somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোহিঙ্গা ক্যাম্প দিন দিন অস্থির হয়ে উঠছে…

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দিন দিন অস্থির হয়ে উঠছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। কক্সবাজারে ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা নিজেদের মধ্যেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন কয়েকদিন পরপরই। এতে ক্যাম্পে বাড়ছে খুন, ধর্ষণ, অপহরণের মতো ঘটনা।



রোহিঙ্গাদের মধ্যে গ্রুপে-গ্রুপে গোলাগুলি, আধিপত্য বিস্তার, মাদক, অস্ত্রসহ নানা সহিংসতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যন্ত বলতে বাধ্য হয়েছেন, এক সময় রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য বিষফোঁড়া হবে।




রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশে শুধু যে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়েছে তা নয়, বেড়েছে অর্থনৈতিক ব্যয় ও অন্য ঝুঁকি। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে (মিয়ানমার) নিরাপদ প্রত্যাবাসনে জোর দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।



গত ১০ ডিসেম্বর কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি হয়। ওই ঘটনায় দুই রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এর কিছুদিন পর ২৬ ডিসেম্বর উখিয়ায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা বা হেড মাঝি মোহাম্মদ হোসেন (৪০) নিহত হন।



এরপর ৬ জানুয়ারি উখিয়া বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলিতে মোহাম্মদ নুরুন্নবী (৪০) নামে এক রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হন। পরে তার ঘরে তল্লাশি চালিয়ে একটি গ্রেনেড উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কয়েকদিন পর ১৮ জানুয়ারি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিচ্ছিন্নতাবাদী দুটি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশনের (আরএসও) সদস্যদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়।



এ সময় গোলাগুলিতে হামিদুল্লাহ নামের এক রোহিঙ্গা নিহত হন। দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। এতে পুড়ে যায় প্রায় পাঁচশ ঘর। ফলে দেখা যাচ্ছে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সংঘর্ষ, খুন, অস্ত্র, মাদক চোরাচালানসহ নানা ধরনের অপরাধ হচ্ছে।



রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে একের পর এক হত্যাকাণ্ড, সংঘর্ষ, মাদক চোরাচালানের এমন পরিস্থিতির মধ্যেই গত ১৭ ডিসেম্বর মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে এইচআরডব্লিউ দাবি করে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নির্বিচারে আটক, চাঁদাবাজি এবং হয়রানি করছে।



প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, এপিবিএন সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গাদের কাছে ঘুস দাবি করেন। ঘুস না দিলে তাদের নির্যাতন করা হয়। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সন্ত্রাসী এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীর মাধ্যমে সহিংসতার শিকার হয়ে এরইমধ্যে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে বলেও দাবি করেছে সংস্থাটি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, রোহিঙ্গারা সবকিছু ফেলে এখানে (বাংলাদেশে) চলে এসেছে। যেকোনো প্রলোভনে প্রলুব্ধ হয়ে তারা যে কোনো চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারে।



রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের ভেতরে থেকে ইয়াবা ব্যবসা, নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি, মারামারি করছেন প্রতিনিয়তই। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডিজিএফআইয়ের এক কর্মকর্তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলা, গোলাগুলি, কাঁটাতারের বেড়া কেটে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা নিয়ে আসছেন তারা। ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প আমাদের জন্য একটা বিষফোঁড়া হবে কোনো এক সময়।



তিনি বলেন, সেখানে (রোহিঙ্গা ক্যাম্পে) এপিবিএন তাদের রুটিন ওয়ার্ক করছে। এপিবিএন নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের প্রতিবেদনে যেসব কথা বলেছে এগুলো তথ্যভিত্তিক নয়। বেশি করে দেখে এসে (যথাযথ তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে) এসব প্রতিবেদন করা উচিত। এদিকে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এপিবিএন প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ড. হাসান উল হায়দার। প্রথমবার্তাকে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে ইউএনএফপি, ইউনিসেফ কাজ করে।



তারা আমাদের কাজে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে। যেকোনো বিষয় তারা আমাদের জানায়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যেসব বিষয়ে অভিযোগ তুলেছে সে বিষয়ে আমাদের সঙ্গে তারা কখনো কথা বলেনি। অভিযোগের বিষয়ে আমাদের কাছে জানতে চাইতে পারতো। আমরা ব্যাখ্যা দিতে পারতাম। আমাদের সব ডকুমেন্ট আছে।



আমাদের কাছে কিছুই জানতে না চেয়ে এই ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়নি। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যখনই আমরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে যাই, তখনই এই ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়। রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এছাড়া ক্যাম্পগুলোতে প্রতি বছর ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নিচ্ছে।



এ হিসাবে ৫ বছরে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা view this link হয়েছে। ফলে এখন রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১২ লাখের বেশি। বিশাল এই জনগোষ্ঠীতে আরসা, আল ইয়াকিনসহ অন্তত ১৫টি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন সক্রিয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন অপরাধী চক্রের নেতৃত্বে চলে মাদক কারবার, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ।



এমনকি আধিপত্য বিস্তারে সশস্ত্র মহড়া, অপহরণ, মানবপাচার, সংঘর্ষেও জড়াচ্ছে তারা। পাশাপাশি আধিপত্য বিস্তারের জেরে চলছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষসহ একের পর এক হত্যাকাণ্ড। এপিবিএনের তথ্যমতে, ২০২১ ও ২০২২ সালে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক হাজার ১৬৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতার হন এক হাজার ৬৮৫ রোহিঙ্গা।



এগুলোর মধ্যে ৪১টি হত্যা মামলা, ৪০টি অপহরণ মামলা রয়েছে। এছাড়াও ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলায় ১১টি ও ৯৭টি অস্ত্র মামলা। তবে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে মাদক সংক্রান্ত, ৯৭৮টি

সূত্র: view this link
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:১৪
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×