জাতি ভেবেছিল, একাদশ জাতিয় সংসদ নির্বাচনের আগে তারন্যদীপ্ত কোন শক্তি শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের বীরদের মত গর্জে ওঠবে, আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত রাজনৈতিক দল গুলোকে দিকনির্দেশণা দিয়ে সত্যিকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের রাজনীতির স্বপক্ষে কোন ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। আশা ছিল, ঐ শক্তি অন্তত বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নীতিগত ঐক্যের চেষ্টা করবে। কিন্তু আমারা কী দেখতে পেলাম? বয়সের ভারে জর্জরিত ও অস্তগত কতগুলো সম্মানিত ব্যক্তি, যাদের ব্যক্তি জীবনে যথেষ্ট প্রাপ্তি রয়েছে, এমন কিছু মুরব্বী অবশিষ্ট সম্মান টুকতে আঘাত আসতে পারে এমনি ভাবে নিজেরাই আত্মঘাতী হাঁকডাক ছাড়ছে । কথায় বলে, সুখে থাকতে ভুতে কিলায়। জনতা জানতে চায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও বিশ্বখ্যাত আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের কী ভীমরতি ধরেছে? আপনি একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি, এর অধিক সম্মান আর কি চাই ? এখন তো মাহি বি চৌধুরীর পালা, তাকে দোয়া করুন আর আপনি অবসরে দিন কাটান ।আপনি জ্ঞানী, আওয়ামীলীগ আর বিএনপি কে সত্যিকারের অভিভাবকের মতো উপদেশ দিন ।মনে রাখা দরকার, প্রেক্ষাপট, পরিস্থিতি , বয়স এ সব কিছুই আপনার অনুকূলে নেই । দেশের মানুষ শিক্ষিত হয়ে আদর্শিক ভাবেও পরিবর্তনের পথে এগোচ্ছে। ধর্মান্ধতা থেকে ধর্মিয় উদার নীতি পালনে ক্রমেই মানুষ অভ্যস্ত হচ্ছে । কথায় বলে, মান থাকতে ভঙ্গ ভালো। বেশি বিখ্যাত হওয়ার প্রবণতা , মানুষের খ্যাতিকে ম্লান করে। মনীষীদের বাণীতে আছে, বিখ্যাত হওয়ার চেয়ে বিশ্বস্ত হওয়া অনেক সম্মানের। এক্ষেত্রে বড় উপমা হল এদেশেরই একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, যিনি সকলের নিকট সম্মানের পাত্র হতে পারতেন। অনেকে বলেন, আরো বেশী বিখ্যাত হওয়ার প্রবণতা তাঁর অর্জিত সম্মানকে খাট করছে । সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন আইনজ্ঞ হিসেবে দেশ- বিদেশে সম্মানিত একজন পরিচিত মুখ। মনে করা অমূলক নয় যে, তাঁর মত জ্ঞানীজন হতে পারতো ক্রান্তি কালে মুক্তির পথ প্রদর্শক । প্রতিশোধ স্পৃহায় নিজ আদর্শিক পথ চ্যুত হয়ে
তিনি যেন বিতর্কিত পথেরই দিশেহারা পথিক। ফলে , নির্বাচনে সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য বিএনপির মহাসচিব জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সংবিধান প্রণেতাদের সাথে ঐক্য হলেও তাদের উপর আস্থা নেই বলে যেতে হয় জাতিসংঘে। নিজ দেশের সম্মানের তোয়াক্কা না করে মধ্যস্থতা করার জন্য আহবান জানাতে হয় জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ জেনকারকে।
জনগণের প্রত্যাশা, ড. কামাল হোসেনের মতো মানুষেরা আর যেন
জনবিচ্ছিন, বহিষ্কৃত ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের কুচক্রি শুকুনি মামার মত কিছু ষড়যন্ত্রকারীর শলা পরামর্শ ও তৈরি ফাঁদে তাঁরা যেন পা না দেন ।
দেখা যাচ্ছে, কিছু রাজনৈতিক
ত্যাজ্যপুত্র আর জনবিচ্ছিন গুটিকয়েক জ্ঞানপাপী আতেল মিলে ঐক্যের চেষ্টা চলছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য । সমালোচকরা বলেন, অতিজ্ঞানী ও বঞ্চিত মাহমুদুর রহমান মান্না সাহেব প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে প্রতিশোধ স্পৃহায় প্রায় উন্মত্ত । গণতন্ত্রের প্রসব বেদনায় ক্ষমতা নামক তীব্র আকাঙ্খিত সন্তানের মুখ দর্শনের জন্য তিনি আজ অপেক্ষমান অপারেশন মিশনে । আ স ম আব্দুর রব এর কাছে ঋণী বলেই বাঙালি তাঁকে সম্মান জানাতে চায়। কিন্তু তিনি যদি সুদে-আসলে সব ফেরত নেওয়ার জন্য দ্বৈত মতাদর্শকে আলিঙ্গন করেন, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের নিকট হতে তাঁকে দূরে রাখা কি অপরাধ?
অনেকের মতে, মোট ভোটারের ৩৫% বিএনপি সমর্থিত+৮% জামাত আর জোট ও যুক্ত ফ্রন্ট মিলে ১% =৪৪%। তাহলে, ৩৫% সাথে ৯% এর ঐক্য হলে , অবশিষ্ট ৫৬% (আওয়ামীলীগের :৪০% আর জাতীয়পার্টী :১০% ও অন্যান্য জোট :১%+কোন দল করেন না এমন সাধারণ ভোট ৫% =৫৬%) এর অনৈক্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কতটুকু সম্ভব হবে? ঐক্য যদি ফলপ্রসূ হতে হয়, তাহলে সেই ঐক্য হতে হবে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে । কারণ, এ দুটো দল একত্রে প্রায় ৭৫% জনগণের সমর্থন নিয়ে রাজনীতি করে! ঐক্যের প্রশ্নে মনে রাখা দরকার , আদর্শ যার যার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নীতিপালনে এক হওয়া চাই সবার । যা হউক, সব নেতা ও দলের উদ্দেশ্যে পরিশেষে শুধু এই বলা---!!! সাধু সাবধান!!!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৪