somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাস্ট সি এক হালি মুভির ভিন্নধর্মী রিভিউ উইথ ডাউনলোড লিঙ্ক :)

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুভি রিভিউ লেখা বেশ কষ্টকর ব্যাপার। আমি টেকনিক্যাল এনালাইসিস বাদ দিয়ে শুধুমাত্র মুভির আপিলিং ব্যাপারটাকে ফোকাস করে কয়েকটা রিভিউ লেখার চেষ্টা করলাম। রিভিউ পড়ে আগ্রহী হলে দেখে ফেলুন মুভিগুলো, নিশ্চিত ভালো লাগবে আপনাদের।


Dead Poets Society (১৯৮৯)





আপনি কবিতা ভালোবাসেন ? জানেন, কবিদের বলা হয় একটি সমাজের মানুষের মানসিক উন্নতির মানদন্ড ? কিন্তু কেন, কি আছে কবিতায়, কবিতার শক্তি কোথায় ?

একজন শিক্ষক তার শিক্ষাদানের পদ্ধতির দ্বারা ইউনিক হয়ে উঠেন। যদি হয় কবিতার মত বিষয়, তাহলে তো কথাই নাই।বিষয়ের ছাত্রদের স্পৃহা জাগিয়ে তোলাটাই হচ্ছে প্রধান সাফল্য। জন কিটিং (রবিন উইলিয়ামস), প্রচলিত পদ্ধতিতে ছাত্রদের পড়ান না। তিনি তার ছাত্রদের মাঝে শিক্ষার পাশাপাশি আবেগ ও অনুভুতির ও সেতু তৈরি করেন। ভাব, পংতি, ছন্দ, এ ব্যাপারগুলোকে তিনি উপলদ্ধি করানোর চেষ্টা করেন নিত্যদিনকার কাজের মাধ্যমে। কবিতা হচ্ছে জীবনের ই প্রতিচ্ছবি, তা তিনি প্রমান অরে যান প্রতিনিয়ত। ছাত্ররাও তাকে ভালবাসে, তাকে শ্রদ্ধা করে। কিন্ত প্রচলিত শিক্ষা ব্যাবস্থা সনাতন পদ্ধতি ব্যাতিত মেনে নিতে চায় না কোন এক্সপেরিমেন্ট। এমন কি ওয়েল্টন একাডেমির মত বিখ্যাত স্কুল ও নিরাপদ থাকতে চায় শিক্ষা প্রদানে। তাতে করে একজন ছাত্রের ভিতরের লালিত স্বপ্ন চূর্ন বিচূর্ন হয়ে গেলেও কিছু যায় আসেনা। ভেতরটা মরে যাওয়ার পর বাইরের শরীরটাকেও মেরে ফেলে সেই ছাত্র। এখানে ছাত্র নেইল প্যারি (লিওনার্ড) প্রতিনিধিত্ব করে প্রচলিত শিক্ষা ব্যাবস্থা ও পারিবারিক প্রেশারের বিপক্ষে সাধারন স্বপ্নময়ী একজন শিক্ষার্থির ব্যাথা বেদনা আর যন্ত্রনার। স্বাভাবিক ভাবেই দোষ পড়ে শিক্ষক কিটিং এর। এখন কি করবে বাকি শিক্ষার্থিরা ?

অনুভুতিশীল ব্যাবহারিক শিক্ষা বব্যস্থা আর সনাতনি শিক্ষা ব্যাবস্থার দ্বন্দই ফুটে উঠেছে Dead Poets Society (১৯৮৯) মুভিটিতে। যার বলি হতে হয় সাধারন একজন ছাত্র কিংবা দ্রোহী একজন শিক্ষক কে। এই ছবিতে আমার খুব পছন্দের একটি সিকোয়েন্স হলো- ওয়াইড এঙ্গেল ফ্রেমে একজন ছাত্র তার সাইকেল নিয়ে হ্রদের পাড়ে ঢালু একটা যায়গায় নামতে থাকে, আর হাজার হাজার পাখি মাটি ঠেকে উড়ে যেতে থাকে আকাশপানে। অসাধারন একটি সিনারিও। এই রকম আরো অনেক ইন্টেলেকচুয়াল মন্টাজ দেখতে পাবেন পরিচালক পিটার ওয়েরের কাজে। স্নিগ্ধ সুন্দরের সাথে বেদনাদায়ক হয়ে দাঁড়াবে মুভিটি। জীবন কে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে শিখায় এই মুভিটি। হয়তো আপনি আপন মনে বলে উঠবেন, ও ক্যাপ্টেইন, মাই ক্যাপ্টেইন...

আইএমডিবি রেটিং ৭.৯
ডাউনলোড লিঙ্কঃ টরেন্ট


Paris, je t'aime (২০০৬)






ভালোবাসা এক অদ্ভুত জিনিস। এক একজনের কাছে এর সঙ্গা এক রকম, আবেদন এক রকম। কেউ একে বিচার করেন শুধুই ব্রেইনের কেমিকাল রিএকশন হিসেবে, কেউবা মনের অজানা কোন অনুভুতি দিয়ে। কেউ ভালোবাসেন প্লেটোনিক লাভ, আবার কেউবা দেহসর্বস্বতা দিয়ে। কেউ ভালোবেসে ভালো থাকেন, কেউ কস্ট পেয়ে, কেউ কস্ট দিয়ে আবার কেউ বা বীমূর্ত ভাবে। তবে দিন শেষে সবার মাঝেই কিছু কমন ফ্যাক্টস খুজে পাওয়া যায়। আইডিয়ালিসট আর রিয়ালিস্ট মাঝে ভালোবাসার ধরন আলাদা হলেও যুগ যুগ ধরে ভালোবাসার কনসেপ্ট বিলুপ্ত তো হয়িনি, বরং শক্ত হয়েছে পৃথিবীজুড়ে। আসলে কেমন হয় ভালোবাসা ??

এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো খুজে পাবেন না Paris, je t'aime মুভিটি দেখে, তবে অসাধারন একটা বোধ কাজ করবে সারাখন। পুরোটা মুভি জুড়ে কখনো রেগে উঠবেন আপনি, কখনো অনাবিল আসিতে ভরে উঠবে আপনার মুখ, কখনো চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়বে এক ফোটা পানি। অসাধারন সুন্দর এক শহরের অসাধারন কিছু ভালোবাসার বিচ্ছিন্ন গল্প নিয়ে Paris, je t'aime মুভিটি বানিয়েছেন অলিভার এজেয়াস। টুকরো টুকরো কিছু শেষ হয়াও হইলোনা গল্পের সেলুলয়েড লিরিক কাব্য বলা যেতে পারে ছবিটিকে, যেখানে শেষ পর্যন্ত লিরিক পরিনত হয় এপিকে। আইএমডিবি রেটিং ৭.৪, দেখে ফেলুন সময় করে।


আইএমডিবি রেটিং ৭.৪
ডাউনলোড লিঙ্কঃ টরেন্ট ডাউনলোড লিঙ্ক


The Terminal (২০০৪)




সম্ভাবনা আর চমকের দেশ আমেরিকা, কার না যেতে ইচ্ছা করে। তবে সেরকম মানুষের পাল্লায় ফেলা যাবেনা ভিক্টর নাভরস্কি (টম হ্যাঙ্কস) কে । দেখতে সাধাসিধা এবং অদ্ভুত ভাষার ভিক্টর কোথা হতে যেন হাজির হলো নিউইউর্কে। তবে আটকে গেলো এন্ট্রান্সে। তার নিজের মতই সাধাসিধা মনে করেছিলো সবাইকে। কিন্ত বাস্তবতা তো ভিন্ন। তাতে কি ? তার যে আছে ইউনিক এক অমায়িক বিহেভিয়ার। নিজের মত করেই কিছু বন্ধু বানিয়ে নেয় সে, এটা সেটা করে আর দিন গোনে, কবে পাস পাবে স্বপ্নের দেশের। এর মাঝেই দেখা হয়ে যায় এমেলিয়ার (ক্যাথরিন) এর সাথে। তৈরি হয় অদ্ভুত এক সম্পর্ক। একদিকে এমিলিয়ার সাথে মধুর সম্পর্ক, আর একদিকে সিকিউরিটি অফিসারের সাথে তিক্ততা, একেমন বেড়াজাল। তবে সবাই কি আর চায়, উদবাস্তু কারো সাথে থেকে যেতে, চলে যায় এমিলিয়া। আর ভিক্টরের আবার সেই পাসের অপেক্ষায় দিন গোনা। এর মাঝে ঘটতে থাকে নানান মজার সব ঘটনা। একদিন পাস ও পেয়ে যায় সে।দেখা যায়, আসলে নিজের স্বপ্নভূমি নয়, বরং অন্যকারো স্বপ্নপুরনের প্রতিজ্ঞাতেই তার এই অপেক্ষা। জীবনের অদ্ভুত একটা ফেজ, একটা টার্মিনাল।

বস স্পিলবার্গ আর টম হ্যাঙ্কস এর জুটি। নিশ্চই বুঝে গেছেন কেমন হতে পারে। একটি মাত্র লোকেশনে এত সুন্দর এক কাহিনী আপনাকে ভিক্টরের সাথেই নিয়ে যাবে ভিন্ন এক বাস্তবতায়। দেখে ফেলুন "The Terminal" ।

আইএমডিবি রেটিং ৭.২

স্টেজভ্যু ডাউনলোড লিঙ্ক



Life Is Beautiful (১৯৯৭)





কিছু কিছু চরিত্র আমাদের আশেপাশেই আছে, যাদের খুব আপন মনে হয়। সদাহাস্য মুখশ্রী, দিলখোলা এটিচিউড, আর আন্তরিকতা দিয়ে মুহুর্তেই জয় করে নিতে পারে মানুষের মন। এমন একজন হলো গুইডো (রবার্তো বেনিগনি), সৃষ্টিকর্তা যেন নিজ হাতে সাজিয়েছে গুইডোর জীবন। গল্পের মত প্রেম, বিয়ে অতপর স্ত্রী সন্তান সহ যেন রুপকথার জীবন। কিন্ত রুপকথায় ডাইনী থাকবেনা, একি হয় ? ডাইনিরুপে আবির্ভাব নাৎজি সৈন্যদের। রুপকথার জীবন হয়ে উঠে বিভিষিকাময়। নিজের পরিবার কে কি করে সেফ করবে গুইডো ? খেলার ছলে কতদিন সত্য লুকিয়ে রাখবে নিজের ছেলের কাছে ? সাধারন এক বুককিপার যুদ্ধের রনাঙ্গনে হয়ে উঠে রক্ষাকারী এক বাবা। ক্রুশিয়াল বাস্তবতা থেকে পারবে সে নিজের সন্তান কে সেই রুপকথার জীবনে ফিরিয়ে নিতে ? বাবা দিবসে এক অসাধারন বাবার কাহিনী দেখুন "Life Is Beautiful" মুভিতে।

ছবির পরিচালক নিজেই অভিনয় করেছেন গুইডোর ভুমিকায়। ১৯৯৭ এ মুক্তি পাওয়া এ ছবি ৩ টি অস্কার সহ জিতে নেয় মোট ৫৩ টি পুরস্কার। আইএমডিবি রেটিং ৮.৫, বেস্ট ২৫০ এ ৬২ নম্বরে থাকা এ মুভি আপনার চোখের পানি ফেলতে বাধ্য করবে। দেরি না করে দেখে ফেলুন এখনি।

আইএমডিবি রেটিং ৮.৫

ডাউনলোড লিঙ্কঃ স্টেজভু লিঙ্ক

-------------------------------------------------

কয়েকটি সিনেমাখোরের আড্ডা গ্রুপে পূর্ব প্রকাশিত। প্রিয় নাফিজ, স্নিগ্ধ ভাই এবং কাঊসার রুশো ভাইয়ের মত জাদরেল মুভি ক্রিটিক কে এই লেখা উৎসর্গ করলাম। যাদের ভয়ে আমি সামুতে রিভিউ লেখিনা। :|
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১২ ভোর ৪:০৬
৪১টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×