somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাসপ্রেম

২২ শে মে, ২০২১ রাত ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে প্রভাষক পদে ৩টি স্থায়ী চাকরির জন্য বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীকে রেজিস্ট্রার এর অফিস থেকে নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করে আবেদন করতে হবে।

বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মোট ৮ সেট আবেদনপত্র পাঠাতে হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে ৭৫০ টাকা মূল্যের পে-অর্ডার অথবা ব্যাংক ড্রাফট সংযুক্ত করতে হবে। এর সাথে থাকতে হবে সার্টিফিকেট, মার্কসিট, অভিজ্ঞতার প্রমানের সত্যায়িত প্রতিলিপি।

বিজ্ঞাপনটি দেখে আমি যুগপৎ আশ্চর্যান্বিত ও হতাশ হয়েছি। বিজ্ঞাপনটি আমার কাছে অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে।

এই ২০২১ এ কেন প্রার্থীকে রেজিস্ট্রার এর অফিসে যেতে হবে আবেদনপত্র সংগ্রহ করার জন্য? তারচেয়েও বড় কথা, আবেদনপত্রেরই বা দরকার পড়বে কেন? এ তো প্রাগৈতিহাসিক ব্যাপার স্যাপার! কারখানা জাতীয় ব্যাপার। Resume`, CV এগুলো কোন দিনের জন্য আছে? না-কি এসব পড়ে 'সময় নষ্ট' করার মতো 'প্রয়োজনীয়' লোকবল নেই?

পুরো প্রক্রিয়াটিতে খরচের বাইরেও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হচ্ছে, কেন একজন চাকরিপ্রার্থী ৮ সেট আবেদনপত্র তৈরি করে পাঠাবে? এটাতো কোনও ভাবেই প্রার্থীর কাজ হতে পারে না। এটা চাকরি প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের দাপ্তরিক কাজ। কর্তৃপক্ষের যদি ২০টি কপি লাগবে ২০ জনের নির্বাচক কমিটির প্রত্যেকের জন্য তো সে ফটোকপির দ্বায়িত্ব প্রার্থী নিতে যাবে কোন আনন্দে?

কর্তপক্ষের দ্বায়িত্বশীলতার বহর দেখে বিষ্ময়ে থ হয়ে যাই।

আবার আবেদনের সাথে প্রার্থীকে কেন ৭৫০ টাকা জমা দিতে হবে? এগুলো একধরনের বুদ্ধিবৃত্তির বেলেল্লাপনা। আপনার অফিসে বা বাড়িতে আসবাবপত্র কেনাকাটা বা সারাইয়ের সমস্যা হয়েছে কখনো? গাড়ির বা গাড়ির তেলের অভাব পড়েছে কোনও দিন? এখন অর্থের অভাব হয়েছে আপনার? নিয়োগ দিতে আপনার খরচ আছে, জানি, কিন্তু সেই খরচ আপনি প্রার্থীর সরু পকেট থেকে তুলবেন? প্রার্থীতো এখনো আপনার চাকর, ভৃত্য, দাস, বা রঙিন রূপভান এ পরিনত হয়নি। তাছাড়া প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বাজেটেই তো অর্থ বরাদ্দ দেয়া থাকে। জবরদস্তি করে আপনি অর্থ প্রদানে প্রার্থীকে বাধ্য করছেন কেন?

প্রার্থীর সার্টিফিকেট, মার্কসিট, প্রশংসাপত্র, কাজের অভিজ্ঞতা, ইত্যাদি এখন নিয়ে কী করবেন? চাকরিতে নিয়োগ পেলে তো ভেরিফিকেশন আপনাকে করতেই হবে। সেটা তো আপনারা অফিসিয়ালভাবেই করতে পারেন। হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্টের কাজের অংশ কি এসব না? আর কাগজপত্র সত্যায়িত করেই বা কী লাভ আমার আর্থিক ক্ষতি ছাড়া? নাকি এতসব 'ঝামেলা'য়ই যেতে চান না?

প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে এই যুগোনুপযোগী, পেছন খামচে ধরা, সামন্ততান্ত্রিক, প্রভুসূলভ আচরণ artificial intelligence এর যুগে এসেও দেখতে হচ্ছে কেন?

বিশ্বকে ১০ টাকায় চা-সিংগাড়া-সমুচা খাওয়ায়ে যদি শিক্ষার অশেষ গুণবর্ধন হয়েছে বলে ঢেকুর তোলেন তাহলে আপনাদেরও মানুষ পঁচা আলু, পঁচা পেঁয়াজ, আর পঁচা আদার মানদণ্ডেই মাপবে এবং ইতোমধ্যেই মাপছে।

চাটুকারিতা বাদ দিয়ে একটু গা করুন। একটু ঝামেলা করুন। এতো নিশ্চিন্ত, আরামের চাকরি তো শিক্ষকতা না। একটু এগিয়ে আসুন। নতুন কিছু ভাবুন, একটু বড় করে ভাবুন। নেতৃত্ব দিন।

'নেতৃত্ব', শুনলেই আবার রঙিন হয়ে যাবেন না। Colourful হতে হবে না। Resourceful হন। Useful হন।

আর তা না পারলে simply excuse yourself.
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০২১ রাত ১০:৪৭
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×