ভূমিকাঃ
আমার আগের লেখায় "আগামী দিনের লিডার! কিভাবে?" লিডারদের মৌলিক কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। যেটাকে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে রিহার্সেল হিসেবেই ভাবতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করি। একটা কথা না বললেই নয়, আমি কোন লেখক নই। আমার লেখায় তাই হটাৎ ছন্দপতন আশ্চর্যজনক কোন বিষয় নয়।
এখানে আমি লিডারশীপের ক্যালকুলেটিভ কিছু বিশ্লেষণ এবং ১৯৮৫ থেকে বিগত ৩০ বছরে নিজের দেখা এবং করা বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। হয়ত আলোচনা সমালোচনার মধ্যে বিরুপ মন্তব্যই প্রাধান্য পাবে তবুও এখান থেকে কেউ যদি নিজের কর্মজীবনের জন্য ব্যাতিক্রম কিছু গ্রহণ করে উপকৃত হন তাহলে আমার সারা জীবনের সকল কষ্ট, লাঞ্ছনা আর অপমানের লাঘব হবে। বিশ্বের প্রথিতযশা দার্শনিক ও বিখ্যাত সব মানুষদের জীবনের ঘটনা প্রবাহ ও তাদের বিভিন্ন উক্তির বাংলা রূপান্তরের মাধ্যমে আমার কর্মজীবনের সাথে তুলনামূলক বিশ্লেষণ এই লেখার প্রধান উপাধান। এখানে ১৯৯৬ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ৫ বছর ৩ মাস মালয়েশিয়াতে আমার কর্মজিবনে দেখা অনেক মেধাবী যারা সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে সাধারন শ্রমিক হিসাবে মুল্যবান দিনগুলি শেষ করছে। ছাত্রজীবনে গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকাকালীন প্রখ্যাত নাট্যকার আব্দুল্লাহ আল- মামুনের রচিত "তোমরাই" নাটকের মামা চরিত্রের একটি সংলাপ আমার কাছে জীবনের একটি গোপন দিকের উম্মোচন করেছে যা এখানে দেয়া হলঃ
কান্তাঃ কেন তুই মানুষ ঠকাছ বিরু? ছেড়ে দে এসব মানুষ ঠকানো ব্যবসা ছেড়ে দে।
মামাঃ আশ্চর্য কথা বললে- আমিতো মানুষ ঠকাইনা - মানুষকে আশা দেই ভরসা দেই, এই অকালের দিনে তাইবা কম কিসে? আর কে কাকে ঠকাচ্ছে না বল? ছাত্র শিক্ষক, স্বামী স্ত্রী, বাবা পুত্র সবাই সবাইকে ঠকাচ্ছে- শিক্ষক ছাত্রকে বলছে পড়- ছাত্র বলছে আগে গুলি থামাও, গুলিও থামেনা পড়াও হয়না। স্ত্রী স্বামীকে বলছে ওগো আমাদের ছেলেটা কি মানুষ হবে না? ব্যাস স্বামী ঠকায় তাঁর স্ত্রীকে বলে একটা কিছু নিশ্চয় হয়ে যাবে, দেশের এই অবস্থা আর বেশী দিন থাকবেনা, আরে দেশ! দেশ কি মশাই?...............।
এখানে একজন জ্যোতিষ তাঁর ভাষায় মানুষকে সে আশা দিয়ে যাচ্ছে ভড়সা দিয়ে যাচ্ছে যদিও সে কিছুটা অনৈতিক কাজ করছে। তাঁর কাজ অনৈতিক হলেও কাজের উদ্দেশ্য কিন্তু তাঁর ভাষায় মহৎ। এখানে মহৎ উদ্দেশ্য অসৎ কাজকে উৎসাহিত করা হয়েছে এই উদাহরণ টি লেখার পরবর্তি পর্যায়ে ব্যবহৃত হবে।
আমার এই আর্টিকেল বাংলা ভাষায় পূর্নাংগ বই হিসাবে প্রকাশের ইচ্ছা বহুদিনের। লেখার শুরু ২০০৬ সালের দিকে তখনকার সময়ের পরিস্থিতি এবং বর্তমানের পরিস্থিতি ভিন্ন কিন্তু লেখার কিছু অংশ হয়ত বর্তমানের সাথে মিলে যেতে পারে আর তাতে সৃষ্টি হতে পারে অহেতুক ভূল বুঝাবুঝির যা কোন ভাবেই কাম্য নয়। লেখার প্রায় ৮৫% শেষ, যেহেতু চাকুরী করি তাই এই মুহুর্তে কিছুটা কাট ছাট করতে হচ্ছে এবং আমার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্তামান পরিচিতি মূছে ফেলতে হয়েছে। এই বিষয়টা একজন দায়িত্বশীল কর্মী হিসাবে নৈতিক কারনেই করতে হয়েছে যা আমার সম্পূর্ন লেখার কোন একটা পর্যায়ে আপনারা বুজতে পারবেন বলে বিশ্বাস।
আমি আমার কর্মময় জীবনে বর্তমানের এবং অতীতের উচ্চ পর্যায়ের কিছু মানুষের সান্নিধ্য লাভ করেছি যার মাধ্যমে নিজের মধ্যে শক্তি ও সাহস সঞ্চয় করতে পেরেছি। এর মধ্যে কিছু চরিত্র লিডার হিসাবে আমার মনে দাগ কেটেছে আবার কিছু চরিত্র একাধারে লিডার ও ওউনার হিসাবে স্মরণীয় হবার যোগ্য। আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
পবিত্র কোরাআনের একটি বানী -"তোমরাই সর্ব স্রেষ্ট জাতী, তোমাদের শ্রেষ্টত্বের কারন হল নিজেরা সৎ কাজ করবে এবং অসৎ কাজ হইতে বিরত থাকবে"। এই বানীটি একজন লিডারের জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ন বিষয়।
বিনীত
আল্লামা বোরহান উদ্দিন খলিফা
এমএ(দর্শন),এমবিএ(এইচআরএম), এলএলবি(এবিইউ)