somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেম - যারে আমি ভালবাসিয়া ছিলাম (৫)

২২ শে জুলাই, ২০০৮ দুপুর ২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্ব পড়ার অনুরোধ
আগের পর্ব
Click This Link

স্বপ্ন সাজাতে ভালো লাগে। কিন্তু সমস্যা হইল বাস্তবে আইসা অসংখ্য বাগ ধরা পরে । পোগ্রামের বাগ হয়তো সারানো যায়। প্রথম থাইকা পুরা রিভাইস করলে বাগগুলা নির্মূল করা অনেকাংশেই সম্ভব। কিন্তু সময় নামক মাত্রাটির নিয়ন্ত্রন আমাদের হাতে না থাকায় বাস্তবে তা সম্ভব হয় না। এ এক ওয়ান ওয়ে এন্ট্রির মতো। এইটা আমি খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারি। তাই স্বপ্ন সাজাইতে গিয়া বাগের ভয়ে স্বপ্ন আর বেশীদূর আগায় না অথবা বাগ বিহীন স্বপ্ন সাজানো আমার পক্ষে সম্ভব হয় না। কারণ তার মনের কথা তো আর আমি বলেত পারি না। অন্তত এই অবস্থায় মনে হয় সময় দেই। সময় আপনা থেকে বলে দেবে কি হয়। নিজের লইয়া হইলো আরেক জ্বালা। চায় স্বপ্ন দেখতে ।

আমার অবস্থা অনেকটা এখন কিংকর্তব্যবিমুর টাইপ। দিনের রুটিনের তেমন পরিবর্তন নাই। সকালে ক্লাস দুপুর বিকাল লাইব্রেরী এই চলছে। দেখতে দেখতে এসে গেল ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। আমরা নতুন। সবাইরে বলতে শুনি স্বাধীনতা দিবসে খুব সুন্দর সুন্দর অনুষ্ঠান হয়। তবে এইবার মেলাও হবে। যথারীতি তারে কইলাম ২৬ তারিখ কি করবা? সে কইলো আমার কোন কাজ নাই। কইলাম তাইলে সকাল সকাল টি এস সি তে আইসা পইরো আমরা মেলা দেখতে যাবো। আমি মফস্বলের পুলা মেলা আমার খুব প্রিয়। ঐদিন সকাল বেলা আমি গিয়া টি এস সি তে উপস্থিত । ঘড়িতে বাজে সকাল ৭:৪৫ । অপেক্ষা করি সে আর আসে না। মনে মনে নিজেরে গালি দেই টাইম টা কি কইছিলাম। মনে তো হয় না। অপেক্ষ করতে থাকি । জানেন তো অপেক্ষার সময় বড় দীর্ঘ হয়। বুঝতে পারি না কি করমু । হলে গিয়া তারে ডাকদিমু সেই ইচ্ছাও আবার করে না। নাকি একটু কেমন জানি লাগে। যাই হোক অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলাম।

সে আসলো ১০:২০ মিঃ । আমি তারে অবাক হইয়া দেখি । এ আমি কারে দেখতাছি। এতো আমার সেই বন্ধু, ক্লাসমেট, গ্রুপমেট, লাইব্রেরীমেট না। এ অন্য কেউ। কারণ সে শাড়ী পইরা আইছে। তার দিকে অবাক হইয়া চাইয়া থাকি। চমৎকার ভাবে সাজুগুজু কইরা এ কে আমার সামনে উপস্থিত। আমি পুরা টাশকি। মাথা পুরা আউলা। তারে খুব সুন্দর লাগতাছে এই কথাটা তারে আর কইতে পারলাম না। কইলাম বসো। সে বইলো। জিগাইলাম চা খাবা। কইলো খামু। দিলাম চা এর অর্ডার। আমার অবস্থা প্রকাশ পাইছিল কিনা জানি না। চা খাওয়ার ফাঁকে সে কইলো দেখতো আমারে কেমন লাগতাছে। কইলাম খুব খুব সুন্দর লাগতাছে। প্রথমবার এই রূপে তোমারে দেখতাছি তো তাই আরও ভালো লাগতাছে। সে লজ্জা পাইয়া কইলো যাহ্ । এই যাহ্‌ তীরের মতো আইসা বুকে বিধলো। পাছে আবার কিছু মনে করে তাড়াতাড়ি কইলাম চলো মেলায় যাই।

দুইজনে গেলাম মেলায়। আহা আমি আনন্দিত, শিহরিত, মুগ্ধ, অভিভুত একজন শাড়ী পরা মেয়ে নিয়া আমি মেলায় যাই। জীবনের সব সুখ মনে হয় এইখানে। বিড়বিড় কইরা হেড়ে গলায় গুন গুন করি "আমার এই পথ চলাতেই আনন্দ"।

মেলায় গিয়া সে এক দোকান থাইকা আরেক দোকনে যায়। এইটা রাইখা ওই টা দেখে। আর আমি বেকুবের মতো দেখি তারে। যত দেখি তত মুগ্ধ হই। অনেক্ষন মেলায় ঘুরাঘুরির পর । দুপুরের খাবারের সময় তারে কইলাম চলো আজকে তোমারে আমি খওয়ামু । দুইজন গিয়া হোটেলে একসাথে দুপুরের খাবার খাইলাম । আবার কতক্ষন মেলায় ঘুরাঘুরি কইরা। মনে মনে ফিরনের ধান্দা করতিছি । সে কইলো সন্ধ্যার অনুষ্ঠান দেখবা। আমি কই দেখমু সে কইল তাইলে আমিও দেখমু। আমি জিগাই তোমার হল তো সন্ধ্যা ৬:৩০ মিঃ বন্ধ হয়। সে কয় আজকে অনুষ্ঠান এর লাইগা স্পেশাল পারমিশন দিছে। আমি কই তাইলে অসুবিধা কি? চলো একসাথে দেখমু। কিন্তু এখনও তো অনুষ্ঠান শুরু হইতে ৩ ঘন্টা বাকী । জিগাইলাম তুমি কি এখন হলে যাবা না টি এস সি তে বসবা। সে কয় আমি টি এস সি তে যামু না হলেও যামু না। আমি কই তাইলে কি করবা। সে কইলো আসো ঘুরি। আমি আসলে বুঝতে পারি নাই সে সারাদিন এর জন্য বাইর হইছে। মন তো সাথে সাথে দিল তিন খান লাফ।

তারে নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে, নদীর পারে, বোটানিক্যাল গার্ডেনে ঘুরাঘুরি কইরা কিছুক্ষন এই জায়গায় বইসা ওই জায়গায় বইসা পার সময়টা কইরা দিলাম। একটা জিনিস লক্ষ করলাম সে বেশ আন্তরিক ভাবে জিগাইতাছে এইটা কি ওইটা কি । যা পাড়ি তারে কই না পাড়লে বানাইয়া কই। তার আগ্রহটারে তো আর মাটিতে পড়তে দিতে পারি না। পড়ে অবশ্য ঝাড়ি খাইছি ।

সন্ধ্যায় গেলাম অনুষ্ঠান দেখতে। অডিটরিয়াম ভর্তি লোকজন। দুইজন বইলাম এক সাথে। অনুষ্ঠান শুরু হইলো । আলোচনা, নাচ, গান, আবৃত্তি এই সব নিয়া অনুষ্ঠান। পুলা গুলারে তো কিছু কিছু চিনি কিন্তু দেখি মাইয়া একটারেও চিনি না। হঠাৎ লক্ষ করলাম আমি আমাগো ইয়ারমেট মাইরা ছাড়া আর কাউরে চিনা না। তারে জিগাইলাম এগোরে চিন। সে আমরে নাম ধাম কইতে লাগলো। এরপর থাইক্যা যত মেয়ের নাম জানছিলাম তার কাছ থাইকাই জানসি। অনুষ্ঠান শেষ হইলো তখন বাজে রাত ৯:৩০।

তারে হলে দিয়া আইতে গেলাম। গেইটের কাছে আমার কাছ থাইক্যা বিদায় নিয়া যাওয়ার আগে কয় । ধন্যবাদ । আমি কই কি জন্য । সে কয় সব কিছুর লাইগ্যা। কইতে চাইছিলাম সেই বিখ্যাত ডায়লগ "বন্ধুত্বে নো সরি নো থ্যাংকস" ।

কিন্তু কইলাম না কারণ তার সাথে আমার বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকবে না।

হলে ফিরা গিয়া সোজা ঘুম। ....


চলবে..

পরের পর্ব
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ১:৩০
১৭টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×