ভাইরে আমার কত্ত হুজুগ,
যা সামনে পাই টা নিয়ে ছড়াই এত্ত এত্ত গুজব।
একটা পর একটা তৈরি হয় ইস্যু,
আমরা সবাই মিলে করি তাতে হিসু।
আমরা সবাই বাঙালি,
আমরা সবাই দেশপ্রেমিক,
আমরা সবাই নারীবাদী,
আমরা সবাই পুরুষবাদী।
এই যে ব্রাদার এই যে,আমার কাজটা করে দেন,
এই যে নেন বস ১০০ টাকা দিলাম,আরে বস দেন দেন,
বস আমার লাইসেন্স নাই,
কুন ব্যাপার?লন বস লন।
আরে ভাই রাস্তাটা এক ইঞ্চি সাইডে কমাইয়া দিলে কেমন হয়,
আরে বস কন কি,পুরাই পকেটে সয়।
বাসে করে যখন বাসায় ফিরি,
গলা উঁচিয়ে দেশ রাষ্ট্র রাজনীতি মনুষ্যত্ব নিয়ে আলোচনা করি,
বুঝলেন ভাই,সবাই চোর।
মা একদমই চিন্তা করো না,বৃদ্ধাশ্রমে আমি তোমায় দেখতে যাবো তো,
বাবা প্রতিদিন এতো টাকা চাই কেন,কয় টাকা আমি খরচ করি?
ফেইসবুকে মা দিবসে স্ট্যাটাস দেয়-"love u maaaa"
এই ২৬ শে মার্চ আইচে,
বিরানি উৎসব দে,
মিছিল নামা,
মঞ্চ সাজা।
একটার পর একটা ভয়ানক ইস্যু আসে,
টকশো আসর জমে,
বুদ্ধি ব্যাবসায়ীর পকেট গরম হয়,
আমরা রাতভরে টকশো দেখি,
ঘুমিয়ে পড়ি তারপর,
একটা স্বপ্ন দেখি ক্ষুদা,দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন।
সকালবেলায় অভুক্ত বাবা এসে দরজায় কড়া নাড়ে,
আমারে কিছু খাইতে দিবা,মা?
চায়ের দোকানে দীর্ঘ আড্ডা জমে,
তাজা তাজা খবরে শরীর কেপে উঠে,
অনুভূতি চওড়া হয় অবিচারের প্রতি,
হাসিনা খালেদাকে ধর্ষণ করি কয়েকবার।
ফিরে এসে-
মাগি,ঘরে চাল নাই আগে কইতে পারস নাই?
আইজ আমি তোরে শেষ কইরালামু,
তোর বাপের বাড়ি থেকে চাল আনতে পারিস নাই?
যৌতুকের টাকা কবে আনবি?
তোরে আইজ আমি,
এই কেরোসিন ল,
মাগিরে আমি...
আপা আজ মিটিং-এ যাবেন,
নারীদের অধিকার নিয়ে কথা বলবেন,
এই সুফিয়া তাড়াতাড়ি নাস্তা দে,
এই মেয়ে একটা কাজও ঠিকমত করতে পারো না,
গ্লাস ভাঙে কেমনে,
এই খন্তিটা গরম করতো,
ওরে আজ আমি মাইরালামু,গ্লাস ভাঙন না?
আপা ছাইড়া দেন,আপা আপনার পায়ে পড়ি।
আপা স্টেজে দাঁড়িয়েছেন,
নারীবাদীর মঞ্চে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার স্লোগান,
আমাদের সমাজে নারীরা আজ অবহেলিত,পুরুষরা আমাদের অধিকার হরণ করে...অসংখ্য নারী শিশু আজ নির্যাতনের স্বীকার...।
মুহুর্মুহু করতালি,
আপা খুশি,
ওইদিকে কাজের মেয়েটার গায়ে পোড়ার জ্বালায় নীরব কান্না।
এই রাস্তা আগামি এক মাসের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে,
মাস যায়,
বছর পেরোয়,
সরকারের আসন বদলায়,
রাস্তা আর ঠিক হয় না।
ঠিক থাকে আমাদের দেশপ্রেম,
টিকে থাকে আমাদের যত শত মনুষ্যত্বের বাদ।