প্রথম পর্বের লিংকঃhttp://www.somewhereinblog.net/blog/bohubhuj/29399084
ভদ্রলোক কথা বলেন অত্যন্ত উচ্চ কন্ঠে। উনি শুধু কথা বলেন-কারো কথা শোনেননা।দ্বিতীয়ত, ওনার কথা শোনতে হবে ওনার মুখের দিকে তাকিয়ে। আমি ওনার কথা শুনছি ঠিকই কিন্তু যখনই আমি সামনের দিকে তাকাই ভদ্রলোক আমার গালে হাত দিয়ে নিজের দিকে আমার মুখ ফিরিয়ে কথা শোনান।আমি অল্প অল্প ভদ্র মানুষ-তাই বিরক্তি চেপে যাই।
২৬ সীটের ভাংগাচোড়া মিনিবাসে আমরা ৬০/৭০ জন যাত্রী। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের কাছাকাছি ট্রাফিক জ্যামে আটকে আছি অনেকক্ষণ যাবত। গরমে সেদ্ধ হয়ে যাচ্ছি। যাত্রীরা চিক্কার চেচামেচি করছে, ড্রাইভারকে গালাগাল করছে। ড্রাইভারও চিৎকার করে বলছে- "দ্যহ্যেন্না, হারা রাস্তায় জ্যাম আটকাইচে।আমি কি আকাশ থেইক্যা গাড়ি উড়াইয়া নিয়া যামু?" আমার পাশের ভদ্র লোক চিৎকার করে বললেন-"এই ড্রাইভার, মুবাইল করো, মুবাইল করো-আমার মুবাইল আছে"। আমি হাসি চেপে রাখলেও চ্যাঙ্গড়া কন্ডাকটর বললো-"চাচা, কার কাছে মুবাইল করবে, চাচীর কাছেনি?" এবার ভদ্র লোক আমাকে বললেন-"দ্যাখলেন্তো কি বেদ্দপ পোলা! আমার ছেলেতো আমি কতা বইললে 'রা' করতো না"! আমি বলি-আসলেই আপনার ছেলেটা ভালো।
বাস চলতে শুরু করলো। ভদ্র লোক এবার শুরু করলেন-"মোহাম্মদ আরিফুর রহমান লায়েক হইচে, বিয়া করান দরকার। পুতের মায় হের বইনের মেয়ে বিয়া করাইতে চায়। আমি রাজীনা।"
আমি প্রশ্ন করি-কেনো রাজীনা? ভদ্রলোক-"ঐ মেয়ে ঢাকা থাকে। সাভারে গার্মেন্টে চাক্রী করে-আদব লেহাজ সুবিদারনা। চৌক ফুইড্ডা গেছে। পোলার বিয়া করামু গ্রামের মাইয়া।তয় টাউনের মাইয়া পুরা বাদ্দিনাই-যতি ভাল মাইয়া পাই তয়লে টাউনের মাইয়াও করাইতে পারি। আচ্ছা বাবা, আপনার বইন টইন নাই"?
এতক্ষনে আমরা কেউ কারো পরিচয় একবারো জানতে চাইনি।আমি রাসেল স্কয়ার নামবো। নেমে যাবার সময় ভদ্র লোক চিৎকার করে বল্লেন-"বাবা, মুবাইল কইররেন, মুবাইল কইররেন.."
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




