১) বরাত নিয়ে ন্যায় অন্যায় কেন? তাহলে কি বরাতে লেখা হবে পরের বছর কে কে কি কি অন্যায় করবে আর কি কি শাস্তি পাবে? বা কোন কোন দুর্নীতিবাজেরা মুক্তি পাবে? কার কপালে লেখা হবে শত ভাল কাজ করার পরেও কোন পুরস্কার পাবে না? বরাতের বিশ্বাস করাটা কি রাশিফলের বিশ্বাসের মত হয়ে গেল কিনা? এই মাল্টিলজিকের যামানায় শবে বরাত পালন করাটায় আবার অন্যায় হয়ে গেল কিনা?
২) শাবান মাসের মধ্যরাতকে কেন্দ্র করে শবে বরাতের উৎপত্তি। হাদিসে ও সাহাবাদের চর্চায় এই রাতের গুরুত্ব পালন হয়ে আসছে। পালন হয়ে আসছে আমাদের গণসমর্থিত পরিবারতন্ত্রের বাংলাদেশে। এই রাতে হালুয়া রুটি খাওয়া হয়। প্রতিবেশীর বাসায় পাঠানো হয়। দূরে কাছের আত্মীয়রা কাছে আসার সময় সুযোগ পায়। সামাজিক সম্প্রিতী বাড়ে। পাড়ায় পোলাপাইন বাজি ফুটায়। মাজারে মাজারে মানুষজন যায় – জিয়ারাত করে। মাজার-মাসজিদ আমন্ত্রণ-সুলভ-বেশে সাজানো হয়। শবে-বরাতের আলাদা সলাহ ও মিলাদ শেষে সিন্নি-জিলাপী বিতরণ করা হয়। আর তা হাত পেতে যে গরীব শিশুটি নেয় তার খুশীর চাইতে পবিত্র দোয়া যেন আর কিছুই হয় না। সবখানেই উৎসব, সব ঘরে আমন্ত্রণ, সবাই আজ যেন মেহমান, সবার জন্য আজ ফরিয়াদ করার দিন – আজকের রাতে একাকি আল্লাহর কাছে নিজেকে নিভৃতে স্বীকার করার সুযোগ। এই সুযোগ মানুষ চাইলে ইচ্ছামত নিতে পারেনা – যদি মানুষের ঈমান এতটাই শক্তিশালী হত তাহলে সলাহ-রোজা-হাজ্জ্ব-যাকাত এর মত প্রচলন আসত না। আর মানুষ যাতে গুনাহ করার জন্য যে লজ্জা বা অনুতাপ ভোগ করে - তা যেন সে সহজভাবে নিতে পারে - তার জন্য ধর্ম নিজেই উৎসবমুখর আয়োজন করে – এই বার্তা দিয়ে যে “ আপনি যেহেতু মাফ চেয়ে ফিরে এসেছেন, তাই আসুন আপনাকে মেহমানের মত বরণ করে ভাই বলে বুকে জড়িয়ে ধরি”। উৎসবের দিক থেকে - ঈদ মুহহাররামের মত - শবে বরাত তাই ব্যাতিক্রম কিছু নয় – এটা নাজাত আশা করার রজনী বলতে পারেন।
৩) কিন্তু কিছু মানুষের কথা এই বছরের এই মাসে দেখছি - ফেইসবুকে - যে শবে বরাত বে’দাত। এটা পালনে সাবধান বাণীও দেয়া হয়েছে। ডঃ জাকির নায়েকের ছবিও টাঙ্গানো হয়েছে, আরো বিশ্বাস করানোর জন্য ‘আলেম ওলামা’ শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে যেখানে আলেম ওলামার পরিচয় দেয়া হয়নি, বা অনেক রেফারেন্স টানা হয়েছে যা সাধারণ মানুষ কখনও পড়েনি, সব মিলিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে তুলেছে এতদিনের পালিত এই পবিত্র-রজনীকে নিয়ে। অনেকে বলেছেন দুর্বল হাদিসে আছে এই রজনীর কথা – সবল হাদীসে নেই। অনেকেই বলে ফেলেছেন সরকার কেন এই বে’দাত দিনে ছুটি ঘোষণা করলেন। তাদের এই যুক্তি না মানায় অনেকে ঈমানহীন-নাস্তিক-মুরতাদ বলে গালিও দিয়ে ফেলেছেন। হুমকিও দিয়ে দিয়েছেন অনেকে শবে বরাত পালন করলে তারা নিজ হাতে কত কি করে ফেলবেন। তখন আসলে সন্দেহ হয় –তাদের এই আচরণ তাদের মুসলিমীনের পরিচয় বহন করে কিনা? ইসলামের সুন্দর আকীদাকে কলুসিত করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপব্যাবহার করা হচ্ছে কি না? কারণ মুসলমান তো বিনয়ী হবার কথা, পবিত্র আল-কোরানের মত সুসংবাদ দেবার কথা।
৪) ইসলামে অনেক কিছুই আছে যার সব কিছু রাসুল (সাঃ) করে যান নি। সবকিছু খলিফা-সাহাবা একরামরা করে যাননি। কিন্তু অনেক কিছুই পালন হয়, যা পালিত হলে ইসলাম পরিপন্থী নয় উল্টো ইসলাম বান্ধব হয়ে ওঠে। উদাহরণ দিতে পারি সলাতুত তারাবীহ এর ক্ষেত্রে। রাসুল (সঃ) কখনো আট-বারো-ছয় এরকম জোর সংখ্যায় তারাবীহ পড়ে গেছেন কিন্তু কখনও বলে যান নি কুড়ি রাকাত করে পড়তে হবে। আমরা এটাও জানি সুন্নাহ এর উপর ওয়াজীবের স্থান। অর্থাৎ ফরয – ওয়াজীব – সুন্নাহ – নাফল – এই ক্রমান্বয়ে আসছে। তাহলে রাসুল (সাঃ) এর ওফাতের পর কিভাবে খলিফা হযরাত উমর কুড়ি রাকাত সলাহকে তারাবীহ গুরুত্বে এনে সুন্নাহ এর উপর ওয়াজীব প্রতিষ্ঠা করলেন? এটাকে কি তাহলে বে’দাত বলবো (যেহেতু রাসুল(সাঃ) বলে যান নি)? আবার ধরুণ রাসুল (সাঃ) এর যামানায় তো মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাই হয় নি; তাহলে মাদ্রাসা অন্যায়, বা প্রচলন ঘটানো উচিত নয় – কথাটা কি মানায়?
৫) এবার আসুন ইসলাম ও মুসলিমদের কথায়।
ক. হুজুর (সাঃ) এর কিছু হাদিস দুর্বল তাই তাদের বে’দাত বলে মানবো না - বলাটা কিন্তু হুজুর (সাঃ)কেই বে’দাত বলা (নাউজুবিল্লাহ)। তাই ইসলামিক কথা আসলেই তা আপনি গ্রহণ করার আগেই সতর্ক হোন যে এটা আপনাকে বোকা বানাচ্ছে কিনা বা আপনার পবিত্র ধর্ম অনুভুতিকে নিয়ে খেলা করছে কিনা। হুজুর (সাঃ) কখনও কোথাও বলে যান নি যে – ওনার অমুক বাণী দুর্বল বা তমুক বাণী সবল। এ ধরণের কথা যারা বানায় তারা হুজুর (সাঃ) কে নিয়েই তাচ্ছিল্য করছেন যেটা সরাসরি কুফরী।
খ. আলেম ওলামা মানেই যে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে ভাল মানুষ তা মনে করাটা কিন্তু আরেকটা বোকামী। কারণ এমফিল – পিএইচডি বা ডক্টরেট ফেলোশীপ ডিগ্রীর মতই ওলামা আল্লামা ডিগ্রী। যিনি ডিগ্রীধারী তিনি মানুষ। আর মানুষ মাত্রই ভুল করতে পারে – শয়তানের পাল্লায় পড়তেই পারে। কোথাও লেখা নাই যে যিনি আল্লামা তিনি শয়তানের পাল্লায় পড়বেন না। এমনও হতে পারে যে - কোন আলেম তার থিওরী বই বিক্রির জন্য বা তার টিভি চ্যানেল চালানোর জন্য বা অনেক বেশী জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য - এমন একটা বিতর্কিত কথা তুললেন যার জন্য আপনি আমি ইসলামের সরল পথ ছেড়ে তার মুরতাদী ফাঁদে পা দিচ্ছি আর আল্লাহর লানাৎ গুনছি। মনে রাখবেন – লোভী ধনী মানুষের যক্ষের ধন বানাতে যেমন যে কোন কিছু করতে পারে, তেমনি লোভী জ্ঞানী মানুষ তার অমর-জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্যও যে কোন নীতিকে বিসর্জন দিতে পারে। আপনি আমি কি সেই তালে তালে গিনিপিগ হচ্ছি কিনা সেটা খেয়াল করতে হবে।
গ. ইসলামে গবেষণা আসবে হবে। তার জন্য আলোচণা হবে। যুক্তি উপস্থাপন হবে, বিতর্ক হবে – তাই বলে বিতর্কিত কেন হবে? প্রমাণ রাখা হবে। ইসলাম পরিপন্থী কিনা সেটা আগে বের করা হবে – পরিপন্থী হলে সবিনয়ের সাথে সবাইকে জানানো হবে। কেউ মানতে না চাইলে বার বার আমন্ত্রণ-দাওয়াত করতে হবে। কেউ রেগে গেলে তাকে ক্ষমা চেয়ে আবার আমন্ত্রণ সুলভ আচরণ করতে হবে। আর এ সমস্ত কাজ করতে হবে প্রচন্ড ধৈর্য্যের সাথে বিনম্রচিত্তে। কোন হুমকি জোর-জবরদস্তি করলে সেটা আর ইসলাম থাকবে না। জোর করে ধর্মান্তর করা হলে সেটা আর ধর্ম হবে না – হয়ে যাবে জুলুম। লোভ দেখিয়ে ধর্মান্তর করলে তা হবে পাপ সওদা। আর এই দুই কাজই কুফরী।
ঘ. ইসলামকে রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জনের টুলবক্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। এটা যারা করছেন তারা বুঝতে পারছেন না যে আল্লাহ তা’আলা তাদের বিরুদ্ধে নিজেই কি রকম ষড়যন্ত্রকারী। আল্লাহর মহানুভবতাই হল ভুলপথ থেকে ফিরে আসার সুযোগ দেয়া। এটাকে অনেকেই ভাবেন আল্লাহ কিছুই করেন না (নাউজুবিল্লাহ)।
ঙ. কিছু ব্যাপার দেখেই বোঝা যায় যে এগুলাকে সরাসরি পরিহার করতে হবে।
যেমনঃ
১] ‘সাবধান হোন শবে বরাত সম্পর্কে’ – শবে বরাত নিশ্চয়ই কোন ১০ নম্বর সিগনাল ঝড় নয় তাই না?
২] ‘দুর্বল হাদিস’ - হুজুর সাঃ কে নিয়ে ঠাট্টা করাটাই নাস্তিকতা।
৩] ‘অমুক দল বা লীগ বা পার্টি করে তাই আপনারা করবেন না’ – এটা সম্পুর্ণ রাজনৈতিক চাল। আপনি হয়ত একটা রাজনৈতিক দলকে পছন্দ করেন – তাই বলে আপনার ধর্মনীতিকে অপব্যাবহার করতে পারেন না। মনে রাখবেন – সকল ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর। আল্লাহ যাকে চান তাকে ক্ষমতায় বসান – একইভাবে যাকে চান তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেন। তাই ক্ষমতার বিষয়ে আল্লাহকে ভয় করুন, এইজন্য যে ক্ষমতার মোহে আপনি কোন অহংকার করে ফেলছেন কিনা। অহংকারী মানেই সীমালংঘনকারী, আর তাকে আল্লাহ পছন্দ করেন না।
৪] ‘যারা এই কথা মানবে না তারা নাস্তিক মুরতাদ’ – এটা মানেই হল আপনাকে বাধ্য করা হচ্ছে। সমাজে দাঙ্গা বিশৃংখলা বাধানো হচ্ছে। তাই এদেরকে পরিহার করুন। বলা উচিত ছিল – ‘যারা এই কথা মানেন না - তাহলে আসুন। আমারো তো ভুল হতে পারে। ভাই ভেবে - দুটো কথা বলে নিজেরা আলোচণায় দেখি আমরা সঠিক পথে আছি কিনা?’
৬) শবে বরাত শব্দটি ফারসী। একটা কথা বুঝতে হবে ধর্মকে মানুষ পালন করবে আপন করে, যার যার সংস্কৃতির আলোকে এবং এ পর্যন্ত যা পালন হয়ে আসছে তার মধ্যে কোন অসম্মান দেখা যায় নি। শুকনা রুটি আরবীয় খাবার, এবার এর সাথে যোগ করা হালুয়া যেন ইরান-পাকিস্থান মনে করিয়ে দেয়। আরবের সংস্কৃতি তো ইসলামে থাকবেই, ইরানীদের ক্যালীগ্রাফি তো আরবী বর্ণের সৌন্দর্য্য – বলতে গেলে জের-জবর-পেশ না হলে তো আমরা এদেশের মানুষ উচ্চারণইতো করতে পারতাম না। তাহলে সংস্কৃতি আদান প্রদান হবে – এতে অন্যায় কি? আমরা হিন্দুয়ানী থেকেই মুসলমান হওয়া জাতি। এদেশের ৮৫% মুসলমান হিন্দু ধর্মকে আর ধারণ করে না, কিন্তু মাটির সংস্কৃতির একটা টানকে অস্বীকার করতে পারে না। বাংলা ভাষার জন্য এদেশের মানুষ উর্দুকে মেনে নেয় নি। তাহলে এদেশের মানুষ সংস্কৃতিকে বদলে দেয় নি বরং রক্ষা করেছে। এটাই তো আমাদের গর্ব। তাহলে শবে বরাতে হালুয়া রুটি খাওয়া আর বাবা মা মুরুব্বিদের পা ছুয়ে সালাম করায় অন্যায় কোথায়? এটা তো আমাদের রীতিতে সম্মানিত করা। আমরা তো আল্লাহ ব্যাতীত কাউকে সিজদা করছি না।
৭) তবে আমার কিছু ব্যাক্তিগত আপত্তি আছে।
প্রথম আপত্তি বাজি ফুটানোতে। এটা পরিবেশটাকে ধর্মীয় থেকে হট্টগোল করে তোলে। ভাবগাম্ভির্য নষ্ট হয়।
দ্বিতীয় আপত্তি মাজারে সিজদা করা – কবরের কাছ থেকে আশা করার ব্যাপারে। আমরা জিয়ারাত করতে পারি, মৃত মানুষের কাছ থেকে আশা করতে পারি না। তবে মাজারের যিনি পীর পয়গম্বর শুয়ে আছেন- তাঁর ইসলামের প্রতি অবদান সম্পর্কে জানার জন্য মাজারে যাওয়াটাকে সমর্থন করি। এটা ঐদিনে করা যায় যেহেতু একটা ছুটির দিন আর যেহেতু একটা কৃষ্টিতে পরিণত হয়েছে।
তৃতীয় আপত্তি হল শবে বরাতের রাতকে রাশিফলের সাথে তুলণা করা। আপনার আমার ভাগ্য আল্লাহর হাতে – তাই আমাদের সলাহের মাধ্যমে তাদবীর করতে হবে। এই তাদবীর এ তাকদীর খুলবে। তাই আল্লাহ তা’আলা বাজেট ঘোষণা করবেন এমন ধারণার চাইতে এটা ভাবুন – আজ সুযোগ পেয়েছেন আল্লাহকে আপনার কাছে পাওয়ার। সারাজীবনে আর কি লাগে বলুন?
8) সব সময় তো আর গুনাহ থেকে মাফ চাওয়ার সুযোগ হয় না আর সব দেশেও কিন্তু শবে বরাতকে ছুটি ঘোষণা করে না, আমরা ভাগ্যবান যে এই রকম একটা সুযোগ জাতিগতভাবে পেয়েছি। এটাকে বে’দাত বলে - হারাম বলে কলুষিত করাটাই জুলুম। মাফ চাওয়ার উৎসবকে নস্যাৎ করে দিলে আপনার সুযোগ কি আর থাকে? তাই আসুন – আমরা এই লাইলাতুল বারাতের রজনীকে যথাযথভাবে পালন করি। হালুয়া রুটি খাওয়াটাকে স্কুল ইউনিফর্মের মত মনে করে খুশী মনে বিসমিল্লাহ বলি। প্রতিবেশীকে পাঠাই আর প্রতিবেশীর দেয়া খাবারকে প্রশংসা করি। আরো আরো ইসলামিক বন্ধন বাড়িয়ে তুলি। আর যারা ইসলাম বান্ধব সুযোগকে এসব বে’দাত বলে ঠলে ঝামেলা করতে চাইছে- তাদেরকে ডেকে এনে বলি, “ভাই! যা বলেছো – বলেছো, এসো আমরা অজু করে হালুয়া রুটি মুখে দিয়ে শাবানের এই পবিত্র রাত্রিতে আল্লাহর কাছে মাফ চাই যেন আর ভুল পথে পা না বাড়াই, শয়তানের প্রলোভনে না পড়ি। আমাদের মত কত মুসলমান ভাইএর পরিবার যুদ্ধ করছে না খেয়ে আছে আর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা-সেবা না পেয়ে পড়ে পড়ে কাতরাচ্ছে। অনেক দেশে ইসলামিক উৎসব পালন করাকে ভাল চোখে দেখছে না। তুমি আমি তো অনেক সুখে আছি, তাহলে কেন ভাই ভূতে কিলানোর মত কাজ করে আমাদের পবিত্র সুযোগকে হাতছাড়া করবো? কেন আমরা ভাতৃত্বের বন্ধনের মিলনমেলাকে বে’দাত বলবো? তাই এসব ছেড়ে আসো ভাই - আজ আল্লাহর দরবারে হাত তুলি ”। আল্লাহ আমাদের সকলকে ঈমান মজবুত করে দিন আর ক্ষমা করে দিন আর শয়তানের হাত থেকে জুলুম করা থেকে দূরে রাখুন। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৩ সকাল ৭:১৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



