.....ব্লগার অনন্ত দাস বিজয় মারা গেলেন কয়েকদিন হল।
একই ধরণের ৩য় ঘটনা এবং এবার শান্তির শহর বলে পরিচিত আমার শহর সিলেটেই।
হত্যাকান্ডের প্রতিক্রিয়া হিসাবে নাস্তিকগোষ্টি থেকে বেশ তীব্র প্রতিক্রিয়া আসছে।
...ইসলাম জঙ্গী ধর্ম....বিজ্ঞানের সাথে ইসলামের সরাসরি বিরোধ এরকম কথা তো হরহামেশাই।
একজন বেশ ভালো লিখেছে,"ওরা বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় পদে পদে বাঁধা দিয়েছে।
ওরা কোপার্নিকাসকে আগুনে পুড়িয়েছে,গ্যালিলিওকে অন্ধ করেছে।
কিন্তু মুক্ত চিন্তা আটকে থাকেনি.....।"
...ডিয়ার ফ্রি থিংকার্স,কোপার্নিকাসকে কারা হত্যা করেছিল?
মুসলিমরা নাকি খ্রিষ্টানরা?
কোন বিজ্ঞানীকে বিজ্ঞানী হওয়ার অপরাধে মুসলিমরা হত্যা করেছে?
জাস্ট একটা উদাহরণ দিন তো।
...এই কিছুদিন আগে ন্যাশনাল জিওগ্রাফী চ্যানেলে একটা ডকুমেন্টারী দেখলাম।
চীনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাজার মতাদর্শের বাইরে কোন বই লিখলেই জীবন্ত কবর দেয়া হত।
সেই একই সময়কার আব্বাসীয় খলিফাদের আমলে মুসলিম খলিফারা পৃথিবীর যে প্রান্তেই কোন বইয়ের সন্ধান পেয়েছেন সরকারী অর্থে সেই বই নিয়ে এসেছেন।
আপনারা হয়তো জানেন না মুসলিমরা যখন স্পেন শাসন করে তখন পৃথিবীর সব লাইব্রেরী মিলিয়ে যত বই ছিল মুসলিমদের এক লাইব্রেরীতেই তার চেয়ে বেশি বই ছিল।
অমুসলিম ডিরেক্টর নির্মিত এই এনিমেটেড ডকুমেন্টারী এখনো ইউটিউবে খুঁজে পাবেন।
সবচেয়ে বড় কথা যে ধর্ম পরিষ্কার ভাবে ঘোষণা করে "জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়ে পবিত্র"-সে ধর্ম কিভাবে বিঞ্জান বিদ্বেষী হয়?
.....নাস্তিক তথা ইসলামবিদ্বেষীদের ফেসবুক প্রোফাইল ঘুরলে রিলিজিয়াস ভিও এর জায়গায় প্রায়ই দেখা যায় "মানবতা"।
এই সুবিধাবাদী জনগোষ্টির প্রায় সবারই সার্টিফিকেটে নিশ্চয়ই ধর্মের জায়গায় মানবতা লেখা নেই।সবারই ইসলাম/হিন্দু থাকবেই।
এটা দিয়েই তারা পড়ালেখা চালাবে,চাকরি করবে।
কিন্তু ফেসবুকে এসেই পার্ট নেয়।
থু!
তাদের অবস্থা দেখে মনে হয় ধর্ম মানবতার বাইরে।
যেখানে বলা হয়েছে প্রতিবেশীকে অভুক্ত রেখে যারা পেট ভরে খায় তারা জান্নাতে যেতে পারবে না,যে ধর্ম স্পষ্ট করে বলে দেয় শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তার মজুরী দাও,যে সংবিধান বলে যে অন্যায়ভাবে কোন মানুষকে হত্যা করল সে যেন পুরো মানবজাতিকেই হত্যা করল সে ধর্মের চেয়ে বড় মানবতা আর কোথায় পাওয়া যাবে?
যে ধর্মের প্রচারক তার জীবনের শেষ ভাষণে বলেন,ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করোনা,প্রত্যেককে তার ধর্ম পালনের সমান অধিকার দিতে হবে তার চেয়ে বড় সমঅধিকার আর কি হতে পারে?
অর্ধ পৃথিবী শাসনকারী যে ধর্মের খলিফা মাদুর পেতে ঘুমাতে পারেন,রাতে ছন্মবেশে প্রজাদের অবস্থা দেখতে বের হতে পারেন,নিজের পুত্রকে চাবুক মেরে হত্যা করতে পারেন তার চেয়ে বড় সুশাসন কে দিতে পারে?
....এসব বলে কোন লাভ নাই জানি।
তারপরও না বলে থাকা যায়না।
নাস্তিকতা মানে যদি পর্যালোচনা হতো তবে মানা যেত।
এদের পেশা,নেশা সবই হচ্ছে ইসলামবিদ্বেষ।
ইসলামের এত বড় পরিসর থেকে তারা একটাও ভালো কিছু খুঁজে পায়না।
আশ্চর্য হওয়ার কিছু নাই।
....তাদের কাছে ধর্ম হচ্ছে একটা দেয়ালের মতো।কারাগারের দেয়াল।
পালাতে পারলে তারা জীবন স্বার্থক মনে করে।
ধর্ম আমাদের কাছেও দেয়াল।
নিজের রক্ষাপ্রাচীর।
এই দেয়ালই আমাদের রক্ষা করে,সব খারাপ থেকে,সব অনিষ্ট থেকে।
যারা ইসলাম থেকে বের হয়ে আল্লাহ রাসূলকে গালি দিয়ে ভাবে বিরাট কাজ করে ফেলেছে,ইসলামকে পুতে দিয়েছে তাদের বুদ্ধির স্থর আর শুয়োরের বুদ্ধির স্থরের মাঝে কোন পার্থক্য নাই।
তারা জানেনা ২০৭০ সালের মধ্যেই ইসলাম সবচেয়ে জনপ্রিয় ধর্ম হচ্ছে,তারা জানেনা একটা জীব নাস্তিক হওয়ার মুহুর্তে ১০০ জন মানুষ ইসলাম গ্রহণ করছে।
তারা যে পড়াশোনা নিয়ে নাস্তিক হয় তার দশগুণ পড়াশোনা নিয়ে মানুষ ইসলামে আসে।
শুধু বেলাল ফিলিপসের কোন স্ট্যাটাসের কমেন্টে গেলে "আলহামদুলিল্লাহ" "আমিন" বলা নওমুসলিম কিন্তু অমুসলিম নামবিশিষ্ট মানুষগুলোর সংখ্যা এবং পরিচয় জানলে এরা পাগল হয়ে যাবে।
আমাদের মিডিয়া আসিফ মহিউদ্দিন কোথায় কখন টয়লেট করছে ফলাও করে প্রচার করে।
কিন্তু কখনোই নিউজ করেনা টনি ব্লেয়ারের শালি মুসলিম,মাইক টাইসন মুসলিম।
এদের কর্মজীবন কিংবা প্রোফাইল ঘাটলে দেখা যাবে এরকম দুচারটা আসিফ তাদের জুতার তলার একটা স্পাইকও না।
আফসোস!
.....হত্যাকান্ড নিয়ে কিছু কথা বলি।
হত্যার পরই "আনসারউল্লাহ বাংলা টিম" দায় স্বীকার করেছে।
আগের দুইজন ব্লগার সহ আরো কয়েকটা হত্যার দায়ও তারা স্বীকার করেছে।
আমার কথা হলো এই ভুইফোড় সংগঠন কবে আসল?
এরা বোমা নিয়ে লাফ দেয়না,এরা অমুসলিম ধরে গলা কাটেনা,কাউকে অপহরণও করেনা।
শুধু ব্লগারদেরই হত্যা করে এবং একই স্টাইলে কুপিয়ে।
আশ্চর্য ব্যাপার তাদেরকে কখনো দেখাও যায়না,তাদের ওয়েবসাইট স্ট্রেস করা যায়না।
কিন্তু কোন একটা হত্যাকান্ডের পর তাদের দুচার জন বাধ্যতামূলকভাবে ধরা পড়ে!
কাহিনীটা ক্রসফায়ার কাহিনীর মতোই পরিচিত হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।
সন্দেহ,সন্দেহ!
আমি কোনদিন তাদের কোন সদস্যকে দেখিনি।
আমার বিশ্বাস কেউ ই কোনদিন দেখেনি।
ডিয়ার সম্মানিত এবং শ্রদ্ধেয় নাস্তিকবৃন্দ,টাইমলাইন ভর্তি আপনাদের ননস্টপ কান্নাকাটির কারণে অনন্তদার মূল লেখায় যেতে আমার বেশ কষ্ট করতে হয়েছে।
সেই একই জিনিস,ইসলাম বিদ্বেষ আর ইসলাম বিদ্বেষ।
ক্যান রে ভাই,মুক্ত চিন্তার জন্য দুনিয়ায় ইসলামের পেছনে লাগগা ছাড়া আর কিছু নাই?
কথায় কথায় আপনারা যার কথা বলেন আপনাদের সেই মায়ের বাপ নানা স্টিফেন হকিং মুখ বেকা করে মূর্তির মতো বসে আছে বছরের পর বছর ধরে।
মহাবিজ্ঞানী হয়েও নিজের জন্য কিছুই করতে পারছেনা।
আপনাদের মহাজ্ঞানের একটা অংশ দিয়ে গবেষণা করে দেখুন তার জন্য কিছু করা যায় কিনা।
ভূমিকম্প হলে চ্যাপ্টা হয়ে যাবেন।
কিছু একটা আবিষ্কার করুন।
এমন না যে ইসলামকে গালি দিলেন আর একটা যন্ত্র আবিষ্কার হয়ে গেল।
আমরা বোকাসোকা আস্তিক মানুষ।
একটা অসুখ হলে ভাবি আল্লাহ দিয়েছেন,নিশ্চয়ই এর মাঝে ভালো কিছু আছে।
কেউ হত্যা করতে আসলেও মনে হয় মরলে সমস্যা কি,জান্নাতে তো যাওয়ার সুযোগ আছে।
আমরা বোকা আস্তিকরা সবকিছুতেই সান্ত্বনা খুঁজে পাই।
কিন্তু আপনাদের অবস্থা তো তেমন না।
আপনাদের বেঁচে থাকা খুব জরুরী।
আপনারা মরে গেলেই তো সব শেষ।
বেঁচে থাকার চেষ্টা করুন।
অযথা ইসলামের পিছনে লাগেন কেন?
আপনাদের মতো মহাজ্ঞানীদের বেঁচে থাকা অনেক জরুরী।
আপনারা মরে গেলেই সব শেষ।
দেহ "মৃত্তিকা" ছাড়া আর কিছুই না।
সাধের মগজ ভেঙে নাইট্রোজেন,অক্সিজেনসহ নানান জৈব অজৈব পদার্থ হবে।
আর কিচ্ছু থাকবে না।
এটা কিছু হইল?
ইসলামের পেছনে সময় নষ্ট না করে এমন যন্ত্র আবিষ্কার করুন যাতে এক হাজার বছর বাঁচতে পারেন।
বোকাসোকা বিজ্ঞানবিরোধী কাঠ মাদ্রাসার ছাত্ররা আপনাদের ট্রেস করে ফেলে,হত্যা করে নিরাপদে বসে থাকতে পারে আর আপনারা বিজ্ঞানীরা তাদের অবস্থান সনাক্ত করতে পারেন না।
বিরাট বড় বেইজ্জতি কিন্তু।
আপনারা কেন মরতে যাবেন?
জনস্বার্থে?
ভুল।
স্বার্থ ছাড়া কেউ কিছু করেনা।
নিজের শরীরের বিভিন্ন অর্গানও স্বার্থের বাইরে যায়না।
আমরা আস্তিকরাও স্বার্থের বাইরে না।আমাদের স্বার্থ জান্নাত,স্বর্গ।
আপনারা ভয় পান না,তাই তো?
ভুল বন্ধু।
আপনাদের অনন্ত দাও কিন্তু চাপাতী দেখে ভয়ে দৌড়াইছে।
পৃথিবীর বোঝা হওয়ার আগে বুঝতে শিখুন।
.....ভাইরে,কাঠ মোল্লাদের সমালোচনা করতে চান,গোঁড়ামীর সমালোচনা করতে চান করুন।
আপনাদের চেয়ে এক হাজার গুণ বেশি সমালোচনা করেছিল কাজী নজরুল।
কিন্তু সে জন্য তাঁকে নাস্তিক হতে হয়নি।
"মৌ লোভী যত মৌলবী আর মোল্লারা কন হাত নেড়ে,
দেব দেববীর নাম মুখে আনে সবে দাও পাজীটার জাত মেরে।"
এটা বলার পরই তিনি বলতে পেরেছেন
"বাজিছে দাদামা,বাঁধরে আমামা শির উঁচু করি মুসলমান।
দাওয়াত এসেছে নয়া জমানার ভাঙা কেল্লায় উড়া নিশান।"
....মৌলবাদ শব্দটা আর সবার মতো অনন্তদারও বড় প্রিয় ছিল।
তার লাস্ট স্ট্যাটাসে তিনি "ছিলটি মৌলবাদ" নিয়ে লিখেছেন।
আফসোস সেই সিলেটিরাই তার জন্য কান্নাকাটি করছে বেশি।
কান্নাকাটি করুন,বিচার চান কোন সমস্যা নাই।
কিন্তু বাড়াবাড়ি করতে যাবেন না।
পৃথিবীর কোন প্রান্তেই সংখ্যালঘুরা ভালো থাকেনা।
আমেরিকার প্রসিডেন্ট কালো হওয়া সত্ত্বেও কালোরা এখনো নিগৃহিত।
সেখানে সর্বোচ্চ ২% জনগোষ্টী হয়েও আপনাদের বাড়াবাড়ি অতিরিক্ত।
অনুভূতি অনেক আঘাত দিয়েছেন।
রাজার হালে আছেন।বেশি বাড়াবাড়ি করতে যাবেন না।
বিচার চাইতে গিয়ে,প্রতিবাদ করতে গিয়ে ধর্মকে গালি দেবেন না।
ধানক্ষেতের মাঝে হঠাৎ করে একটা দুইটা চারা মাথা উঁচু করে।
তাদের সম্মান না করে উপড়ে ফেলাই নিয়ম।
ইসলাম নিয়ে অতিরিক্ত চুলকানির ফল কখনোই ভালো হবেনা।
চুলকানি থেকে চুনকালি আসবে।
আর চুনকালির রং সবসময় সাদা-কালো হবেনা,মাঝে মাঝে লাল ও হতে পারে।
তার দায়ভার আগে নিতে হবে আপনাদেরকেই।
...এদেশ মুসলিমদের,এদেশ সব ধর্মের ধার্মিকদের।
এর বাইরে যারা শান্তিবাদী এদেশ তাদের।
কোন উগ্রপন্থী বা অনুভূতিতে আঘাতকারীদের জন্য এ দেশ নয়।
শেষ করছি মুহিব খানের গানের একটা কলি দিয়ে-
"ইসলাম এ জাতির পরতে পরতে, জনপদে ঘরে ঘরে,
ইসলাম এ জাতির ৯০ ভাগ মানুষের অন্তরে।
ইসলাম নিয়ে ছিনিমিনি খেলে এমন শক্তি নেই।
আর কিছু থাক না থাক এদেশে ইসলাম থাকবেই,
সবকিছু বদলে যাক এদেশে ইসলাম থাকবেই।"
জয়নাল আবেদীনের ফেসবুক টাইমলাইন হতে সংগ্রহকৃত
লিঙ্কঃ
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:৩০