somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিজিএমই ভবন ইস্যু : ভেঙ্গে নয় দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হোক ভিন্ন ভাবে

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা খবর।
সকলেই অবহিত প্রায়- তবু তথ্যসূত্র হিসেবে উল্লেখ করছি।
‘২ কোটি টাকা’ খরচ হবে বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে"
রাজধানীর হাতিরঝিলে তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের গড়ে তোলা বিজিএমইএর অবৈধ ভবনটি ভাঙতে দুই কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
১৫ তলা ওই ভবনের ধ্বংসাবশেষ বিক্রি করেই এই অর্থ উঠে আসবে বলেও ধারণা করছেন তারা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। তবে ধ্বংসাবশেষ বিক্রির টাকায় খরচ মেটাতে না পারলে বিজিএমইএর কাছ থেকে টাকা আদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
আদালতের রায়ে ভবন ধ্বংসের ব্যয় বিজিএমইএকে বহন করতে বলা হয়েছিল। তার উপর জোর দিচ্ছেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চাইছেন বিজিএমইএর বিদায়ী সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।
এখন উঁচু এই ভবনটি কীভাবে ভাঙবেন, ব্যয়ের সংস্থান কীভাবে হবে, এখন সেই ছক কষছেন রাজউক কর্মকর্তারা

একটা ভবন নির্মান ছেলেখেলার কথা নয়। তার উপর যদি হয় হাইরাইজ- হ্যাপা আরও অনেক বেশি।
রাজধানীর বুকে এত বড় একটা সংগঠনের এত বড় একটা ভবন নিশ্চয়ই আলিফ লায়লার জিনি এক রাতে দাড় করায়নি!
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউক রয়েছে এর প্রধান শিখন্ডি হিসেবে। তাদের আবার রয়েছে ইমারত নির্মান বিধিমালা। দিস্তা দিস্তা বিধি-বিধান নিয়ম কানুনে ভরা সেই বিধিমালা সময়ে সময়ে আপডেটও হয়েছে। সকল নিয়ম সকল বিধান এবং গ্যাস, পানি, বিদ্যুত, পরিবেশ সহ কত কত অধিদপ্তরের সকল সনদ নিয়েইতো ভবনটির কাজ শেষ হয়েছে। নয়কি? তার উপর দেশের সর্ব প্রধান ব্যক্তি প্রধান মন্ত্রী। দুই দুইজন প্রধানমন্ত্রী ভবনটির ভিত্তি প্রস্তর আর উদ্ধোধনে উপস্থিত ছিলেন!

এত বিশাল সব কর্মযজ্ঞ সমাপ্ত হবার পর সবকিছু শেষে মনে হল ১৬ তলা ভবনটি বৈধ নয়?!!! এবং সমাধান হল- এটা ভেঙ্গে ফেলতে হবে।এ কি প্রহসন নয়! বছরের পর বছর লেগেছে এ ভবন দাড়াতে। জেলা প্রশাসনের অনুমতি থেকে শুরু করে শত শত বিধি বিধানের পথ পারি দিয়ে অনুমতি নিয়ে যে ভবন দাড়াল, তাতে ভবনের কি দোষ? অনুমতি যারা দিল তারা কি বিচারের আওতায় এসেছে? তাদের কি শাস্তি দেয়া হল? কি শাস্তি দেয়া হল?


এই ১৬ তলা ভবনটি মূলত আমাদের সমন্বয়হীনতার এক বড় উদাহরণ। আমাদের দূর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিক এক ছাপ্পা। আমাদের পরিকল্পনাহীন কর্মকান্ডের অনেক বাস্তবতার এক জ্বলন্ত উদাহরন।

আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, রাজউকের বা এ নির্মানের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যকোন অধিদপ্তর বা ব্যাক্তি কারো কি কোন শাস্তি হয়েছে?
এই বিশাল কর্মযজ্ঞে স্তরে স্তরে অনুমোদন নিতে হয়েছে। প্লান পাস করাতে হয়েছে। গ্যাস, বিদ্যুত, পানি, পারিবেশ ছাড়পত্র নিতে হয়েছে। সকল ডকুমেন্টসইতো কোন না কোন কর্মকর্তা স্বাক্ষর করেছেন। তারা কি দেখে, শুনে, ‍বুঝে তা করেন নি?
যদি করে থাকেন- তবে দূর্নীতির শাস্তি শুধু ভবনের কেন? জড়িত অন্য সকলে কি ধোঁয়া তুলসি পাতা হয়ে গেল?
ঘুষখোর ক’টা অফিসারের শাস্তি হয়েছে?
এই ভবন অনুমোদনে জড়িত কয় জনের জেল হয়েছে?
অনুমোদনে স্বাক্ষর দাতা কেউ কি শাস্তি পেয়েছে?
ইউটিলিটি এতগুলো সার্ভিসের কেউ কি সরকারকে অবহিত করেছিল?
অনুমতি দেবার আগে?
এর উত্তর সম্ভবন না।
আর আইনের এমন বালখিল্যতা কি তাদেরকে ভবিষ্যতে আরো বেশি দূর্নীতি করতে উৎসাহিত করবে না?

সবশেষে দু দুজন প্রধানমন্ত্রী ভবনটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন এবং উদ্ভোধনে উপস্থি ছিলেন! উনাদের কি উনাদেরর সংশ্লিষ্ট কোন অফিসার অবহিত করেছিলেন- ভবনটি অবৈধ! এটির ভিত্তি স্থাপন বা উদ্ভোধনে যাবেন না????
স্বভাবতই উত্তরটি মনে হয় না।
এক্ষনে ভাবা যেতে পারে দেশ এবং জনতার স্বার্থে অমাদের সম্পদের অপচয় রোধকল্পে বিকল্প কিছু চিন্তা করা যায় কিনা? সকলকে ভাবতে অনুরোধ করছি।

মৃত পদ্মা নিয়ে যদি বেঁচে থাকতে পারি
চুয়ান্ন অভিন্ন নদীর বুকে বাঁধ
তির তির জল প্রবাহে যদি বেঁচে থাকতে পারি
একটা ঝিলের জলের জলে আর কি এমন বাঁধা!

শত কোটি টাকায় তৈরী হল। বছরের পর বছর সরকারের সকল শাখা থেকে অনুমতি মিলল। কিভাবে? দুই সরকারের দুই প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেন!
আজ ভেঙ্গে ফেলার কথা হচ্ছে।
শাস্ত্রই বলে ভাঙ্গা সহজ, গড়া কঠিণ।মাথা ব্যাথা হলে মাথা কেটে ফেলি না কেউ। বরং সুস্থতার পথে হাঁটি।

রাষ্ট্রীয় এই অপচয় আমজনতার অর্থের অপচয়।
ঘামে, শ্রমে, প্রবাসীর রক্তপানি করা উপার্জিত অর্থের শ্রাদ্ধ!
নীতিহীন ঘুষখোর অফিসারদের পাপে আবারো আমজনতারই শাস্তি!
প্রশাসনের নাকে ডগায় তিল তিল করে গড়ে উঠলো!
কেউ কিছূ বললো না।

এখন সাজানো ভবনকে আরো দুই কোটি টাকা গচ্চ দিয়ে ভেঙ্গে দেয়ার আয়েজন।

আমরা আগাবো কবে?
কেবলি। ধ্বংস আর ভাংগাই চলছে! গড়বে কবে?
আমার প্রস্তাব- এর জন্য অভিনব শাস্তি বিধান করতে পারেন মাননীয় আদালত।

যেহেতু ভবন গড়া হয়ে গেছে,
যেহেতু দুই দুইজন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন
যেহেতু আমজনতার রাজস্বের এক নিদারুন অপচয়ই হবে এটা ভাংলে -

আবার অন্যায়কেও প্রশ্রয় দেয়া যাবে না! সুতরাং দুইকুল রক্ষার এবং সম্পদের অপচয় না ঘটিয়ে আইন প্রতিষ্ঠায় অভিনব শাস্তি দেয়া হোক।
-# সমস্ত টাকা জমা দিতে হবে। পাশপাশি প্রতীকি শাস্তি বা জরিমানা হিসেবে
# মালিক পক্ষকে উল্লেখ যোগ্য রকম বড় অংকের জরিমানা করা। জড়িত সংস্থার উপর একটা বড় অংকের জরিমানা ধরা হোক।
আর এর সাথে জড়িত সকল সরকারী কর্মচারীদের জন্যও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অনুমোদনের আগে দশবার ভাবতে বাধ্য হয়।
# এই ভবনের অর্ধেক মালিকানা সরকারের হতে পারে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।
# এই ভবন এর আয়ের অর্ধেক সরকারী কোষাগারে নিয়মিত জমা হবে।
# এই শাস্তি ১২/২৪/৩৬ বছরের (র্নিধারিত সময়ের) জন্য চলবে।
# ভবনটিতে এই বিষয়ের দৃষ্টান্ত মূলক সতর্কতা নোটিশ দেযা যেতে পারে। যাতে মানুষ সচেতন হয়।
# বা প্রযোজ্য অন্য ভাল কিছু।
এই ভবনের আর্থিক মূল্য কত? নূন্যতম কয়েক হাজার থেকে লক্ষ কোটি টাকা। এত টাকারর এই বিশাল সম্পদকে ধ্বংস না করে- এটাকে নির্দশন মূলক শাস্তি প্রদান করা যেতে পারে কিনা? ভাবা যেতে পারে। যাতে শাস্তিও ভোগ হয় এবং সম্পদেরও অপচয় না হয়।

কারণ ভবনটি ভেঙ্গে ফেললে লাভ কিছুই হবে না। মালিক পক্ষের অর্থিক ক্ষতি ছাড়াও দেশের জন্যও এ এক বিরাট অপচয়।
যে দেশে বৃহৎ অংশের মানুষ মৌলিক অধিকার বঞ্চিত। পথ শিশুরা ফুটপাতে ঘুমায়! তাদের শিক্ষা নাই, অন্ত্র, বস্ত্র বাসস্থান নাই! লাখ লাখ মানুষ মানবেতন জীবন যাপন করে! সেখানে আইনের নামে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস করা অনুচিত।
দীর্ঘ সময় ধরে শত অন্যায় ঘটতে দেয়াইতো অন্যায়। এখন তসে অন্যায়ের ফল পূর্ণ হয়ে যাবার পর অন্যায়কারীদের বহাল তবিয়তে রেখে স্থাপনা ধ্বংসের মাধ্যমে অপচয় করা বেমানান শুধু নয় পাপ বলেই বোধ হয়

বিজিএমই ভবন নিয়ে আরো লেখা
বিজিএমইএ ভবনের সামনে পোশাকশ্রমিকদের অবস্থান
বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে হবে (রাজউক) এতদিন কোথায় ছিলো?
বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পূণ অবৈধ হাইকোট, আগে কোথায় ছিল রাজউক?

আরো কারো চোখে পড়ে থাকলে মন্তব্যে যুক্ত করতে পারেন। কৃতজ্ঞত রবো।

ছবি : গুগল
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:৩৬
৩১টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×