বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়া সম্ভব, বিশেষজ্ঞদের মত
বিকাশ দত্ত ॥ সুপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবীগণ বাহাত্তরের সংবিধান পুনর্প্রতিষ্ঠায় সংবিধান সংশোধনের জন্য সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি গঠনকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, পঞ্চম সংশোধনীর রায় প্রকাশ না হবার পরও জনগণের স্বার্থে যে কোন আইন পাস করতে পারে। আইন প্রণয়ন বা সংশোধনের ব্যাপারে আদালত সংসদকে সুনির্দিষ্টভাবে আদেশ দিতে পারে না। আদালত জাতীয় সংসদের পাস করা যে কোন আইনকে অবৈধ ঘোষণা করতে পারে। ফলে পঞ্চম সংশোধনী রায় প্রকাশ না হলেও সরকার '৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যেতে পারবে। সংসদীয় কমিটি সংবিধান কিভাবে সংশোধন করা যায় সেটি ঠিক করে, জাতীয় সংসদে উত্থাপন করবে। যেহেতু আপীল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ে লিভ দেয়নি। সে কারণে হাইকোর্টের রায়ই বহাল রয়েছে। আইনজীবীগণ আরও বলেছেন, ধর্ম ব্যক্তির জন্য, প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়। অতএব প্রতিষ্ঠানের ধর্ম থাকতে পারে না। বর্তমান সরকারের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্ব্বেও এবং আদালতের রায় পৰে থাকার পরও সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি গঠন করায় গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে একটি স্বর্ণালি অধ্যায়ের সূচনা করেছে। বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতেও রাষ্ট্রধর্ম নামে কোন ধর্ম নেই। বিসমিলস্নাহ সংবিধানের অংশ নয়। সংবিধানের শুরম্ন হয় মুখবন্ধ থেকে। ফলে সংবিধানের মুখবন্ধের পূর্বে বিসমিলস্নাহ লেখা থাকা না থাকা সংবিধানের মূল চরিত্রের পরিবর্তন হয় না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত করতে হলে আদি সংবিধানের চেতনায় ফিরে যেতে হবে। সে ৰেত্রে রাষ্ট্রধর্ম রেখে অন্য ধর্মাবলম্বীদের নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রাখা সঙ্গত হবে না।
আইনজীবীগণ বলেছেন, '৭২ সালের আদি সংবিধানে ফিরতে হলে চার মূলনীতি ফিরিয়ে আনতে হবে। সে ৰেত্রে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামও বাদ দিতে হবে। যেহেতু দেশের ৯০ ভাগ জনগণ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী সে কারণেই সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি কী সিদ্ধানত্ম নেয় সেটিও দেখার বিষয়। এ প্রসঙ্গে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক জনকণ্ঠকে বলেছেন, সংবিধান সংশোধন জাতীয় সংসদ অবশ্যই করতে পারে। এ ৰেত্রে সংবিধানের ৫ম সংশোধনী মামলার রায়ের অপেৰায় থাকার প্রয়োজন নেই। আদালত পালর্ামেন্টের পাস করা যে কোন আইনকে (সংবিধান সংশোধনসহ) অবৈধ ঘোষণা করতে পারে। কিন্তু আইন প্রণয়ন বা সংশোধনের ব্যাপারে সংসদকে সুনির্দিষ্ট আদেশ দিতে পারে না। এই মুহূর্তে সরকার '৭২ সালের আদি সংবিধানে ফিরে যেতে পারবে। সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রের সীমানার অনত্মর্ভুক্ত সকল নির্বাহী ও বিচার বিভাগের কর্তৃপৰ সুপ্রীমকোর্টকে সহায়তা করবে। সকল নির্বাহী ও বিচার বিভাগীয় কর্তৃপৰ সংসদের কথা বলা নেই। এই ৰেত্রে আদালত বলতে পারে, এই ভাবে আইন পাস করা হোক। আদালত সংসদের আইনকে বাতিল করতে পারে। তবে ঐ ৰেত্রে জাতীয় সংসদ কি করবে আদালত বলতে পারে না। ২০০৫ সালের ২৮ আগস্ট হাইকোর্ট সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। বিচারপতি এবিএম খায়রম্নল হক এবং বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির এই ঐতিহাসিক রায়টি প্রদান করেন। ফলে খন্দকার মোশতাক আহমেদ, আবু সাদাত মোঃ সায়েম ও জিয়াউর রহমানের ৰমতা গ্রহণের বিষয়টি যে সংশোধনীর মাধ্যমে দেয়া হয় তা অবৈধ হয়ে যায়। এই রায়ের ফলে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যনত্ম সকল অতীত ও সমাপ্ত বিধায় তা মার্জনা করা হয়। প্রজাতন্ত্রের স্বার্থে সুদূর ভবিষ্যতে সমাজে বিভ্রানত্মি এড়াইবার স্বার্থে মার্জনা করা হলো। যদিও উক্ত কার্যাদি চিরকালই অবৈধ ও অসিদ্ধ থাকবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর সামরিক স্বৈরাচার বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে দেশের পবিত্র সংবিধানকে ৰতবিৰত করে। তারই একটি ছিল সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বহাল করে সংবিধান থেকে যে সব বিষয় বাদ দেয়া হয় তা হলো (১) জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের জন্য ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ বাদ দিয়ে করা হয়েছিল জাতীয় স্বাধীনতার জন্য ঐতিহাসিক যুদ্ধ। (২) বাঙালী জাতীয়তাবাদ বাদ দিয়ে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ (৩) ধর্মনিরপেৰতা সম্পূর্ণ বাদ দেয়া হয়েছিল (৪) সমাজতন্ত্র বাদ দিয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার অর্থে সমাজতন্ত্র। '৭২ সালের আদি সংবিধানে ফিরে গেলে আবার চার মূলনীতি ফিরে আসবে।
এ বিষয়ে ড. শাহদীন মালিক জনকণ্ঠকে আরও বলেন, হাইকোর্টের রায় আপীল বিভাগে লিভ দেয়নি। পূর্ণাঙ্গ শুনানি করেনি। হয়ত রায় বহাল সাথে অবজারভেশন আছে। তারা রায়ে কিছু মনত্মব্য করবে । আমার দৃষ্টিতে হাইকোর্টের রায় পুরো বহাল থাকবে। সংবিধানে বিসমিলস্নাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের সুপ্রীমকোর্টের রায়ে বলা আছে, ধর্ম হলো ব্যক্তির জন্য। প্রতিষ্ঠানের কেমন করে ধর্ম হবে। আমরা রোজা রাখি, নামাজ পড়ি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি নামাজ পড়বে। ধর্মের যে নির্দেশনা পালন করা ব্যক্তির জন্য। প্রতিষ্ঠান কিভাবে ধর্ম পালন করবে। প্রতিষ্ঠান ধর্ম পালন করতে পারে না। রাষ্ট্র একটি প্রতিষ্ঠান । কাজেই প্রতিষ্ঠানের ধর্ম থাকতে পারে না। ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের জন্য আমাদের দেশে সহজ সরল ধর্মপ্রাণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে একটা উন্মাদনার সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি বলেন, সংসদের ৰমতা আছে। অবশ্যই ধর্মকে বাদ দিতে হবে ।বিসমিলস্নাহ আমরা সাধারণত ধর্ম গ্রন্থ পড়ার সময় পড়ি । যে কোন বইয়ে বিসমিলস্নাহ বলি না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বই পড়ার সময় পড়ি না। বর্তমান সরকার সংবিধান পরিবর্তনের উদ্যোগসহ যে কোন বিষয় আলোচনা করে সংসদে পাস করতে পারে। আদালত এৰেত্রে বলতে পারে না এই ভাবে আইন পাস করেন। পাস করার পর আদালতে কেউ বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করলে তখন আদালত সিদ্ধানত্ম দিতে পারে। জাতীয় সংসদ যেটা ইচ্ছা করবে সেটাই করতে পারবে।
চলতি বছরের ২ ফেব্রম্নয়ারি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে আপীল বিভাগ রায় ঘোষণা করে। প্রধান বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জাল ইসলাম পিনপতন নীরবতার মধ্যে ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন। ওই বেঞ্চের অন্য বিচারপতি ছিলেন, বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম (বর্তমান প্রধান বিচারপতি), বিচারপতি মোঃ আব্দুল মতিন, বিচারপতি বিজন কুমার দাস, বিচারপতি মোঃ আব্দুল আজিজ ও বিচারপতি এস কে সিনহা। রায় ঘোষণার পর রায় লেখার দায়িত্্ব বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জাল ইসলামকে দেয়া হয়। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিচারপতি তাফাজ্জাল ইসলাম রায় লেখার পর সংশিস্নষ্ট বেঞ্চের অন্য সদস্যরা দেখছেন । আদালত ঐ রায়ে ২২টি পর্যবেৰণ (অবজারভেশন) দেয়। আদালত বলে, সংবিধান সবসময়ই সার্বভৌম। এ বিষয়ে সুপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. বেলাল হোসেন জয় বলেছেন, রাষ্ট্রের তিনটি সত্মম্ভ। পৃথক পৃথক ৰমতা বলে প্রত্যেকেই স্বাধীন। সংবিধান হলো জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগের রাষ্ট্রের সব অর্গান সংবিধান মেনে চলতে বাধ্য। সংবিধানের চার মূলনীতি। জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেৰতা ও সমাজতন্ত্র রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে বিবেচিত হবে। সুপ্রীমকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পাবার পরই সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবে। সে জন্য সরকারকে পূর্ণাঙ্গ রায় পাবার আগ মুহূর্ত পর্যনত্ম অপেৰা করতে হবে।
সুপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শ.ম. রেজাউল করিম বলেছেন, জাতীয় সংসদ হচ্ছে সার্বভৌম। যে কোন আইন প্রণয়নের এখতিয়ার কেবলমাত্র জাতীয় সংসদের রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ৰমতাসীন জোট যে পরিমাণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তাতে তারা সংবিধান সংশোধন করতে পারে। এৰেত্রে আদালতের দিকে তাকিয়ে থাকার প্রযোজন নাও বোধ করতে পারে। তবে ৫ম সংশোধনীর মধ্য দিয়ে যে সকল সংবিধান পরিপন্থী আইন ও বিভিন্ন কাজ করা হয়েছিল তা যেহেতু দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুনির্দিষ্টভাবে উলেস্নখ করে রায় দিয়েছে। ফলে ঐ রায়ের আলোকে পরবতর্ী ব্যবস্থা গ্রহণ করাই অধিক শ্রেয়। আপীল বিভাগের রায় না পাওয়া পর্যনত্ম সংসদ কমিটি গঠন করা এবং আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি নেয়া কোন রূপ বেআইনী কিছু নয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরম্নদ্ধে দায়ের করা আপীল সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে গৃহীত হয়নি। ফলে সাধারণ ধারণা হবে হাইকোর্টের রায়কেই সুপ্রীমকোর্ট বহাল রেখেছে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও এবং আদালতের রায় পৰে থাকার পরও সর্বদলীয় কমিটি গঠন করায় গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে একটি স্বর্ণালি অধ্যায়ের সূচনা করেছে। তিনি আরও বলেন, বিসমিলস্নাহ সংবিধানের অংশ নয়। সংবিধানের শুরম্ন হয় মুখবন্ধ থেকে । ফলে সংবিধানের মুখবন্ধের পূর্বে বিসমিলস্নাহ লেখা থাকা না থাকায় সংবিধানের মূল চরিত্রের পরিবর্তন হয় না। যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী, তাই তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে বিপৰরা যাতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে, সে জন্য সতর্কতার সঙ্গে এ বিষয়ে সিদ্ধানত্ম নেয়া উচিত। শ. ম. রেজাউল করিম আরও বলেন, বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে রাষ্ট্রধর্ম নামে কোন ধর্ম নেই। বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করার আসল লৰ্য ছিল ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায়কে ধর্মের নামে ব্যবহার করার অপকৌশল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত করতে হলে '৭২-এর মূল সংবিধানে ফিরে যেতে হবে। সে ৰেত্রে রাষ্ট্রধর্ম রেখে অন্য ধর্মাবলম্বীদের নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রাখার সংযত হবে না।
রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের স্বার্থে সকলেই কাজ করবে। জাতীয় সংসদ জনগণের প্রতিনিধি দ্বারা গঠিত। যার মূল আইন প্রণয়ন করা। সরকার সেই আইন প্রয়োগ করবে। সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর রায় বের না হলেও সংসদ সংবিধান সংশোধন করতে পারে। এতে কোন আইনগত বাধা নেই। বাহাত্তরের সংবিধান পুনর্প্রতিষ্ঠায় সংবিধান সংশোধনের সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, '৭২ সালের আদি সংবিধানে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ খুবই পজেটিভ। সংবিধানের ৫ম ও ৮ম সংশোধনী অবশ্যই বাতিল করতে হবে। শুধু '৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যাবার কথা বললেই আদি সংবিধানে ফিরে যাওয়া যাবে না। সংসদের ৰমতা আছে জনগণের স্বার্থে আইন প্রণয়ন করতে পারেন। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরম্নদ্ধে সুপ্রীমকোর্টের তিন আইনজীবী লিভ টু আপীল দায়ের করেন সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে। শুনানি শেষে গত ২ ফেব্রম্নয়ারি লিভ টু আপীল আবেদন সংশোধন ও মতামতসহ খারিজ করে দেয় আদালত। তবে কি সংশোধন ও মতামত দেয়া হবে তা তখন জানা সম্ভব হয়নি। রায়ে বলা হয়, ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের প্রসত্মবনা, অনুচ্ছেদ ৬, ৮, ৯, ১০, ১২, ২৫, ৩৮ ও ১৪২ বহাল থাকবে। আপীল বিভাগের রায়টি দীর্ঘদিন পরও প্রকাশ হয়নি। সংশিস্নষ্ট সূত্রে জানা গেছে সাবেক প্রধান বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জাল ইসলামের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতি বিষয়টি দেখছেন। শীঘ্রই রায়টি প্রকাশিত হবে। এর আগেই সরকার সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




