১. মিডল ইস্টে ১০ বছর থাকার সময় অনেক ভারতীয় বন্ধু/বস পেয়েছি। ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক-এর কল্যাণে এখনও ৪/৫ জনের সাথে যোগাযোগ আছে। এদের সাথে যখন সহকর্মী হিসেবে ছিলাম তখন ঘনিষ্ট বাংলাদেশী বন্ধুর মতই ছিলাম। কারো কারো সাথে রুমও শেয়ার করতে হয়েছে। কখনো তাদের প্রতি ঘৃণা জন্ম নেয়নি। কখনো ভারতের বর্ডার নীতি, তিস্তা, ফারাক্কা, আওয়ামী সখ্য নিয়ে তাদের প্রতি ক্ষোভ জন্ম নেয়নি। কারণ এই বিষয়গুলো রাষ্ট্রীয় নীতির অংশ। এগুলোর সাথে সাধারণ জনগণের সম্পর্ক তেমন একটা নেই...
২. মিডল ইস্টে শুরুতে যাওয়ার পর আমার চিন্তা ধারা ছিল, পাকিস্তানীদের(মুসলিম দেশ) সাথে অতীত ভুলে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখা যেতে পারে এবং ভারতীয়(হিন্দু দেশ) দের সাথে দূরত্ব রেখে চলতে হবে। কিন্তু আমার চিন্তা ভুল ছিল। কিছুদিনের মধ্যেই আমি টের পাই পাকিরা এখনও ৭১-নিয়ে মনস্তাত্ত্বিক ভাবে বাংলাদেশীদের পছন্দ করে না, অন্যদিকে ভারতীয়রা(বলা বাহুল্য ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে বেশী যা অনেকেই জানে না) তুলনামূলক ভাবে বাংলাদেশীদের সাথে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে( আমার পর্যবেক্ষণ, অন্যদের বেলায় ব্যতিক্রমও হতে পারে)...
৩. গুজরাটের কসাই হিসেবে মোদী অবশ্যই অপরাধী। কিন্তু তিনিই আবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এটাই বাস্তবতা। তিনি দেশে আসলে আমাদের লাভ বা ক্ষতি কী? প্রতিবেশী দেশের সাথে আমরা চাইলেও খারাপ ভাবে থাকতে পারি না। তিনি কি বাংলাদেশের মুসলমানদের ক্ষতি করেছেন? রাষ্ট্রীয় ভাবে যদি বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন হয় তার জন্য মোদী দায়ী নয়, দায়ী আমাদের রাজনীতিবিদ রা, দায়ী আমাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি...
৪. হেফাজতের আমীর কি ভারতে চিকিৎসা নিতে যায়নি? আমরা ইসলাম বিষয়ে ফতোয়া দেয়ার সময় কি ভারতের দেওবন্দের ফতোয়া নিয়ে আলোচনা করি না? বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামী আলোচক জাকির নায়েক কি ভারতীয় নন? ভারতের মোগল সাম্রাজ্য, পীর আউলিয়া কি আমাদের জন্য সম্মানিত নন?
৫. রাষ্ট্রীয়ভাবে আমন্ত্রিত একজন অতিথির বাংলাদেশে আসার বিরোধীতা করাটা আমার দৃষ্টিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। বিশেষ করে বাংলাদেশ সে পর্যায়ের দেশ নয়। বুশ আসলেও কি এরকম প্রতিবাদ হত? নিজ দেশে গণতন্ত্র নেই, ভোটাধিকার নেই, গুম-খুনের বিচার নেই সেদিকে খেয়াল নেই, আসছে অন্য দেশের মুসলিম নিধনকারী একজনের আগমন ঠেকাতে...
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:৩৪