somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব চার)

০৪ ঠা জুন, ২০২০ সকাল ১১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সপ্তম অধ্যায়

সূর্য তখন অস্ত যেতে ঢের বাকি, তার রক্তিম আভা তখনো রাঙ্গিয়ে রেখেছে আকাশটাকে। চারদিকে হিম বাতাসে হাড়ের ভিতরও কাঁপন ধরিয়ে দেয়। নিউক এবং প্লেরা মনের অজান্তেই দুজন দুজনার হাত ধরে দৌড়াতে দৌড়াতে শহরের ভিতর চলে আসে। কতক্ষণ তারা দৌড়েছে ঠিক মনে করতে পারে না। যখন হুশ আসে তখন নিউক ঝাংটা মেরে নিজের হাতটা প্লেরার হাত থেকে ছাড়িয়ে নেয়।

“আমি মেয়েদের হাত ধরি না।” প্লেরার দিকে তাকিয়ে বলে নিউক।

বেশ বিব্রত হয় প্লেরা। এই প্রথম একজন পুরুষ মানুষের হাত ধরেছে সে, বুকের মাঝে এক ধরনের শিহরন অনুভব করে সে। এই ধরণের অনুভূতির সাথে একেবারেই পরিচিত নয় প্লেরা।

হাফাতে থাকে তারা দুজন, কুঁজো হয়ে দু হাত দিয়ে হাঁটুতে ভর করে একটু জিরিয়ে নেয় তারা। কর্মব্যস্ত মানুষ এবং রোবটগুলো যে যার মতো রাস্তা দিয়ে হেটে চলেছে তখন। নিউক তাকিয়ে দেখে প্লেরার হাতটা ঝলসে গিয়ে লাল বর্ণ ধারণ করেছে।

চমকে উঠে নিউক। কপালে ভাজ একে প্লেরার দিকে দৃষ্টি নিবন্ধ করে বলে “তোমার হাতে কি হয়েছে, ঠিক আছ?”

এতক্ষণ অন্যমনস্কভাবে দৌড়ানোর ফলে ব্যথাটা তেমন অনুভব করেনি প্লেরা। নিউক মনে করিয়ে দিতেই হঠাৎ ঝলসে যাওয়া হাতটায় ব্যথা অনুভব করে সে।

“আমাদের সেলের সামনের রোবটটার মাথায় আগুন লেগে গিয়েছিল। গরম মাথাটা ধরে সেলের তালা খুলতে গিয়ে গরম ছ্যাকা খেয়েছিলাম তখন।” বলে প্লেরা।

তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে নিউকের। জিবে কসরত করে গলাটা ভিজিয়ে বলে “আমার তৃষ্ণা পেয়েছে।”

“হুম, আমারো একই অবস্থা। আরেকটু ধৈর্য ধর।” নিজের ঝলসে যাওয়া হাতের অংশটাকে গোছাতে গোছাতে বলে প্লেরা।

জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে নিউক বলে “আমরা এখন কোথায় যাব?”

“একটু পরেই বুঝতে পারবে। আরেকটু সামনে যেতে হবে।” একটু দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জবাব দেয়।

প্লেরা চারদিকে একবার তাকিয়ে পরখ করে নেয় কেউ পিছু নিয়েছে কিনা। অজানা আশঙ্কায় তার বুকের ভিতরটা ধুক ধুক করতে থাকে।

একটু থেমে আবার বলে “আমাদের এখানে থাকা নিরাপদ নয়। চল সামনে যাওয়া যাক।” বলেই সামনে পা বাড়ায় প্লেরা।

নিউক তাকে অনুসরণ করে হাটতে থাকে। রাস্তার দু পাশে বিভিন্ন ধরণের রেস্তোরা এবং দোকানপাট। দোকানগুলোর উপরে বিচিত্ত ধরণের সব বিলবোর্ড, সেখানে হলোগ্রাফিক প্রযুক্তি ব্যাবহার করে বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে ক্রেতাদের আকর্ষণ করার জন্য। নিউক বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকে সেদিকে।

তারা হাটতে হাটতে একটি একটি ঝলমলে ইলেকট্রনিক দোকানের সামনে থামে। দোকানটির উপরে বিলবোর্ডে হলোগ্রামের একটি মেয়ে অবিরাম বলে চলছে “আসুন, আপনি কি রোবট? আপনার ইলেকট্রনিক মস্তিষ্ক আপডেট বা পাল্টাতে চান। স্বল্প মূল্যে পালটে ফেলতে পারবেন আপনার ইলেকট্রনিক মস্তিষ্ক, তাছাড়া আমরা ক্লাউড সার্ভিসও দিয়ে থাকি, আপনাকে আর আপনার মেমরি নিজের কাছে রাখতে হবে না, সরাসরি আপনার স্মৃতি আমাদের ক্লাউডে জমা রাখতে পারবেন। তাছাড়া আপনি যদি মানুষ হন তাহলে স্বল্প ইউনিট খরচ করে কিনে নিতে পারেন তৃতীয় প্রজন্মের কর্মী রোবট, বাসা বাড়িতে, কৃষি কাজে অনায়াসেই সাহায্য করতে পারে এই কর্মী রোবট, তাছাড়া নাচ গান, হালকা কৌতুক বলাতেও পারদর্শী এরা।”

নিউক দোকানটির দিকে একবার তাকিয়ে ফের প্লেরার দিকে ফিরে বলে “এখানে থামলে কেন?”

একটু পরেই বুঝতে পারবে বলে দোকানটির উল্টো দিকে চলে যায় প্লেরা। ইলেকট্রনিক দোকানটির উল্টোদিকে একটি দরজা দেখতে পায়, সেখানে দুজন রোবট পাহারা দিচ্ছিল। প্লেরাকে দেখে দরজা খুলে দেয় একটি রোবট, দেখে মনে হয় প্লেরার পূর্বপরিচিত তারা। নিউক প্লেরাকে অনুসরণ করে ভিতরে ঢুকে যায়।

নিউক ভেবেছিল ইলেকট্রনিকের দোকান এটি। ভিতরে ঢুকে তাজ্জব বনে যায় নিউক, এটা একটি বার। অনেক মানুষ এই বারের চারদিকটায় বসে আছে, কেউ খোশ গল্প করছে, কেউ কেউ উত্তাল নাচছে আবার অনেকে ড্রিংক করছে। তারা দুজন বারটার কোনার দিকের একটি ফাকা টেবিলে গিয়ে বসে। দুজন অল্প বয়সী মেয়ে এসে প্লেরার কানে কানে কিছু একটা ফিসফিস করে বলে দূত চলে যায়।

“এরা কারা?” গলাটা প্লেরার দিকে বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করে নিউক। তার কেমন জানি একটু অস্বস্তি লাগতে থাকে।

“এখন বলা যাবে না একটু পরে তুমি নিজেই বুঝতে পারবে।” নিচু গলায় বলে প্লেরা।

ঘটনার গুরুত্ব বুঝে আর কথা বাড়ায় না নিউক।

“আমি ভেবেছিলাম এটা একটি ইলেক্ট্রনিকের দোকান।” চারপাশটায় আরেকবার তাকিয়ে বলে নিউক।

“হুম, সমস্ত অপরাধীরা এই বারটায় আসে। সামনের দিকে ইলেকট্রনিকের দোকানটা রাখা হয়েছে সবার চোখে ধুলো দেবার জন্য।” নিচু গলায় বলে প্লেরা।

“আমরা এখানে কি করব?” চোখে মুখে প্রশ্ন বোধক চিহ্ন ফুটিয়ে জিজ্ঞেস করে নিউক।

“তোমার সব প্রশ্নের উওর পাবে। অপেক্ষা কর।” বলে প্লেরা।

তারা দুজন চুপ করে থাকে। কিছুক্ষণ পরে নীরবতা ভেঙে নিউক বলে “তোমাকে অনেক ধন্যবাদ প্লেরা। আজ তোমার জন্য ওখান থেকে বের হতে পারলাম।”

“ধন্যবাদ-তো তোমাকে দেয়া উচিৎ, তুমি যদি সেই রোবটটাকে বোকা না বানাতে পারতে তাহলে হয়ত এত সহজে আমরা বের হতে পারতাম না মৃধ হেসে বলে প্লেরা।” হাসিতে তার ঠোট ভরে যায়।

একটু থেমে প্লেরা আবার বলে “আমি সবসময় জেনে এসেছি পুরুষ মানুষ ভয়ংকর, তারা স্বার্থপর হয়, নির্দয় হয়……” আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল।

মুখের কথা কেড়ে নিয়ে নিউক বলে “তোমার কি সেই ভুল ভেঙেছে?” বলে নিউক।

“আমার কেন জানি মনে হয়, তুমি খুবই ভাল, কোমল একটা মন আছে তোমার। তুমি কখনো কারো কোন ক্ষতি করতে পার না নিউক।”

তারা কথা বলতে থাকে তার মাঝে একজন ওয়েটার এসে তরল পানিয় দিয়ে যায়। নিউক আকস্মিকভাবে কথা থামিয়ে তরলটির দিকে তাকিয়ে থাকে। তরলটি দেখতে বেশ অদ্ভুত, গ্লাসের ভিতরে কুণ্ডলী পাকিয়ে নীল রঙ্গয়ের ধুমা বের হচ্ছে। প্লেরা নিউকের দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখে সে তরলটির দিকে তাকিয়ে আছে।

“তরলটি খেয়ে নাও নিউক, এটা তোমার স্নায়ুকে শান্ত করতে সাহায্য করবে, তোমার মস্তিষ্কের টেনশন এবং উৎকণ্ঠার জন্য দায়ী হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করে একটু সুখানুভূতি দেবে।” নিউকের দিকে তাকিয়ে বলে প্লেরা।

প্লেরার কথায় ধ্যান ভঙ্গ হয় নিউকের। নিউক গ্লাসে ঠোঁট আলতো করে ছোঁয়াল তারপর চুমুক দিতেই এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব করে, তার মনের ভিতরের সেই উৎকণ্ঠা আর নেই।

চেয়ারটিতে হেলান দিয়ে মাথা ডান দিকে কাত করে বলে “অসাধারণ প্লেরা, তুমি ঠিকই বলেছ।”

হঠাৎ প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে প্লেরা বলে “একটি কথা বলবে নিউক? তোমার জগতে কে কে ছিল? তোমার ব্যাপারে অনেক কিছু আমি জানি না!”

একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে নিউক, চার হাজার বছর পেরিয়ে গেছে অথচ মনে হয় মাত্র তিন চারদিন আগে সে ঘুমিয়েছিল। “আমার মা নেই, আমার দরিদ্র কেরানী বাবাই আমাকে মানুষ করেছে। আমার কোন ইচ্ছাই সে অপূর্ণ রাখেননি। বাবার আদর এবং ভালোবাসাই আমি বেড়ে উঠেছি।”

একটু দম নেয় নিউক “আমি পড়াশুনা শেষ করে একটি স্কুলে পদার্থ বিজ্ঞান পড়াতাম। ভালই ছিল আমার জীবন।” তার কণ্ঠ ভারি হয়ে উঠে।

“আমি কল্পকাহিনীতে পড়েছি এই ধরনের এক্সপেরিমেন্টে তারাই অংশ নেয় যাদের জীবনে কোন আশা নেই, যারা জীবন থেকে পালিয়ে বাচতে চায়, অথবা যাদের কঠিন কোন রোগ হয়, বাচার কোন আশা নেই। ভবিষ্যতে হয়ত এই রোগের চিকিৎসা বের হবে এই আশায় এই ধরনের এক্সপেরিমেন্টের অংশ হয়! তাহলে তুমি এই ক্রোয়োনিক এক্সপেরিমেন্টের অংশ হলে কেন? তোমার বাবা ছিল, তোমার একটি পরিচিত জগৎ ছেড়ে কেন আসলে?”

“এমনিতেই, কিছু কিছু মানুষ আছে যারা পাগলাটে হয়, হুট-হাট সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, আমি ধর সেইরকম একজন মানুষ!” চেহারায় একটি রহস্যের ভাব ফুটিয়ে তুলে বলল নিউক।

প্লেরা আর কোন প্রশ্ন করে না। সে বুঝতে পারল না নিউক তার কাছে একটি বড় ধরনের কথা গোপন করেছে, সে এই এক্সপেরিমেন্টের অংশ হবার সত্যিকারের কারণটি গোপন করল, তার মনে হল প্লেরার কাছে তার এখানে আসার কারণটা এখনই বলা ঠিক হবে না।

প্রসঙ্গের পাল্টে নিউক জিজ্ঞেস করে “আচ্ছা তোমার পরিবার সম্পর্কে-তো কিছুতো বললে না!”

একটু দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে প্লেরা। স্মৃতি হাতড়ে চলে যায় সেই এগার বছর আগে যখন সে কিশোরী ছিল। “আমি তোমাকে বলেছিলাম আমাদের এই সময়ের পৃথিবীতে মানুষের আবেগকে নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়ন্ত্রণের জন্য এক ধরণের ড্রাগ দেয়া হয়। আমি তখন কিশোরী ছিলাম। এই ড্রাগ অনেকের ক্ষেত্রে কাজ করেনা, আমার ক্ষেত্রেও কাজ করেনি।”

থেমে যোগ করে বলে “আমার মা জানতেন আমাকে বিজ্ঞান পরিষদ ধরে নিয়ে গিয়ে তাদের সিক্রেট প্রজেক্টে গিনিপিগ হিসেবে ব্যাবহার করার জন্য তাই আমাকে তিনি লুকিয়ে রাখলেন।” এটুকুন বলে প্লেরার কণ্ঠ যেন চেপে আসছিল।

“তারপর কি হল?” অনুসন্ধিৎসা প্রকাশ করে জিজ্ঞেস করে নিউক।

প্লেরার কণ্ঠ ভারি হয়ে আসে, পেটের ভিতর থেকে কিছু একটা গলার কাছে এসে ধলা-পাকিয়ে আসে। “আমার মাকে ওরা মেরে ফেলে। আমি তখন দূর থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখি কিন্তু কিছুই করতে পারিনি। তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলে আমি কেন এই ধরণের বিদ্রোহী পথ বেছে নিয়েছি। তার সত্যকারের কারণটি হল এটি। আমি প্রতিশোধ নিতে চাই, একটি সমাজ এভাবে চলতে পারে না।” প্লেরার হাতটি মুষ্টিবদ্ধ হয়ে আসে, কোমল মুখ শক্ত করে বলে এর প্রতিশোধ আমি নিবই।

যোগ করে আবার বলে “প্রায় প্রতিদিনই এগার বছর আগের সেই দৃশ্যটি আমাকে তাড়িয়ে বেরায়।” আবেগে প্লেরার চোখ দিয়ে অশ্রু ধারা বয়ে চলে।

নিউকের মনে হয় পরম মমতায় প্লেরার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় কিন্তু পারে না। মেয়েটির আবেগ তার ভেতরে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে। মেয়েটির প্রতি অদ্ভুত এক ধরনের মায়া অনুভব করে নিউক। প্লেরাও নিউকের দিকে তাকিয়ে থাকে, তার বুকের ভিতর কেমন জানি এক ধরণের পরিবর্তন টের পায় তবে সেটা কি সে বুঝতে পারে না। প্লেরা নারী এবং পুরুষের চিরন্তন সেই আকর্ষণ কি তা জানে না, তার মরচে পরা হৃদয়ে ভালবাসার বীজ বপন হয়েছে মনের অজান্তেই সেটা সে বুঝতে পারে না। কেউ একজন এসে পিছন থেকে এসে কাঁধে মৃধ চাপ দেয় প্লেরার। স্তম্ভিত ফিরে পেয়ে চোখ দুটি মুছে উঠে দাড়ায় সে। তারপর প্লেরা এবং নিউক বারের ভিতরের দিকে এক গোপন দরজার কাছে যায়, নিউককে কেউ একজন বাধা দেবার চেষ্টা করলে প্লেরা চোখের ইশারা করে বুঝিয়ে দেয় সে নিজেদের লোক। সেই গোপন দরজায় দুজন প্রবেশ করতেই দেখা যায় সেটি মাটির নীচে গিয়ে ঠেকেছে, নিউক অবাক হয়ে যায়, কে বুঝবে বারের একটি নিচে এমন একটি গোপন আস্তানা রয়েছে।

অষ্টম অধ্যায়

প্রচণ্ড অস্বস্তির একটি অনুভূতি পেটের ভিতর টের পায় মহামান্য নিকোলাই। বাহিরের কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস, তার উপর উটকো সব ঝামেলা তার মনের মধ্যে দারুণ প্রভাব ফেলেছে। ধূমায়িত চায়ের কাপে সুড়ুত করে চুমুক দিয়ে সামনের টেবিলটাতে রেখে দেয় কাপটা। তারপর চেয়ারটাতে হেলান দিয়ে মাথাটা পিছনের দিকে কাত করে চোখ বন্ধ করে রাখেন মহামান্য নিকোলাই।

মহামান্য নিকোলাই দেখতে দীর্ঘদেহী, চোখ জোড়া নীল বর্ণের, ভ্রূ জোড়া ধবধবে সাধা, বয়স সত্তরের মত হবে তবে তার ধনুকের মত বাঁকানো পিঠ বলে দিচ্ছে বার্ধক্য বেশ ভালভাবেই কাবু করেছে তাকে। তবে দেখতে বুড়ো বাম হলে কি হবে তার তীক্ষ্ণ বুদ্ধি এবং নেতৃত্বের গুণ এখনো বেশ প্রখর। দীর্ঘ জীবনে সমাজের স্রোতের বিপরীতে লড়াই করে আসছেন, বাহিরে চাকচিক্যময় মেরুদণ্ডহীন এই সমাজের বিরুদ্ধে যে লড়াইটা শুরু করেছিল পঁচিশ বছর আগে সেটা এখন কতটুকু সফল হয়েছে জানেন না তবে চক্ষুশূল হয়েছেন সবার। দেশের সমস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হন্যে হয়ে খুঁজছে এই বিদ্রোহী নেতাকে।

আজ থেকে ঠিক পঁচিশ বছর আগে শাসক উথার তার শাসনের পাঁচ বছরের মাথায় গণতন্ত্র ভেঙে দিয়ে এক নায়ক-তন্ত্র কায়েম করলেন। সুবিধাবাদী এবং চাটুকারের দল তেলের টাংকি নিয়ে হাজির হলেন উথারের দরবারে, যোগ্য তৈল মর্দনকারী এবং সাহায্যকারীদের প্রশাসনের বিভিন্ন পদে বহাল করলেন তিনি। তবে উথারের পুরোপুরি এই গ্রহে আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিজ্ঞান পরিষদের মত স্বতন্ত্র এবং শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানের সম্মতির দরকার ছিল। সেই সময় মহামান্য নিকোলাই বিজ্ঞান পরিষদের প্রধান ছিলেন, অনেকে বলে তার পক্ষপাতিত্ব ছাড়া উথার কখনই এই গ্রহের একছত্র ক্ষমতার অধিপতি হতে পারত না। শাসক উথার বিজ্ঞান পরিষদকে বাগে আনার তিনদিনের মধ্যে মহামান্য নিকোলাইকে আটক করে গ্রহ-দ্রোহী হিসেবে ঘোষণা করেছিল, অন্যদিকে জেনারেল গ্রাটিয়াকে করেছিল বিজ্ঞান পরিষদের প্রধান! মহামান্য নিকোলাইয়ের মত মানুষ অসীম সাহসী মানুষ যিনি নিজের জীবনের পরোয়া করেন না, তিনি কেন উথারকে সমর্থন দিয়েছিলেন সেটা আজো রহস্য রয়ে গেছে। কেউ এই প্রশ্ন করলে মহামান্য নিকোলাই বরাবরই চুপ মেরে যান কিছু বলেন না।

“মহামান্য নিকোলাই?” দ্বিতীয়বারের মত ডাকল আনা ওয়াটসন।

আনার বয়স ষাটের মত হবে তবে দেখলে মনে হয় পঞ্চাশ বছর বয়সী, চেহারা বেশ ফর্সা, চোখ দুটি ধূসর বর্ণের, চুলগুলো ছোট করে ছাটা, নাকটি বেশ লম্বা, চেহারার ডানে একটি কাটা দাগ আছে।

নিকোলাই চেয়ারটাতে চোখ বুঝে থাকাতে কিছুটা তন্দ্রাভাব এসেছিল। বয়সের এই এক দোষ, শরীরটা শুধু বিশ্রামের জন্য খাইখাই করে। আনা ডাকে হুড়মুড়িয়ে উঠে পরেন তিনি। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এর সময় ঘুম ভাব আসাতে কিছুটা বিব্রত হলেন মহামান্য নিকোলাই। তিনি দৃষ্টি ঘুড়িয়ে চারদিকে একবার পরখ করে নিলেন। গোপন এই আস্তানায় চারদিকে ছড়ানো ছিটানো কিছু চেয়ার আছে, তাকে কেন্দ্র করে অনেকে বসে আছে সেখানে, কেউবা জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সবার হাতেই ভয়ানক রশ্মি নিক্ষেপক অস্ত্র, চোখে মুখে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ততা সবার। সবাই অধীর আগ্রহে আছে মহামান্য নিকোলাই কি নির্দেশ দেন সেটা শুনার জন্য।

“আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন, আমাদের অনেককেই জেনারেল গ্রাটিয়ার লোকজন ধরে নিয়ে গেছে, হত্যা করেছে নির্মমভাবে। আমাদের এর প্রতিশোধ নিতে হবে, নির্মম প্রতিশোধ।” মুখের চোয়াল শক্ত করে করে বলে আনা।

এই আস্তানার অন্যরা বেশ হইচই শুরু করে দেয়, অস্ত্র উঁচিয়ে বলে “হ্যাঁ আমরা প্রতিশোধ চাই, প্রতিশোধ।”

মহামান্য নিকোলাই হাত শূন্যে উঠিয়ে ইশারা করে সবাইকে থামতে বলেন। “তোমরা চুপ কর, আমাদের চিন্তা ভাবনা করে এগুতে হবে। মাথা গরম করে এখন কিছু করা যাবে না।”

“এবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরেছি মানুষের আবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য যেই ড্রাগ দেয়া হয়েছিল শিশুদের সেটা প্রায় সতের শতাংশ শিশুদের ক্ষেত্রে কাজ করেনি, গত বছর এই হার ছিল পাঁচ শতাংশ। আপনি নিশ্চয়ই জানেন এদের অনেককেই ধরে নিয়ে গেছে গোপন প্রজেক্টে গিনিপিগ হিসেবে ব্যাবহার করার জন্য।” তথ্য সরবরাহ করার গলায় বলল আনা।

মহামান্য নিকোলাই আনার দিকে মাথাটা ঘুরিয়ে গম্ভীর গলায় বললেন “বেশ ঠাসা একটা খবর নিয়ে এসেছ! তুমি না থাকলে এই খবর জানতাম না!”

আনা বুঝতে পারল মহামান্য নিকোলাই তাকে যে একটি সূক্ষ্ম খোঁচাটা মেরেছে। কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল আনা।

নিকোলাই তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে “দুনিয়ার সমস্ত বাসি খবর থাকে তোমার হাতে! অনেক শিশুকে ধরে নিয়ে গিনিপিগ হিসেবে ব্যাবহার করছে এটা অনেক পুরনো খবর।”

আনা মাথাটা নিচু করে বলল “আমি দুঃখিত মহামান্য নিকোলাই। আমি বলতে চাচ্ছিলাম আমাদের খুব শক্ত হাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শাসক উথারকে পরাস্ত করে গ্রহে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে, মানুষের জীবন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা বন্ধ করাতে হবে। তার জন্য আমাদের সবার আগে বিজ্ঞান পরিষদে আক্রমণ করে নিয়ন্ত্রণ নেয়া দরকার।”

মহামান্য নিকোলাই একটি কৃত্রিম হাসি দিয়ে বলে “আনা ধৈর্য ধর। মানুষের আবেগ নিয়ন্ত্রণের ড্রাগটি একটি বিচিত্র কারণে কাজ করছেনা তার মানে হলে প্রকৃতি চাচ্ছে না তার কাজে মানুষ হস্তক্ষেপ করুক। আমার বিশ্বাস প্রকৃতি তার কাজ শুরু করে দিয়েছে। মানব জাতিতে কোন পুরুষ নেই, প্রকৃতি ভারসাম্য রক্ষার জন্য কিছু একটা করবে।”

আনা চেহারায় একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন ফুটিয়ে তুলে বলল “কিন্তু কিভাবে?”

সেটা আমি জানিনা “তবে আমার বিশ্বাস আমরা খুব শীঘ্রই কোন উপায় পেয়ে যাব, প্রকৃতি আমাদের সাথে আছে।” জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে বলে মহামান্য নিকোলাই।

মহামান্য নিকোলাই “বিজ্ঞান পরিষদের এই গোপন প্রজেক্টে শিশুদের সাথে কি করা হয় সেই রহস্য আমাদের জানতে হবে। এই প্রজেক্টের সমস্ত তথ্য সেন্ট্রাল কম্পিউটার সিটিসির কাছে রেখেছে। আমরা যদি সিটিসিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি তাহলে এই গোপন প্রজেক্টের তথ্যগুলো পেয়ে যাব সাথে পুরো মিডিয়াকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। এই গ্রহের সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং মিডিয়া আমাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে, তবেই আমরা সকল তথ্য প্রচার করে শক্ত জনমত তৈরি করতে সক্ষম হব। আমাদের এখন বিজ্ঞান পরিষদে আক্রমণ করে সিটিসির নিয়ন্ত্রণ নেয়া দরকার।”

সিটিসির কথা শুনে সবাই চমকে উঠল, মানবিক বুদ্ধি সম্পূর্ণ প্রচণ্ড ক্ষমতাশালী একটি কম্পিউটার সিটিসি, তাকে মানুষের মর্যাদা দেয়া হয়েছে, তাকে পরাস্ত করা প্রায় অসম্ভব।

একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন মহামান্য নিকোলাই, থেমে বললেন “এর আগে আমরা এই গ্রহের সব চেয়ে বেশী আই-কিউ সম্পূর্ণ মানুষকে পাঠিয়েছিলাম সেখানে, সবার চোখ ফাকি দিয়ে পৌঁছেও গিয়েছিল ছিল বিজ্ঞান পরিষদের ভিতরের সিটিসির কন্ট্রোল রুমে কিন্তু ......” বলেই থেমে যায় মহামান্য নিকোলাই।

যোগ করে বলেন “সিটিসি মানুষের পরের চাল কি হবে তা পর্যন্ত বুঝতে পারে, অনেকে ওর ক্ষমতাকে ঈশ্বরের সাথে তুলনা করে!”

আস্তানাটিতে এক ধরনের নীরবতা নেমে আসে। মহামান্য নিকোলাই নীরবতা ভেঙ্গে পুনরায় বলে “তোমরা কেউ হতাশ হবে না, আমার বিশ্বাস প্রকৃতি আমাদের সাহায্য করবে।”

“এখন আমাদের উপায় কি?” অনুসন্ধিৎসা প্রকাশ করে আনা।

“হুম। এখন অন্যভাবে এগুতে হবে। সিটিসিকে কে সৃষ্টি করেছে? কিভাবে সৃষ্টি করেছে? সেই রহস্য আমাদের বেদ করতে হবে। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি পাওয়া যায় তাহলে হয়ত সিটিসিকে পরাস্ত করা সম্ভব।” আনার দিকে তাকিয়ে বললেন মহামান্য নিকোলাই।

আনা বলল “মহামান্য নিকোলাই বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে এবং এমনকি বিজ্ঞান পরিষদে পর্যন্ত আমাদের লোক আছে যারা গোপনে তথ্য দিয়ে সাহায্য করছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু কেউ আজ পর্যন্ত এটা বের করতে পারেনি কে সিটিসিকে ঈশ্বর-সম ক্ষমতা দিয়ে বানিয়েছে। এই তথ্য শাসক উথার, জেনারেল গ্রাটিয়া এবং আর গুটি কয়েকজন ছাড়া কেউ জানে না।”

মহামান্য নিকোলাই কিছু বলতে যাচ্ছিল সেই সময়ে আস্তানায় প্লেরা এবং নিউক এসে হাজির হয়। মহামান্য নিকোলাই আকস্মিকভাবে কথা থামিয়ে দিয়ে তাদের দিকে তাকায়। সবাই মহামান্য নিকোলাইয়ের দৃষ্টি অনুসরণ করে প্লেরা এবং নিউকের দিকে তাকায়।

মহামান্য নিকোলাই তার বৃদ্ধ শরীরটিকে টেনে তুলে নিউকের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন, তারপর নিউকের কাঁধে হাত রেখে বললেন “এই জগতে তোমাকে স্বাগতম নিউক। প্রকৃতি দু-হাজার পরে প্রথম একজন পুরুষ মানুষ ফিরিয়ে এনেছে!” ফিসফিসিয়ে বললেন মহামান্য নিকোলাই।

নিউক বেশ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মহামান্য নিকোলাই দিকে। সে বুঝতে পারছে না এই বৃদ্ধা মহিলাটি কে এবং তাকে কিভাবে চেনে। সে অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মহামান্য নিকোলাইয়ের দিকে।

মহামান্য নিকোলাই নিউকের কৌতূহল নিবারণের জন্য নিজের পরিচয় দিলেন এবং বললেন “বিজ্ঞান পরিষদে কেথরিন নামের যেই বায়োলজিস্ট তরুণীটি তোমার ডিএনএ, মস্তিষ্কের নিউরন ইত্যাদি পরীক্ষা করেছিল সে আমাদেরই লোক। এই গ্রহের অনেক জায়গায়ই আমাদের লোক আছে, যারা গোপনে সাহায্য করে চলেছে আমাদের। তোমার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য অনেক আগেই আমরা পেয়ে গেছি, তুমি একজন বিচক্ষণ পুরুষ মানুষ নিউক। তুমি যেভাবে বিজ্ঞান পরিষদের সেল থেকে পালিয়েছ তা শুনে আমি অভিভূত। তোমাকে এই জগতে একটি প্লান করে পাঠানো হয়েছে আমার বিশ্বাস।”

নিউক বেশ ধাক্কা খেল মনে হল। “আমি ঠিক বুঝলাম না? আমাকে কে প্লান করে পাঠিয়েছে?” বলল নিউক।

“নিউক আমার বিশ্বাস তোমাকে প্রকৃতি নির্বাচন করেছে। আমাদের এই গ্রহে মানুষের আবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য এক ধরণের ড্রাগ দেয়া হয়। কিন্তু ড্রাগটি হঠাৎ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। আমার বিশ্বাস প্রকৃতি চাচ্ছে না কৃত্রিমভাবে মানুষের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা হোক। প্রকৃতির বড় কোন প্লান আছে। সে তোমাকে দিয়ে বড় ধরণের কোন কাজ করিয়ে নিবে বলে আমার বিশ্বাস।” বলে মহামান্য নিকোলাই।

“মহামান্য নিকোলাই প্রকৃতি বা সুপার ন্যাচারাল পাওয়ারে আমার বিশ্বাস নেই। আমি পদার্থ বিজ্ঞানের লোক, এই ধরণের ধারণাতে-তো আরো বিশ্বাস নেই।” স্বাভাবিকের তুলনায় মনের অজান্তেই উঁচু গলায় বলে নিউক।

এই আস্তানার সবাই দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিউকের দিকে তাকিয়ে থাকে।

যোগ করে বলে “প্রাচীন গ্রিসের পরমাণুবাদী দার্শনিক দেমোক্রিতোস বলেছেন আমাদের এই মহাবিশ্বে অণু পরমাণু এবং শূন্যস্থান ছাড়া আর কিছুই নেই............।” আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল নিউক।

মহামান্য নিকোলাই তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে “তোমার সাথে এই ব্যাপারগুলো নিয়ে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না নিউক। এগুলো নিয়ে আমরা পরে আলাপ করব!”

মহামান্য নিকোলাই প্লেরার দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি স্থির করলেন তারপর একটু থেমে বললেন “তোমাকে ধন্যবাদ প্লেরা বেচে ফিরে আসার জন্য। তোমার হাতে কি হয়েছে?”

প্লেরা মাথাটা নিচের দিকে কাত করে মহামান্য নিকোলাইয়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করল। তারপর নিজের হাতে পোড়া ক্ষতটা লুকানোর চেষ্টা করে বলল “তেমন কিছুনা মহামান্য নিকোলাই।”

“মহামান্য নিকোলাই সেন্ট্রাল কম্পিউটার সিটিসিকে যে সৃষ্টি করেছে, সেই বিজ্ঞানীর পরিচয় জেনে গেছি।” হঠাৎ একজন আগন্তুক আস্তানায় ঢুকে বলল।

সবাই বিস্ময় নিয়ে আগন্তুকের দিকে তাকায়।

“সে কে? কোথায় থাকে তাড়াতাড়ি বল?” বলে মহামান্য নিকোলাই।

“মহামান্য নিকোলাই তার পরিচয় জানতে পেরেছি কিন্তু ঠিকানা এখনও উদ্ধার করতে পারিনি। তার নামটা কি এখনই শুনতে চান?” চারদিকে অস্বস্তি নিয়ে একবার তাকিয়ে বলল আগন্তুক।

মহামান্য নিকোলাই একবার চারদিকে তাকালেন। তার নিজের দলের অনেকেই বিভিন্ন কারণে ধরা পরে যাচ্ছে, কিভাবে যেন জেনারেল গ্রাটিয়া তাদের খবর পেয়ে যায়। তাই নিজেদের সবাইকেও ঠিকমত বিশ্বাস করতে পারেননা তিনি। সর্ষের মাঝে ভুত আছে কিনা কে জানে ভাবেন নিকোলাই। একটু চুপ থেকে আগন্তুককে উদ্দেশ্য করে বলেন “তুমি একটু পর আমার সাথে দেখা কর, একান্তে কথা বলব।”

মহামান্য নিকোলাই আগন্তুকের দিক থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে ফের নিউকের দিকে তাকায়। মুখের হাসি যথাসম্ভব প্রশস্ত করে বলে “আমি বলেছিলাম না নিউক তোমাকে প্রকৃতি পাঠিয়েছে, তুমি এলে আর আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়ে গেলাম।”

আগের পর্ব:
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব এক )
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব দুই)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব তিন)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৫৬
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×