মহাসংকটে পড়েছে ১৮ দলীয় জোটের দ্বিতীয় প্রধান শরিক দল জামায়াতে ইসলামী। দলের নিবন্ধন বাতিল, একের পর এক দলের শীর্ষ নেতার ফাঁসি বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড, সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে তালা- এ অবস্থায় ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে আর চলছে না দলের কার্যক্রম, মামলার কারণে প্রায় সব নেতা-কর্মী আত্মগোপনে, চলছে চরম নেতৃত্ব সংকট।
এদিকে নিবন্ধন বাতিল হলেও রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে বাঁধা নেই জামায়াতের। তবে ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’ এর বদলে অন্য নামে। নেতৃত্বেও আসবে আমূল পরিবর্তন। গোপনীয় এক সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতের আগামী দিনের সংকট উত্তরণের বিকল্প উপায় হিসেবে নীতি-নির্ধারক পর্যায়ে দলের নাম পরিবর্তনের বিষয়টিই গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা হচ্ছে। নতুন এদলের নেতৃত্বে থাকতে পারেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। তিনি মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের আইনজীবীও বটে।
এ সব বিষয়ে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের সদর দপ্তরে পাঠানো একটি গোপন তারবার্তা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত উইকিলিকস। এতে ফাঁস করে দেয়া হয়েছে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টির কথোপকথন।
ওই তারবার্তায় বিশেষ পরিস্থিতিতে দলের নাম পরিবর্তন করে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার পরিকল্পনা জানান আবদুর রাজ্জাক।
এছাড়াও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামরুজ্জামানের একটি গোপন চিঠিও প্রকাশ করেছে উইকিলিকস।
২০১২ সালে ‘পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নতুন কর্মকৌশল গ্রহণ- সময়ের দাবি’ শিরোনামে ওই চিঠিতে তিনিও দলের নামপরিবর্তনসহ তিনটি সংস্কারের কথা বলেন।
নতুন কর্মপন্থা হিসেবে তিনটি প্রস্তাবের মধ্যে ছিল -
এক. জামায়াত যেমন আছে তেমন থাকবে।
দুই. জামায়াত পেছনে থেকে একটি নতুন সংগঠন গড়ে তুলবে।
তিন. যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হচ্ছে তারা নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াবে এবং সম্পূর্ণ নতুন লোকদের হাতে জামায়াতকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার আদালত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে দিয়েছে। আগামীতে সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপও নিতে পারে। তাই রাজনীতিতে জামায়াতের টিকে থাকার কৌশলটি অল্প দিনের মধ্যেই স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর জিয়াউর রহমানের শাসন থেকে সব দলের মত প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পায় জামায়াতে ইসলামী।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতাদের বিচার শুরুর পর থেকেই রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ হওয়ার শঙ্কা ভর করে দলটির নেতাদের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার আদালতের রায়ে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পর জামায়াতের সামনে ওই পথটি বেছে নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানা যায় দলের শীর্ষ নেতারা।
সূত্র এখানে

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




