somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয় পররাস্ট্র মন্ত্রীর প্রতিঃ বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মরণ ফাঁদ বন্ধ করতেই হবে এখনই।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কে দিল ওয়াইট হাউজের পেইজে বাংলাদেশ ১৯৭১ নিয়ে পেটিশন? সাধারণ মানুষের আবেগ নিয়ে নোংরা রাজনীতি খেলছে কোন রাজাকারের বাচ্চা?
Click This Link

Express solidarity with the protesters in Bangladesh who are seeking justice for the war crimes of 1971
উপরের এই শিরোনামে দেয়া হয়েছে একটি পেটিশন ইউ এস সরকারকে জানিয়ে ওয়াইট হাউজের সাইটটিতে। শিরোনামটির বিশ্লেষণে যদি যাই তাহলে পাওয়া যায় – ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীর বিচারের জন্য প্রতিবাদীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করুন। খুব সুন্দর কথা – কিন্তু সংহতি প্রকাশ করতে হলে আমেরিকার সরকারের প্রশাসনের পেইজে কেন? যদ্দুর জানি ওই পেইজটি হল বারাক ওবামা সরকারের আভ্যন্তরীণ বিষয়ক – বা আমেরিকার জনগণের জন্য। বাংলাদেশ কি আমেরিকার অংগরাজ্য? নাকি বাংলাদেশের জনগণ আমেরিকার নাগরিক? তাহলে আমেরিকার প্রশাসনকে সংহতি জানানোর আহ্বান কেন? আমাদের বাংলাদেশের প্রশাসন যখন আছেই তখন এরকম উদ্ভট কথা কার মাথা থেকে আসতে পারে? যদি আমাদের প্রশাসনের উপর অন্যদেশের প্রশাসনকে নাক গলাতে দেয়া হয় তখন কি দেশ মিশর-ইরাক-আফগানিস্থানের মত অবস্থার দিকে যায় না? অতএব এই প্রচার কি কোন বাংলাদেশীর জন্য টেকনিক্যালি দেশদ্রোহীতা নয়?

ক’দিন আগে ক্লাস এইট পাস করা রাজাকারের বিষ্ঠা খাওয়া এক মহিলা আমেরিকার প্রশাসনের কাছে গিয়ে দেশের সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করে আসছেন। তিনি এমনই নালিশ করেছেন যে তিনি যেন কোনদিন সরকার গঠন করেন নাই, তিনি যেন পরিবারতন্ত্র বুঝেন নাই। তার কিছু মুরিদও আছে যারা একই পথে রাজাকারের বিষ্ঠা খাওয়ার জন্য লাইন ধরে। তাদের মধ্যে কি কেউ এই কাজ করতে পারে?

কেন আমি এটার গুরুত্ব দিচ্ছি? কারণ হল এটাতে হুদাই বাংলাদেশকে নিয়ে গুতাগুতির প্রশ্ন আছে। এটা তোলা হয়েছে – সিভিল রাইটস এন্ড লিবার্টিস, ফরেন পলিসি ও হিউম্যান রাইটস বিভাগে। এটা একজন বাংলাদেশী যার নামের অক্ষর এস আই দিয়া হয়ত ডিবি পাইয়া আমেরিকান সিটিজেন হইসেন, তিনি খুলছেন এই পেটিশন। আরও মজার বিষয় হল, আমেরিকার সিটিজেনদের এই অপশনে ১,০০,০০০ ভোট হলে বারাক ওবামা নিজেই এ বিষয়ে কথা বলবেন। তাহলে এই ইস্যুটাতে বিপুল ভোট এলে বারাক ওবামার কথা বলতে পারে। কিন্তু বারাক সাহেবের কি এমন বলার আছে?

একটা গপ্প বলি, ধরে নিন মালদ্বীপ আর জার্মানীর জাতীয় ফুটবল টিমের খেলা হচ্ছে। সবাই জানে জার্মানী জিতবে – কিন্তু খেলা শুরুর প্রথম ১ মিনিটে একটা গোল মালদ্বীপের জাতীয় দল করে দিল। এখন যদি দর্শক বলেন, আরে ধুর একটা গোল হইসে তো কি – জার্মানী ১০০টা গোল দিবে বা মালদ্বীপের এই গোল হিসাবে না আনলেই হল – তাহলে কিন্তু হল না। যত সময় যাবে – জার্মানীর গোল পরিশোধ না করা পর্যন্ত মালদ্বীপের ওই গোল কিন্তু কাউন্ট করতে হবে, সময় কিন্তু তাই কাউন্ট করবে। ঠিক একইভাবে – পেটিশন যখন হয়ে গেছে, রিমুভ করার আন্দোলন না কইরা ঠিক করি বারাক সাহেবরে কি জবাব দেয়া যায়? কারণ প্রতি মুহুর্তে সাইন হচ্ছে। শেষ দেখলাম (৬,২১০)। ১৫ই মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে তাই হাতে সময়ও আছে। একইভাবে - আমাদেরও ফরেন পলিসি আসে। আমাদেরও জবাবের মুখ আছে। তাই বারাক সাহেবরে কইয়া দিতে হবে – এই বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চা হয় বলেই বাংলার জনতা ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীর বিচার চায়। বাংলাদেশের মানুষ মানবতাবাদী বলে নিজেরা আইন হাতে নেয় নি, ৪২ বছর ত্যাগ তিতিক্ষায় অপেক্ষায় থেকে শেষে এই ট্রাইবুন্যালকে সম্মান জানিয়েছে, আস্থা রেখেছে। বিচারের রায়ে সন্তুষ্ট হয়নি বলে আজ টানা ১০ দিন শাহবাগ মোড়ে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। ফাঁসির দাবি চেয়েছে, বিন লাদেনের মত বা গাদ্দাফির মত খুঁজে বের করে গুলি করতে চায় না। আজ বিন লাদেনকে আমেরিকায় পেলে কি সেখানের জনতা ফাঁসির দাবি করত না? জনতা যদি সকল ক্ষমতার উৎস হয়, আর এটাই যদি গণতন্ত্রের মুল কথা হয় – তাহলে জনগণের দাবিকে জনগণের রায় হিসেবে মানতেই হবে, রাজাকারদের ফাঁসি হতেই হবে। ইসলাম নিয়ে জঙ্গীবাদের বীজ বসানো হয়েছে এদেশে তা সমূলে উৎপাটনের জন্য বীর বাঙালী একটা জাতিই যথেষ্ট।

আমার মনে হয় এ কথা গুলা শুধু আমাদের দেশেই নয় বিদেশেও প্রচার করা উচিত, হাফিংটনপোস্টে লেখা উচিত। বারাক সাহেব নাক গলানোর সুযোগের আগে লজ্জা দেয়া উচিত। তাহলে যিনি এই পেটিশন বানিয়েছেন তাকে বারাক সাহেব ডেকে বলবেন, “তোমার ইউ এস নাগরিকত্ব পছন্দ না হলে তুমি যাও গিয়া – ওই দেশে যাইয়া মুড়ি খাও, হুদাই আমাদের এইহানে আজাইরা ভ্যাজাল আইনো না।”

ওই পেইজে দেখবেন – আমেরিকার ফরেন পলিসিও দেয়া আছে। ওটাতে তারা অন্যদেশকে গুতিয়েছে তাও দেয়া আছে। তবে কথা হল কখন আমেরিকা গুতায়? যখন আমেরিকার ইস্যু হয়। আমার মনে হল (ভুলও হতে পারে) –
১) আমেরিকার নাগরিক ও ইমেজের জন্য অন্যদেশ হুমকি বা সমস্যা বা সুবিধা - তাই তারা মাথা ঘামায়,
২) আমেরিকার কোন নাগরিক অন্যদেশে আছে ঝামেলায় – তাই তারা মাথা ঘামায়।
কিন্তু এটা জানি না - অন্যজাতি হতে আগত আমেরিকার নাগরিক হলে (ডুয়েল পাসপোর্টধারী) সে যদি তার আগের দেশের যেকোন বিষয় আমেরিকার প্রশাসনকে জানালে তা নিয়ে আমেরিকা মাথা ঘামায় কি না?

ওই পেইজে সিভিল রাইট নিয়ে আছে। তবে আমেরিকার সিভিল রাইটের সাথে আমাদের সিভিল রাইটের কোন প্রসংগকে যৌক্তিক মনে করি না।

এটা নিয়ে আমার মত আরও অনেকেই মনে মনে জ্বলছেন, অনেক শাহবাগের ভাই-বোনেরাও। কারণ একাত্মতা প্রকাশের কথা বলাতে যখন আমি এই পেইজটি ভোট ও শেয়ারের কথা পাই ফেইসবুকে তখন পুরোটা না পড়ে – আবেগের বসে নিজেই সাইন করি আর অন্য অনেককেই উৎসাহিত করি। আমাদের আবেগকে নিয়ে যারা নোংরা রাজনীতি করেছে তাদের উচিত শিক্ষা হবে ওই সব রাজাকারদের ফাঁসিতে। আমি এটাও জেনেছি জামাতি জ্ঞানপাপীরা কিছু সাইট বানিয়েছেন ‘রাজাকারের ফাঁসি চাই’ টাইপের, যেখানে মানুষ নির্দ্বিধায় সাইন আপ করবে আর নাম ঠিকানা নিজ থেকে দেবে আর তাদের বাসায় গিয়ে গিয়ে তাদের হত্যা করবে। ঠিক ১৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর মতন।

এদের বিরুদ্ধে কি করা উচিত মাননীয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়? আরো কি দেরী করা উচিত হবে? আরো কি সুযোগ দেয়া উচিত হবে?

ধন্যবাদ
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×