somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

এটা ১০০% রাজনৈতিক পোস্ট। যাহারা ত্যানা প্যাঁচাইতে চান প্যাঁচাইতে পারেন বাট "আই ডোন্ট কেয়ার"। ;)

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




"আই হেইট পলিটিক্স" এর দলের সদস্য হয়েও এ লিখাটি লিখেছি কারন আন্দোলনে আমরা দেশের বাইরে থেকে কিভাবে সংশ্লিষ্ট হয়েছি তা বিশ্বাবাসীকে জানাতে। আজ থেকে ১০ বছর পর যখন কোন গবেষনা হবে তখন হয়তো আমার এ লিখাটা কেউ পড়বে।

সেই জুলাই এর মাঝ থেকেই যখন কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হয় তখনো আমরা সাধারন মানুষ তা সমর্থন করলেও তেমন করে আন্দোলনে মাঠে নামিনি। কিন্তু যখন ছাত্রলীগ সাধারন ছাত্র-ছাত্রীদের উপর হামলা করে ও পরবর্তীতে পুলিশ সরাসরি হত্যা শুরু করে তখনই সাধারন মানুষগুলো আস্তে আস্তে প্রতিবাদ শুরু করে। টরোন্টোর বাংলা টাউন থেকেই মূলত সবাই প্রতিবাদ শুরু করলেও বাকি শহরগুলোতো তা দ্রুতই ছড়িয়ে পরে। ব্যানার নিয়ে, পতাকা হাতে নিয়ে কিংবা লাল/সবুজ গেন্জি গায়ে আমরা সাধারন মানুষরা ছাত্রদের আন্দোলনের সাথে একাত্বতা ঘোষনা করে বিভিন্ন প্রতিবাদ সভার যোগ দেই।

তবে এ আয়োজন বড় কোন ব্যানারে ছিল না, কোন দল বা গোষ্ঠীর উদ্যোগে ছিল না, আমার মতো সাধারন মানুষরাই এ আয়োজন শুরু করে। সোস্যাল মিডিয়ায় সরব হয়ে বিভিন্নভাবে সাপোর্ট দেয়, প্রোফাইল লাল করা বা সাঈদ/মুগ্ধ/ফারহানের ছবি শেয়ার করে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দেয় সমর্থনকারীরা। অনেকেই এরই মাঝে বিভিন্নভাবে ইন্টারন্যাশানাল লবিং শুরু করে। কানাডার বিভিন্ন নিউজ মিডিয়ায় তারা যোগাযোগ করে, সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে বা মেইল দেয় ও সাধারন কানাডিয়ানদের মনোযোগ আকর্ষন করে। যার কারনে কানাডার বেশ বড় মাপের বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ প্রচার শুরু করে।

জুলাই এর ২১ তারিখ আমি ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে একটা প্রতিবাদ সভার ডাক দেই। আমি যে এলাকায় থাকি সেখানে বাংলাদেশী খুব কম। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে মাত্র একদিনের নোটিশে শ'খানেক মানুষ সে সভায় জড়ো হয়। এবং অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছিল প্রতিবাদ সভায় যোগ দিতে। সে মানুষগুলোর মাঝে যে দেশের প্রতি ভালোবাসা দেখেছি, বুকে যে আগুন দেখেছি তা ছিল অবিশ্বাস্য।

এদিকে আরেক গ্রুপের সরাসরি মাঠে নেমেছিল ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে। এরা মূলত সোস্যাল মিডিয়ায় এ্যাক্টিভ ছিল ও বিভিন্নভাবে হত্যাকান্ডকে সাপোর্ট দিচ্ছিল। আর হাসিনার সাথে সাথে মেট্রোরেলের জন্য কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলিয়ে ফেলছিল। তারপর ৫ই আগষ্টের পর ভারতীয় মিডিয়া যতরকমের গুজব ছিল তারা তা ঢালাও ভাবে সমর্থন করে, বিশ্বাস করে ও প্রচার করতে থাকে সর্বত্র। তারপর এক সময় "এমন স্বাধীনতাই কি চেয়েছিলাম" বলে হাউকাউ শুরু করা ছিল তাদের অন্যতম কাজ।

এখন আমার প্রশ্ন ছিল, এরা কারা যারা এতো এতো মৃত্যু দেখেও নির্বিকার ছিল, বরং উল্লসিত ছিল। তাদের মাঝে দু:খবোধতো দূরে থাক বরং হত্যাকান্ড বা হাজার কোটির লুটপাটের ঘটনায় তাদের কোন বিকার ছিল না বা এখনো নেই।

আমি ভাবার চেস্টা করলাম, এরা কারা? দেশের বাইরে এরা থাকে তাই হালুয়া রুটির ভাগ সরাসরি পাবার সুযোগ কম। তারপরও তারা কেন অন্ধের মতো সমর্থন করছে!!! তাই সম্ভাব্য উত্তরটা সাজানোর চেস্টা করছি .........

এক, এদের মাঝে বড় অংশই হলো ধান্ধাবাজ। এরাই হলো কানাডার বেগম পাড়া তৈরী করা গ্রুপ। বিগত স্বৈরাচার আমলে লুটপাটের টাকা পাচার করতে সাহায্য করা কিংবা কানাডায় বাড়ি, গাড়ি, ভিসা করতে চাচ্ছিল তাদেরকে প্রত্যক্ষ পরোক্ষ সাহায্য করছে এরা। দেশের লুটপাটের টাকায় এ ধান্ধাবাজ দালালরা এখানে মিলিয়ন ডলারের মালিক বনে যায় রাতারাতি। এবং ক্ষমতাসীনদের ছায়াতলে দেশেও এরা ছিল ব্যাপক ক্ষমতাবান। দাবার গুটি উল্টে যাবার কারনে তাদের এখন মাথা গরম। আয়ের উৎস বন্ধ হবার সম্ভাবনা। তাই তারা সমর্থক ছিল হত্যাকান্ডের, কোনভাবেই চায়নি হাসিনা সরকার ক্ষমতা থেকে চলে যাক।

দুই, একটা অংশ হলো সনাতনী ধর্মের লোকজন। কেন যেন এরা বরাবরেই নিজেদেরকে সর্ববঞ্চিত মনে করে। দেশে কিছু হলেই তারা নিজেদেরকে সংখ্যালঘু হিসাবে আক্রান্ত বলে হাউকাউ শুরু করে দেয়। পার্শ্ববর্তী দেশকে তারা ত্রাতা হিসেবে দেখে সবসময় আর তাদের উসকানী মূলক কর্মকান্ডে সর্বদা নিজেদেরকে উজ্জীবিত রাখে। দেশে আরো অন্য ধর্মের লোকজনক আছে কিন্তু তাদেরকে দেখিনি কিছু হলেই অন্য কোন দেশের কাছে কান্নাকাটি করতে। যাহোক, সনাতনী ধর্মের মানুষজনের সমস্যা হলো এরা এ দেশকে কখনই আপন করে নিতে পারে নাই, সবসময়ই নিজেদেরকে সংখ্যালঘুই মনে করে। পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে বিগত আওয়ামীর সুসম্পর্ক থাকার কারনে তারা হয়তো নিরাপদ ভাবতো, তাই দল ক্ষমতা হারানোর পর রাগে ক্ষোভে অন্ধ এখন। যে কোনভাবেই চায় আবার ক্ষমতায় আসুক হাসিনা সরকার।

তিন, আরেকটা অংশ হলো দলকানা গ্রুপ। এদের বুদ্ধি/বিবেচনা/আবেগ/মনুষত্ব সব দলের খাঁচায় বন্ধী। আপা আর দল ছাড়া এরা আর কিছুই ভাবতে পারে না। দলের বিভিন্ন চেয়ার দখলে ছিল এরা আর সেই চেয়ার দেখিয়ে ছড়ি ঘুরাতো সবখানে। এখন সে চেয়ার হারিয়ে তাদের মাথা খারাপ। তারা এখন উগ্রভাবে আফসোসলীগ হিসেবে সর্বত্র ক্যাচালে ব্যাস্ত। এমন কি কেউ কেউ আন্দোলন সমর্থনকারীদেরকে ব্যাক্তিগতভাবে বা স্যােসাল মিডিয়ায় আক্রমন করেই চলছে।

আমার কথা আমি বল্লাম, মানলে মানবেন নাকি মানবেন না সেটা একান্তই আপনার ইচ্ছে।

কিছু ছবি শেয়ার করলাম আমাদের প্রতিবাদের।

আরেকটা অনুরোধ করি, আন্দোলনের সময়কালীন যে সব লিখা পোস্ট হয়েছিল কেউ কি আছেন তার একটা সামারি করবেন? আমি কোনভাবেই সময় করতে পারছি না, তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।

সবাই অনেক ভালো থাকেন।


সোহানী
সেপ্টেম্বর ২০২৪



বি:দ্র: পোস্টারগুলো আমি আমার মেয়ে তৈরী করেছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১
৩৭টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

= দাওয়াত বা কোন অনুষ্ঠানে খাবার গ্রহণের সময় যে কটি বিষয় আপনার বিবেচনায় রাখা দরকার =

লিখেছেন এমএলজি, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৪:২৩



১. দ্রুত খাবার গ্রহণের অভ্যাস থাকলে তা কিছুটা ধীর বা প্রলম্বিত করার চেষ্টা করুন যাতে অন্য সবার বেশ আগেই আপনার খাওয়া শেষ হয়ে না যায়।

২. কোন আইটেম খুব সুস্বাদু বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এবং কিছু কথা......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৩০

আমাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এবং কিছু কথা.........

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমাদের সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার বিষাদময় গ্লানির সঙ্গেই বোধকরি বেশি সম্পর্ক। কদাচিৎ কোনো বড় দলকে পরাজিত করার পর আমরা পুরো বাংলাদেশ এখনো আবেগে আপ্লুত... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। অন্য দেশে চলে যাচ্ছে গার্মেন্টসের অর্ডার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:২০




এবার বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অর্ডারের একটি অংশ প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তানসহ অন্য দেশের বাজারে চলে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকার পতন এবং শ্রমিক অসন্তোষের কারণে দেশের সবচেয়ে বড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ভারতের উদ্বেগ!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


ভালোভাবেই শেষ হলো সনাতনীদের বৃহৎ উৎসব দুর্গাপূজা কিন্তু দুর্গাপূজা ভালো ভাবে শেষ হওয়ায় অনেকেই বড্ড হতাশ হয়েছে; পূজা নিয়ে তারা ট্রামকার্ড খেলতে চেয়েছিল কিন্তু ট্রামকার্ড খেলার পরও সফল হতে পারেনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

উফ্! কি দারুণ!! WOW!!!

লিখেছেন মন থেকে বলি, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:০৬

চোখটা সবে যেই বুঁজেছি, ডাকল হুলো 'মিঁয়াও'।
মাথায় এলো আজিব টপিক - আরি সাবাশ! WOW!!

ল্যাংটাকালে 'আমার বই'-য়ে,
আঁকল ছবি কোন আঁকিয়ে?
তালগাছেতে উলটো ঝোলে কানাবগির ছাও।
সেটাই ছিল প্রথম অবাক, প্রথম বলা - WOW!!

আরও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×