somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব সাত)

০৭ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তেরো অধ্যায়

“আপনার কাছে অনেক আশা নিয়ে এসেছি।” নরম গদি চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে বললেন বিদ্রোহী নেতা মহামান্য নিকোলাই।

“আপনার জন্য আমি কি করতে পারি? তাছাড়া, আপনি আমার এপার্টমেন্টে আসার স্পর্ধা দেখালেন কি করে? আপনি কি জানেন যে কোন সময়ে আপনি গ্রেপ্তার হতে পারেন?” বললেন ড. লেথরিন।

“আমি আমার গ্রেপ্তার নিয়ে ভাবছিনা। গ্রেপ্তারের ভয় থাকলে এই পথে পা বাড়াতাম না। আমরা গোপন সূত্রে খবর পেয়েছি আপনি সেন্ট্রাল কম্পিউটার সিটিসিকে ডিজাইন করেছেন। এই ব্যাপারে আমাদের কিছু তথ্য জানার ছিল।” ড. লেথরিনের দিকে সরু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন মহামান্য নিকোলাই।

ড. লেথরিন হকচকিয়ে উঠলেন। সেন্ট্রাল কম্পিউটার যে তিনি ডিজাইন করেছেন সেটা হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ ছাড়া কেউ জানে না, নিরাপত্তার খাতিরে এটা কাউকেই জানানো হয়নি। তিনি প্রচণ্ড বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন মহামান্য নিকোলাইয়ের দিকে।

তারপর মেরুদণ্ড সোজা করে বসলেন, জিব দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বললেন “আপনি এই খবর কিভাবে পেলেন? এই তথ্য বাহিরে যাওয়া অসম্ভব ব্যাপার।”

পাশের গদি চেয়ারে গার কাত করে বসেছিল প্লেরা। প্লেরার ঠিক ডানে বসে আছে নিউক।

প্লেরা মহামান্য নিকোলাইকে উত্তরের সুযোগ না দিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে এসে কড়া স্বরে বলল “ড. লেথরিন তথ্যটি কিভাবে পেয়েছি সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। আপনার কাছে যেটা জানতে চাওয়া হয়েছে সেটা বলেন।”

ড. লেথরিন প্লেরার দিকে গার ঘুরিয়ে বললেন “এই মেয়ে তোমরা জানতে চাবে আর আমি বলে দিব? এত সহজ। মনে রেখ তোমরা আগুন নিয়ে খেলছ।”

মহামান্য নিকোলাই হালকা কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে বললেন “ড. লেথরিন তথ্যটা আমাদের জন্য খুবই দরকারি। আমাদের এই গ্রহে সুন্দর একটা গণতন্ত্র ছিল, সেটা ধ্বংস করেছে শাসক উথার, এখন আমাদের এই সমাজে যেই বিশৃঙ্খলা চলছে, সেটা হতে দেয়া যায় না। আমাদের একটা কিছু করতে হবে।”

ড. লেথরিন তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলেন, তার গলায় ঝাঁঝ মিশিয়ে বললেন “আপনারাই এই গ্রহে যত অশান্তির মূল। আপনাদের সবাইকে দেখে নেয়া হবে। আর আপনার মুখে নীতি কথা মানায় না। মহান শাসক উথারের সর্বশক্তিমান হওয়ার পিছনে আপনারই হাত আছে, আপনি সেই সময় বিজ্ঞান পরিষদের প্রধান ছিলেন। আপনি যদি তাকে যোগ্য না মনে করে তাহলে কিসের লোভে তার পক্ষে কথা বলেছিলেন?”

পুরো রুমে এক ধরণের নীরবতা নেমে এলো। মহামান্য নিকোলাই বরাবরই এই বিষয়টা এড়িয়ে যান। পঁচিশ বছর আগে সেই দিনগুলোতে কি হয়েছিল এবং কেন তিনি শাসক উথারকে সমর্থন দিয়েছিলেন সেটা ভুলে যেতে চান।

নীরবতা ভেঙে মহামান্য নিকোলাই বললেন “সেই কৈফিয়ত আপনাকে দিতে হবে?”

“হ্যা দিতে হবে। যেহেতু আপনি নীতি নৈতিকতার কথা বললেন তাই এর উচিৎ জবাব দিতেই হবে, নয়তো নীতি নৈতিকতা আপনার মত বিদ্রোহীদের মানায় না। আপনারা মানুষের ঘুম হারাম করে ফেলছেন, আপনাদের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিৎ।”

মহামান্য নিকোলাই একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন, তারপর বললেন “সেই সময়ে আমি বাধ্য ছিলাম শাসক উথারকে সমর্থন জানানোর জন্য! বিজ্ঞান পরিষদের প্রধান হিসেবে আমার পূর্ণ সমর্থন না পেলে তিনি তখন গ্রহের সবাইকে নিয়ন্ত্রণ নিতে পারতেন না।” এটুকু বলেই থেমে যান তিনি।

যোগ করে বললেন “শাসক উথার চাটুকার এবং তার সাহায্যকারীদের দিয়ে তখন পুরো গ্রহের প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছিল। এক মাত্র বিজ্ঞান পরিষদের মত শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানকেই নিয়ন্ত্রণ করতে তার বেগ পেতে হচ্ছিল, তিনি আমাকে অনেক লোভ লালসা দেখায় এবং মোটা ইউনিটের টোপ দেয়, সেটাতে কাজ না হলে ব্ল্যাক মেইল করে।”

থেমে ভারী গলায় বললেন “আমার একটি মেয়ে ছিল, উথারের লোকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়। তার কথা মত তাকে সমর্থন না দিলে মেয়েটাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি তার পক্ষে স্টেটমেন্ট দিতে বাধ্য হই, তারপরও আমার মেয়েকে তিনি ফিরত দেননি।” এটুকু বলেই মহামান্য নিকোলাইয়ের শ্বাস যেন বন্ধ হয়ে আসে, বুকের ভিতর এক ধরনের ব্যথা অনুভব করেন তিনি।

আবার বলতে শুরু করেন “তার কার্য সিদ্ধি হয়ে গেলে তিনি তিন দিনের মাথায় আমাকে মিথ্যা গ্রহ-দ্রোহী মামলায় ফাঁসিয়ে আটক করে। এমনকি আমার মেয়েকে শেষ দেখা পর্যন্ত দেখতে পারিনি।” মহামান্য নিকোলাইয়ের বুকটা ভারী হয়ে আসে, বুকের ভিতর থেকে একটি দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এসে পরিবেশটাকে থমথমে করে তুলে খুব।

একটু চুপ থেকে মহামান্য নিকোলাই আবার বলেন “এর শেষ আমি দেখে ছাড়ব। তার চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। আপনি সেন্ট্রাল কম্পিউটার সিটিসিকে কিভাবে ডিজাইন করেছেন সেটা বলেন। সেন্ট্রাল কম্পিউটার সিটিসিকে নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে সব গোপন তথ্য বের হবে এবং সারা মিডিয়া আমাদের নিয়ন্ত্রণে এসে যাবে।”

“আমি দুঃখিত, আমি বলতে পারব না।” মুখ শক্ত করে বললেন ড. লেথরিন।

আপনার মুখ খোলার জন্য আমার একটি কার্ড বাকি আছে বলেই প্লেরাকে চোখ দিয়ে কিছু একটা ইশারা করলেন বিদ্রোহী নেতা মহামান্য নিকোলাই।

প্লেরা হাতে থাকা একটি ডিভাইসে ক্লিক করতেই রুমের মাঝখানে হলোগ্রাফিক একটি ত্রি-মাত্রিক চিত্র ভেসে উঠে। সেখানে দেখা যায় আনা দাঁড়িয়ে আছে একটি পার্কে, আনার সাথে একটি কিশোরী মেয়ে গল্প করছে। ড. লেথরিনের চিন্তা অসুবিধে হোল না কিশোরীটি তার মেয়ে।

“ড. লেথরিন আপনার মেয়ে এখনো সুস্থ আছে, সে হয়ত জানে না কার সাথে গল্প করছে, আমাদের যে কোন জায়গায় ছোটখাটো অপারেশন করার অভিজ্ঞতা আছে। আপনি বুঝতে পারছেন আমরা কতদূর যেতে পারি।” বলল প্লেরা।

ড. লেথরিনের হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে এলো, উঠে এসে প্লেরার কলা চেপে চোয়াল শক্ত করে বলল “আমার মেয়ের কিছু হলে একজনকেও ছাড়ব না।”

“আপনি শান্ত হোন ড. লেথরিন। আমরা যে তথ্যের জন্য এসেছি সেটা জানতে পারলে আপনার মেয়ের কিছুই হবে না।” আশ্বস্ত করে বললেন মহামান্য নিকোলাই।

বাধ্য হয়ে ড. লেথরিন বলতে শুরু করল “টেলিপ্যাথি সম্পর্কে নিশ্চয়ই জানেন, আমি টেলিপ্যাথিকে বিজ্ঞানে রূপ দিয়েছি, মানুষ যুগযুগ ধরে টেলিপ্যাথিকে শুধু একটি অতি-প্রাকৃতিক ব্যাপার জেনে এসেছে তাকে আমি বিজ্ঞানের কাঠামোতে নিয়ে এসেছি!”

“কিভাবে?” ঠিক বুঝলাম না পাশ থেকে জিজ্ঞেস করল নিউক।

ড. লেথরিন দৃষ্টি ঘুড়িয়ে নিউকের দিকে তাকালেন তারপর বলল “টেলিপ্যাথি এমন একটি কনসেপ্ট যেখানে একজন মানুষ যা ভাবছে তা আরেকজন মানুষের জেনে যাওয়ার পদ্ধতির নাম, অর্থাৎ অদৃশ্য একটি বন্ধন, বিজ্ঞান এতদিন এটা প্রমাণ করতে পারেনি কিন্তু আমি পেরেছি।”

এটুকু বলেই সবার দিকে তাকিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখে নিল ড. লেথরিন। থেমে আবার বলতে শুরু করলেন “মানুষ যখন কোন কিছু চিন্তা করে বা ভাবে তখন তার মস্তিষ্কের চারপাশে এক ধরনের অতি সূক্ষ্ম তরঙ্গ তৈরি হয়। এটাকে মস্তিষ্কের তরঙ্গ বলা যায়, প্রতিটি মস্তিষ্ক যেমন তরঙ্গ সরবরাহ করে আবার রিসিভও করতে পারে।”

জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে আবার বললেন “অনেক সময় দেখবেন কেউ একজন কিছু ভাবলে মনের অজান্তেই আরেকজন সেটা ধরে ফেলতে পারে, তখন মনে হয় আরে এই জিনিষটা-তো আমিও ভাবছিলাম। যেমন সন্তানের যখন কোন বিপদ হয় দেখবে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই মা তা জেনে যায় এখানে মায়ের রিসিভারে সন্তানের মস্তিষ্কের তরঙ্গ মনের অজান্তেই কানেক্ট হয়ে যায়। এর জন্য ইতিবাচক মানুষের সাথে চলতে হয় কারণ এতে সবার মাঝে টেলিপ্যাথির মাধ্যমে ইতিবাচক চিন্তা জাগ্রত হয়। এই ব্যাপারটার আমি একটি সমীকরণ বের করে ফেলি এবং পৃথিবী সমস্ত মানুষের মস্তিষ্কের ব্রেনে এক্সেস থাকায় সবার ব্রেনকে মেশিন লার্নিং দিয়ে ট্রেনিং করিয়ে নিয়ে সেন্ট্রাল কম্পিউটার সিটিসির ইলেকট্রনিক্সের মস্তিষ্ককে লোড করি। সিটিসির যেহেতু সব ধরনের মস্তিষ্কের জ্ঞান আছে তাই প্রতিটি মস্তিষ্কের তরঙ্গে লেভেল জেনে সেখানে কানেক্ট হয়ে যেতে পারে সিটিসি, তাই সিটিসিকে ধ্বংস করতে কেউ তার কন্ট্রোল রুমে ঢুকলে সিটিসি তার মস্তিষ্কের দখল নিয়ে নেয়, হিপনোটাইজ করে ফেলে। মানুষের পরবর্তিতে কি ভাবছে সেটা ধরে ফেলে।”

আমাদের যা জানার ছিল তা আমরা জেনে গেছি। আপনাকে ধন্যবাদ গদি চেয়ার থেকে উঠতে উঠতে বললেন মহামান্য নিকোলাই।

তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলেন ড. লেথরিন। গোপন পোজেক্টে তিনি কাজ করছেন সেটা হয়ত জানেনা বিদ্রোহীরা মনে মনে ভাবলেন ড. লেথরিন, হাফ ছেড়ে বাঁচলেন তিনি।

“আমাকে ধন্যবাদ দিতে হবে না, আপনারা কার সামনা করতে যাচ্ছেন নিজেরাও জানেন না, সিটিসিকে পরাজিত করা সম্ভব নয়, তাছাড়া বিশাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নেতৃত্বের আছে জেনারেল গ্রাটিয়া, তাকে-তো চিনেনই!!”

“সেটা আমরা দেখব ড. লেথরিন। তাছাড়া আপনি পর্যন্ত পৌঁছে গেছি এটাকি ভাবতে পেরেছিলেন?” বললেন মহামান্য নিকোলাই।

“বিজ্ঞান পরিষদে হয়ত আপনাদের লোক আছে কিন্তু সবাইকে ধরার কাজ শুরু হয়ে গেছে। একটি নতুন তথ্য জেনে জান ৭ম প্রজন্মের রোবটও কাজ শুরু করে দিয়েছে, বিদ্রোহীদের খুঁজে করবে। তাছাড়া নিউককে কেথরিন নামক তরুণী পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিল বিজ্ঞান পরিষদে, সেই তরুণীও ধরা পরেছে আজ, হয়ত জানেন না এখনো। বাকিরাও ধরা পরবে যারা আপনাদের হয়ে কাজ করছে।”

মহামান্য নিকোলাই মনে মনে বেশ ধাক্কা খেল বলে মনে হল। উঠে যাবার সময় বলল “ড. লেথরিন আপনাকে একটি তথ্য দেই, আমরা আপনার মেয়েকে ধরি নাই, হলোগ্রাফিক চিত্রে যা দেখেছেন সেটা আমরা কম্পিউটার সিমুলেশন করে বানিয়েছিলাম আপনার থেকে কথা নেবার জন্য।”

মহামান্য নিকোলাই কথা শেষ করতে না করতেই হঠাৎ বিল্ডিং-এ অতর্কিত হামলা হয়, গুলাগুলি বর্ষণ হতে থাকে চার দিক থেকে। কতগুলো স্কাইজায়ান বিল্ডিংটিকে ঘিরে ভয়ানক রশ্মি ছুড়ে, কাচ বেদ পুরো ঘর ছেয়ে যায় রশ্মির লাল নীল ফলা দিয়ে, কাচের গুড়া এবং ধাতব খণ্ড ছিটকে আসে রুমের ভিতরে। যে যার মত লুকিয়ে পরে ঘরের চারপাশে।

নিকোলাই বয়সের ভারে নুয়ে পরেছেন তারপরও কোনোমত উঠে নিজের পকেট থেকে অস্ত্র বের করলেন, তারপর রশ্মি ছুড়তে ছুড়তে চিৎকার করে বললেন “ঘর থেকে বের হয়ে যাও সবাই।” আর তখনই একটি রশ্মির ফলা এসে বিদ্ধ হয় তার বৃদ্ধ নিকোলাইয়ের বুকে, মূহুর্তেই গলায় অন্য রকম একটি ধ্বনি উচ্চারণ করে মেঝেতে লুটিয়ে পরেন মহামান্য নিকোলাই, ধরে ফেলে প্লেরা।

নিশ্বাস নিতে কষ্ট হতে থাকে মহামান্য নিকোলাইয়ের। জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে বলে “আমার সময় শেষ প্লেরা, তোমরা পালাও। মনে রেখ যে যুদ্ধ আমি শুরু করেছি তোমাদের তা পূর্ণ করতে হবে।” কথা বলতে কষ্ট হতে থাকে মহামান্য নিকোলাইয়ের, তিনি হাফাতে হাফাতে বললেন “প্লেরা আমি তোমাকে সবসময় আমার সেই মেয়ের মত ভালবেসেছি। একটু চুপ থেকে নিজের গলা থেকে একটি লকেট বের করে প্লেরাকে দিয়ে বললেন লকেটটি তোমাকে দিলাম প্লেরা, আমার স্মৃতি মনে করে রেখ।”

শ্বাস কষ্ট বাড়তে থামে মহামান্য নিকোলাইয়ের, একটু থামলেন তিনি তারপর নিউকের দিকে তাকিয়ে বললেন “নিউক আমার বিশ্বাস তোমাকে প্রকৃতি নিজে পাঠিয়ে আমাদের কাছে, তুমি বড় কোন ভূমিকা রাখবে। এখন তোমাদের যাওয়ার সময়, এখানে থেকো না।” তখনও ভয়ানক রশ্মির ফলাগুলো রুমে এসে আচরে পরছিল ঝরের মত।

চৌদ্দ অধ্যায়

চারদিকে সুউচ্চ পাথুরে পাহার, গাছ পালা খুব একটা বেশী নেই। বাহিরের পরিবেশ বেশ শুষ্ক। তার উপর বছরের এই সময়টাতে সূর্যের প্রখরতা বেড়ে যায়। তীক্ষ্ণ সূর্য রশ্মি পাথুরে পাহারের প্রতিফলিত হয়ে পরিবেশকে আরো রুক্ষ করে তোলে। পাহারের পাদদেশে পাথর কেটে বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে। বাড়িটি চারদিকে স্বচ্ছ কাচ দিয়ে ঘেরা, ভিতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। বাড়িটির লিভিং রুমে একটি মেশিন লাগানো, মেশিনটি একটু পর পর অক্সিজেনের মিশ্রিত বিশেষ এক ধরণের গ্যাস পাম্প করে, যেটা মানুষের স্নায়ুকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। বাড়িটির চারদিকে আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট।

প্লেরা ঘার ঘুড়িয়ে বাহিরে মুখ রাখে। বুকটা ভারী হয়ে আসে তার, মহামান্য নিকোলাই এর চেহারাটা মনের মানস পটে ভেসে উঠে। বুকের ভিতরে চেপে রাখা দীর্ঘশ্বাসটি ছাড়ে সে। পাশে বসে আছে নিউক, সে গভীর মমতায় কাঁধে হাত রাখে প্লেরার।

লিভিং রুমটার মাঝখানে একটি মাঝারী আকারের রোবট। রোবটটির চকচকে ধাতব মাথাটি থেকে শর্ট সার্কিটের চড়চড় শব্দ হতে থাকে, সম্ভবত রোবটটির ভিতরের কম্পিউটারে যান্ত্রিক গোলযোগের দেখা দিয়েছে। রোবটটির ইলেকট্রিক চোখ অনবরত ডানে-বামে ঘুরতে থাকে, সংবেদনশীল কান অনিয়ন্ত্রিত ভাবে নড়তে থাকে, চেহারায় আবেগের পরিবর্তন হচ্ছে ঘনঘন, একবার রাগে গড়গড় করতে থাকে, পরক্ষনেই আবেগে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে, তারপর দেখা দিল হয়ত ভয়ের এক চিত্র ফুটে উঠে চেহারায়।

রোবটটির পিছনে প্রবল ডাঁটে বসে যেই মহিলাটি রোবটটিকে পরীক্ষা করে দেখছে তার নাম লিডান। লিডানের বয়স হয়ত পঁয়তাল্লিশ হবে, তবে দেখতে বয়সের তুলনায় আরো কম দেখায়, টেকনিক্যাল বিষয়ে অগাধ জ্ঞান তার। গায়ের রঙ বাদামী, চুলগুলো ছোট করে ছাটা, শরীরে বিচিত্র এক ধরণের পোশাক পরে আছে লিডান। তিনি বিদ্রোহী দলের একজন অন্যতম সদস্য।

লিডান রোবটটির মাথার পিছনের দিক থেকে একটি রেঞ্জ দিয়ে মাথার সিলভারের আবরণটি খুলে ফেলেছে, তারপর সেখান থেকে একটি সার্কিট বের করে কি যেন পরীক্ষা করে দেখছে। কিছুক্ষণ পর রোবটের মাথার ভিতরের সার্কিটের সাথে একটি কম্পিউটার জুরে দিল, তারপর কম্পিউটারে মুখ গুজে খটখট শব্দ করে কিবোর্ড টিপতে লাগল। লিডানের সাথে নিউকের কিছুক্ষণ আগে পরিচিত হয়েছিল।

“আর কতক্ষণ লাগবে?” নীরবতা ভেঙে জিজ্ঞেস করল নিউক।

লিডান মনোযোগ দিয়ে রোবটের ইলেকট্রনিক ব্রেন ঠিক করছিল। নিউকের দিকে না তাকিয়ে বলল “এইতো হয়ে গেছে।”

“কি সমস্যা হয়েছিল?” বলল নিউক।

“রোবটটিতে গতকাল কিছু সফটওয়্যার ইন্সটল দিয়েছিলাম, সেখানে ত্রুটি দেখা দিচ্ছে মনে হয়।”

“ড. লেথরিন বলছিল ৭ম প্রজন্মের রোবট ছেড়েছে আমাদের ধরতে। আমার বাসার সাহায্যকারী ন্যানি রোবটকে শাট ডাউন করেছি নিরাপত্তার কথা ভেবে। কে জানে বাসা বাড়িতে যে রোবটগুলো ব্যাবহার করি সেগুলাই কিনা আবার! আপনি কি নিশ্চিন্ত এটা সে ধরণের কোন রোবটনা?” জিজ্ঞেস করল নিউক।

লিডান তার কাজ শেষ করে রোবটটির ইলেকট্রনিক ব্রেনের ভিতরে পুনরায় সার্কিটটি লাগাতে লাগাতে বলে “আমি কম্পিউটার এক্সপার্ট, রোবটের ভিতরে কোন গোপন ক্যামেরা, রেকর্ডার, জিপিএস এবং যোগাযোগ মডিউল আছে কিনা আগেই চেক করে দেখেছি।”

তারপরও পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারে না নিউক। “আপনি কি নিশ্চিন্ত লিডান? আমাদের অনেক এজেন্ট যারা সরকারি বাহিনীতে কাজ করে তারা ধরা পরে যাচ্ছে। নিশ্চয়ই বিজ্ঞান পরিষদের কাছে এমন কোন তথ্য যাচ্ছে যার কারণে তারা নিশ্চিন্ত হয়ে ধরে ফেলছে আমাদের লোকদের।” উৎকণ্ঠিত গলায় বলে নিউক।

“হুম সেটা জানি। তবে তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পার এটা সে ধরণের রোবট নয়। রোবটের ভিতরের ফার্মওয়ার আমি আপডেট করেছি, ভিতরের মেমরি খুলে নতুন করে সফটওয়্যার লিখেছি পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হবার জন্য।”

প্রসঙ্গে পাল্টে নিউক জিজ্ঞেস করে “আপনি একাই থাকেন এই নীরব জায়গায়? আসে পাশে বন-জঙ্গল, মানুষজন নেই।”

“হুম, একাই থাকি। তাছাড়া কেউ আসে না এখানে। সাধারণত নিরাপত্তার জন্য আমরা বিদ্রোহীরাও কেউ জানি না কে কোথায় থাকি। বলতে পার বিশেষ কারণে তোমাদের এখানে ডেকেছি।”

“তাহলে সবার সাথে যোগাযোগ রাখেন কিভাবে?” অনুসন্ধিৎসু চোখ নিউকের।

“আমি নিজে একটা সিকিওর কমিউনিকেটর প্রোগ্রাম ডেভেলপ করেছি সবার সাথে যোগাযোগের জন্য। পাবলিক কোন কমিউনিকেটর ব্যাবহার করা একটু রিস্কি তাই আমরা আমাদের এই কমিউনিকেটর প্রোগ্রাম ব্যাবহার করি, এটি যথেষ্ট নিরাপদ।” ভ্রু জরা প্রসস্থ করে বলে লিডান।

প্লেরা তখন অন্যমনস্কভাবে বসে আছে। হাতে মহামান্য নিকোলাইয়ের দেয়া সেই লকেটটি। লকেটটি খয়েরি রঙ্গয়ের, তার সাথে চেন লাগানো। প্লেরা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে লকেটটির দিকে।

লিডান রোবটটিকে সারিয়ে তুলে প্লেরার কাছে এসে বসল। “লকেটটি মহামান্য নিকোলাইয়ের নিশ্চয়ই?”

চিন্তায় ছেদ পরে প্লেরার। লিডার দিকে তাকিয়ে বলে “হুম।”

“তিনি লকেটটিকে খুব যত্ন করে রাখতেন। লকেটটির ভিতরে মহামান্য নিকোলাইয়ের মেয়ের একটি ছবি আছে। তাই তিনি লকেটটি সবসময় নিজের কাছে রাখতেন।”

“আপনি কি করে জানলেন লকেটটির ভিতরে তার মেয়ের ছবি আছে? তিনিতো তার ব্যক্তিগত কোন কিছুই শেয়ার করতেন না।”

“হুম তিনি চাপা স্বভাবের ছিলেন। আনা লকেটটি গত বছর তাকে উপহার দিয়েছিল তার জন্মদিনে, তখন আমি সাথে ছিলাম। তারপর তিনি লকেটটির ভিতরে তার মেয়ের ছবিটি রাখেন। কখনই লকেটটি হাত ছাড়া করতেন না তিনি। তোমাকে মনে হয় অনেক পছন্দ করতেন তাই তোমাকে লকেটটি দিয়েছেন।”

আবেগে প্লেরার বুকটা কেপে উঠে। মুখের চোয়াল শক্ত করে বলে “আমরা কবে বিজ্ঞান পরিষদে আক্রমণ করব? শীঘ্রই আক্রমণ করে ওদের সবাইকে ঘুড়িয়ে দেওয়া উচিৎ।”

“এখন সঠিক সময় নয়। আবেগ দিয়ে আমাদের কোন সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ নয়। আগে আমাদের বিজ্ঞান পরিষদের ভিতরের ম্যাপটা বের করা দরকার, তাছাড়া সিডিসি পরাস্থ করার উপায় বের করতে হবে।”

নিউক লিডানের সাথে সম্মতি জানিয়ে বলল “হ্যাঁ লিডান ঠিকই বলেছে প্লেরা। আমাদের ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হুট-হাট সিদ্ধান্ত নেয়া চলবে না।”

“কিন্তু আমরা তো জানি এখন সিডিসি কিভাবে কাজ করে। তারা একের পর এক আমাদের মানুষকে মেরে ফেলছে অথচ আমরা কিছুই করতে পারছি না।”

“হুম, আমরা জানি সিটিসি কিভাবে কাজ করে কিন্তু এখন এই তথ্যগুলোকে কাজে লাগিয়ে সিটিসিকে পরাস্থ করার উপায় বের করতে হবে প্লেরা। এর জন্য আমাদের আরো শক্তিশালী কম্পিউটার দরকার। আমাদের সিডিসির সিস্টেমে আঘাত হানতে হবে তাই তার সমকক্ষ না হোক কাছাকাছি মানের কম্পিউটার দরকার।” বলল লিডান। কথা বলার মাঝখানে পিছনে তাকিয়ে রোবটটিকে কোমল পানীয় দিতে তাড়া দেয় লিডান।

কিছুক্ষন পরে রোবটটি তরল নিয়ে এসে হাজির হয়। রোবটটি স্বাভাবিকভাবে সবার কাছে তরল এগিয়ে দেয়। নিউক রোবটটিকে বেশ অস্বস্তি নিয়ে দেখছিল। তার ভিতরে খচখচানি তখনও যাচ্ছিল না।

“রোবটটি বেশ কাজের! দেখতে আমার এপার্টমেন্টের ন্যানি রোবট থেকে কিছুটা ভিন্ন!” লিডানের দিকে তাকিয়ে বলে নিউক।

“হুম, রান্না বান্না, গৃহস্থালি গোছানো, কৃষি কাজ, ড্রাইভিং এছাড়া প্রয়োজনে অল্পস্বল্প কুংফু কেরাটিও জানে এই রোবট। অনেকটা মাল্টি-টাস্কে পারদর্শী ও। তবে ওকে রোবট বলে ডেকো না, তাহলে ও মাইন্ড করে!” বলে লিডান।

“তাহলে কি বলে ডাকব?” হকচকিয়ে বলে নিউক।

রোবটটি পাশে থেকে সব কিছু শুনছিল। তার ব্যাপারে কথা হচ্ছে শুনছিল নিজের সংবেদনশীল কান দিয়ে, মাথাটি একশত আশি ডিগ্রি এঙ্গেলে ঘুরিয়ে নিজের কাজ থামিয়ে বলে “আমার নাম এনি রোবট। আমাকে এনি রোবট বলে ডাকলে খুশী হব!” ঠোট জোরা প্রসস্থ করে ধাতব গলায় বলে এনি রোবট।

নিউকের এনি রোবটের সাথে আর কথা না বাড়িয়ে লিডানের দিকে তাকায়। তারপর হালকা একটি কাশি দিয়ে গলা পরিস্কার করে বলল “আমাদের কি ধরনের কম্পিউটার দরকার?”

“আমাদের শক্তিশালী বায়ো-কম্পিউটার দরকার, যেটা মানুষের মস্তিষ্কের মত দূত লজিকাল চিন্তাভাবনা করতে পারে, তাছাড়া সেই কম্পিউটারের গতিও অনেক বেশী, আমরা যখন বিজ্ঞান পরিষদের সার্ভারে আঘাত হানব তখন প্রায় শূন্য সেকেন্ডের ভিতর তার রেসপন্স পেতে হবে অর্থাৎ লেটেন্সি হতে হবে প্রায় জিরো।”

“সে ধরণের কম্পিউটার আমাদের কাছে নেই?” কপালে ভাজ একে জিজ্ঞেস করে নিউক।

“না, এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই, তাই বিজ্ঞান পরিষদে কোন আক্রমণ আমরা করতে পারব না। সেই কম্পিউটার হাতে এলে সিডিসিকে পরাস্থ করার একটি উপায় চিন্তা করে হয়ত বের করা যাবে, বিজ্ঞান পরিষদের ম্যাপও হ্যাক করা যাবে।” নিউকের দিকে তাকিয়ে বলে লিডান।

“এখন উপায়?” ফের জিজ্ঞেস করে নিউক।

পাশ থেকে প্লেরা জবাব দেয়। “এই ধরনের জিনিষ এক জায়গায় পাওয়া যায়। তোমাকে প্রথম দিন যেই বারে নিয়ে গিয়েছিলাম সেখানে অনেক ধরনের মানুষ আসে, যাদের বেশিরভাগই অপরাধমূলক কাজে জড়িত, ওখানে টাকা দিলে কারো কাছ থেকে হয়ত পাওয়া যাবে।”

“তাহলে-তো এখন শহরে যেতে হবে। সেখানে যাওয়াতো এখন নিরাপদ নয়।” বলে নিউক।

“আমাদের কোন উপয় নেই নিউক।” পাশ থেকে বলে লিডান।

আগের পর্ব:
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব এক)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব দুই)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব তিন)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব চার)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব পাঁচ)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব ছয়)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৫৫
১২টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×