somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবি টাং ইয়াপিং: আধুনিক চিনা কবিতার এক অনন্য কন্ঠস্বর

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


টাং ইয়াপিং । আধুনিক চিনের কবিতায় একেবারেই ব্যাতিক্রমী সুর এনেছেন। তার কারণ আছে। চিনে সিলভিয়া প্লাথকে নিয়ে সরকারিভাবে কেউই উৎসাহী নয়। সেখানে সিলভিয়া প্লাথ চলে গোপন সার্কেলে। সিলভিয়া প্লাথের একনিষ্ট ভক্ত ইয়াপিং । গভীর ভাবে সিলভিয়া প্লাথ পাঠ করেছেন। অবশ্যই অনুবাদে। কাজেই, আধুনিক চিনের কবিতায় একেবারেই ব্যাতিক্রমী সুর এনে ফেলেছেন কবি টাং ইয়াপিং। তবে তাঁর নিজস্বতা নেই -এমন না।

এই প্রখর নারীটির জন্ম ১৯৬২ সালে চিনের সিচুয়ান প্রদেশে। সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে পাস করেছেন ১৯৮৩ সালে। তারপর থেকে একটি টিভি স্টেশনে কর্মরত। নারী হিসেবে কন্ঠস্বর অত্যন্ত দীপ্র। ‘কৃষ্ণমরু’ নামে ধারাবাহিক কবিতা ইয়াপিং কে খ্যাতি এনে দিয়েছে। তাঁর কবিতাকে ‘কৃষ্ণ টর্নেডো’ অবহিত করা হয়।


জয় করতে হলে


বিশুদ্ধ পুরুষ আর নষ্টা নারী বাদে
কেউই আমায় জয় করতে পারবে না।
হৃদয়ের প্রেম ছাড়া আর জিহবার ঘৃনা ছাড়া
আমায় কেউ জয় করতে পারবে না।
কাজেই আমি
ঘোড়া, গরু ও পাখির মতন
খোলামেলা দাঁড়িয়ে
রাস্তায়
দোকানে
চত্তরে।

কাজেই আমি বেঁচে আছি-
বেঁচে আছি প্রতিটি নারী পুরুষের জন্য;
প্রতিটি শিশু ও বয়েসিজনের জন্য বেঁচে আছি।
আমার ভাল দিকটা হল সোনালি মরুভূমি;
চন্দ্রালোকিত সমুদ্র হল আমার প্রেম।
তীক্ষ্ম খাড়িই আমার ঘৃনা ।

বিশুদ্ধ পুরুষ আর নষ্টা নারী বাদে
কেউই আমায় জয় করতে পারবে না।
পাহারাদার কুকুর আর বাউন্ডুলে ছাড়া
কেউই আমায় জয় করতে পারবে না।

To Conquer

Aside from pure men and impure women nobody can conquer
me Except for love from the heart and hatred off the tongue no one can win me And so I stand like a horse a cow and a bird open like a street a shop a square And so I'm alive living for every man and woman alive for every senior and child My goodness is the golden desert my love the moonlit sea my hate a sheer precipice... Aside from pure women and impure men nobody can win me Except for watchdogs and wanderers no one can conquer me


বলছিলাম। সিলভিয়া প্লাথের একনিষ্ট ভক্ত ইয়াপিং । গভীর ভাবে সিলভিয়া প্লাথ পাঠ করেছেন। অবশ্যই অনুবাদে। কাজেই, আধুনিক চিনের কবিতায় একেবারেই ব্যাতিক্রমী সুর এনে ফেলেছেন কবি টাং ইয়াপিং।সিলভিয়া প্লাথের আঠারোই এপ্রিল কবিতাটি পাঠ করলেই তার খানিকটা বোঝা যাবে।

বিগতদিনের আমার সব শ্লেষ্মা
আমার করোটির খুপরিতে গলছে

আর যদি আমার পাকস্থলী সঙ্কুচিত হয়
কোনও বোধগম্য ঘটনার কারনে
গর্ভধারন কি পেটের অসুখ

আমি তোমার কথা ভাবব না

অথবা ঘুমের কারণে
সবজে পনিরের চাঁদের মতন অনিয়মিত
যেহেতু খাবারের জন্য
বেগুনি পাতার পুষ্টি
এসবের জন্য

আর অল্পখানি ভয়ঙ্কর ঘাসের স্তুপ
আকাশে কি গাছের চূড়ায়

একটি ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়েছে গতকাল
সহজে আর চিরকালের জন্য
গোধূলিতে টেনিস বলের মতন

(অনুবাদটি আমিই করেছিলাম অনেক দিন আগে।)

বলছিলাম। কবি টাং ইয়াপিং আধুনিক চিনের কবিতায় একেবারেই ব্যাতিক্রমী সুর এনেছেন। কথা সত্য। কেননা, কবি ওয়েন ইডুয়ো কে বলা হয় চিনের প্রথম আধুনিক কবি- কিংবা বলা যায় চিনের প্রথম পাশ্চাত্য ভাবধারা কবি। তাঁর কবিতায় সুররিয়াল বা অধিবাস্তব উপাদানের সঙ্গে মিশে আছে চিনের লৌকিক উপাদান। কবি ওয়েন ইডুয়ো-র অলৌকিক কবিতাটি পাঠ করা যাক ...

আমি কখনোই আগুনের লাল কিংবা পিচ কুঁড়ির জলের মাঝরাতের কালো,
কি শোকার্ত গানের সুর অথবা গোলাপের সুঘ্রান চাইনি। আমি কখনোই চিতার
উদ্ধত অহংকার কি সাদা ঘুঘুর সৌন্দর্যও কামনা করিনি। এসব আমি চাইনি।
অথচ এসবের স্ফটিকীকরণ -হাজার গুণ বিরল আর অলীক বলে মনে হয়!
আমি ক্ষুধার্ত আর ব্যস্ত। আমি অপুষ্ট থাকতে পারি না। সামান্য দানাপানি হলেও চলবে।
আমাকে চাইতে হবে? ঈশ্বর জানেন আমার তেমন ইচ্ছে নেই। আমি একগুঁয়ে
আর বোকাসোকা। অপেক্ষা করে করে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। অলৌকিকের আশায়
অপেক্ষা করে করে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। আমি আর না-খেয়ে থাকব না। কে না
জানে-জগ ভরতি ঘোলাটে মদ আর ঝিঁঝি ডাকা গাছের কিংবা ধোঁওয়াময়
পাহাড়ের শৃঙ্গের কী এমন দাম? উজ্জ্বল উপত্যকা আর খালি আকাশের জ্বলজ্বলে
তারার- এসবই সাধারণ। নিমর্ম আর একঘেয়ে। আমাদের পরমানন্দের
কাছে এসব কিছুই না; স্পর্শকাতর নাম ধরে আমাদের কান্না কিংবা
স্বর্ণালী অক্ষরের তৃষ্ণা এবং সেসব গানে লেখা ...
-আমি নিশ্চিত যে পরে আর কান্না পাবে না
বনপক্ষীর কান্নার মত তুচ্ছ, হাস্যকর আর সময়ের অপচয় । কিন্তু, কে জানে?
অন্য উপায় তো নেই। আমি ভীষন ক্ষুধার্ত আর ব্যস্ত; ভেড়ার মাংস নিই
আর চমৎকার শস্যের জন্য বুনো ঔষধি অথচ ওখানে ক্ষতিকর কিছু নেই-
যতক্ষন না অলৌকিক ঘটছে ততক্ষন স্বচ্ছভাবে কথা বলা ।
তারপর আমি পলকেই সাধারণ ছেড়ে দেব। আমি আর
কখনও জমাট পাতা কি পুষ্পিত বসন্তের স্বপ্ন-ধাঁধা দেখব না।
আর আমি আমার শক্তি ক্ষয় করব না, তুলব না পাথরের ছাল;
দাবি করব না শাদা রসের উষ্ণতা;- আমাকে একবার অলৌকিকতা দাও,
তাহলে আমি কখনও কুৎসিতকে চাবুক মারব না।
একে এর বিপরীত দিতেও বাধ্য করব না।
আমি আসলে এসব নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছি। আর ওসব ব্যাখ্যাতীত
দাগওয়ালা দ্যেতনা; আমি যা চাই তা হলো বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষের মতন
উজ্জ্বল পরিস্কার শব্দ-প্রখর আলোর, আমি সবটা চাই, সবটা ...
মুখে দীপ্যমান, আমি অতটা গোঁয়ার কিংবা বুদ্ধিহীন নই ।
কিন্তু আমি গোলাকার পাখা দেখতে পাই না-দেখতে পাই না
তার পিছনের শ্বাশত মুখ । কাজেই, যতবার পুর্নজন্ম সম্ভব
ততবারই অপেক্ষা করব আমি। কারণ আমার রয়েছে শপথ ।
আমি জানিনা কতবার আমার জন্ম হয়ে গেছে-কিন্তু, আমি অপেক্ষা
করব- করব। অলৌকিক ঘটনা ঘটার জন্য। সেই দিন আসবেই।
বজ্র যেন আমাকে পোড়ায়, আগ্নেয়গিরি ধ্বংস করে। সব নরক জেগে
উঠে আমাকে চূর্ণ করে। আমি কি আতঙ্কিত? না। বাতাস আমার ভিতরের
আলো নিভাবে না। আমার ইচ্ছে আমার ছুঁড়ে দেওয়া শরীর ছাই হয়ে যাক।
তাতে কী? সময়ের সেই ক্ষুদ্র অংশ হল ক্ষুদাতি অংশ-আহ!
একটি অসাধারণ ঝলক, এক স্বর্গীয় মহাজাগতিক নীরবতা
(সূর্য, চন্দ্র এবং ঘূর্নায়মান সব নক্ষত্র নিশ্চুপ, সময়ও থমকে গিয়েছিল।)
-সবচে নিখুঁত গোলাকার শান্তি। আমি শুনছি দরজার হাতল ঘুরছে :
সেই সঙ্গে স্কার্টের খসখস-এই হল অলৌকিক ঘটনা।
অর্ধ-ভেজানো সোনার দরজার ফাঁকে তোমায় ঘিরে আলোর জ্যোতি!

(অনুবাদটি আমিই করেছিলাম অনেক দিন আগে।)

এই কবিতার সঙ্গে টাং ইয়াপিং -এর কবিতার প্রতিতুলনা করলেই বোঝা যাবে কেন
টাং ইয়াপিং এর কন্ঠস্বর আধুনিক চিনের কবিতায় অনন্য। টাং ইয়াপিং এর আরেকটি কবিতা ...The Black Nightgown


Bottle of a bottomless deep, I'm filled with footwashing water
the rainy nights are the most meaningful
ask a fellow over to talk big
before he arrives I don't think a thing
I lower the violet curtain turn on a red wall lamp
the black nightgown swings in a circle in the room
there have already been three knocks on the door
propped on the floor in the middle of the room
we start drinking strong tea
flattering high-sounding words run loud like water
honeyed lies as moving as stars
Slowly casually I lean back on the sofa
and with academic detachment relate an old maid's tale
the god between us begins to abscond
he covers his ears loses a slipper
all night big talk has an overall effect
when telling a story
the darker the night the better
the harder the rain the better

সিলভিয়া প্লাথ এখানেও উঁকি দিচ্ছেন।
তবে তাঁর নিজস্বতা নেই -এমন না।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:৪০
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×