আমি ভেবে নিই আজ যেহেতু শনিবার তাই আমাকে কিছু ভাবতে হবে। নির্ধারিত দিনে অনির্ধারিত ভাবনা কখনও দ্বিধায় ফেলে দেয়। যেন একটা খাদের মধ্যে অসময় পড়ে যাওয়া।
শনিবারের সকালটা একটা ভাবনার কুয়াশায় থাকে। এবং শুনশান নিরাবতায়; মোহ আর শব্দের বাইরের অসচ্ছ্বতায়। যত ভোরে সকাল হয় তত ভোরে কল্পনার সহিস রথ নিয়ে এসে দাড়ায় সিংহদরজায়! হিম আর আদ্রতা স্পর্শ করে বেজে উঠে সিংহলী শাখ। তুহিনের পরিচ্ছদ খুলে এবার রাজত্ব নেয় অপরিসিম কুয়াশা-শাসক! আর আমি ত্রস্ত হাতে উঠে পড়ি আমার সংরক্ষিত পালকিতে এবার!
শনিবার আমি অদৃশ্য দীর্ঘ পালকিরথে চেপে ভ্রমণ করি দু’ঘন্টার সময়রাজ্য। সমুদ্র এবং আসমানের মাঝ অবধি। ধোয়া আর কুয়াশার বনভোজন, শীতলতার দূ:শাসন এবং নৈ:শব্দর এক অমিয় যাপনের মতো।
পাতাঝরা বৃক্ষেরা কুচ্ছিত শরীরে চোখ বন্ধ করে থাকে এসময়। তিনটি মাত্র সমুদ্রচিল ইতস্তত ঘুম ভেঙে দেখে আমাদের কুয়াশারথ- মানুষের মতো তারা বিস্মিত হয় এবং এসব অলৌকিক ভেবে আবারও এলিয়ে পড়ে উইকএন্ডের ভোরঘুমে।
শনিবার আমি শুধু একমগ ক্যাপাচিনো পান করি। ব্রাউন সুগারের গন্ধে আমার মস্তিস্কের কোষে কোষে বেজে উঠে বিশেষ দিনের আবহ- শুকনো টিস্যু দিয়ে আমি মুছে ফেলি সপ্তাহান্তের ক্লান্তি আর বিভ্রমের যাতনা!
দু’টো সাদা বৃদ্ধ সমুদ্রের পাশ দিয়ে হেটে যায়। আমি বুঝে নিই আমার সাপ্তাহিক কল্পভ্রমনের আজ এখানেই পরিসমাপ্তি। শব্দের দৌরাত্ম্যে আমার রথের চাকা বিকল হলেও সেই শব্দগুচ্ছসমেত প্রিয়তম ব্যকরণেই আমাকে লিখতে হবে নির্জনতার কূয়াশাপূরাণ!
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪৬