একটা কৌতুক দিয়ে শুরু করি। এর জন্য অবশ্য কাফের উপাধিও পেয়ে যেতে পারি, তবু বলি।
বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, পাকিস্তানের নানা রকম সমস্যা। তাই আল্লাহ একদিন ডেকে বললেন, তোমাদের সমস্যা গুলো নিয়ে আসো আমি সমাধান করে দিব। এরপর থেকে সাবধানে দেশ চালাতে হবে কিন্তু। সবাই রাজি হলো।
প্রথমে, ইন্দিরা গান্ধীর ডাক পড়লো। তিনি গিয়ে বললেন বাংলাদেশের সাথে ফারাক্কা নিয়ে ঝামেলা যাচ্ছেই না। গাল শুনতে আর ভালো লাগে না। একটা সমাধান দিন স্যার। আল্লাহ বললেন, আচ্ছা ঠিক আছে। হয়ে যাবে। এরপর ডাক পড়লো জিয়াউল হকের। তিনি কাঁদতে কাঁদতে নাকের শ্লেষ্মা মুছতে মুছতে বললেন, ইন্ডিয়ার সাথে আমার সীমান্ত সমস্যার একটা বিহিত করে দিন বস। আমাদের তো আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই আপনি থাকতে। আল্লাহ বললেন, ব্যাপার না। আমার কাছে এসেছ তো, হয়ে যাবে। শেষ অতিথি হিসেবে খালেদা জিয়া গেলেন। গিয়ে দেখেন আল্লাহ কাঁদছেন আর বিলাপ করছেন, তোর সমস্যা যে কীভাবে সমাধান করবো সেটা ভেবেই দিশা পাচ্ছি না। (নাউজুবিল্লাহ)।
এই হচ্ছে আমাদের বাংলাদেশ। এখানে শুধু প্রাকৃতিকভাবেই না, কৃত্রিমভাবেও সমস্যা তৈরি, ধারণ, ও প্রসব করা হয়। সমস্যার লালন ও প্রতিপালন করা হয়।
করোনাকালীন এক বছর আগে একটা যথাযথ কারফিউ চেয়েছিলাম। লকডাউন না। বাঙালি এখনো এতো মানুষ হয়ে যায়নি যে ভদ্রভাবে বললেই নিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবে। তিন সপ্তাহের একটা কারফিউ হলে পরিস্থিতি অনেক আয়ত্তে থাকতো। হলোটা কী? বাড়িতে, পাড়ায়, মহল্লায় দেখলাম সীমিত আকারের লকডাউন লকডাউন খেলা। দুষ্ট মন্ত্রী, হিজিবিজি ডিজি, সাহেদ, সাবরিনাদের নিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা হয়েছিল সরকারের।
যতই লুকানোর চেষ্টা থাকুক বা অস্বীকার করুক, বুঝি, মহামানবের জন্মদিন বলে কথা। মহামানবের সামনে আমরা তো কোনো মানব ই না।
সেদিনের বিনা প্রস্তুতিতে বিরাট ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের মতো এতো ডাক্তার আর কোনও দেশে এই অল্প সময়ে মৃত্যুকে এভাবে জোরপূর্বক বরন করেছে বলে শুনি নি। তাঁদের মৃত্যুর গহ্বরে ফেলে দেয়া হয়েছিল দুর্নীতির PPE তে মুড়িয়ে।
সেই ভুল থেকে আমরা কি কিছু শিখেছি? কী শিখেছি? অশ্বডিম্ব।
ভুল স্বীকারের সংস্কৃতি তো আমাদের নেই। আমাদের সংস্কৃতি হচ্ছে উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর। আর আমরা যেহেতু ভুল করিই না তাই আমরা মহামানবও বটে। কেউ কেউ অন্য মহামানবদের চাইতে একটু বেশিই মহামানব। অতিমানব।
ভুল থেকে যদি আমরা শিখতাম তাহলে এক বছর আগের প্রতিশ্রুত হাজার হাজার বেড এর করোনা সেবালয় গুলো এখন দেখতে পেতাম। কাজে লাগতো।
ভুল থেকে যদি শিখতাম তাহলে সাধারণ মানুষের জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে মহামানব শতবর্ষ পিছিয়ে দিতাম।
ভুল থেকে যদি শিখতাম তাহলে 'প্রাণের চেয়েও মান বড়' জিদ নিয়ে বসে থেকে অসহায় মৃত্যু দেখতে হতো না। স্বজনের অসুস্থতায় কিছু করতে না পারার বেদনা যে বুঝে না সে প্রতিশোধপরায়ণ।
ভুল থেকে যদি শিখতাম তাহলে ২৬শে মার্চে ২১জনের প্রাণ সংহার হতো না। এমন আরো ২১জনের পঙ্গু হতে হতো না। তাদের পরিবারগুলোর কী অবস্থা এখন? কে সাহায্য করছে? কাদের কাছে সাহায্য চাইবে ওরা? সরকারও তো এদের সাহায্য করবে না কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই সংসদে এই মানুষগুলোকে 'ওদের' আখ্যা দিয়ে বিভাজন রেখা টেনে দিয়েছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৩৮