★ রামাদান- বান্দার জন্য এক পবিত্র সওগাত। এই রামাদানেই "আল কুরআন" নামক মহান গ্রন্থ অবতীর্ণ হয়েছিলো; যার সমতুল্য কোন গ্রন্থ এই ভূখন্ডে, এই মহাবিশ্বে নেই। যে রামাদানে আমরা পাই শবে কদরের মতো সর্বশ্রেষ্ঠ রজনী; এ রজনী সেই মহান রবের দান যিনি মহান প্রতিপালক, যিনি সর্বদ্রষ্টা, যিনি ক্ষমাশীল। তিনি বান্দাকে ক্ষমা করতেই বেশি পছন্দ করেন।
★★ বারো মাসের শুধু একটি মাস এই রামাদানেই কেন আমরা সিয়াম পালন এবং তারাবির প্রতি এতো ঝুঁকে পড়ি? বাকি এগারো মাস কি স্রষ্টার দান নয়? এটাও সত্য এই মাসের ইবাদাতের গুরুত্ব অন্যান্য মাসের চেয়ে অনেক বেশি তাৎপর্যময়। কবরের আযাব এ মাসেই স্থগিত থাকে, সুবহানআল্লাহ!!! কিন্তু এই শ্রেষ্ঠ মাস রামাদানে আমরা শুধু পানাহার বন্ধ রাখলাম কিন্তু আল্লাহর ইবাদত যেমন পাঁচ ওয়াক্ত সালাতই আদায় করলাম না, বরং বিভিন্ন ধরনের আনন্দযজ্ঞ উপভোগে (ডেইলি নাটক, সিনেমা দেখা, গীবত করা ইত্যাদি) মত্ত থাকলাম তাহলে সেই সিয়াম সাধনা কি আসলে সাধনা হলো? পরিপূর্ণ সওয়াব কি হাসিল হলো? বরং পানাহার বন্ধ করার সাথে সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়, সহিভাবে কুরআন শিক্ষা ইতাদি বিভিন্ন বিষয়ে নিজেকে পরিপক্ক করার মাধ্যমেই রামাদানের তাৎপর্য অনুধাবন করা যায়।
★★★ যেহেতু এই রাতে পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে; তাই পবিত্র কুরআনের সাথে এই রাতের বিশেষ সম্পর্ক। অতএব এই রাতে অধিক পরিমাণে কুরআন তেলাওয়াত করা উচিত। অধিক পরিমাণে দরুদ শরীফ পড়া উচিত। অধিক পরিমাণে জিকির-আযকার নফল নামায ইত্যাদি পড়া চাই। আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে যে, শবে ক্বদরে নফল নামাযের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি এবং এই নফল নামাযের জন্য কোন সূরাও নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। সুতরাং যত রাকাত ইচ্ছা এবং যে কোন সূরা দিয়ে ইচ্ছা পড়া যায়। তাছাড়া শবে ক্বদরের রাত্রির জন্য যেমন আলাদা কোন নামায নেই তেমনি শবে ক্বদরের রাত্রিতে পড়া নামাযের জন্য আলাদা কোন নিয়তও নেই। শবে ক্বদরে বিশেষভাবে দু'আ কবুল হয়, তাই অধিক পরিমাণে আল্লাহর কাছে দু'আ বা ক্ষমা করা চাই।
হযরত আয়েশা (রা) একদা রাসুল (সা)কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি শবে ক্বদর পাই, তাহলে আমি ঐ রাতে কী দু'আ করবো।
নবিজী (সা) বললেন, তুমি এই দু'আ পড়বেঃ اللهم انك عفو تحب العفو فاعف عنى
অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি তো অত্যন্ত ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমা করতে ভালবাস, অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও।
★★★★ রহমানুর রহীম, এই রামাদানের মহিমান্বিত রজনী শব ই কদরের উছিলায় আমাদের সকল গুনাহ সকল পাপ ক্ষমা করে দাও। আমাদেরকে সেই পরিমান এবং সেই পর্যায়ের ইবাদাত করার তাওফিক দাও যার বদৌলোতে সারা বছর রামাদান এর অদ্ভুত পবিত্র প্রেমময় প্রশান্তিতে তোমার রহমতের ছায়াতলে থাকতে পারি এবং তোমার ইবাদতে মশগুল থাকতে পারি।
আমিন...
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫