somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কালো চামড়া সাদা মুখোশ

১১ ই অক্টোবর, ২০০৬ বিকাল ৪:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[উপল্য গ্রন্থ: ব্লাক স্কীন হোয়াইট মাস্ক্স
লেখক: ফ্রাঞ্জ ফানো, ইংরেজী অনুবাদ: চার্লস লেম মার্কম্যান, প্রকাশক: গ্রোভ প্রেস, নিউ ইয়র্ক।]


1952 সালে ফরাসী দেশে চিকিৎসা ও মনঃসমীণে অধ্যয়ন থাকাকালীন ফ্রাঞ্জ ফানো 'ব্লাক স্কীন, হোয়াইট মাস্ক্স' প্রকাশ করেন। ফানো এই গ্রন্থটি সম্পর্কে বলেন _ এটি সামাজিক-রোগনির্নয় অর্থাৎ অভিন্ন নৃগোষ্ঠীয় আত্মপরিচয় বিষয়ক একটি গবেষণা গ্রন্থ। এর মূল সারবস্তু হল: পাশাপাশি অবস্থানরত সাদা ও কালো নৃগোষ্ঠী খুবই সুনির্দিষ্ট অবয়বে যৌথ মানসিক অসুস্থতা তৈরি করে। "শ্বেতাঙ্গ তার 'সাদাত্ব' নিয়ে সিলগালা, তেমনি কৃষ্ণাঙ্গ তার 'কালোত্ব' নিয়ে (পৃষ্ঠা. 9)।" উভয় নৃগোষ্ঠীই রঙের সীমাবদ্ধতায় বাঁধা। তবে এই গ্রন্থে ফানো জোর দিয়েছেন 'কালোত্ব'র উৎপত্তি, তাৎপর্য এবং এর পরিণতি। ফানো মনে করেন কালো পরিচয় আত্ম-বিভাজন দ্বারা সীমায়িত। কালো মানুষ সাদা মানুষের সাথে যেভাবে ব্যবহার ও কথা বলে, কালো মানুষ কালো মানুষের সাথে সেভাবে ব্যবহার ও কথা বলে না। এই দ্বিত্ব ধরনের খাস্লতের কারণ হল সরাসরি ঔপনিবেশিক নিগ্রহের ফল, গভীর রোগাক্রান্ত'বিচ্ছিন্নতা'। এই অস্বাভাবিক রোগের 'বিচ্ছিন্নতা' বিশ্লেষণ ও বুদ্ধিগ্রাহ্য করে ফানো এর থেকে আরোগ্য ভরসা করেন, সুস্পষ্টভাবে চান এর সমূলে ধ্বংশ। যদ্যপি জাতিদ্বেষী বাস্তবিক ও মানসিক পরিণতি আমাদের মধ্যে বিদ্যমান থাকবে, ফানোর কর্মকৌশল এই সমস্যা চিহ্নিত করতে, সমাধান বাতলানোতে এবং নৃগোষ্ঠীয় সচেতনতার েেত্রর জটিলতা অনুধাবনে মহাভূমিকা রাখবে। ফানোর চিন্তায় গভীর প্রভাব রেখেছিলেন সিগমন্ড ফ্রয়েড(1856-1939), আলফ্রেড এডলার (1870-1937), এবং জাক লাঁকা (1919-1990)। জাঁ পল সার্ত'র দর্শন বিষয়ক লেখাজোকা ও কবি আইমে সিঁজারের রচনাবলী ফানোর নৃগোষ্ঠী ও আত্মপরিচয় বিষয়ক চিন্তার ধরনধারণ পরিপক্কতায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
গ্রন্থের প্রায় শুরুতেই ফানো প্রশ্ন তোলেন, একজন কালো মানুষ কী চায়? অনেকটা ফ্রয়েডের মহাজিজ্ঞাসার মতো: 'একজন নারী কী চায়?' ফানো তাঁর প্রশ্নে উত্তর জোগান দেন। উত্তরটি সহজ ও বিধ্বংশী। একজন কালো মানুষ কী হতে চায়: সাদা। শ্বেতাঙ্গ সভ্যতা ও ইউরোপীয় সংস্কৃতি দ্বারা কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ওপর এই অস্বাভাবিক রোগাক্রান্ত বাসনা জোরপূর্বক আরোপিত হয়। ঔপনিবেশবাদ, ক্রীতদাসত্ব, এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি দ্বারা পশ্চিমা শক্তি অবশিষ্ট পৃথিবীর ওপর কতর্ৃত্ব করে, এবং বিভিন্ন রকম সামাজিক আচরণ, ডিসকোর্স ও মতবাদ বৈশ্বিক মানদন্ডরূপে নাজিল করে তথাকথিত ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার নামে নিপীড়ন চালায়। যেমন সৌন্দর্যের 'সর্বজনীন' মানদণ্ড হিসাবে সাদাত্ব মডেলকে ভিত্তি ধরা হয়, এতে কালো মানুষ কখনো সাদা মানুষের সহিত নিজেদের সম্পূর্ণ খাপ খেয়ে নিতে পারে না; ফলে ব্যাক্তিগতভাবে নিজেদের পরিত্যক্ত ভাবে, আর সম্মিলিতভাবে শ্বেতাঙ্গদের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে চেষ্টা করে। এই চেষ্টা সহজাত পরস্পরায় বিদ্যমান থাকে এবং চরমভাবে বিফল হয়; এর পরিণতিতে প্রাথমিকভাবে জন্ম নেয় খুবই নিঃসঙ্গবোধ ও বিস্তরণ ঘটায় হীনতা বোধ। ফানো লিখেন, "শ্বেতাঙ্গরা নিজেদের কৃষ্ণাঙ্গ অপো শ্রেষ্ঠতর মনে করে (পৃ: 10)।" এই নৃগোষ্ঠীগত শ্রেষ্ঠত্ববোধের জটিলতার একটি কারণ ইতিহাসের পরিব্যপক চিন্তার মধ্যে স্থিত। এর জন্য আমরা জর্জ ফ্রেডারিখ উইলহেম হেগেল (1770-1831)-এর ঐতিহাসিক আলোকসম্পাতে নজর বুলাতে পারি। 'হেগেলের মতানুসারে, মানুষের ইতিহাস ক্রমঅগ্রসরমান: একটি সভ্যতা অন্য সভ্যতাকে অধক্রম করে অগ্রসর হয়, স্বাধীনতার চেতনা এর মধ্যে দ্বান্দ্বিকতামূলকভাবে কাজ করে, বার বার পরিশ্রুত উপলব্ধির মাধ্যমে। সূর্যের মতো, ইতিহাস পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে ঘোরে, অতপর এর শীর্ষবিন্দু আধুনিক ইউরোপে ঘাঁটি গাড়ে।' দুর্ভাগ্যবশতঃ, সূর্য মনে হয় আফ্রিকার ওপর দিয়ে পাড়ি দেয় না। সরলসোজা বুনোতা আর অজ্ঞতার আফ্রিকার কোন ইতিহাস নাই! হেগেল এইভাবে ফতোয়া করেন। আফ্রিকা বিষয়ক এই দৃষ্টিভঙ্গি শুধু মাত্র মিশরীয় সভ্যতার (একে হেগেল বড়জোর ভূমধ্যসাগরীয় সভ্যতা বলতে রাজি) গরিমাই মলিন করে না, অধিকন্তু এড়িয়ে যাওয়া হয় কার্থেজ, ঘানা, মালি, সঙহাই এর মতো মতাশালী সভ্যতা..., ইথোপিয়া, বেনিন, কূবা, বর্নিউ'র মতো অভিজাত সভ্যতা..., 'ভূবন-ইতিহাসখ্যাত ব্যক্তিত্ব' যেমন হেনিবাল, সেন্ট অগাস্টিন, সানডিয়াটা, আহমদ আল-মনসুর, রানী নিনজা...এমনি আরো অনেক কিছু। এদের কে গণায় ধরবে? হেগেলসাব যখন এরূপ কহেন!
ঔপনিবেশবাদের বাস্তববুদ্ধি অনুশীলন হল সংস্কৃতি ও ভাষার স্থানান্তরের মাধ্যমে অস্বীকারের ইতিহাস, ফানোর মতে যা চিরস্থায়ী বিভেদ তৈরি করে। কারণ: "কথা-বলার প্রকিয়া একটি সংস্কৃতি ধারণ করা (পৃ. 17)", কৃষ্ণাঙ্গ জনগন তাদের পূর্বপুরুষদের ভাষার অধিকারবঞ্চিত হয়ে নৃগোষ্ঠীয় হীনতার অনুভূতি ভাষার মাধ্যমে দৃঢ়ীকরণ করে এক অস্তিত্বমান উভয়সংকটে নিপতিত হয়। উদাহরণস্বরূপ এনটেলিয় নৃগোষ্ঠীর কথা বলা যায়, এদের সরকারি ভাষা ফরাসি আর প্রতিদিনকার ভাষা ক্রেয়ল, ফানো লিখেন যে কালো লোক..."আনুপাতিকভাবে সাদাটে হবে ফরাসি ভাষার পারদর্শি হয়ে। ...হঁ্যা, আমার কথায় আমি খুবই ব্যথিত, কেননা আমিও এর মাধ্যমে কমবেশি মূল্যায়িত হব (পৃ 18, 20)।" ঔপনিবেশি ভাষায় পারদর্শী হয়ে একজন কালো মানুষ শ্বেতাঙ্গ সমাজে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায়। যেমন, ধরা যাক একজন ক্যারিবীয় অভিবাসি ফ্রান্স থেকে মার্টিকূ ফিরে আসলো। এতে প্রথমত, তার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনরা তার ফরাসি 'কানুন' সামর্থে, সর্বশেষ প্যারিসীয় কেতাদুরস্ত প্রকাশে, এবং সর্বশেষ মহাদেশীয় পোশাকপরিচ্ছদে দারুণভাবে আহলাদিত হয়। কিন্তু এইসব কানুন খুবই ভঙ্গুর, একটি সামান্য ক্রটিবিচু্যতি শুভাকাঙ্েিদর সামনে অনাবৃত করে যে সে একজন তাক্লাগানো ভঙ্গিবিলাসী অর্থাৎ ময়ুরপুচ্ছ কাক। "কোন মা নেই যখন একজন শ্রেষ্ঠতা দাবি করে নিরিখমাত্রার নিচে পতিত হয়," ফানো ব্যাখ্যা করেন। যখন তারা দেখে যে সব ফরাসি কানুনে আগত ব্যক্তি পারদর্শী নয়, সে ছলকরা জ্ঞান লাভ করতে পারেনি, "সে বিদীর্ণ হয়। তখন শুধু তার একটি পছন্দ খোলা থাকে, 'প্যারিসি-খাসলত' ছুড়ে ফেলা কিংবা পরিহাসে অবলুপ্ত হওয়া (পৃ. 24-25)।"
অন্যদিকে, বিদ্বেষ ও বিরুদ্ধাচরণের ফলে মেট্রোপলিটান ভাষা রপ্তকারী মানুষদের সাংস্কৃতিক স্মৃতি বিলোপ হতে পারে। ভাষা বিভেদ একদিকে যেমন হীনম্মন্যতা বোধ জাগ্রত করে অন্যদিকে তাকে কৃষ্ণাঙ্গ সমাজ থেকে স্থানভ্রষ্ট করে। ফানো এও বিবৃত করেন, কিভাবে শ্বেতাঙ্গের ভাষা কৃষ্ণাঙ্গদের 'ছাঁচে ফেলায়' এবং 'ছোট বলিয়া ভাবে'। কৃষ্ণাঙ্গকে বালসুলভ করে, প্রাগৈতিহাসিক করে, অসভ্য করে এবং মুসাহেবি করে। কথা প্রসঙ্গে-অনুসঙ্গে জাতিদ্বেষী অপমানের মাধ্যমে কৃষ্ণাঙ্গদের পরিণত করে "চিরকালীন এক মৌলিক স্বভাবেব বলীরপাঠা, অথচ যে চেহারা জন্য এরূপ তার জন্য সে দায়ি নয় (পৃ. 35)।" ফানো এভাবে নৃগোষ্ঠী ও ভাষার শর্তাবলীতে সার্ত'র অস্তিত্ববাদী দর্শন পুর্নলিখন করেন, যা একে সংকেতায়িত(বহপড়ফব) করে। এরপরে, ফানোর প্রকল্প অবশ্যই সংজ্ঞায়িত করা যায়, "মুক্তি অস্তিত্ববাদ": মৌলিক স্বভাব অস্তিত্বের আগে ঘটে না, সুতরাং আমরা যে রীতির মাধ্যমে কয়েদী হই তা উপো করার েেত্র আমরা মুক্ত।
কাসিকেল মনঃসমীণে সচরাচর পাওয়া যায় মানসিক অসুস্থতা শৈশবের মানসিক ত হতে উদ্ভূত হয়, সাধারণত পারিবারিক পরিস্থিতিতে ইহা ঘটে। মানসিক ত দমিত থাকে, পরবর্তীতে তা মনঃবৈকল্য, স্নায়ুবৈকল্য কিংবা অন্য কোন মানসিক ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। শৈশবের এই মানসিক ত খোলাসা ও আবিস্কারের করার মাধ্যমে রোগির মানসিক স্বাস্থ্য পুনঃরুদ্ধার সম্ভব। ফানো মনে করেন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের স্নায়ুবৈকল্যের গোড়া পরিবার-ভিত্তিক ঘটনা নয়, বরং ঘটে থাকে শ্বেতাঙ্গ জগতের মানসিক তকর সংস্পর্শে, যারা তাদের হেয় জ্ঞান করে। বিশেষ করে প্রাধান্যসম্পন্ন কৃষ্ণাঙ্গ সমাজে (যেমন মার্টিকূ) এই সংস্পর্শ বয়ঃপ্রাপ্তির আগে ঘটে না, এই সময়ের মধ্যে একজন অর্জন করে সত্যনিষ্ঠ সারসত্তা যেমন স্বচ্ছতা, যুক্তিবৃত্তি এবং বিচারবুদ্ধি। "একজন মানুষ যার একমাত্র অস্ত্র হল যুক্তিবৃত্তি, তার নিকট অযুক্তিবৃত্তির সংস্পর্শে আসার এর চেয়ে বড় স্নায়ুবিক ব্যাপার আর নেই (পৃ. 118)" এবং জাতিদ্বেষ_ যা পৃথিবীকে স্ব-আরোপিত ও অবিশ্বস্থ রীতিতে দেখতে অভ্যস্থ_ তা সহজাতভাবে অযক্তিবৃত্তীয়। জাতিদ্বেষ ল্যে যুক্ত থাকে উদ্ভূট তামাশাঘর আরশী যা শুধু ভয়ার্ত বিকৃতিই প্রতিফলন করে, উপরন্তু বিদঘুটেভাবে চিহ্নিত আত্মচারিত্র। সংস্পর্শের এই পরিণতি বিষয়ে ফানো যে মুখ্য দৃশ্যপট বিবৃত করেন, ব্লাক স্কীন হোয়াইট মাস্ক্স গ্রন্থের কেন্দ্রীয় ফোকাশ ত-ই। "দেখ, একজন নিগ্রো!" সাদা বালক একজন মার্টিকূ'র দিকে তাকিয়ে বিস্ময়ে বলে। "মা, নিগ্রোটাকে দেখ, আমি ভয় পাই (পৃ. 112)।" সমগ্র জাতিদ্বেষী ইতিহাসের ছাঁচ ও উপনিবেশিক নির্যাতন এরমধ্যে স্থিতু। কৃষ্ণাঙ্গরা সাদাদের নজরদারিতে নিজেদের খণ্ডবিখণ্ডভাবে দেখে, তাদের দেহ ও ব্যক্তিত্ব বিলুপ্ত হয়। "নিগ্রো হল জীবজন্তু, নিগ্রো তিকর, নিগ্রো ঘৃন্য, নিগ্রো কুৎসিত...হাড়কাঁপা ঠাণ্ডায় নিগ্রো কাঁপছে, সুদর্শন বালকটি শিউরে ওঠে কারণ সে ভাবছে নিগ্রোটি রোষে কাঁপছে, সাদা বালকটি নিজেকে মায়ের কোলে সমর্পণ করে। মা, এই নিগ্রোটি আমাকে চিবিয়ে খেতে চায় (পৃ. 113-14)।" এই আদিম দৃশ্যপটে ফানো কি বিশ্লেষণ করেন?। 1. কৃষ্ণাঙ্গ কালো চামড়া ছাড়া কমবেশি আর কিছুই নয়; 2. "বর্ণগত ত্বকীয় রূপরেখা" তাকে ত্রি-ব্যাক্তিতে বিচূর্ণ করে, তা হল: দেহ, বর্ণ, ইতিহাস; 3. ব্যক্তি/মানুষ নিজেকে বস্তুতায়িত করে, আদি মানসিক তের নিষ্ঠুর বেদনা নব শক্তি সঞ্চার করে। অন্যভাবে বলা যায় সে তার বিভৎস সামাজিক মৃতু্য পুনঃমঞ্চস্থ করে। 4. হয়তো একজন সাদা ব্যক্তি চেষ্টা করল কৃ্ষ্ণাঙ্গদের প্রতি দায় পরিশোধ করতে, তখন তার বিশ্লেষন হয় এরকম যে, মার্টিকূয়ানদের চামড়া কালো সত্ত্বেও বস্তুতঃ তারা সভ্য মানবীয় প্রজাতি। এই ধরনের অভিহিতকরণ উগ্রতা, লজ্জা ও অস্তিমান বিবমিষা উৎপন্ন করে। এর সমগ্র অবয়ব জুড়ে থাকে: সাদা নজরদারিতে কালোদের মনুষ্যত্বহীন, বিকলাঙ্গ ও অবলুপ্ত করা। ফানো এই অভিজ্ঞতাকে দেখেন, ল্যাবরেটরির সংরতি আলামত হিসাবে বন্দী পতঙ্গের সদৃশ।
"আমি হামাগুড়ি দিয়ে চলি। এবং ধীরে ধীরে আমি সাদা চোখে ব্যবচ্ছেদিত হই। আমি ধরাশায়ী হই... তারা উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে আমার বাস্তবতা কাটাছেড়া করে। আমি পতিত হয়ে পড়ে থাকি...(পৃ. 116)। ফানো আরো জানান দেন, কালোত্বের মানসিক ত সাদা মানুষ সম্পর্কিত 'পরম অপরতা' থেকে উদ্ভূত। অর্থাৎ সাদা মানুষ শুধুমাত্র কালো চামড়া সনাক্ত করে কালো মানুষ বিবেচনা করে। যদি জাতিদ্বেষ কৃষ্ণাঙ্গ অতীত মুছে ফেলে, কৃষ্ণাঙ্গ জ্ঞানবুদ্ধি অবমূল্যায়ন করে, অস্বীকার করে কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিত্ব, কৃষ্ণাঙ্গ দেহকে কলঙ্করূপে দেখে; তখন কি করা যেতে পারে? আফ্রিকার ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে পুনরুদ্ধার করে একটি সমাধান খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু আধুনিক শ্বেতাঙ্গ সমাজ প্রাচীন আফ্রিকীয় সভ্যতার সাথে যুক্ততা তৈরির েেত্র অপ্রাসঙ্গিকভাবে দূরে থাকে। বর্তমান যুগ হল বিজ্ঞান ও প্রভুত্বের, কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ খোসগল্পের চরিত্র এবং তাদের গৌরবময় অর্জন পৃথিবীর কথিত ইতিহাসে শৈশব বলে চিহ্নিত। অন্য সমাধান হতে পারে নেগ্রিচুড। এই শব্দটি উভয়বলয়তা ও শ্লেষ দ্বারা যুথবদ্ধ। ফানো সেঁজার, সেঙ্গর এবং তাঁদের সহসাথীদের দ্বারা বিবৃত এই 'পরিত্রান' বাণী আগাগোড়া পুর্নমূল্যায়ন করেন। ছন্দ, আবেগ, স্বভাব, যাদু, কবিতা, লিঙ্গতা, রক্ত: এগুলো হল কৃষ্ণাঙ্গ অবদানবস্তু, মূল্যবান উদযাপন... এবং পশ্চাদগতিসম্পন্ন ডুবন্ত কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের সমতা। "অবৌদ্ধিক জন্ম আমার; কাদাজলে আমার অবৌদ্ধিক পথচলা। আপাদমস্তক অবৌদ্ধিক আমি (পৃ. 123)। ফানো তাদের ধার্যকরা পরস্পর বিপরীতধর্মী চরিত্রের বর্ণবাদী ছাঁচের নেতিবাচক মনোভঙ্গির মূল্যমানে সন্দেহপ্রবণ ছিলেন। তিনি তাদের মহৎ বুলিতে সন্দিগ্ন ছিলেন, নেগ্রিচুড সাহিত্যের প্রেরণা সঞ্চয়কারি শব্দগুচ্ছ "আমরা নিগ্রোরা পশ্চাৎপদ এবং সরলসোজা (পৃ. 126)"। এতে করে, পুনরায় কৃষ্ণাঙ্গরা নিস্তরঙ্গ সাংস্কৃতিক শৈশবত্বে ন্যস্ত হল। কিন্তু ফানো নেগ্রিচুড শব্দের মধ্যে প্রতিকূল পৃথিবীর অর্থ ও মূল্য খুঁজে পান। যদিও এই শব্দটি কৃষ্ণাঙ্গ পরিচয়ের পর্যাপ্ত ভিত্তি প্রদান করে না। এই েেত্র তিনি প্রবলভাবে সার্ত'র সাথে অমত করেন, 'ব্লাক স্কীন হোয়াইট মাস্ক্স' জুড়ে যা পরিব্যপক। সার্ত দাবী করেন যে নেগ্রিচুড হল মার্কসীয়-হেগেলীয় দ্বান্দিকতা মুহূর্তের নেতিবাচকতা, প্রলেতেরিয়েত বিজয়ের দরকারি পূর্বনিশ্চিত পর্যায়, এখানে জাতি কোন বিষয় নয়। ফানো এই মতের ঘোর বিরোধী।
ফানো ভাষা ও 'অপর' সম্পর্কের ওপর জোর দেন, এবং এই েেত্র সংশোধনবাদী মনোবিজ্ঞানী জাঁক লাকার সাথে সাদৃশ্য খুঁজে পান। বস্তুতঃ, তার আপন প্রকল্প রেস-আনত অহম-গঠনে, ফানো লাঁকার 'আয়না-পর্ব' ধারণা ব্যবহার করেন। "যখন কেউ লাঁকার বর্ণিত পদ্ধতি হৃদয়ঙ্গম করেন, আর কোন দ্বিধা থাকবে না যে শ্বেতাঙ্গ মানুষের প্রকৃত 'অপর' হল ও অবিরত থাকবে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ। এবং বিপরীতভাবে তদ্রুপ।" সমস্ত 'ব্লাক স্কান হোয়াইট মাস্ক্স' জুড়ে, ফানো মনঃসমীণ তেমনি এবংবিদ অন্যান্য মানবীয় বিজ্ঞান শাখার সার্বজনীনবাদী ধারনায় অবিশ্বাস প্রদর্শণ করেন। তিনি এগুলোর সাথে একধরনের র্যাডিক্যাল মানব-মনোবিদ্যার মাধ্যমে বুঝাপড়া করেন; যা বিশ্বাস, ভয় এবং বাসনার সাংস্কৃতিক ভিত্তি আমলে নেয়। যেহেতু জাতিগত/বর্ণগত ভাবভঙ্গী আমাদের সমাজ কতর্ৃক সৃষ্ট, সুতরাং এরূপ ভাবভঙ্গী মানসিক অসুস্থতার সীমা নির্দেশ করে।
কট্টর ফ্রয়েডীয় তাত্তি্বকগণ পরিবারের প্রেেিত মানুষের আচরণ বুঝেন, কিন্তু তারা এড়িয়ে যান ঐতিহাসিক উপাদান, যা গড়পড়তা ইউরোপীয় পরিবার হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন গড়পড়তা আফ্রিকীয় পরিবার গঠন করে। ইউরোপীয় প্রেেিত, ফানোর মতে, "পরিবার হলো জাতির মিনিয়েচার (পৃ. 142)"। ফানো দাবি করেন, আপেকিভাবে, পরিবারের চারিত্র্য সামাজিক পরিবেশে প্রপ্তি হয়। প্রসঙ্গতঃ, ইউরোপে পরিবার ও জাতি গঠনে পুরুষশক্তির কতর্ৃত্ব প্রাধান্য পায়, অতএব অডিপাল লড়াইয়ে পিতাকে চ্যালেঞ্জ করে (পুরুষ) শিশু নিজস্বতা অর্জনে আশ্কারা পায়; যোগ্য নাগরিক গণ্য হতে গিয়ে প্রতিযোগি ও আগ্রাসি জীবন তৈরি করে; তবু ধীরে ধীরে তার মধ্যে আইনী কতর্ৃত্বের প্রতি সন্মান প্রদর্শনের মানসিকতা প্রবেশ করে। ফানো মনে করেন, শৈশব সামাজিকতায়ন ও বয়ঃপ্রাপ্তি প্রত্যাশার মধ্যে কোনোরূপ অসঙ্গতি নেই। এর প্রতিতুলনায়, ফানোর মতে ফরাসী এনটেলিয়দের মধ্যে কার্যতভাবে অডিপাস কমপ্লেক্স অবিদ্যমান। কারণ একটি কৃষ্ণাঙ্গ ঔপনিবেশিত পরিবার ঔপনিবেশিক জাতির আয়না নয়। সগোত্রীয় থেকে স্নায়ুবৈকল্য উদ্ভূত হয় না, বহিরাগত (সাদা) দুনিয়ার সংস্পর্শে হয়। যে কৃষ্ণাঙ্গ সরাসরি শ্বেতাঙ্গের সাথে সম্পর্কিত নয় তার কী বর্ণ-সংশ্লিষ্ট স্নায়ুবৈকল্য সৃষ্টি হতে পারে? ফানো ফ্রয়েডের সহকর্মী কার্ল গুস্তাভ জাং (1875-1961) এর শরণাপন্ন হন, একটি সম্ভাব্য উত্তরের প্রত্যাশায়। "যদি না সেই ভয়ার্ত স্বতঃসিদ্ধবস্তু আমরা ব্যবহারোপযোগি করি_ যা আমাদের ভারসাম্যে ধ্বস নামায়_ জাং কতর্ৃক নিবেদন করা, যৌথ নির্জ্ঞান। পরিপূর্ণভাবে আমরা কিছুই বুঝি না (পৃ. 144-45)।" ফানো জাংয়ের চিন্তার জীববিদ্যাবাদ ও অতীন্দ্রিয়বাদ পরিশীলিত করেন, একে তিনি বলেন যৌথ সাংস্কৃতিক নির্জ্ঞান, "কোন প্রদত্ত গোষ্ঠীর পূর্বসঞ্জাত ধারণা, মিথ, যৌথ ভাবভঙ্গীর যোগফল (পৃ. 88)।"
সামপ্রতিক দুনিয়া জুড়ে, ফানোর মতে, কৃষ্ণাঙ্গ জনগন বৈষম্য, পূর্বসংস্কার, বিরুদ্ধাচারণ ও অবিচারের শিকার। শিশুদের গপ্পকাহিনী, লোককথা, ম্যাগাজিন, কমিক বই, সিনেমা কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের বাধ্য করে শ্বেতাঙ্গ নায়কের সহিত নিজেকে অভিন্ন বলে গণ্য করতে এবং কৃষ্ণাঙ্গ-ঘৃণিত চরিত্র, মোটাবুদ্ধির ও কালো চামড়ার শত্রুপরে লোককে উপো করতে। কৃষ্ণাঙ্গ জনগনের যৌথ নির্জ্ঞান, এভাবে পূর্বঅনুষ্ঠেয় নৈরাশ্য, বিচ্ছিন্নতা এবং মানসিক আঘাতে সৃষ্ট স্নায়ুরোগে রূপ নেয়, কারণ কাল্পনিক আত্ম-প্রতিমূর্তি যা শ্বেতাঙ্গ_নিয়ন্ত্রিত সংস্কৃতি প্রযুক্ত করে, শেষ অবধি কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য ভুয়া ফানুসরূপে অনাবৃত হয়। এই সব সাংস্কৃতিক ফাঁদ হতে নিস্কৃতি পেতে চিত্তাকর্ষক ও শিা উপাদান উৎপন্ন করতে ফানো পাঠ অত্যবশ্যকীয়। ফানোর মৃতু্যর কয়েক দশকের মধ্যে 'সংখ্যালঘু' শিশুদের বোধ উৎকর্ষ উপযোগি উল্লেখযোগ্য পরিমান পুস্তক ও ইস্তাহার প্রকাশিত হয়।
তাঁর অডিওপাস কমপ্লেক্স বিষয়ক আলোচনা, যার কেন্দ্রবিষয় হল পিতার প্রতি তীব্র অনুভূতি মাতার জন্য যৌন আবেগের চেয়ে বেশি। ফানো ল করেন কৃষ্ণাঙ্গ জনগনের ব্যক্তিক যৌন তীব্রতার (প্যাথোলজি) বিমুখতা। তিনি আরো বলেন কৃষ্ণাঙ্গ এনটিলিয়দের মধ্যে সমকামিতা কার্যত অজানা। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গ'র মধ্যে যৌনসম্পর্ক হল রোগাক্রান্ত আলামত। একজন কালো মহিলা যে সাদা পুরুষকে ভালবাসে_ তা বিশ্লেষণ করতে যেয়ে ফানো মেওটী কেপেসিয়া'র আত্মজীবনীমূলক উপন্যাসের আশ্রয় নেন, যেখানে একজন মার্টিকূ নারীর একজন সাদা ফরাসীকে বিয়ে করার চেষ্টার গল্প বলা হয়েছে। এই বইয়ের ভাষ্যে ফানোর সমালোচনা কঠোর, তার কলম থেকে: "হ্রাসকৃত মূল্যের পণ্য দ্রব্য, দূষিত প্রশংসার ধর্মোপদেশ (পৃ. 42)।" ঘটনাক্রমে, এর নায়িকা যতটা সম্ভব সাদা হওয়ার নিয়োজিত ছিল এবং এই প্রক্রিয়ায় 'সাদাটে' বাচ্চা জন্মাবার খায়েস হয়েছিল। এইভাবে নিজেকে এবং নিজের বর্ণ (রেস)কে সাদা করে চাওয়া, ফানোর মতে একটি "বিবমিষাকর বিস্ময়কর ঘটনা"। ফানো রেনঁ মারা'র লিখিত আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস কালো পুরুষের সাদা নারীর প্রতি বাসনার দৃষ্টান্তস্বরূপ বেছে নেন। এতে ফরাসীবাসী একজন এনটেলিয় ছাত্রের গল্প বলা হয়, যার সাথে একজন ফরাসী মহিলার পীড়নকর ভালবাসা সম্পর্ক ছিল। "সমস্যা প্রশংসনীয়ভাবে পরিকল্পিত (পৃ. 64)", অনুমোদনীয়ভাবে ফানো লিখেন, নায়কের উৎকণ্ঠা ও পরিত্যক্ততার সহিত সহমর্মিতা দেখান, তাকে বলেন, "অন্তস্থ জীবনের ক্রুসেডর (পৃ. 78)"। ফানোর মতে, যখন একজন এনটেলিয় প্রথমবারের মতো প্যারিসে পেঁৗছে, তাঁর ল্য হয় সাদা রমনীর সাথে বিছানায় যাওয়া। তার যৌনসম্পর্কিত পপাতিত্বের মূলে থাকে স্বীকৃতির আকাঙ্া: "যখন আমার ব্যতিব্যস্ত হাত ঐ সাদা স্তনে সোহাগ করে, তারা আঁকড়ে ধরে সাদা সভ্যতা ও গৌরব এবং তাদের করে আমার (পৃ. 63)।"
ফানোর আন্তঃবর্ণীয় যৌনতা অন্যভাবে প্রকাশ পায়, যখন তিনি "নিগ্রোতংক" নিয়ে আলোচনা করেন_ অসংগত ভয় এবং ঘৃণার মনোভাবের মাধ্যমে সাদা মানুষ কালো মানুষদের সাথে যৌনসম্ভোগ করে। আতংক বস্তু শয়তানির শক্তির অধিকারি এবং এভাবে সন্ত্রাস চাগিয়ে ওঠে, এই সন্ত্রাস যৌনসম্পর্কিত মনোভাবের আকস্মিক পরিবর্তনে রঞ্জিত হয়। ফানো লিখেন, এই আতংক বস্তু বাসনার বস্তুতে পরিণত হয়। কারণ সাদা ইউরোপীয় "যৌথ সাংস্কৃতিক নির্জ্ঞান" কালো মানুষকে একদিকে যেমন যৌনগতভাবে তেজবান করে, অন্যদিকে শয়তানের প্রতীক করে; এভাবে আতংক বস্তু মূল্যবান শ্রেষ্ঠত্বে পরিণত হয়। অথবা, সার্ত'র প্রবন্ধ 'অ্যান্টি-সিমাইট এন্ড জিউ'র অংশবিশেষ নিয়ে ফানো প্রস্তাব করেন, শ্বেতাঙ্গ পশ্চিমা সংস্কৃতি 'শরীর-মন' কে এর বিপরীত 'অপর'কে প্রপ্তি করে: ইহুদি প্রতিনিধিত্ব করে বুদ্ধিবৃত্তিক ভয় এবং কৃষ্ণাঙ্গরা প্রতিনিধিত্ব করে জৈবিক ভয়। এই পরিবেশ যে কোন মূল্যে পৃথক থাকে। ফানো শ্লেষাত্মকভাবে মন্তব্য করেন, ইহা অসম্ভব, রডিনের অন্তদৃষ্টির "চিন্তুক"এর লিঙ্গোত্থান। অতপর চরম নিগ্রোতংক, এতে "নিগ্রো কোনরূপ সচেতন নয় শুধুমাত্র এর লিঙ্গ ব্যতীত, নিগো হল শক্তি। সে লিঙ্গতে পরিবর্তিত হয়। সে হয় একজন লিঙ্গ (পৃ. 170)।" কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ব্যক্তিক মনস্তত্ত্বের স্তর দমনমূলক (এবং এর ফলে ভীতিকর) বাসনা প্রতিকায়িত করে: "সভ্য সাদা মানুষ অবৌদ্ধিক আকুল আকাঙ্া পোষণ করে যৌনগত বৈধতার অস্বাভাবিক আর্স (বৎধং)... তার নিজস্ব বাসনা নিগ্রোর ওপর প্রপ্তি করে, সাদা মানুষ এমন আচরণ করে 'যেন' নিগ্রোরা আদতে তাদের জিনিস (পৃ. 165)।" একইভাবে, সাদা নারী ঘৃনা হতে সৃষ্ট বেপরোয়া যৌনতায় কালো মানুষকে পরিশোভিত করে।
সাংস্কৃতিক মনস্তত্ত্বে, নিগ্রোতংক হল স্পষ্টীকরণের অতি অলঙ্কৃত (ফানো যাকে বলেন) "বিকারগ্রস্থ মেনিচিয়বাদ" যা পশ্চিমা চিন্তাকে দূষিত করে। মেনিচিয় ধর্ম পৃথিবীকে দুভাগে পৃথক করে: আলোর শক্তি ও অন্ধকারের শক্তি। ইউরো-আমেরিকীয় সংস্কৃতি ধারণা ও মূল্যবোধকে যুগ্ম-বৈপরীত্য'র মধ্যে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে, প্রতি জোড়ায় থাকে একটি ধনাত্মক পদ ও একটি ঋণাত্মক পদ। মূল (সধংঃবৎ) জোড়া 'কালো বনাম সাদা'র ছত্রছায়ায় অন্যান্য যুগ্ম-বৈপরীত্য জরো থাকে। ফানো পরিসমাপ্তি টানেন: "নিগ্রোরা নিম্ন মর্যাদার মৌল আদর্শের প্রতিনিধিত্ব করে...ইউরোপীয় নির্জ্ঞানের দূরতম গভীরে একটি অত্যধিক কালো শূন্যগর্ভ তৈরি হয়ে আছে, যেখানে অতি নীতিবিরুদ্ধ মনোবেগ ও অতি লজ্জাকর বাসনা সুপ্ত হয়ে আছে (পৃ. 189-90)।"
1950 সালে প্রকাশিত একটি গ্রন্থের প্রতি ফানো ভীষণভাবে আকৃষ্ট হন। অকেটভ মানোনি ছিলের ফরাসি কলোনি মাদাগাস্কারের একজন মনস্তত্ত্ববিদ, এবং প্রত্য করেন 1947-48 সালে সংগঠিত ঔপনিবেশ-বিরোধী রক্তাক্ত বিদ্রোহ, এবং তিনি মাদাগাছি ও ঔপনিবেশি গোষ্ঠীর ব্যাক্তিত্বদের বিশ্লেষণ করে একটি বই লিখেন। বইটির ইংরেজি নাম, প্রস্পেরো এন্ড কেলিভান। এই বইটি মানিচিয়-চিন্তা বিষয়ে ফানোর নিজস্ব বিশ্লেষণকে আরো ব্যাপকতর করে। ফানো মানোনির দুটো প্রতিজ্ঞায় সায় দেন: প্রথমটি, "সভ্য" ও "আদিম" যখন পরস্পর সম্মুখীন হয়ে বিশেষ একটি পরিস্থিতি তৈরি করে_ ঔপনিবেশিক পরিস্থিতি_ যা মানুষের মানবীয় ধরনধারণ বদলে দেয় এবং মনস্তাত্তি্বক বিশ্লেষণের দাবি করে; দ্বিতীয়ত, "আদিম" মন উপলব্ধির অর্থ হল একজন মানুষের সাংস্কৃতিক বিশ্বাস ও চর্চার উপলব্ধি। তিনি তীব্রভাবে মানোনির অপর দুটো ক্রুটিপূর্ণ মৌল প্রতিজ্ঞা অস্বীকার করেন। ক্রুটিপূর্ণ প্রথম প্রতিজ্ঞা, "ইউরোপীয় সভ্যতা এবং এর প্রতিনিধিত্ব ঔপনিবেশিক বর্ণবাদের জন্য দায়ী নয়"; এবং অন্য ভাবে বলা যায়, "ফ্রান্স প্রশ্নাতীতভাবে পৃথিবীতে একটি কম বর্ণবাদী-মানসিকতার দেশ।" ফানো এই দুটো বক্তব্যে অসত্য ও নিষ্ঠুরতা খুঁজে পান। তিনি ঘোষণা করেন, "ঔপনিবেশিক বর্ণবাদ অন্য কোন বর্ণবাদের তুলনায় আলাদা নয়।" তাঁর মতে, "সকল অবয়বের অভিযান অভিন্ন কেননা সকলেরই একই ''উদ্দেশ্য বস্তু: মানুষ (পৃ. 88)।" মাদাগাস্কারে ফরাসি ঔপনিবেশিকায়ন "বাছবিছার না করে ত আরোপ করে (পৃ. 97)।" ফানো মনে করেন, ফরাসী জনগন সমগ্রভাবে "উত্তম প্রতিনিধিত্ব" করার অপরাধে সংশ্লিষ্ট, কেননা কোন জাতির নাগরিক সেই জাতির নামে সংগঠিত কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ি। ফানো আইমি সিঁজারের গ্রন্থ "ডিসকোর্স অন কলোনিয়ালিজম"এর সমর্থন টানেন। সেঁজার বলেন, নাজিবাদ নিয়ে এককভাবে জার্মানিকে দায়ি করলে চলবে না, দায়ি করতে হবে ইউরোপীয় সভ্যতাকে, কেননা নাজিবাদ উত্থানে ইউরোপীয় সভ্যতার আনুকুল্য ও উৎসাহ ছিল। ইউরোপিয় ঔপনিবেশিক ইতিহাস তৃতীয় রাইখের পথ তৈরি করেছিল: দূরবর্তী মানুষদের অসভ্য শোষন এমনকি সমূলে বিনাশ করার উদ্দেশ্যে ইউরোপ নিজেই অপ্রতিহতভাবে নির্যাতন ও গণহত্যা চালিয়েছে। এমনকি, হিটলারের মৃতু্যর পরও পৃথিবী জুড়ে সরকারিভাবে জারি করা বর্নবাদি চর্চার মাধ্যমে নাজিবাদ আজও টিকে আছে। ফানো সেঁজারের সাথে সহমত হন, পশ্চিমা রাজনীতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজে বর্ণবাদ, ঔপনিবেশবাদ, লোভ, যুদ্ধ একই লয়ে পরস্পরা সংবদ্ধ হয়ে আছে।
মানোনি'র দ্বিতীয় ক্রুটিপূর্ণ প্রতিজ্ঞা হল: "উপনিবেশ স্থাপনকারীরা সংশোধন করতে যেয়ে বাড়াবাড়ি করে ফেলা হীন জটিলতায় ভোগে।" অথবা ঘুরিয়ে বলা যায়, "সব মানুষই ঔপনিবেশিত হতে পারে না; তারাই পারে যারা এর দরকার [নির্ভরতা] অনুভব করে।" ফানো উপনিবেশিত ও উপনিবেশস্থাপনকারীর বিষয়ে মানোনীর এই গুরুভার মনস্তাত্তি্বক সাধারণীকরণকে প্রচন্ডভাবে আক্রমণ করেন। যদিও তিনি অনুমোদন করেন ঔপনিবেশিক তৎপরতার মাধ্যমে বাড়াবাড়িকরনের পদ্ধতি বিবেচনা। ফানো সরাসরি এই ধারণা নামঞ্জুর করেন যে ঔপনিবেশিক মানুষ হীনতর অনুভব করে। সম্পূর্ণরূপে বিপরীত প্রবণতা: সাধারণ কান্ডজ্ঞানে ল করা যায় অসংখ্য সাদা উপনিবেশস্থাপনকারি মানুষ তাদের সঙীন অবস্থা দমন করার জন্য চরম শ্রেষ্ঠতায় ভরসা রাখে। ফানো এখানে ফ্রয়েডের প্রথমদিকের সহকর্মী আলফ্রেড অ্যাডলার রেখাঙ্কিত "হীনত্ব জটিলতা"র বিদ্যাবুদ্ধি দিয়ে মানোনির সাথে তর্ক বাঁধান। মানোনি ঔপনিবেশিক হীনত্ব জটিলতা উপনিবেশকরন তৎপরতায় ব্যবহার করেন। তিনি বলেন মালাগাছির জনগন হীনতর অনুভব করে না কেননা তারা তাদের দেশে সংখ্যালঘু নয় এবং এর পরিবর্তে, তারা নির্ভরতা বোধ করে। এর বিপরীতে ফানোর ভাষ্য, ঔপনিবেশবাদের সব অভিমুখ উপনিবেশিতের অনুভবকে নিকৃষ্টতর করে। নিজের জন্মভূমির উল্লেখ করে, ফানো টিপ্পনি দেন যে এনটেলীয় জনগন সবসময় নিজেদের পরিমাপ করে 'অপর'এর অহং-আদর্শ দিয়ে, অর্থাৎ উপনিবেশস্থাপনকারি ফরাসীদের দ্বারা। নিজের সাথে এই আত্মবিচ্ছেদ কারণ যতটা না ব্যাক্তিগত অসুস্থতা বা ঘাটতি তারচেয়ে বেশি ঔপনিবেশিক সামাজিক পরিবেশ, যা স্নায়ুবৈকল্যের দিকে ধাবিত করে, তখন কালো মানুষেরা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে কে বেশি 'সাদা" স্বভাব ও মূল্যবোধ অনুকরণ করতে পেরেছে, কালো মানুষ "ঐতিহাসিকভাবে অনুভব করা হীনত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সন্ধান করে (পৃ. 213)।" উপরন্তু মানোনি বিস্মৃত হন যে, "সাদা মানুষের মাদাগাস্কার আগমনে শুধু এর দিগবলয় চূর্ণ হয়নি, হয়েছে মনস্তাত্তি্বক পদ্ধতিও (পৃ. 97)।"
ঔপনিবেশিক সংস্পর্শে মালাগাছির সংস্কৃতি সংস্পর্শ-পূর্ব প্রাক-ঔপনিবেশিক অবস্থার চেয়ে মৌলগতভাবে ভিন্নতর; মনস্তাত্তি্বক অবিচ্ছিন্নতা যুক্তি অর্থাৎ অনন্ত নির্ভরতার রীতি হল অলীক ও অনৈতিহাসিক। যদি মালাগাছি নির্ভরতা আচরণ দেখায়, ফানো বলেন, তা হল ঔপনিবেশিক পরিস্থিতির পরিণতি, এর নিজস্ব কোন কারণে নয়। মানোনি সেক্সপিয়ারের 'দ্য টেমপেস্ট' পাঠ করেন ঔপনিবেশিক রেখাঙ্কিত মানিচীয় ধাঁচে। ইউরোপে রাজত্ব-করা প্রতিযোগিদের তুলনায় প্রস্পেরো নির্বিঘ্ন নয়, সুতরাং সে নিজেকে একটি দ্বীপে সরিয়ে নেয়, যেখানে সে পরিপূর্ণভাবে কতর্ৃত্ব চর্চা করতে পারে। সেখানে প্রস্পেরো আদিম, অর্ধ-মানব কেলিভানের ওপর উৎপীড়ন চালাতে থাকে, সে সর্বণ মানসিকভাবে তটস্থ থাকে, তার ধারণা কেলিভান তার কন্যা মেরিন্ডাকে দর্ষণ করবে; যেমনি ভাবে সব পোষ্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয় এরা শুধু নিজ স্বার্থসাধনই করে না, বিশ্বাসঘাতকতাও করে। সেক্সপিয়ার এভাবে হেগেলীয় প্রভু-গোলাম সম্পর্কে পূর্বাশংকা করেন, একই সময় তিনি মানোনির হীনতা ও নির্ভরতা থিসিস সনি্নবিষ্ট করেন।
ফানো প্রতীয়মানভাবে চিন্তা করেন যে মানোনির "প্রস্পেরো জটিলতা" তুচ্ছ ও অপ্রাসঙ্গিক ব্যাপার: একজন উপনিবেশস্থাপনকারির ব্যক্তিগত মুদ্রাদোষ তার কর্মোদ্যোগের চেয়ে অনেক কম এবং এর পরিণতিও। খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেলিভানের মনস্তত্ত্ব এবং উপনিবেশস্থাপনকারি ও উপনিবেশিতদের মধ্যকার সম্পর্ক। দ্য ব্লাক স্কীন হোয়াইট মাস্ক্স গ্রন্থে ফানো হেগেলকে সরাসরি প্রতিপ হিসাবে নেন, তাঁর প্রভাবশালী প্রভু-গোলাম দ্বন্দ্ব (ডায়ালেক্ট) ঔপনিবেশবাদের প্রেেিত তিনি পুর্নলিখন করেন। হেগেল এই দ্বান্দ্বিকতা সংজ্ঞায়িত করেন স্বীকৃতির আবর্তে। অন্য অর্থে, প্রভু তার আত্মপরিচিতি বরণ করে, প্রভু হিসাবে গোলামের ওপর প্রভু হয়ে, সে এভাবে উচ্চতর স্তরে অবস্থান করে প্রভু হয়ে এক ধরনের মতা চর্চা করে; গোলাম তার মানবীয় আত্মপরিচিতি বরণ করে প্রভুর কাছ থেকে নিজের স্বাধীনতা বন্ধক রেখে, সে এরূপ বাসনা করে এবং এর মাধ্যমে নিজেকে সংজ্ঞায়িত করার ইচ্ছাপ্রকাশ করে। বাসনা স্বীকৃতি দাবি করে, এবং পারস্পারিক স্বীকৃতি প্রভু/গোলাম সম্পর্ক ভেস্তে দিতে পারে, উৎপন্ন করতে পারে মুক্ত সংশ্লেষণ। কেলিভান, দ্য টেমপেস্টে সত্যিকার অর্থে কখনো মুক্ত ছিল না। ঘৃনার নিগড়ে শৃঙ্খলিত ছিল, সে সবসময় মানসিক দাসত্বের অবস্থায় ছিল, এমনকি ইউরোপিয়রা তার দ্বীপ ছাড়ার পরও। একইভাবে, বাস্তব দ্বীপ যেমন মার্টিনিকু, কালো মানুষ মানসিক মুক্তি অর্জনের সাফল্য পায়নি। এর কারণ, ফানো বিশ্বাস করেন, প্রভু শুধু তার গোলামকে কৌশলগত স্বাধীনতা দেয়: মানবজগতে কোন পারস্পারিক স্বীকৃতির ব্যাপারস্যাপার নেই, আছে শুধু রাজনৈতিক উপযুক্ততা; নিজের স্বার্থ ও সুবিধা। মানসিকভাবে মুক্তি তেমনি বলা যায় শারীরিকভাবে মুক্তির েেত্র, নিজের স্বাধীনতার প্রাপ্তির জন্য একজনকে অবশ্যই সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
'ব্লাক স্কীন হোয়াইট মাস্ক্স'এর পরিসমাপ্তিতে ফানো নিজস্ব সংযত সার-তত্ত্বে কিছু আপাত স্থিরকৃত সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করেন। ফানো'র পেশাগত চর্চার স্থান ছিল আলজেরিয়া, তিনি আলজেরিয় বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং তৃতীয় বিশ্বের মুক্তি নিয়ে তাঁর ক্রমবিকশিত দর্শন, দৃঢ়প্রত্যয় প্রমান করে যে স্বাভাবিকভাবে ঔপনিবেশবাদ অবলুপ্ত হয় না। এর অবশ্যই বিলুপ্তি দরকার, তাহলেই ফলপ্রসু স্বাধীনতা জন্ম নিতে পারবে। আপাতদৃশ্যমানভাবে পৃথিবীর কোথাও আর উপনিবেশ নেই, কিন্তু একটু গভীরে প্রবেশ করলেই উপনিবেশের প্রলম্বিত রূপ প্রত্য করা যায়। যাকে কেউ কেউ বলে থাকেন নয়া-ঔপনিবেশবাদ। এর থেকে মুক্ত হবার প্রক্রিয়ায় বি-উপনিবেশিকরণ চলছে, উত্তর-ঔপনিবেশবাদি পণ্ডিতি আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছে। এই সব সচেতনতায় ফানো পাঠ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে কথিত 'অপর' মানুষদের মনস্তত্ত্ব বুঝতে 'ব্লাক স্কীন হোয়াইট মাস্ক্স' অবশ্যই পঠনীয় ও চর্চিত বিষয়বস্তু। সবশেষে গ্রন্থের সর্বশেষ বাক্য উল্লেখ করতে চাই:
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭


ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

পহেল গাঁয়ে পাকিস্থানি মদদে হত্যাকান্ডের জন্য ভারত পাকিস্থানে আক্রমন করে গুড়িয়ে দেয় , আফগানিস্থান তেহেরিক তালেবানদের মদদ দেওয়ার জন্য, পাকিস্থান... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×