somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিতে রাজনীতি করলে জেলে যেতে হবেই। একমাত্র বেইমানরা জেলে যায়না, তারা কর্মির লাশের উপর দিয়ে লং ড্রাইভে যায়।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিতে রাজনীতি করলে জেলে যেতেই হবেই। শেখ মুজিবর রহমান, মাওলানা ভাসানি, এ কে এম ফজলুল হক, হোসেন শহিদ সোরোয়ার্দি সবাই জীবনের অনেকটা সময় অনির্বাচিত সরকারদের হাতে জেলে বন্দি ছিলেন।

জেলে যায় না বেইমানরা, যেমন মওদুদ আহমেদ, ড: কামাল হোসেন।

এরশাদ বিরোধি আন্দোলনে যত রাজনৈতিক কর্মি মারা গেছে তার বেশির ভাগই আওয়ামীলিগের। কিন্তু সেই সব কর্মিদের লাশের উপর দিয়ে শেখ হাসিনা এরশাদের সাথে লং ড্রাইভে গেছেন, এরশাদের অধীনে সাজানো নির্বাচন করেছেন। সংসদের বিরোধি দলের নেতা হয়েছেন।



ফেব্রুয়ারি মাস স্বৈরচার এরশাদ বিরোধি আন্দোলনের অনেক ঘটনাবহুল মাস। স্বৈরচার এরশাদ অনেক রক্ত ঝরিয়েছে এই ফেব্রুয়ারি মাসে।প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি আসলেই আমাদের সেদিনের সেই রক্তাক্ত ইতিহাসের কথা মনে পড়া উচিত।

১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে স্বৈরচার এরশাদ পুলিশের নির্বিচার গুলিতে শুধু ঢাকা মহানগরে সেদিন ১০ জন নিহত হয়, পুলিশের গুলিতে আহত হয় শতাধিক ছাত্র-জনতা। পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী, সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির মিছিলটি সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু হাইকোর্ট গেট ও কার্জন হল এলাকায় আগে থেকেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। পুলিশি বাধায় মিছিলটি আর সামনে এগোতে না পারায় মিছিলের সম্মুখে থাকা শতাধিক ছাত্রী ও সাধারণ ছাত্ররা তখন রাস্তায় বসে পড়ে এবং ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা দেওয়া শুরু করেন। এক পর্যায়ে পুলিশ ব্যারিকেড সরিয়ে ছাত্রদের উপর বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করে এবং সরকারি রায়ট কার রঙ্গিন গরমপানি ছিটাতে থাকে। ছাত্ররা তখন পুলিশের দিকে পাল্টা ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। ছাত্রদের ইট-পাটকেলের জবাবে পুলিশও ছাত্রদের মিছিলে অতর্কিত গুলি বর্ষণ করতে থাকে। পুলিশের গুলিতে সেদিন গুলিবিদ্ধ হন জয়নাল নামের এক ছাত্র। পুলিশ পরে তাকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। পুলিশের অতর্কিত হামলায় সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় দীপালী সাহা নামে এক শিশু। পরবর্তী সময়ে তার লাশ গুম করে ফেলা হয়।

২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ সাল। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ডাকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয় মধুর ক্যান্টিন থেকে। মিছিলটি কার্জন হল পেরিয়ে ফুলবাড়িয়ার দিকে অগ্রসর হয়। দাঙ্গা পুলিশ মিছিলের সামনে-পেছনে মিছিলের পেছন দিয়ে খুনি জান্তা এরশাদের নির্দেশে ট্রাক উঠিয়ে দিয়ে হত্যা করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা শহিদ ইব্রাহীম সেলিম ও দেলোয়ার হোসেনকে।

অন্যদিকে দেশের সর্ববৃহৎ পাটকল 'আদমজী'তে ধর্মঘট প্রস্তুতির মিছিলে হামলা চালিয়ে খুনি এরশাদের মদদপুষ্ট ছায়াদুল্লাহ সাদুর গুণ্ডাবাহিনী ছুরিকাহত করে শ্রমিক নেতা বীর কমরেড তাজুল ইসলামকে। ঢামেক হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১ মার্চ হরতাল চলাকালে কমরেড তাজুল ইসলাম শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সাধারণ নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষাজীবন শেষ করে তাজুল ইসলাম যোগ দিয়েছিলেন আদমজীর শ্রমিক হিসেবে। হতে পারতেন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক, বিরাট অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার- অনেক কিছুই। মানুষের জন্য, বাংলাদেশের জন্য এই ব্যক্তিগত ত্যাগের আর ক'টা উদাহরণ আছে? (রেফ: http://samakal.com/print/1602195987/print)

জনগনের দল আওয়ামীলীগ জনগনের ভোটের অধিকার চুরি করা স্বৈরশাসকদের পাতানো নির্বাচনে অংশ নিতে সব সময়ই অত্যন্ত উৎসাহি। ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে শেখ হাসিনা বলেছিলেন এই (১৯৮৬ সালে এরশাদের পাতানো) নির্বাচনে যারা যারা অংশ নিবে, তারা 'জাতীয় বেঈমান'।
কিন্তু এই ঘোষণা দেয়ার তিরিশ ঘন্টার মধ্যে শেখ হাসিনা পল্টি খেয়ে ঘোষণা দেয়- তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এরশাদের নির্বাচনে অংশ নিবে।

সেলিম ও দেলোয়ার-তাজুলের রক্তের সাথে বেইমানি করে শেখ হাসিনা স্বৈরচার এরশাদের অধীনে ১৯৮৬ এর সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন এবং বিরোধি দলের নেতা হন। আর এখন হাসিনার বিনা ভোটের সংসদে সাবেক স্বৈরচার এরশাদের জাতীয় পার্টি বিরোধি দল।


বাংলার মানুষ এখনো বেইমান মীরজাফরের নাম গালি হিসাবে ব্যাবহার করে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৩
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×