প্রকৃতির সব কিছুর মূলে আছে অণু, পরমাণু। পরমাণুর মূলে আছে কোয়ার্ক, লেপটন ও বোজন কণিকা।
মহাবিশ্বের প্রাথমিক মুহূর্তগুলিতে, বিগ ব্যাং তত্ত্ব অনুযায়ী, মহাবিশ্ব ছিল অবিশ্বাস্য ভাবে উত্তপ্ত এবং ঘন শক্তির আধার। মহাবিশ্ব প্রসারিত এবং শীতল হওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন শক্তি ক্ষেত্রগুলি তরঙ্গ গুচ্ছ আকারে বিভিন্ন ধরণের কণাতে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ কোয়ান্টাম শক্তি ক্ষেত্র কোয়ান্টাম কণিকায় রূপান্তরের প্রাথমিক শক্তি যোগায়।
কোয়ান্টাম কণিকায় এক ধরণের স্পিন ধর্ম রয়েছে। কণা পদার্থবিদ্যায়, স্পিন হল প্রাথমিক কণার একটি অন্তর্নিহিত ধর্ম। এটি প্রকৃতির মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি। । ভর এবং বৈদ্যুতিক চার্জের পাশাপাশি, স্পিন কণার আচরণ এবং মিথস্ক্রিয়ায় অংশ গ্রহণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কণিকার স্পিন একটি অক্ষের চারপাশে কণার শারীরিক ঘূর্ণন নয়। পরিবর্তে, এটি একটি কোয়ান্টাম যান্ত্রিক ধর্ম যা কণার তরঙ্গ প্রকৃতি থেকে উদ্ভূত এবং তাদের কৌণিক ভরবেগের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
মহাবিশ্ব পর্যাপ্ত পরিমাণে শীতল হওয়ার পর, ইলেকট্রন এবং কোয়ার্কের মতো কণা একত্রিত হয়ে প্রথম পরমাণু তৈরি করে। প্রোটন, নিউট্রন এবং ইলেকট্রনের সমন্বয়ে গঠিত এই পরমাণুগুলি পারমাণবিক নিউক্লিয়াসের চারপাশে ইলেকট্রনের কক্ষপথের গতির সাথে সম্পর্কিত একটি অতিরিক্ত ধরনের কৌণিক ভরবেগ প্রদর্শন করে। এই ধরনের কৌণিক ভরবেগ কণার অভ্যন্তরীণ ঘূর্ণন থেকে আলাদা কিন্তু তবুও একটি সিস্টেমের সামগ্রিক কৌণিক ভরবেগ প্রদানে অবদান রাখে।
পরমাণুর কেন্দ্র হল নিউক্লিয়াস। নিউক্লিয়াসে থাকে প্রোটন ও নিউট্রন। প্রোটন পজিটিভ চার্জ-যুক্ত। তারপরেও স্ট্রং ফোর্স তাদের একত্রিত থাকতে বাধ্য করে।
নিউক্লিয়াস কেন্দ্রের চারপাশে ইলেকট্রন গুলো ঘুরতে থাকে। ইলেকট্রন নেগেটিভ চার্জ যুক্ত। নিউক্লিয়াসে প্রোটন এদের আকর্ষণ করে রাখে।
মহাবিশ্বে অণু পরমাণু গঠনের পর এদের ভর মধ্যাকর্ষন শক্তি বা ভর দ্বারা স্পেসের সংকোচনের ফলে কাছাকাছি সকল বস্তু একত্রিত হয়ে গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ, ব্ল্যাক হোল গঠন করে। এতে যে গতি প্রাপ্ত হয় সেটা ঘূর্ণন ভরবেগ হিসেবে কাজ করে এবং সকল বস্তুই নিজ বা অন্য কক্ষপথে ঘুরতে থাকে।
আলো হল ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ। মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের ফলে দূরাগত আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য প্রলম্বিত হয়ে যায়। মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ শুধুমাত্র আলোর উপর তার ক্রিয়া করতে পারে।
ছায়াপথগুলোর ঘূর্ণন বেগ এর উপর মহাকর্ষ বলের প্রভাবের চেয়েও অনেক বেশী। ফলে এদের উপর ব্ল্যাক এনার্জি ও ব্ল্যাক মেটারের প্রভাব রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
অণু পরমাণু পরস্পর রাসায়নিক বিক্রিয়া বা বন্ধন দ্বারা বহু প্রকার যৌগিক পদার্থ তৈরি করে। মূলত ইলেকট্রনের চার্জ এক্ষেত্রে শক্তি যোগায়।
জীব দেহের ভিতরে ও বাইরে যত ধরণের কাজ সংঘটিত হয় সেগুলো ইলেক্ট্রিক্যাল চার্জ বা আয়নিক চার্জ থেকে শক্তি সঞ্চয় করে থাকে।
বস্তুর সকল গতি ও কাজ তাপ থেকে বা মধ্যাকর্ষন বল থেকে শক্তি পেয়ে থাকে।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে মহাবিশ্বের সকল বস্তু প্রকৃতিরই কয়েকটি বলের দ্বারা পরস্পর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:৩১