....বনলতা যখন জন্ম নিল,তখন তার বাবার
মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল..
কারণ সমাজের রীতি অনুযায়ী মেয়েরা হল এমন
প্রজাতির মানুষ যাদের পিছনে টাকা ব্যয়
মানে নদীর জলে সম্পদ নষ্ট করা....
তবুও ভালো ঘরে বিয়ে দেয়ার
স্বার্থে মেয়েকে স্কুলে পাঠালেন বাবা সুধাংশু
দেব...
পঞ্চম অষ্টমে বৃত্তি পেয়ে এসএসসিতে স্কুলের
সেরা রেজাল্ট অর্জন করে কলেজের দোরগোড়ায়
পা রাখলো বনলতা...
মেধাবী এবং সুন্দরী হওয়ায় অতি দ্রুতই এলাকার
"বড় ভাই" পলাশ চন্দ্রের নজরে পড়লো..
এবং কলেজে যাওয়ার সময় বনলতাকে পলাশের
কতিপয় "চামচা" উত্যক্ত করা শুরু করলো...
সুধাংশু দেব বাধ্যহয়ে সমাজ ও মেয়ের ইজ্জত
বাঁচাতে পাশের এলাকার অফিস কেরানী রাজনের
সাথে বিয়ে দিয়ে দায় মুক্ত হলেন...
তবে শুধু মেয়ে নয়,নগদ দেড়লাখ
টাকা এবং ফসলি জমি টুকু বিক্রি করে পাঁচ
ভরি স্বর্ণ দিলেন...
আবার,নতুন বছর,পূজা কিংবা বিভিন্ন
উপলক্ষে পিঠা,ফল,পান,দুধ না দিলে বক্র
কথা শুনতে হয়..
ননীর পুতুল রাজন
চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করবে বলে শ্বশুর
বাড়িকে আবারও টাকার চাপ দেয়...
টাকা দিতে অক্ষম হওয়া সত্ত্বেও মেয়ের সুখের
জন্য আশ্বাস দেয়,
আর এদিকে স্ত্রীর উপর প্রতিনিয়ত নির্মম
অত্যাচার চালায় রাজন...
অবশেষে এরই মাঝে গলাটিপে জাতির
মেধাবী সন্তান বনলতাকে হত্যা করে....
এখন কি করবে সুধাংশু???
কিচ্ছু না,হয়তো একটা মামলা করবে,আর রাজনও
মামলা উত্তোলন
করতে হুমকি দিবে প্রতিনিয়ত..
মামলা চালাতে অক্ষম হওয়ায়,একসময়
অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে অসহায় সুধাংশু
পরিবারের আকুতি..
তাদের পাশে দাড়াবেনা তথা কথিত নারীদের সম
অধিকার দাবী কারীরা....
এভাবেই হয়েছিল,এভাবেই হচ্ছে,এভাবেই হবে..
কারণ,আমরা ধরেই নিয়েছি স্ত্রীর সাথে শ্বশুর
বাড়ি থেকে অনেক কিছু পাওনা আমাদের..
কিন্তু তাদের কথা বিবেচনা করিনা,যারা পরিশ্রম
এবং অর্থ ব্যয়ে একটা মেয়ে গড়ে তুলেছেন...
কিন্তু আর একটা মেয়েকেও
বনলতা হতে দিতে পারিনা...
একটা মেয়েকেও যেন আর যৌতুক
দিয়ে বিয়ে না দিতে হয়,,এবং...
শ্বশুর বাড়ি থেকে একটা সুতাও না নেয়া হোক
আমাদের শপথ...