(আগের কাহিনীর পর...)
আমার কথা শুইনা সুন্দরি পিছলা পিছলি শুরু কইরা দিল। কয় হাওয়া খাইতে মানে ব্যাপারটা বুঝলাম না! আমার তো মেজাজ বিলা হইতেছে। কয় কি? বুকে বল বাইন্ধা এরাম একটা কাম করলাম আর মাইয়া দেখি আমার চাইতে বদ বাইর হইয়া গেছে! প্রেশার ক্রিয়েট করার জন্য কইলাম তুমার তিরিশ সেকেন্ড সময় পার হইয়া গেছে, আর মাত্র ১৫০ সেকেন্ড আছে।
এইবার ওইপাশে নীরবতা...।
আর এইদিকে আমার বুকের মইদ্দে ধুড়ুম-ধাড়াম কইরা দুরমুজ পরতেছে। মনে হইল যেন এক যুগ পর সে গলা টাইনা টাইনা কইল, “ঠিক আছে”। কই যাবা?
আমি তো শুইনাই পারলে লাফ দিয়া পইড়া নিজের ঠ্যাং ভাঙ্গি। কিন্তু তারপর সমস্যাটা হইল আমি এরপর কি কমু এইটা ভাইবা পাইতেছি না। পুরাই বোবা হইয়া গেছি আরকি! ইনফ্যাক্ট এর পর কি হইতে পারে এইটা আগে থেকে চিন্তাও করি নাই। কই হাওয়া খাইতে যামু এইটাও চিন্তা করি নাই। এখন তো একটা লোকেশন দেওয়া লাগবে। কইলাম .....বার ম্যানহাটানের এইটথ এভিনিউ আর ১৪ স্ট্রিট এ থাইকো।
ফাস্ট ফরোয়ার্ড টু ঘটনার দিন বিকাল!
সেইদিন বিকালে আমারে সারপ্রাইজ কইরা দিয়া সেঠিক সময়ে হাজির (মনে করছিলাম দেরীতে আসবে)!! আমি একটু আগে না গেলে আমিই লেইট হইয়া যাইতাম! তারে দেইখা তো আমার চক্ষুচড়কগাছ! বেশরমের মতন জাগার মধ্যে খাড়াইয়া সৌন্দর্য উপভোগ করা শুরু করলাম। উপরআলা পুরা সৌন্দর্য তারে যে নিজ হাতে দিছে এই ব্যাপারে সন্দেহ নাই। ও যে কষ্ট কইরা শাড়ি পইড়া আসবে এইটা কোনমতেই ভাবি নাই। শাড়ি পড়লে কাউরে যে এত্ত সুন্দর লাগতে পারে এইটাও আমার মাথায় কুনুদিন আসে নাই! আসলে আমি এর আগে শাড়ী পড়া কাউরেই এইরকম ভাবে স্ক্যান কইরা কইরা দেখি নাই। এরাম সৌন্দর্য দেইখা কিছুক্ষনের জন্য সব ধরনের অনুভূতিগুলা ভোঁতা হইয়া গেছিল। এরপরে সুন্দরির লাল হইয়া উঠা গাল দেইখা যখন এই ইডিয়টের কনসাসনেস আইলো, মাথার মধ্যে প্রথম চিন্তাটা আইলো এরাম সুন্দরির পাশে আমারে কিরাম লাগতেছে?!?! মনে মনে পিলেন কইরা লাইলাম, সুন্দরির লগে ছবি তুলা যাইবে না! আমার কাপড়-চুপড়ের কোথা আর কই বলি! কুনুদিন এইগুলা ব্যাপার চিন্তাও করি নাই! তাও ভাগ্য ভালো কই মনে কইরা যেন শেষ মুহূর্তে টিশার্টটা বদলাইয়া একখানা পাঞ্জাবি গায়ে দিয়া আসছিলাম বইলা বাইচ্চা গেছি! আরেকটু হইলে তো পুরাই বাটে পইড়া যাইতাম।
যাইহোক এইবার তো হাওয়া খাওয়ার পালা! আমি যখন হাওয়া খাওয়ার কথা কইছিলাম তখন আমি লিটারালি হাওয়া খাওয়ার কথা মিন করছিলাম। নেচারের সৌন্দর্য উপভোগ করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ! এখন সুন্দরির সৌন্দর্য দেইখা সেইটা তড়িৎ-গতিতে গৌণ হইয়া গেল! যাই হোক আমার মাথায় ছিল হাই-লাইন টা ভিজিট দিবার। রিসেন্টলি ওরা জিনিসটারে ওয়েস্ট-সাইড হাইওয়ের পাশ দিয়া ৩৪ স্ট্রিট পর্যন্ত এক্সটেন্ড করছে। ঐখান থেকে হাডসন রিভারের ভিউটা আমেইজিং হবার কথা। কিন্তু হাই লাইনের গোড়ায় যেয়ে দেখি মেমোরিয়াল-ডেউইক-এন্ডের টুরিস্ট আর লোকালরা মিলে পুরা এলাকাটা গিজগিজ করতেছে। পা ফেলাবার জায়গা নাই। আমি তো মনে করলাম ব্যাপারটা কেঁচে গেল নাতো? কিন্তু এর মধ্যেই মাথায় আরেকটা আইডিয়া আইসা পড়লো। দুই বছর আগে সিটি এক্সপ্লোরেশন এর পার্ট হিসাবে হাডসন রিভার পার্কের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত হাটা দিছিলাম। যায়গাটা একটা ওয়ান্ডার। ওকে বললাম হাটতে পারবা? ভাগ্য ভালো ও ফের হাই হিল পইড়া আসে নাই। ফোরটিন স্ট্রিটের ওইখানে দিয়া পার্কের সাইডে ঢুকলাম। কয়েক ব্লক হাইটা অরে একটা কঙ্কালসার, পরিত্যাক্ত স্ট্রাকচার দেখাইয়া কইলাম, জানো এইটা কি? সে বলে কি? আমি কইলাম, টাইটানিকের নাম শুনছ না? সে বলে শুনব না কেন? আমি বললাম এইটা একটা পরিত্যাক্ত পিয়ার, পিয়ার ৫৪। টাইটানিকের এইখানে ভিড়ার কথা ছিল। তার চোখে অবিশ্বাস আর আনন্দের অপূর্ব একটা মিশ্রণ দেখলাম। ওইটার কাছে যাইয়া ওকে জিনিসটা ভালো করে দেখাইলাম, স্ট্রাকচারটার গায়ে এখনো টাইটানিক নামটার অবশিষ্টাংশ রয়ে গেছে, ভালো করে দেখলে দেখা যায়। ওইটা দেখেতো ও পুরাই ও-মাই-গড, ও-মাই-গড শুরু কইরা দিছে! এই সিম্পল চাইল্ডিস ব্যাপারটা দেখে আমার এত্ত ভালো লাগছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এরপর অবশ্য আমি ওকে বলতে চাইছিলাম যে এইটাকে মোটামুটি একটা অভিশপ্ত পিয়ার বলা যাইতে পারে। টাইটানিক ( প্রায় ১,৫০০ মৃত) ছাড়াও এই পিয়ারটা ইউজ করতো এমন আর একটা জাহাজ ডুবে আরো প্রায় ১,২০০ লোক মারা গেছিল। কিন্তু আর বলি নাই। এই খবরটা শুনলে ও স্যাড হয়ে যাবে। এই হাসি আর ওর মুখে থাকবে না। আমি চাই ওর মুখে এই হাসিটা সারা জীবন থাকুক। ইনফ্যাক্ট, আই উড ডু এনিথিং এন্ড এভরিথিং ইন মাই পাওয়ার টু মেক ইট হ্যাপেন।
(চলপে...।)
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৪৪