টু লাভ-ই হইল গিয়া ব্যাপার। টু বি লাভড্ হওয়ার কোনো বেল নাই। জীবিত থাকলেও টু বি লাভড্ হওয়া যায়, মরে গেলেও। যে ভালোবাসে সে-ই সাবজেক্ট। তবে যিনি ভালোবাসাসিক্ত হন তিনি কি সুড়সুড়িটুকুও টের পান না? না পান না। তবুও মানুষ চায় অন্যে তাকে ভালোবাসুক, তার অনুরক্ত হোক। ঈশ্বরও তাই চান। থ্রি-ডি মুভি ক্ল্যাশ অব দ্য টাইটানস্-এ আমরা দেখতে পাই, জিউসের প্রধান খাদ্য হলো মানুষের ভালোবাসা, প্রণতি। এই দিক দিয়া চিন্তা করলে কবি-লেখকদের মধ্যেও ঈশ্বরের এই গুণ বিদ্যমান। কবিও বন্দনা চান। সাবানের ফেনার মতো ভাসতে থাকা স্তুতিবাক্য নাইড়া চাইড়া দেখতে ভালোবাসেন তিনি।
মজার ব্যাপার হইল, সামাজিক নেটওয়ার্কের বদৌলতে কবি এখন পাঠিকাকেও বাগে পায়া যাইতেসেন। ফলত, পাঠিকা যেমন কবির কাব্যে রত হন, কবিও তেমনি রত হইতেসেন পাঠিকায়। কবি, কাব্য এবং পাঠিকা মিলায়া জটিলতা উৎপাদিত হইতেসে। কবি বনাম পাঠিকা সিরিজে কবি শুরুতেই ১-০ তে আগায়া থাকতেসেন। কারণ তার সৃষ্টির ক্ষমতা আছে। পাঠিকা এখানে দুর্বল। তবে পাঠিকার আছে ভালোবাসার ক্ষমতা। কবি তো কেবল টু বি লাভড্-ই হইতে চান। সামাজিক নেটওয়ার্কের জাল দিয়া পাঠিকার কবি তথা ঈশ্বরপ্রাপ্তির পিছনে এই সত্যও কাজ করে : ঈশ্বর এইখানে ধরা দিতে উন্মুখ হয়া আছেন। কবিতে-পাঠিকায় যে সম্পর্ক স্থাপিত হয় তার কোনো কন্ট্রাক্ট হয়না। ভার্চুয়াল রিলেশনের আবার দায় কি? কোন রিলেশনেরই বা দায় আছে? কানে কানে শুধু একবার বলো তুমি যে আমার, এই নিয়া সন্ধ্যা মুখার্জি আকুলি বিকুলি করুন, কোন রিলেশনে কে নিজের মালিকানা আরেকজনরে সমর্পণ করে? সম্পর্কের নৈতিকতা কি কেবলই একটা রুচিগত ব্যাপার না?
প্রেম আসে আকর্ষণ থেকে, আকর্ষণ আসে মোহ থেকে। প্রেম নিস্কাম হয় কেমনে? কবির সৃষ্টির ক্ষমতা পাঠিকাকে মোহাবিষ্ট করতে পারে, পাঠিকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি কবিরে টানতে পারে। মোহই তো। মোহমুক্তি কি প্রতারণা?
তবুও কথা থাকে। সম্পর্কের ছিঁড়ে যাওয়া সুতা হাতে নিয়া দাঁড়ায়া থাকা পাঠিকার যদি এমত উপলব্ধি হয় যে এই সম্পর্কে আমি খালি ব্যবহৃতই হইলাম, তার দায় কার? যদিও এই বিপর্যয়ের দায় থিকা কবি পূর্বাহ্নেই মুক্তি পায়া গেসেন। কারণ এই রিলেশনের কোনো কন্ট্রাক্ট নাই। ওপেন সোর্স রিলেশনশিপ। যে যার মতো কাস্টমাইজ কইরা নিতে পারে। কোনো বিধান দিয়া কবিরে আর আটকানো যাবে না। কিন্তু পাঠিকার কী হবে?