সাধারণত দেখা যায় মানুষের আনন্দ-বেদনার কারণগুলো এক ও সম্পদ বৃদ্ধি পেলে চাকরি বা পেশায় উন্নতি হলে সব মানুষই খুশি হয়। রোগব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ হলে, দুনিয়ার চাকচিক্য লাভ হলে এ উদ্দেশ্য পূরণ হলেও সবাই খুশি হয় ।
পক্ষান্তরে অভাব ও দারিদ্র্যা দেখা দিলে, অসুস্থতা ও লাঞ্ছনার মুখোমুখি হলে বালা-মসিবতে নিপতিত হলে সবাই ব্যথা ও বেদনা অনুভব করে। আসুন, আমরা এমন পন্থা খুঁজে বের করি, যার মাধ্যমে আমাদের আনন্দকে স্থায়ী করতে পারি এবং দুঃখ জয় করে সুখী হতে পারি।
হাঁ, দুনিয়ার নিয়মই এই যে, মানুষ সুখ ও দুঃখের ঊর্মিমালায় আন্দোলিযত হতে থাকে। এক্ষেত্রে আমারও কোন দ্বিমত নেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কেন আমরা অনেক সময় বিপদ ও বালা-মসিবতকে যুক্তির চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই। ফলে সামান্য ব্যাপারে আমরা কয়েকদিন পর্যন্ত পেরেশান থাকি এবং জীবনের মূল্যবান সময় সেই বেদনার মধ্যে ধ্বংস করতে থাকি। অথচ ই পেরেশানিকে আমরা কয়েক মুহূর্তের মধ্যে সীমিত করতে পারি ।
কেন এমন হয়?
আমি জানি দুঃখ ও বেদনা হৃদয়ের উপর সরাসরি হামলে পড়ে এবং অনুমতি ছাড়াই সেখানে প্রবেশ করে। তবে যেখানে দুঃখবেদনার জন্য একটি দরজ খোলা, সেখানে তা বন্ধ করার জন্য রয়েছে হাজারো উপায় । এই গ্রন্থে আমরা এই উপায়গুলোই জানতে চেষ্টা করব। মনের দরজা বন্ধ করে দুশ্চিন্তা কীভাবে তাড়াতে হয়, সেটাই আমরা এই গ্রন্থে জানব ।
আসুন অন্য একটি কথা বলি, কত জনপ্রিয় মানুষকে দেখি যাদের সাক্ষাৎ পেয়ে অন্যরা খুশি হয়। তাদের সংসর্গ গ্রহণ করে। আপনি কি কখনও চিন্তা করেছেন যে, আপনিও হতে পারেন তাদের একজন? আপনি কেন অন্যদের কৃতিত্ব দেখে অসম্ভব খুশি, তাজ্জব ও বিস্মিত হন?
আপনি কেন চেষ্টা করেন না এমন একজন হতে, যাকে দেখে অন্যরা তাজ্জব বনে যায়? কীভাবে অন্যকে মুগ্ধ করা যায়, সেটাই আমরা শিখব। কেন, আপনার চাচাতো ভাই যখন কোন আসরে কথা বলে তখন মানুষজন নীরব হয়ে যায় এবং মনোযোগ দিয়ে শোনে? কেন সে তাদেরকে আবিষ্ট করে ফেলে? লোকজন তার কথা বলার ঢং দেখে আশ্চর্য হয়ে যায়।
আর আপনি যখন কথা বলেন তখন তারা আপনাকে ফেলে চলে যায় এবং তাদের মাঝে হট্টগোল ও গল্পগুজব শুরু হয়ে যায়। কেন এরকম হয়? অথচ আপনার জানাশোনা অনেক বেশি। আপনার সনদ উচ্চ এবং আপনার পদ উন্নত। তা হলে কেন সে মানুষকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হল আর আপনি ব্যর্থ হলেন?
দেখুন, দু'জন বাবা। একজনকে তার সন্তানাদি ভীষণ ভালোবাসে ।
তিনি ঘরে এলে তারা তাকে জড়িয়ে ধরে ঘরে আনন্দের বন্য বয়ে যায়। আরেকজন সবসময় সন্তানদের সঙ্গ পেতে চেষ্টা করেন, অথচ সস্তানরা বিভিন্ন অজুহাতে দূরে সরে যায়। এমনটা কেন? তারা দুজনই তো বাবা। তারপরও এমন কেন?
আমরা শিখব জীবনকে সার্থক করার উপায়, মানুষকে আকৃষ্ট করার পন্থা, তাদেরকে প্রভাবিত করার নিয়ম, মানুষের ভুলত্রুটি সহ্য করার তরীকা। আমরা শিখব, দূর্ব্যবহারকারীদের সাথে চলার নিয়ম-কানুন। এই অভিযানে আপনাকে স্বাগতম ।
== নীতিকথা ==
মানুষ যা ভালোবাসে, সেটা আবিষ্কার করা সাফল্য নয়:
মানুষের ভালোবাসা অর্জন করা যায় যে দক্ষতাগুলো থাকলে, সেগুলো সৃষ্টি করাই প্রকৃত সাফল্য নিজের মধ্যে সেগুলো সৃষ্টি করাই প্রকৃত সাফল্য।
☞ মূল লেখাঃ ড. মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুর রহমান আরিফী।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১৮