somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানুষ অনেক বোকা !!!

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০০৯ সালের কথা । রোজার ঈদের ৩ দিন আগে তখন রাত ১২ টার একটু বেশি বাজে । বাসা থেকে বের হয়েছিলাম আম্মার কিছু ঔষধ কিনবার জন্য । রাস্তাঘাট একেবারে ফাকা ছিল । মোড়ের ঔষধের দোকানের ঠিক বাম পাশে দেখলাম একজন বৃদ্ধা মহিলা বসা , তার বয়স ৭০ এর বেশি হবে । পরনে ভাল পোশাক দেখে বোঝাই যাচ্ছে উনি কোন ভাল পরিবারের মুরব্বি । উনি এত রাতে কেন রাস্তার পাশে বসে আছে এটা ভেবে অবাক হচ্ছিলাম তাই তার কাছে গেলাম কথা বলতে । কথা বলে জানতে পারলাম ওনার বাড়ি বরিশাল । ওনার একটামাত্র ছেলে আছে । ছেলে চাকুরীজীবী এবং ছেলের বউ ও চাকুরীজীবী । আর্থিক অবস্থা ভালই । কিন্তু ঐ ছেলে তার বউ এর কথায় মাকে বাসা থেকে বাজে ব্যবহার করে বের হয়ে যেতে বলেছে । আমি ওনার পাশে বসে জিজ্ঞাস করলাম কই যাবেন এখন ।

জানি না উনি উত্তর দিলেন । তার কাছে আর কোন টাকাও নেই জানালেন । যা ছিল তাই দিয়ে বরিশাল থেকে খুলনা এসেছিলেন ।

ওনাকে ওভাবে রেখে আসতে মন মানছিল না। ওনাকে টাকা দিতেও লজ্জা লাগছিল । তাই আমি ওনাকে আমার সাথে আমাদের বাসায় আসতে বললাম ।
উনি কোন ভাবেই রাজি হচ্ছিলেন না । অনেক বুঝিয়ে ওনাকে বাসায় নিয়ে আসছিলাম । মা কে সব বুঝিয়ে বলার পর মা ওনার সাথে গল্পে বসে গিয়েছিলেন ।
উনি বেশ আফসোস করে বলছিলেন ওনার ছেলেকে কত কস্ত করে লেখাপড়া শিখিয়েছেন । কাঁদছিলেন ও ।
ওনাকে অনেক থাকার অনুরোধ করলাম আমরা কিন্তু কাজ হল না । উনি একটা ঠিকানা দিয়ে বললেন এখানে যাবেন । আমি দেখলাম এটা গাজীপুরের একটা বৃদ্ধাআশ্রমের ঠিকানা । আমি আর মা ওনাকে অনেক বোঝানর চেষ্টা করলাম বাড়ি ফিরে যাবার জন্য অথবা আমাদের কাছে থাকবার জন্য ।
কোন কাজ হল না । উনি ওখানে যাবেনই ।

আমি ওখানে ফোন দিলাম এবং কথা বলে সব জানালাম । পরদিন রাতেই ওনাকে বাসে তুলে দিতে গেলাম । বাসে তুলে দিয়ে ড্রাইভার আর সুপারভাইজারের ফোন নাম্বার ও নিয়ে নিলাম । কেন যেন একটুও শান্তি পাচ্ছিলাম না ।ওনাকে সব বুঝিয়ে বলে কিছু টাকাও দিয়ে দিলাম যদিও নিতে সম্মত হচ্ছিলেন না । বিদায় দিলাম ওনাকে ।
পরদিন সকালে বাস থেকে নামার পর ঐ বৃদ্ধাআশ্রমের লোকের এসে ওনাকে নিয়ে গিয়েছিল । তখন একটু হলেও নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম ।

পরে উনি আমাকে মাঝে মাঝে ফোন দিতেন । আমি ওনাকে বাড়ি ফিরে যেতে বলতাম । উনি কখনই রাজি হন নি ।
ঢাকায় আসার পর আমি ওনাকে একবার দেখতেও গিয়েছিলাম । অনেক বুঝিয়ে বলেছিলাম বাড়ি ফিরে যেতে । কাজ হয় নি । ওনার কথায় একটাই জিনিস বুঝেছিলাম ওনার রাগ ছিল না শুধু অনেক কষ্ট আর অভিমান ছিল ।


এর পর একটা জিনিস বুঝেছিলাম মানুষ বড়ই আজব প্রানি । সে তার কাছের মানুষগুলর কাছ থেকে অনেক আঘাত পেলে তাদের প্রতি অনেক অভিমান হয় । কিন্তু সে কখন তাদের কাছে বলে না ।

আপনি যদি কাউকে অনেক ভালবাসেন বা অনেক আগলে রাখতে চান সেই মানুষ যদি আপনাকে আঘাত করে আপনি তাকে তা বুঝতে না দিলেও তার প্রতি আপনার অভিমান থাকে । এটা আপনাকে অনেক দূরে সরিয়ে দেয় । তাদের বলছি যারা আপনাকে আপন ভাবা মানুষগুলোকে আঘাত করছেন , তাদের কখনও বোঝেন না , তাদের অধিকারের খোটা দিয়ে ছোট করেন আর তাদের আপনার দর্শন পর্যন্ত দেন না ঐ মানুষগুলোর কোন স্বার্থ বা নামওয়ালা অধিকার হয়ত নেই কিন্তু তারা আপনাকে হয়ত অনেক বেশি ভালবাসে । সে যেন অভিমানে আপনার কাছ দিয়ে দূরে সরে না যায় । তাহলে হয়ত অনেক কিছু হারাবেন যেটা অনেক পরে বুঝবেন । পর সহজে আপন হয় না আর যে পর সহজে আপন হয় তার কোন অধিকার লাগে না ।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

কওমী মাদ্রাসায় আলেম তৈরী হয় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×