আমি জাবিতে ঘটা আমার নিজের জীবনের বাস্তব ঘটনা নিয়ে একটু আগে একটা ব্লগ লিখছিলাম। সামুর জাবি বান্ধব মডুরা তা ডিলেট করে দিছে। আমি আবার রিপোস্ট দিলাম। আমার লাইফের বাস্তব ঘটনা ঘটছে আর আমি তা বলতে পারব না। সামু এইভাবে অন্যায়রে প্রশ্রয় দেয়া শুরু করছে।
জাবি যে অন্য ১০টা ভার্সিটির মত না সেইটা জানাতেই আমি এই পোস্ট লিখতে বসলাম। আমার জীবনের কয়েকটি বাস্তব ঘটনা তুলে ধরব।
২০০৬ সালে আমি বুয়েটের সিএসসিতে চান্স পেয়েছিলাম । আমাদের ব্যাচের ক্লাস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের ৬ মাস পর শুরু হয়। আমার হাতে তখন অনেক অবসর। আমার কলেজের বেস্ট ফ্রেন্ড জাবিতে ভূতত্ত্ব বিজ্ঞানে ভর্তি হয়। আমার ফ্রেন্ডের ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। আমি গেলাম আমার ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে। ও হলের গণরূমে উঠেছে। আমাকে একদিন রাতে থাকার জন্য বলল। আমি কয়েকবার না বলেও রাজি হয়ে গেলাম। আমি রাতে ঘুমাতে চলে গেলাম। রাত ১২টা বাজে কোন এক ছেলের জন্মদিন ছিল। সে বাইরে হইহুল্লোর করতে চলে গেল। আমি আর আমার ফেন্ড ঘুমিয়ে আছি। জাবির ওই গণরুমে কোন খাট ছিল না আমরা নিচে বিছানা করে শুয়ে আছি। যেই ছেলের জন্মদিন ছিল সে হটাত করে এসে আমাদের ২ জনকে লাথি মেরে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলল আমাদের অপরাধ আমরা কেন তার জন্মদিনে যাই নাই। এর সে নানারকম অশ্লীল কথাবার্তা বলতে শুরু করল। আমার ফ্রেন্ডকে বলল ওকে আর আরেকটা ছেলেকে একেবারে নগ্ন হয়ে স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের অভিনয় করতে হবে। আমার ফ্রেন্ড হবে স্বামী আর ওই ছেলেটা হবে স্ত্রী। মানে আমার ফ্রেন্ড উপরে থাকবে আর ওই ছেলেটা নিচে থাকবে। এরপর ওরা ২জন মিলে খালি গায়ে অভিনয় করল তারপর মুক্তি পেল। আমি অতিথি বলে কম শাস্তি দেয়া হয়েছে কিন্তু একটা লাথি কম অপমানজনক না ।এর পরে আমি আর রাতে ঘুমাই নাই পরদিন খুব সকালে বাসে করে চলে আসি।
উপরের ঘটনার পর আমি অনেক দিন জাবিতে যাই নাই। এরপর অনেক দিন পরে গেলাম। সে দিন রাতে ছিলাম না। বিকালের পরে চলে এসেছি। আমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হল। সে মেয়েদের হলের সামনের একটি ঝোপঝাড়ের সামনে নিয়ে আসল। প্রায় সাড়ে ৬ বছর আগের ঘটনা আমি জায়গাটা সঠিক মনে করতে পারছি না। যতদুর মনে পরে মেয়েদের প্রীতিলতা হলের পাশে। আমাকে সে জানাল যে এইখানে প্রতি রাতে ছেলে-মেয়েদের আদিম খেলা চলে। বিকাল থেকে কাপলদের জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা লাগে। মানুষ একটা সভ্য প্রাণী কিন্তু কুকুর বিড়ালের মত এইভাবে বন-বাদাড়ে যৌনমিলন করতে পারে আমি আগে জানতাম না। সে আমাকে অফার করল রাতে সেই জায়গায় অবস্থান করে দেখার জন্য আমি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আশইঙ্কায় রাজি হলাম না। এত ঘটনাগুলা নিজ চোখে দেখার পর জাবিকে একটা সুন্দর(!) অন্যান্য ক্যাম্পাসের মত মানতে ইচ্ছা হয় না। এইগুলা ছাড়াও প্রতিদিন প্ত্র-পত্রিকায় কমিডিয়াতে যা দেখি তাতে মনে হয় না কোন সুস্থ সভ্য মানুষ এইখানে পড়তে পারে।
এরপরের ঘটনাটি ২০১০ সালে। স্বরস্বতী পুজার দিন। আমরা বুয়েটের বন্ধুরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম সাভারের জাবি ক্যাম্পাস আর স্মৃতিসৌধ ঘুরতে যাব। আমি আগে থেকে আমার সেই ফ্রেন্ডকে বলে রেখেছিলাম। পৌঁছানোর পর সে আমাদের ঘুরিয়ে দেখাল। দুপুরের খাবার এর পর আমার ফ্রেন্ড জরুরি কাজ আছে বলে চলে গেল। কি হইছে জিজ্ঞাসা করতে জানাল স্বরস্বতী পুজার দিন ছেলেদের হলে মেয়েদের ঢুকতে দেয়। এক মেয়ে এক ছেলের রুমে এসে আকাম করতে গিয়ে ধরা পড়ছে। সেইটা নিয়ে ঝামেলা হইতাছে তাই যেতে হবে
এরপর আমার ফ্রেন্ডের ঘটনা দিয়ে শেষ করি। আমার ফ্রেন্ড ট্রান্সফার করে কেমিস্ট্রিতে ভর্তি হয়। সে একটা মেয়েকে পছন্দ করত। কিন্তু মেয়েটি তাকে ছ্যাকা দেয়াতে আর মেডিকেলে ভর্তির আশায় এক বছর লস করে। এরপর সে লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়। সে পুরোপুরি পড়ালেখা ছেড়ে দেয় ৩-৪বার ফেইল করে। তাকে জাবি থেকে পরে বের করে দেয় পাস না করার কারণে। জাবির ঘটনাগুলার পর থেকে ওর থেকে আমার দূরত্ব বাড়তে থাকে। এখন ওর সাথে ৫-৬ মাস পর একবার কথা ১-২বছর এ একবার দেখা হয়।
এসব ঘটনা দেখে কি জাবিকে একটু সুস্থ ক্যাম্পাস বলে মনে হয়? বিচারের ভার আপনাদের হাতে।
আর একটা জিনিস আমি জামাত-শিবির না কিংবা জাবিতে ভর্তির জন্য ঈর্ষান্বিত নই। আমি জাবির ভর্তি পরীক্ষায় সব সবগুলা সাব্জেক্টে পজিশন ১-১০ এর মধ্যে ছিলাম। আমি শুধু আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম।
কেউ বাজে কমেন্ট করলে ব্লগ থেকে ব্লক করে দিব।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




