পথ চলতে.......৩
গাবতলী-আজিমপুর রুটের যাত্রীরা জানেন এই রুটের মিনিবাসগুলো কতো ভাংগাচোড়া, নোংড়া।সেই সংগে এই মিনিবাসের ড্রাইভার, কন্ডাক্টর হেল্পারেরাও অত্যন্ত নোংরা। যাত্রীরাও বেশীরভাগ দোকানের ফুটফরমায়েশ খাটা কর্মচারী,লেবার শ্রেনীর। আবার সকাল বিকেলে প্রচুর ড্রেস পড়া স্কুল কলেজ ছাত্র ছাত্রীর ভীড় থাকে।
লক্ষ করে দেখেছি মেয়ে ছাত্রী যাত্রীরা ধাক্কা ধাক্কী করে উঠেও বসাতো দুরের কথা, দাড়াতে নাপারলেও সঠিক ভাড়া দেয়। দোকানী, লেবার শ্রেনীর যাত্রীরা হাউকাউ করেও আরো ত্যাদোর কন্ডাক্টরের ঝাড়ি খেয়ে সঠিক ভাড়া দিতে বাধ্য হয়। অন্য সব স্কুল কলেজের ছাত্ররা সঠিক ভাড়া দেয়। সমস্যা করে ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। ওরা বেশীর ভাগ সময়ই ভাড়া দিবেনা। যিদিও দেয়-তাও দুইটাকার পুঁতিগন্ধময় নোট। এই ছাত্রদের কথা বার্তার ধরনই আলাদা। দুইটাকার নোটটি কন্ডাক্টরের হাতে ধরিয়েই বলবে-"ঢাকা কলেজ"। এক্ষেত্রে কিন্তু ঘাড় ত্যাড়া কন্ডাক্টর হেল্পারেরা চুপ চাপ থাকে এবং বাড়তি "মামা" সম্বোধন করে!
একদিন এক ছেলের কাছে ভাড়া চাইলে ছেলেটি ঢাকা কলেজের ছাত্রটির মতো দুইটাকার নোট হাতে দিয়ে বলে-"ঢাকা কলেজ"। কন্ডাক্টর বলে-"কাট দেহান"। ছেলেটি বলে-"তুই কার্ড দেখার কেডা? তুই কার্ডের বোঝোস কি?" কন্ডাক্টর আরো মেজাজ খিছিয়ে বলে-"কাট নাদেহাইলে ৬ ট্যাহা ভাড়া দেন"। এরপর দুই পক্ষেই তুমুল ঝগড়া এবং হাতাহাতির পর ছেলেটি ৬ টাকা দিতে বাধ্য হলো। নামার আগে কন্ডাক্টরকে বলে-"গাড়ি ঘুড়াইয়া আয় আইজ তোর টেংড়ি ভাংমু"।
ছেলেটি নেমে যাবারপর আমি কন্ডাক্টরকে বলি-৪ টাকার জন্য ঝামেলা বাধালি? কন্ডাক্টর বলে-"ভুয়া ঢাকা কলেজ। আম্রা চিহারা দেইক্কাই বুজি কেডা ঢাকা কলেজ আর কেডা ভুয়া।ঢাকা কলেজের ছাত্ররা কোনু সুময় আমাগো তুই কইরা কয়না-হেরা আমাগো সব সুময় 'মামা' কয়। হেরা রাগ অইলে গাড়ি ভাংগে কিন্তু আমাগো গায় হাত তোলেনা"।
মনে মনে ভাবি-আহা! ঢাকা কলেজের ছাত্র মানেই বিনে পয়শায়/ দুইটাকায় আসা যাওয়ার সুখ ৬/৭ বছর আগেই হারিয়েছি!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৩৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




