somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রিক্তের রোদন
কিছু শোক ভিতরটাকে দুমড়ে মুচড়ে ফেলে,কিন্তু হৃদয়ের কান্না কেউ শুনতে পায়না ৷ কিছু যন্ত্রণা আছে ধুঁকে ধুঁকে মারে, কিন্তু কারো কাছে তা ব্যক্ত করা যায় না ৷তবে আমার শোক আত্মীয় বিয়োগের কারণে নয় ৷ আমার এ বেদনা স্বজন হারানোর বেদনা নয় ৷ তাহলে কিসের?

ইসলামই নারীর প্রকৃত মর্যাদা ও অধিকার সংরক্ষণ করেছে, করছে ও করবে ৷

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলাম ছাড়া অন্য সকল ধর্মেই নারী জাতিকে পাপিষ্ট, অলুক্ষুণে,অপয়া ও ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদেরকে কোনো অধিকার
দেয়া তো দূরের কথা, তাদেরকে মানুষ
বলেই স্বীকার করা হয়নি। তারা
নারীদেরকে কেবলমাত্র ভোগের পণ্য
হিসেবেই গণনা করতো। এমনিভাবে
সর্বত্রই যখন নারী জাতির এমন
লাঞ্চনা-গঞ্জনা আর অসম্মান ঠিক সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তে ইসলাম এসে
তৎকালীন সেই বর্বর যুগের অমানুষিক
জুলুম থেকে নারীকে মুক্ত করেছে।
ইসলামই একমাত্র দীন -যা নারী
জাতিকে ফিরিয়ে দিয়েছে তাদের
যথাযথ অধিকার।
ইসলাম এসে ধাপে ধাপে নারী
জাতিকে তাদের জীবনের প্রতিটি
ক্ষেত্রে নিরাপত্তা, সম্মান ও
মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। যেই
সমাজে নারী জন্মই পাপ বলে গণ্য হতোসেখানে ইসলাম সর্বপ্রথমই নারীজন্মের অধিকার নিশ্চিত করেছে। নারীসন্তানকে হত্যাকারীদের জন্য কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছে।

নিম্নে নারীর অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে বিভিন্ন ধর্ম ও মতাদর্শের অভিমত ও ভূমিকা উল্লেখ করা হল -

জাহেলিয়্যাতের যুগ: ইসলাম পূর্ব
আরব সমাজে নারীদের
অবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয় ও মানবেতর ৷  এমনকি ইসলাম ব্যতীত অন্য সকল ধর্মে আজ পর্যন্ত নারী
জাতির অধিকারের কোনো স্বীকৃতি
দেয়া হয়নি।

হিন্দুধর্ম: হিন্দুধর্মে নারী জাতিকে মৃত্যু, নরক,সর্প, বীষ ও আগুন থেকেও মারাত্মক বলা হয়েছে। স্বামী ছাড়া নারী জাতিরআলাদা কোনো অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয় নি। যার কারণে স্বামী মারাগেলে স্ত্রীকেও তার স্বামীর সাথে
সহমরণে যেতে বাধ্য করার কথা বলা
হয়েছে।

খৃষ্টান ধর্ম : খৃষ্টান ধর্মে নারী জাতিকে চরম লাঞ্চনার বস্তু বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাই তো খৃষ্টান পাদ্রী মি:
সেন্ট টার্টুলিয়ামের মতে, নারী হচ্ছে
বন্য জন্তুর চেয়েও অধিক বিপদজনক। অন্য আরেক পাদ্রী সেন্ট ক্রিয়ান নারীকে বীষধর সাপের সাথে তুলনা করে তার থেকে দূরে সরে থাকতে বলেছেন।
সপ্তদশ শতকে খৃষ্টধর্মের রাজধানী
রোমে বিত্তবানদের একটি কাউন্সিল
সমবেত সকল শীর্ষ ব্যক্তি এই মর্মে
সর্বসম্মতিক্রমে একমত হয়েছিল যে,
নারীর কোন আত্মা নেই।

ইহুদী ধর্ম:  ইহুদী ধর্মে নারীকে পুরুষের জন্য প্রতারক বলা হয়েছে। তাদের মতে একজন সতী নারীর চেয়ে একজন পাপিষ্ট পুরুষ বহু গুণে শ্রেষ্ঠ।

বৌদ্ধধর্ম: বৌদ্ধধর্মে কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করাকে অলক্ষণীয় বলে মনে করা হয়।নারীর কোনো অধিকার আছে বলে
স্বীকৃতি দেয় না।

ইসলাম:

ইসলাম নারীদেরভূমিকাকে যথার্থ
সম্মান দিয়েছে। একটু বিশ্লেষন ও
গবেষনা করলেই আমরা দেখবো মা,
স্ত্রী ও কন্যা হিসেবে অথবা একজন
পেশাজীবি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে
ভূমিকা পালনকারী হিসেবে
কীভাবে ইসলাম নারীদের মর্যদাকে
সুউচ্চ করেছে।

নিম্নে নারীর অধিকার ও মর্যাদা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ইসলামের সাথে আধুনিক বস্তুবাদী ও পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার কিছু পার্থক্য তুলে ধরা হল-

১. সম্মান ও মর্যাদার মাপকাঠি:
পুঁজিবাদী সমাজে মূলতঃ নারীর
সম্মান ও মর্যাদার মাপকাঠি হচ্ছে
নারীর দৈহিক সৌন্দর্য ও আর্থিক
প্রতিষ্ঠা। আর ইসলামী সমাজে নারীর
সম্মান ও মর্যাদার মাপকাঠি হচ্ছে তার
আলাহ্ভীরুতা বা তাকওয়া। রাসূল
(সাঃ) বলেছেন, "এই পৃথিবী এবং এর
মধ্যস্থিত সমস্ত কিছুই মূল্যবান। কিন্তু
সবচাইতে মূল্যবান হচ্ছে একজন সৎকর্মশীলনারী।" (মুসলিম)

২. মাতৃত্বের সম্মান: পুঁজিবাদী সমাজ
নারীর মাতৃত্বকে দেয়নি কোন সম্মান
ও মর্যাদা। আর ইসলাম নারীকে মা
হিসাবে করেছে সবচাইতে বেশী
সম্মানিত। রাসূল (সাঃ) বলেছেন,
"মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের
জান্নাত।"

৩. গৃহকর্মের মর্যাদা: পুঁজিবাদী সমাজ
নারীর গৃহকর্মের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজকে করেছে তুচ্ছতাচ্ছিল্য। আর ইসলাম নারীর গৃহের অভ্যন্তরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, সন্তান জন্মদান ও লালনপালনকরাকে দিয়েছে জিহাদের মর্যাদা।
মূলত এটিই একজন নারীর মৌলিক ও
প্রধান কাজ। রাসূল (সাঃ) বলেছেন,
"ঘরে তোমরা (নারীরা) তোমাদের
সন্তানদের যত্ন নাও আর এটাই
তোমাদের জন্য জিহাদ।" (মুসনাদে
আহমাদ)

৪. স্ত্রী হিসাবে সম্মান: স্ত্রী
হিসাবেও নারীকে ইসলাম দিয়েছে
পরিপূর্ণ সম্মান ও মর্যাদা। রাসূল (সাঃ)
বলেছেন, "তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি
উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম। আর
নিশ্চয়ই আমি আমার স্ত্রীর কাছে
সর্বাপেক্ষা বেশী উত্তম।" (তিরমিযী)

৫. কন্যাসন্তানের সম্মান: পুঁজিবাদ
নিয়ন্ত্রিত আধুনিক এই পৃথিবীতে এখনও কন্যাসন্তান অনাকাঙ্খিত। অথচ ইসলামউত্তম রূপে কন্যা সন্তান লালন-পালন করাকেও ইবাদত হিসাবে গণ্য করেছে।
রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তির
কোন কন্যা সন্তান থাকে এবং তাকে
সে উত্তম শিক্ষা দেয়, তার জন্য
জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়।"

৬. সর্বস্তরে নারীর সম্মান: ইসলাম
সমাজের সকল স্তরের মানুষকে নারীর
সাথে সম্মানজনক আচরণ করার জন্য
উৎসাহিত করেছে। রাসূল (সাঃ)
বলেছেন, "শুধুমাত্র সম্মানিত
লোকেরাই নারীদের প্রতি সম্মানজনক
আচরণ করে। আর যারা অসম্মানিত,
নারীদের প্রতি তাদের আচরণও হয়
অসম্মানজনক।" (তিরমিযী)
এই হলো ইসলামে নারীর মর্যাদা আর
এটা বর্তমান বিশ্বের প্রচলিত
মূল্যবোধের মতো নয় যেখানে
নারীদের দেখা হয় কেবলমাত্র
যৌনতার প্রতীকরূপে এবং ভোগের
উপাদান হিসেবে। এর ফলশ্রুতিতে
প্রতিনিয়ত নারীরা নির্যাতিত
হচ্ছে ৷

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×