যখন আমি আমার আবেগ এবং অনুভূতি আর কোন মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারি না, তখন আমার জন্য পড়ে থাকে কেবল কবিতার খোলা প্রান্তর। আমি যা ভাবি কিংবা বলতে চাই তারও অধিক কিছুটা রুদ্ধ-বাষ্প, নিঃসীম সুখ-স্রোত, এক আকাশ বুনোজোছনায় অথবা তুষার-জমাট বিষাদ, শব্দজালে বুনার এ এক আদিমতম স্পৃহা। আমি শব্দের অধিক কিছু তালাশ করি না আমার ভাবনায়, চিত্রকল্পের বাড়ান্ত সীমানায় শুধু রোপন করি ভাবনার নিঃশ্বাস। তাই কবিতা আমার কাছে মননশীলতার সবচে পরিণত পরিচয়, যুগান্তে। মানুষের সাথে অন্য প্রাণীদের পার্থক্য শুধুমাত্র শব্দ ব্যবহারের নিপুণতায়, কথায় বা বাক্যে; আর মানুষের ব্যবহৃত শব্দমালার সবচে শৈল্পিক প্রক্ষেপণ হল কবিতা। কবিতার এই সংজ্ঞা আমি রীতিমত হৃদয়ে লালন করি, বিশ্বাস করি এবং সেই শিহরণে কবিতা লিখি। আমি কবিতায় শব্দ ব্যবহারের পাশাপাশি চিত্রকল্প ফাদতে ভালোবাসি। আমি বিশ্বাস করি, কবিতা হল পেইন্টিং এর অনুবাদ। অনেক প্রিয় আর্টিষ্ট আমার কবিতার অনুপ্রেরণা বরাবর। এমনও হয় আমি কোন পেইন্টিং দেখেই কবিতা লিখেছি। পুরো কবিতা জুড়ে তেলরঙ আর ছোপছোপ হাহাকার। কবি’র জীবন যেমন আমাকে টানে তেমনি আর্টিষ্টের জীবন আমাকে সবসময় মুগ্ধ করেছে। অন্ধকার আর মৃত্যু আমার প্রিয় বিষয়। আমি যেন অন্ধকারে দেখতে পাই ভালো। কফিরঙা শব্দসমূহ অন্ধকারে ছড়িয়ে দু’হাত ঘণ করে চিত্রকল্প তৈরি করি। আকাশ, সমুদ্র, নক্ষত্র আর বাতাসের বুদবুদে সেলাই করি অনাঘ্রাত শব্দরেণু। আমি গদ্য লেখার বাসনা সব সময় হৃদয়ে ধারণ করি, তবুও শব্দের বিভ্রম আমাকে ঠিকই ঠেলে ফেলে কবিতার খাদে, আমি পড়ে রই এবং আওড়াতে থাকি আমার অস্তিত্বে সংবেদনশীল শব্দজটের প্রতিটি গ্রন্থি।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০২১ বিকাল ৪:০৬