ধ করেন। দেশ আফগানিস্তান/পাকিস্তান হয়ে যাবে তার চিন্তা বাদ দেন।
দেশ এখন সংস্কার চলছে। এবং এর দায়িত্ব নিয়েছে একদল তরুন। আর তরুনদের উপর পূর্ণ আস্থা আছে আমাদের। ওদের বুকে আগুন, সৎ, দূর্নীতিগ্রস্থ নয়, দেশকে এগিয়ে নেবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তারা। তারা পারবেই পারবে। আর আমার দেশ সোনার বাংলা হিসেবে বিশ্বের মাঝে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াবে অবশ্যই।
যারা শহীদ হয়েছে দ্বিতীয় এ যুদ্ধে, আমরা তোমাদের কখনই ভুলবো না। তোমাদের আত্মত্যাগেই আমরা পেয়েছি এ নতুন স্বাধীনতা।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।
সোহানী
আগষ্ট ০৮, ২০২৪
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০২৪ সকাল ৮:৫৫